www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

জ্ঞান বনাম বিজ্ঞান বনাম বিশ্বাস। আসুন জেনে নেই।

বিজ্ঞানের সংজ্ঞা হতে আমরা জানি যে ‘ভৌত জগতে যা কিছু আছে তার পর্যবেক্ষণ, পরীক্ষণ, যাচাই দ্বারা নিয়মতান্ত্রিক সুশৃঙ্খল গবেষণা ও গবেষণালব্ধ জ্ঞানের নাম বিজ্ঞান’।

অপরদিকে জ্ঞান হল ‘কোন কিছু সম্পর্কে জানা, বুঝা, অবস্থা অবগত হওয়া, তথ্য রাখা ইত্যাদি’ জ্ঞান অর্জনের অনেক মাধ্যম রয়েছে, যেমন উপলব্ধি, অনুসন্ধান, শিক্ষা, অভিজ্ঞতা ইত্যাদি।

উপরের দুটি সংজ্ঞা থেকেই স্পষ্ট হয়ে যায় যে বিজ্ঞান হচ্ছে জ্ঞানের একটি শাখা যা চলে খুবই সুশৃঙ্খলভাবে, নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে। বিজ্ঞানের বিষয় ভৌত অর্থাৎ বাস্তব জগতেই সীমাবদ্ধ। আধ্যাত্মিকতা, মহাজাগতিকতা বা অলৌকিকতাকে বিজ্ঞান কখনো সংজ্ঞায়িত করতে পারে না। ধরাছোঁয়া কিংবা উপলব্ধির বাইরে কোনকিছুকে বিজ্ঞান স্বীকার করে না। বিজ্ঞানের আলোচিত সব কিছুই প্রমাণ যোগ্য। উদাহরণ স্বরূপ আমরা বিখ্যাত বিজ্ঞানী আইনস্টাইনের E=mc^2 সুত্রটির কথা বলতে পারি। এটি প্রমাণযোগ্য আর এটি প্রমাণের পন্থাটাই হল বিজ্ঞান। যেহেতু এটি প্রমাণিত তাই এটি আমরা বিশ্বাস করি।

অপরদিকে যে কোন বিষয়ের উপরেই জানা বা ধারণা থাকাটাই হচ্ছে জ্ঞান। জ্ঞানের শাখা ব্যাপক। বাস্তব, অবাস্তব, কল্প, জাগতিক, মহাজাগতিক, আধ্যাত্মিক, অলৌকিক যে কোন বিষয়ের উপরে জানা বা ধারণা থাকাটাই হচ্ছে জ্ঞান। জ্ঞানের বিষয় প্রমাণযোগ্য হতে পারে, যেমন কেউ জানে E=mc^2 কিন্তু সে নিজে এটি প্রমাণ দেখাতে পারবে না কিন্তু যেহেতু এটি তার জানা আছে তাই এটি একটি জ্ঞান। জ্ঞানের বিষয় প্রমাণযোগ্য নাও হতে পারে যেমন সাক্ষী, সত্য। মনে করুণ বিশ বছর আগে আমি সুন্দর বনের ভেতরে একটি সিংহ দেখেছি, সুতরাং ঐ সময় সুন্দর বনে সিংহ ছিল এটা আমি জানি, এটা আমার জ্ঞান। এখন আমি যদি আপনাকে এইকথা বলি তা আমি কিছুতেই প্রমাণ করতে পারবো না। প্রমান নেই বলে ভুল হবে তাও বলার উপায় নেই, আর তখনি হয় বিশ্বাসের অবতারণা। বিশ্বাসের সাথে জ্ঞানের সম্পর্ক। বিশ্বাস ছাড়া আমার এই উপলব্ধ জ্ঞানকে মেনে নেয়া আপনার কাছে সম্ভব হবে না।

তাহলে বিশ্বাস বলতে কি পাচ্ছি আমরা, বিশ্বাস হচ্ছে এমন একটি মানবীয় গুণ বা স্বীকারোক্তির নাম যা গড়ে উঠতে পারে কোন প্রমাণের ভিত্তিতে, কিংবা কোন প্রমাণ ছাড়াই। এটি গড়ে উঠতে পারে বিজ্ঞানের দ্বারা, এটি গড়ে উঠতে পারে জ্ঞানের দ্বারা, এটি গড়ে উঠতে পারে উপলব্ধির দ্বারা। বিশ্বাস হচ্ছে মানুষের সবচেয়ে মুল্যবান, সবচেয়ে শক্তিশালী এবং একই সাথে সবচেয়ে দুর্বল গুণের নাম। তাই বিজ্ঞান থেকে জ্ঞান বড়, জ্ঞান থেকে বিশ্বাস বড়। হয়ত তাই ইসলামে এবং মুসলিমদের কাছে সবচেয়ে মূল্যবান বস্তুটিই হচ্ছে ঈমান তথা বিশ্বাস।



১১ মার্চ, ২০২০ ঈসায়ী।
বিষয়শ্রেণী: প্রবন্ধ
ব্লগটি ৭২৩ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ১১/০৩/২০২০

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

  • দারুণ লিখেছেন।
  • বিবাদী ১০/০৫/২০২০
    অথচ মানুষ না বুঝেই বিজ্ঞানকে ইশ্বরের সাথে তুলনায় নেমেছে।
  • আপনা সাথে একমত হতে পারলাম না কারণ
    জানার নাম কিন্তু জ্ঞান না
    নতুন কিছু সৃস্টি করার নামী জ্ঞান
    জ্ঞান হলো একপ্রকাশ স্রষ্টার নিয়ামত
    যার তার জ্ঞান নেই
    • একনিষ্ঠ অনুগত ১৩/০৩/২০২০
      আপনার মতামত জেনে ভালো লাগলো। আসলে সব মানুষের ভাবনা একই সাথে এক রকম হয় না। হয়ত আপনিই সঠিক।

      তবে, আমি মনি করি যে জানে সেই জ্ঞানী, যে জ্ঞানী সেই জানে।
      'সৃষ্টিশীলতা' জ্ঞানের একটি শাখা, সৃষ্টিশীলতা মানেই জ্ঞান নয়।
      জ্ঞানের অনেক স্তর রয়েছে। সমাজের কমবেশি সবারই কিছু না কিছু জ্ঞান রয়েছে। যাদের জ্ঞানের মাত্রা গড়পড়তা সমাজের অন্যান্য সবার মতই তাঁকে আমরা সচরাচর জ্ঞানী বলি না, জ্ঞানী তাঁকেই বলি যার জ্ঞানের মাত্রা গড়পড়তা অন্যান্যদের চেয়ে বেশী কিংবা অনেক বেশী।।

      শুভ কামনা রইল আপনার জন্য।।
  • ফয়জুল মহী ১১/০৩/২০২০
    সুকোমল ভাবনার অনন্যসাধারণ লেখা।
  • প্রমাণ-বিশ্বাস সবই দরকারি।
  • আব্দুল হক ১১/০৩/২০২০
    বেশ লিখেছেন।
 
Quantcast