ভোরের কাগজে
আকাশে প্রচুর মেঘ জমেছে।
কিছুক্ষণের মধ্যে যে বৃষ্টি নামবে তার কোন ভুল নেই। রাতুলের মা জোরে জোরে হাত দিচ্ছে রাতুলকে কাছে না পেয়ে।উঠানোর পরে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে কুড়িয়ে পাওয়া পাতাগুলি। এখন যদি ওগুলো ঘরে না উঠানো হয় তাহলে পাতাগুলি যে পার্বণের ডোবায় নেমে যাবে এভেবেই জ্বলে মরছে রাতুলের মা।
এ গায়ের ওপাশে বেটে পাড়া। বেটে পাড়া একটা নাম হলো!এ প্রশ্ন সবার মনেই।তবে রাতুলের দাদু রাতুল কে বলেছিল ও গায়ের মানুষ গুলো দেখতে কালো। এজন্য নাকি এই গাঁয়ের লোক ওদের বেটে পাড়া বলেই ডাকে।
এপাড়ায় থাকে রাতুলের বন্ধু জুয়েল ও তার বাবা।ওর বাবা একজন জেলে। রাতুল ছোটবেলা থেকে দেখে আসছে জুয়েলের বাবা গিয়াস মাছ ধরে সংসার চালায।খুব ভোরে এসে বিলের জলে নাও ভাসিয়ে ছুটে যায় মাইলের পর মাইল। সাথে দু মুঠো পান্তা ভাত আর মাছ বাধানোর একটা ছোট জাল।
সারাদিন খেটেখুটে যে মাছ পায় তা নিয়ে ছুটে যায় মাইল দুয়েক হেটে ওয়াব্দার হাটে।মাছ বিক্রি করে হাজির হয় বট গাছের তলে সিদ্দিক বাবুর দোকানে। বাকির খাতা খুলে বসে মশাই। প্রয়োজনীয় চালডাল করে বাড়ি আসতে অনেক রাত বেজে যায়।
জুয়েলের মা আনোয়ারা উনুনে পাত্র বসিয়ে কাঠ ঠেলতে থাকে।কর্তাবাবু আসলে তবেই পাত্রে চাল, ডাল উঠবে।
সন্ধ্যা ঘনিয়ে এসেছে।
আকাশ থেকে যেন জলের স্রোত বইছে। সারা বাড়ির কাজ সামলিয়ে উঠোনের পাতা তুলতে পারেনি রাতুলের মা কোমেলা।চৌকির উপর বসে একা একা কাঁদছে। কান্নার শব্দ নেই।বাইরে বৃষ্টি পড়ছে দুপুরের পর থেকে কিন্তু রাতুলের কোন খোঁজ নেই। হঠাৎ করে শুনতে পায় কোমেলা দূর থেকে কে যেন হাক দিচ্ছে।
মা ও মা কই গেলি মা আমি রাতুল।
ছেলের কন্ঠে পেয়ে ছুটে আসে কোমেলা চৌকাঠের কাছে।
দূরে দাঁড়িয়ে দেখতে পায় রাতুল, মায়ের চোখে জল। বুঝতে পারে যে মা ভীষণ রাগ করেছে। কাঁদো কণ্ঠে বলে ওঠে আয় ঘরে আয় তোর পা ভেঙ্গে ঘরে বসিয়ে রাখবো।
দূরে দাঁড়িয়ে কাকুতি-মিনতি করে মাকে জানায় রাতুল, এমন আর কখনো করবে না, আমার ভুল হয়েছে মা!
কোন কথা না শুনেই দ্রুতপদে চলে যায় ঘরের ভিতরে কোমেলা।
রাতুল আস্তে আস্তে পেছন দরজা দিয়ে ঢুকে জামা কাপড় পাল্টে ফেলে। চুপটি করে গিয়ে মাকে জড়িয়ে ধরে রাতুল।মায়ের অভিমান আরও বেড়ে যায়।দুজনে মিলে দুপুরের খাবারটা সেরে ফেলে। ছোটবেলা থেকে রাতুল বেশ বুদ্ধিমান ছেলে। মা বাবার স্বপ্ন তাদের ছেলে একদিন অনেক বড় হবে।
তার নাম ছাপা হবে কাগজে। আরসেদিন তারা ধন্য। কদিন পরে রাতের মাধ্যমিক পরীক্ষা। কোমেলা দেবী রাতুলের পড়ার টেবিলে খাবার টুকু পৌঁছাতে বাকি ছিল না প্রতিবেলায়।
দিনে রাতে যখন সুযোগ পেত তখনি রাতুলকে বোঝাতো,বাবা সুন্দরভাবে লেখাপড়া করো,দেখবে একদিন সবাই তোমায় ভালোবাসবে। আর ভালো কিছু করতে পারলেই তোমার নাম ছাপা হবে কাগজে।রাতুল ওর মার কথা শুনে বেশ খুশী হয়ে পড়ায় মন দেয় আবার।
এটা দেখে কোমেলা দেবী বেশ আনন্দে ছেলের যত্ন নেয়।
কখনো যদি রাতুল খেলার মাঠে খেলতে ও যায় তখন মায়ের বকা ঝকা থাকতে পারে না সেখানে। সেখান থেকে এলে টেবিলটা আর চেয়ারটাই নিজের বসার স্থান হয়ে দাঁড়ায়।
এটি কিন্তু এক দিন আর দুদিনের জন্য নয়।পুরো জীবনটা জুড়েই এটি একটি চিরন্তন অভ্যাস হয়ে দাড়িয়েছে।তবে রাতুল বাবা-মায়ের কাছে বেশ কৃতজ্ঞ।মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ হয়ে গেছে রাতুলের।
এবার খুব শীত পড়েছে।
কুয়াশায় ঢাকা চারিধার।পার্বন কাকা খেজুর গাছ থেকে রস নামিয়ে কাঁধে করে নিয়ে যাচ্ছে কোনার বাজারে বিক্রির জন্য।রাতুলের বাবা মঙ্গলবাবু সকালে এক হাড়ি রস নিয়ে এসেছে কাঁধে করে।
রস দিয়ে পায়েস রান্না করেছে কোমেলা। গন্ধটা যেন বাতাসে ছড়িয়ে ছিটিয়ে যাচ্ছে সারাবাড়ি।সকালের রোদে বসে বসে কথা বলতে থাকে রাতুল বাবার সাথে।
পরীক্ষার ফলাফল পেলে চলে আসবে ঢাকা। এজন্য মঙ্গলবাবু প্রস্তুতি নিয়ে বসে আছে। ছেলে ভালো রেজাল্ট করবে তাই বলে কথা! কয়েকদিনের জন্য জুয়েল আর রাতুল বেড়াতে যায় রাতুলের মামার বাড়ি।
মামার একটি ছোট ব্যবসা।
অল্প কিছু টাকা রোজগার তা দিয়ে সংসার চালায়। বেড়াতে গেলে যে খুব একটা ভালো খাওয়ায়। এমনটা কিন্তু নয়। কিন্তু মামার অঘাত ভালোবাসাই রাতুলের মন ভরিয়ে দিয়েছিল।সে জন্যই বছরে একবার হলেও মামার বাড়িতে বেড়াতে যেত বন্ধুদের নিয়ে।
মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফল জানিয়েছে।
শহরে কাকার বড় চাকুরী। অবশেষে তার উপরে রাতুলের দায ভার অর্পণ করা হলো।রাতুল তার কাকা মহাদেব এর অধীনে লেখাপড়া চালিয়ে যায়। বেশ ভালো মনের মানুষ মহাদেব কাকা। আত্মীয় দের প্রতি তীব্র ভালোবাসাই তাকে উপরে উঠেছে। এ কথা সবাই বলে।
এভাবে আস্তে আস্তে দিন কাটতে থাকে শহরে এসেছে ছয় মাস হলো ইতিমধ্যে দু'বার বাড়িতে গিয়ে বাবা-মায়ের খোঁজ নিয়ে এসেছে।হঠাৎ একদিন রাতে বাড়ি থেকে চিঠি আসে।বাবা খুব অসুস্থ। যখন চিঠি পাবে তখন যেন চলে আসে চিঠিতে লেখা ছিল।
ভোর রাতে স্টেশন থেকে ট্রেন ছাড়ে। বাড়ি পৌছাতে পরের দিন বিকেল।
সবাই নিরব কেমন যেন লাগছে রাতুলের বুকের ভেতর।দূর থেকে বুকের ভেতরটা যেন ভেঙে যাচ্ছে। অথচ রাতুল কিছুই জানেনা। বাড়ির ভিতরে ঢুকেই প্রথমে চোখ পড়ে মায়ের চোখে।
দৌড়ের বুকে নিয়ে চিৎকার করে কাঁদার জন্য। কিন্তু রাতুলের মা কাঁদতে পারেনা।জ্ঞান হারিয়ে যায়। বাড়িতে আবার কান্নার রোল পড়ে যায়।রাতুল বুঝতে পারে যে বাবা বেঁচে নেই।বাবা বলে কাউকে ডাকতে পারবে না! আর আদর করে কেউ আর বুকে টেনে নিবে না।
রাতুল গলা ফাটিয়ে চিৎকার করতে থাকে।সপ্তাহখানেক পরে চলে আসে আবার মাকে নিয়ে শহরে। বাবার কথা স্মরণ করে যে কতবার চোখের জল ঝরায় তার হিসেব নেই।
রাতুলের সামনে ভার্সিটির পরীক্ষা। জুয়েল দুদিন হল বাসায় এসেছে। গ্রামের একটা কলেজ থেকে পাশ করেছে ও। দুজনে একসাথে পরীক্ষা দেবে।মাকে নিয়ে গ্রামে গিয়েছিল বাবার জন্য অনুষ্ঠান করে এসেছে। পরীক্ষা শেষ হয়েছে ফলাফল ঘোষণার পালা।
একদিন ভোরবেলা সমেশ ফোন করে জানায় ভার্সিটি পরীক্ষার অর্থনীতি বিভাগে প্রথম হয়েছে।খুশিতে মাকে জড়িয়ে ধরে রাতুল। ভোরের কাগজ বলে একটা পত্রিকায় রাতুলের নাম ছাপা হয়।
মায়ের কাছে এসে হাতে দেয় পত্রিকা। দেখে খুশির অশ্রুতে' দু চোখ ভিজে আসে। বারবার বলতে থাকে আজ তোর বাবা যদি বেঁচে থাকতো তাহলে কতই না খুশি হতো।
কিছুক্ষণের মধ্যে যে বৃষ্টি নামবে তার কোন ভুল নেই। রাতুলের মা জোরে জোরে হাত দিচ্ছে রাতুলকে কাছে না পেয়ে।উঠানোর পরে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে কুড়িয়ে পাওয়া পাতাগুলি। এখন যদি ওগুলো ঘরে না উঠানো হয় তাহলে পাতাগুলি যে পার্বণের ডোবায় নেমে যাবে এভেবেই জ্বলে মরছে রাতুলের মা।
এ গায়ের ওপাশে বেটে পাড়া। বেটে পাড়া একটা নাম হলো!এ প্রশ্ন সবার মনেই।তবে রাতুলের দাদু রাতুল কে বলেছিল ও গায়ের মানুষ গুলো দেখতে কালো। এজন্য নাকি এই গাঁয়ের লোক ওদের বেটে পাড়া বলেই ডাকে।
এপাড়ায় থাকে রাতুলের বন্ধু জুয়েল ও তার বাবা।ওর বাবা একজন জেলে। রাতুল ছোটবেলা থেকে দেখে আসছে জুয়েলের বাবা গিয়াস মাছ ধরে সংসার চালায।খুব ভোরে এসে বিলের জলে নাও ভাসিয়ে ছুটে যায় মাইলের পর মাইল। সাথে দু মুঠো পান্তা ভাত আর মাছ বাধানোর একটা ছোট জাল।
সারাদিন খেটেখুটে যে মাছ পায় তা নিয়ে ছুটে যায় মাইল দুয়েক হেটে ওয়াব্দার হাটে।মাছ বিক্রি করে হাজির হয় বট গাছের তলে সিদ্দিক বাবুর দোকানে। বাকির খাতা খুলে বসে মশাই। প্রয়োজনীয় চালডাল করে বাড়ি আসতে অনেক রাত বেজে যায়।
জুয়েলের মা আনোয়ারা উনুনে পাত্র বসিয়ে কাঠ ঠেলতে থাকে।কর্তাবাবু আসলে তবেই পাত্রে চাল, ডাল উঠবে।
সন্ধ্যা ঘনিয়ে এসেছে।
আকাশ থেকে যেন জলের স্রোত বইছে। সারা বাড়ির কাজ সামলিয়ে উঠোনের পাতা তুলতে পারেনি রাতুলের মা কোমেলা।চৌকির উপর বসে একা একা কাঁদছে। কান্নার শব্দ নেই।বাইরে বৃষ্টি পড়ছে দুপুরের পর থেকে কিন্তু রাতুলের কোন খোঁজ নেই। হঠাৎ করে শুনতে পায় কোমেলা দূর থেকে কে যেন হাক দিচ্ছে।
মা ও মা কই গেলি মা আমি রাতুল।
ছেলের কন্ঠে পেয়ে ছুটে আসে কোমেলা চৌকাঠের কাছে।
দূরে দাঁড়িয়ে দেখতে পায় রাতুল, মায়ের চোখে জল। বুঝতে পারে যে মা ভীষণ রাগ করেছে। কাঁদো কণ্ঠে বলে ওঠে আয় ঘরে আয় তোর পা ভেঙ্গে ঘরে বসিয়ে রাখবো।
দূরে দাঁড়িয়ে কাকুতি-মিনতি করে মাকে জানায় রাতুল, এমন আর কখনো করবে না, আমার ভুল হয়েছে মা!
কোন কথা না শুনেই দ্রুতপদে চলে যায় ঘরের ভিতরে কোমেলা।
রাতুল আস্তে আস্তে পেছন দরজা দিয়ে ঢুকে জামা কাপড় পাল্টে ফেলে। চুপটি করে গিয়ে মাকে জড়িয়ে ধরে রাতুল।মায়ের অভিমান আরও বেড়ে যায়।দুজনে মিলে দুপুরের খাবারটা সেরে ফেলে। ছোটবেলা থেকে রাতুল বেশ বুদ্ধিমান ছেলে। মা বাবার স্বপ্ন তাদের ছেলে একদিন অনেক বড় হবে।
তার নাম ছাপা হবে কাগজে। আরসেদিন তারা ধন্য। কদিন পরে রাতের মাধ্যমিক পরীক্ষা। কোমেলা দেবী রাতুলের পড়ার টেবিলে খাবার টুকু পৌঁছাতে বাকি ছিল না প্রতিবেলায়।
দিনে রাতে যখন সুযোগ পেত তখনি রাতুলকে বোঝাতো,বাবা সুন্দরভাবে লেখাপড়া করো,দেখবে একদিন সবাই তোমায় ভালোবাসবে। আর ভালো কিছু করতে পারলেই তোমার নাম ছাপা হবে কাগজে।রাতুল ওর মার কথা শুনে বেশ খুশী হয়ে পড়ায় মন দেয় আবার।
এটা দেখে কোমেলা দেবী বেশ আনন্দে ছেলের যত্ন নেয়।
কখনো যদি রাতুল খেলার মাঠে খেলতে ও যায় তখন মায়ের বকা ঝকা থাকতে পারে না সেখানে। সেখান থেকে এলে টেবিলটা আর চেয়ারটাই নিজের বসার স্থান হয়ে দাঁড়ায়।
এটি কিন্তু এক দিন আর দুদিনের জন্য নয়।পুরো জীবনটা জুড়েই এটি একটি চিরন্তন অভ্যাস হয়ে দাড়িয়েছে।তবে রাতুল বাবা-মায়ের কাছে বেশ কৃতজ্ঞ।মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ হয়ে গেছে রাতুলের।
এবার খুব শীত পড়েছে।
কুয়াশায় ঢাকা চারিধার।পার্বন কাকা খেজুর গাছ থেকে রস নামিয়ে কাঁধে করে নিয়ে যাচ্ছে কোনার বাজারে বিক্রির জন্য।রাতুলের বাবা মঙ্গলবাবু সকালে এক হাড়ি রস নিয়ে এসেছে কাঁধে করে।
রস দিয়ে পায়েস রান্না করেছে কোমেলা। গন্ধটা যেন বাতাসে ছড়িয়ে ছিটিয়ে যাচ্ছে সারাবাড়ি।সকালের রোদে বসে বসে কথা বলতে থাকে রাতুল বাবার সাথে।
পরীক্ষার ফলাফল পেলে চলে আসবে ঢাকা। এজন্য মঙ্গলবাবু প্রস্তুতি নিয়ে বসে আছে। ছেলে ভালো রেজাল্ট করবে তাই বলে কথা! কয়েকদিনের জন্য জুয়েল আর রাতুল বেড়াতে যায় রাতুলের মামার বাড়ি।
মামার একটি ছোট ব্যবসা।
অল্প কিছু টাকা রোজগার তা দিয়ে সংসার চালায়। বেড়াতে গেলে যে খুব একটা ভালো খাওয়ায়। এমনটা কিন্তু নয়। কিন্তু মামার অঘাত ভালোবাসাই রাতুলের মন ভরিয়ে দিয়েছিল।সে জন্যই বছরে একবার হলেও মামার বাড়িতে বেড়াতে যেত বন্ধুদের নিয়ে।
মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফল জানিয়েছে।
শহরে কাকার বড় চাকুরী। অবশেষে তার উপরে রাতুলের দায ভার অর্পণ করা হলো।রাতুল তার কাকা মহাদেব এর অধীনে লেখাপড়া চালিয়ে যায়। বেশ ভালো মনের মানুষ মহাদেব কাকা। আত্মীয় দের প্রতি তীব্র ভালোবাসাই তাকে উপরে উঠেছে। এ কথা সবাই বলে।
এভাবে আস্তে আস্তে দিন কাটতে থাকে শহরে এসেছে ছয় মাস হলো ইতিমধ্যে দু'বার বাড়িতে গিয়ে বাবা-মায়ের খোঁজ নিয়ে এসেছে।হঠাৎ একদিন রাতে বাড়ি থেকে চিঠি আসে।বাবা খুব অসুস্থ। যখন চিঠি পাবে তখন যেন চলে আসে চিঠিতে লেখা ছিল।
ভোর রাতে স্টেশন থেকে ট্রেন ছাড়ে। বাড়ি পৌছাতে পরের দিন বিকেল।
সবাই নিরব কেমন যেন লাগছে রাতুলের বুকের ভেতর।দূর থেকে বুকের ভেতরটা যেন ভেঙে যাচ্ছে। অথচ রাতুল কিছুই জানেনা। বাড়ির ভিতরে ঢুকেই প্রথমে চোখ পড়ে মায়ের চোখে।
দৌড়ের বুকে নিয়ে চিৎকার করে কাঁদার জন্য। কিন্তু রাতুলের মা কাঁদতে পারেনা।জ্ঞান হারিয়ে যায়। বাড়িতে আবার কান্নার রোল পড়ে যায়।রাতুল বুঝতে পারে যে বাবা বেঁচে নেই।বাবা বলে কাউকে ডাকতে পারবে না! আর আদর করে কেউ আর বুকে টেনে নিবে না।
রাতুল গলা ফাটিয়ে চিৎকার করতে থাকে।সপ্তাহখানেক পরে চলে আসে আবার মাকে নিয়ে শহরে। বাবার কথা স্মরণ করে যে কতবার চোখের জল ঝরায় তার হিসেব নেই।
রাতুলের সামনে ভার্সিটির পরীক্ষা। জুয়েল দুদিন হল বাসায় এসেছে। গ্রামের একটা কলেজ থেকে পাশ করেছে ও। দুজনে একসাথে পরীক্ষা দেবে।মাকে নিয়ে গ্রামে গিয়েছিল বাবার জন্য অনুষ্ঠান করে এসেছে। পরীক্ষা শেষ হয়েছে ফলাফল ঘোষণার পালা।
একদিন ভোরবেলা সমেশ ফোন করে জানায় ভার্সিটি পরীক্ষার অর্থনীতি বিভাগে প্রথম হয়েছে।খুশিতে মাকে জড়িয়ে ধরে রাতুল। ভোরের কাগজ বলে একটা পত্রিকায় রাতুলের নাম ছাপা হয়।
মায়ের কাছে এসে হাতে দেয় পত্রিকা। দেখে খুশির অশ্রুতে' দু চোখ ভিজে আসে। বারবার বলতে থাকে আজ তোর বাবা যদি বেঁচে থাকতো তাহলে কতই না খুশি হতো।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
নাসরীন আক্তার রুবি ১৯/০৫/২০১৯অসাধারণ ভালোলাগা ছুঁয়ে গেল মনটা।শুভকামনা লেখকের জন্য।
-
রূপক কুমার রক্ষিত ০৭/০৪/২০১৯বেশ ভাল।
-
আগুন পাখি ০১/০৪/২০১৯ভালো লাগা জানিয়ে গেলাম। চালিয়ে যান।
-
নাসরীন আক্তার রুবি ২৯/০৩/২০১৯চমৎকার কবিতা
-
সাইয়িদ রফিকুল হক ২৮/০৩/২০১৯সামাজিক গল্প।