www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

আর নয় ভালোবাসা(১ম পর্ব)

আজ সময়টা খুব অন্য রকম। কেমন মৃদু বাতাস, খুব ভালোই একটা আবহাওয়া। নদীর পাড়ে নরম ঘাসে বসে বসে বেশ ভালোই একটা সময় উপভোগ করছে প্লাবন। আজ অনেকদিন পর প্লাবনের একটু ভালো লাগছে। কিন্তু মনে একটা যন্ত্রণা বয়েই বেড়াচ্ছে। প্রায় ছয় মাস হলো নিসার সাথে কথা হচ্ছে না। সেই যে নিসা চলে গেল, আর একবারও খবর নেয়নি মেয়েটা। খুব জেদি একটা মেয়ে নিসা। যেমন অহংকারী মনে হয় তেমন নিষ্ঠুর মনে হয়। আসলে নিসা অহংকারী বা নিষ্ঠুর নয়। নিসার আচরণ এরকম মনে হলেও, ও আসলে খুব নরম একটা মেয়ে। রাগ করলে অনেক নিষ্ঠুর আচরণ করে নিসা। পরে আবার ঠিক হয়ে গেলে অনেক ভালো হয়ে যায়। আর ঐ সময় নিসার নিষ্ঠুর আচরণের কথা বললে চুপ হয়ে থাকে, আর চাইতো না ঐ কথা শুনতে। অপরদিকে প্লাবন খুব নরম মনের। রাগ করলে বলবে "আমি রাগ করছি কথা বলব না আর", কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই কথা বলা শুরু করবে। প্লাবনের এই আচরণ শুধু নিসার সাথেই। এ পর্যন্ত যাদের সাথে প্লাবন রাগ করে কথা বন্ধ করছে, তাদের সাথে পুনরায় কথা বলছে এর দৃষ্টান্ত খুবই কম। প্লাবন নিজেও জানেনা, কেন নিসার সাথেই ওর এত দুর্বলতা। নিসার সাথে একটু কথা বলার জন্য আগে প্লাবন অনেক পাগলামি করত। একটু খবর পাওয়ার জন্য ছটফট করত। কিন্তু নিসা কেমন যেন সব বুঝেও চুপ থাকত। এমনকি অনেক কথাই গোপন রাখত। প্লাবনটাও কেমন যেন, নিসা ছাড়া কিছুই ভাবতে পারত না। কেন নিসাকেই এতোটাই কাছে ভাবে বুঝতে পারে না। সত্যি কথা বলতে, নিসার সাথে যখন সম্পর্ক ভালো থাকে না, নিসা যখন প্লাবনকে দূরে ঠেলে দেয় তখন প্লাবন খুব একা হয়ে যায়। যেন প্লাবনের মনটা ভেঙে দুই ভাগ হয়ে যায়। আবার যখন সম্পর্কটা ঠিক হয়ে যায়, তখন খুব ভালো লাগে প্লাবনের। কিন্তু মনে একটা রাগ থেকেই যেত। নিসার রাগ করে যে দুর্ব্যবহার করত তার জন্য প্লাবন খুব কষ্ট পেত। নিসাকে তখন খুব নিষ্ঠুর লাগে ওর। প্লাবন নিসাকে প্রথম বন্ধু হিসেবেই ভেবেছিল। কিন্তু কি এক অজানা কারণে যেন নিসাকে ভালোবেসে ফেলেছে তা প্লাবন নিজেও জানেনা। আর এই ভালোবাসাটাই নিসাকে প্লাবনের কাছ থেকে অনেক দূরে নিয়ে গেছে। আজ তাদের মাঝে এতোটা দূরত্বের সৃষ্টি এই ভালোবাসা নামক বিষয়টির জন্য। নিসা প্লাবনকে ভালোবাসতে পারছে না, ঠিক যেমন করে প্লাবন চায়। তবে প্লাবনের প্রতি নিসার খুব মায়া হয়, খুব অনুভব করতে পারে প্লাবনের কষ্টগুলোকে। প্লাবনও বুঝতে পারে নিসা কেন প্লাবনকে জীবনসঙ্গী হিসেবে চাইছে না। কিন্তু মন নামক অজুহাত যেন সব কিছু উলটপালট করে দেয় প্লাবনের।আর এ জন্য তাদের মাঝে যতসব ঝামেলা হয়।

প্লাবন ছয় মাস ধরে নিসার সাথে কথা না বলে থাকার মানুষ নয়। কিভাবে যেন ছয়টি মাস কেটে গেল ও নিজেই জানেনা। আজ ফোনটি হাতে নিল। রিং দিল নিসাকে। প্রথম রিংয়েই ধরল
নিসা।
হ্যালো
হুম বল
সরি! আর তোর সাথে এরকম করব না।
সত্যি বলছিস।
হুম। তোর সাথে যোগাযোগ না থাকলে ভালো লাগেনা। তুইতো একবারও ফোন দিলিনা আমাকে!
এমনি দেইনি।
তুই বলনা আগের মতো হয়ে যাবি।
তুই কই এখন?
আমার উত্তর দে!
ওফফ আবার প্যাচাল। কথা বলছি না তোর সাথে?
হুম। কিন্তু?
কি?
কেমন যেন লাগছে তোকে!
কেমন?
আগের মতো না
চুপ করত। রাখি এখন, বাই।
বাই।
নিসা এতোটাই সহজে প্লাবনের ভুল সব মাফ করে দিবে তা ও ভাবেনি। এভাবেই আবার সেই আগের হাসি খুশি প্লাবন প্রানবন্ত হয়ে ছুটা শুরু করল জীবনের নতুন রঙ্গমঞ্চে, নিসার কাছের বন্ধু হয়েই।
বিষয়শ্রেণী: গল্প
ব্লগটি ৯৫২ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ২৮/০৬/২০১৬

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast