www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

জয়িতার আনন্দময় জন্মদিন

আজ জয়িতার জন্মদিন। সকাল থেকেই তার বাসা সাজানো হয়েছে রঙ-বেরঙের বেলুন আর ফুল দিয়ে। পুরো ঘরটা যেন এক স্বপ্নময় রাজ্যের মতো লাগছিল। সকাল সাতটায় ঘুম থেকে উঠে জয়িতা মাকে জড়িয়ে ধরে বলে, "মা, আজকে খুব সুন্দর একটা দিন হবে, তাই না?" মা হাসিমুখে উত্তর দিলেন, "অবশ্যই হবে, মা! আজ তোমার বিশেষ দিন।"


জয়িতা ও তার মা মিলে পুরো ঘর পরিষ্কার করে নিল। ঘরটি এমনিতেই সাজানো ছিল, কিন্তু মা-মেয়ের একসাথে পরিষ্কার করার মধ্যে অন্যরকম আনন্দ ছিল। মায়ের সাথে কাজ করতে করতে জয়িতা হাসতে হাসতে বলল, "মা, আজকের দিনটা আমাদের জন্য বিশেষ, তাই না?" মা মৃদু হেসে বললেন, "হ্যাঁ, মা। আজ তোমার জন্মদিন, সুতরাং আজকের দিনটা অবশ্যই বিশেষ।"


বাবা জন্মদিনের কেক নিয়ে আসলেন। কেকটি ছিল একটি বিশাল চকোলেট কেক, যার উপরে লেখা ছিল, "শুভ জন্মদিন, জয়িতা।" কেকের উপর সুন্দর করে সাজানো ছিল চকোলেট ফুল এবং ক্যান্ডেল। জয়িতা কেক দেখে আনন্দে লাফিয়ে উঠল। সে বাবাকে জড়িয়ে ধরে বলল, "ধন্যবাদ বাবা, কেকটা খুব সুন্দর হয়েছে।"


জয়িতার বান্ধবীরা আসতে শুরু করল। সবাই এসে জয়িতাকে শুভেচ্ছা জানালো এবং উপহার দিল। উপহারগুলো সুন্দরভাবে মোড়ানো ছিল, আর প্রতিটি উপহারে ছিল তাদের ভালবাসা এবং আন্তরিকতা। বান্ধবীদের মধ্যে কেউ কেউ হাতে বানানো কার্ড এবং ছোট ছোট গিফট এনেছিল, যা দেখে জয়িতার চোখে আনন্দের ঝিলিক দেখা গেল।


জন্মদিনের কেক কাটার অনুষ্ঠান শুরু হল। জয়িতা তার বন্ধুদের সাথে কেক কাটল এবং সবার মুখে কেক খাওয়াল। সবাই মিলে জয়িতার জন্য গান গাইল, "হ্যাপি বার্থডে টু ইউ।" কেক খাওয়ার সময় সবাই খুব মজা করল, কেউ কেউ আবার মজার মুখভঙ্গি করে ছবি তুলছিল। পুরো ঘরটি হাসি এবং আনন্দে ভরে উঠল।


ফেইসবুকে একটি পোস্ট দিল জয়িতা, "আজ আমার জন্মদিন! সবাইকে অনেক ধন্যবাদ যারা আমাকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছে।" পোস্টটি দেয়ার পর পরই তার বন্ধুরা এবং আত্মীয়রা কমেন্টে শুভেচ্ছা জানাতে লাগল। জয়িতা অনুভব করল, কত মানুষ তাকে ভালোবাসে এবং তার জন্য শুভকামনা করছে।


মা দুপুর থেকে বিরিয়ানি রান্নার কাজে ব্যস্ত। মায়ের এই ব্যস্ততা দেখে জয়িতা মাঝে মাঝে রান্নাঘরে গিয়ে মাকে সাহায্য করতে চেষ্টা করে। মা হাসিমুখে বলে, "তুমি খেলো আর আনন্দ করো, রান্নার চিন্তা আমাকে করতে দাও।" জয়িতা মায়ের কথা শুনে রান্নাঘর থেকে বেরিয়ে আসে, কিন্তু সে অনুভব করে মায়ের ভালবাসা আর যত্নের গভীরতা।


বিরিয়ানি প্রস্তুত হল। সবাই মিলে টেবিলে বসে খেতে শুরু করল। বিরিয়ানির গন্ধে পুরো ঘরটি ম-ম করছিল। সবাই মিলে খেতে খেতে দাদি জয়িতাকে আশীর্বাদ করে বললেন, "তুমি যেন জীবনে অনেক বড় হও এবং সবসময় সুস্থ ও সুখী থাকো।" জয়িতা দাদির আশীর্বাদ শুনে মৃদু হেসে বলল, "ধন্যবাদ দাদি, তোমার আশীর্বাদ আমার জীবনের সবচেয়ে বড় উপহার।"


সবাই মিলে বিভিন্ন খেলা খেলতে শুরু করল। লুডু, ক্যারাম এবং সঙ্গীত চেয়ারের খেলা চলল। খেলার সময় সবাই মিলে খুব মজা করল, হাসি-ঠাট্টায় পুরো বিকালটা কেটে গেল। জয়িতা এবং তার বন্ধুরা প্রতিযোগিতায় মেতে উঠল, আর প্রতিটি খেলার সময় তাদের মুখে হাসি লেগেই ছিল।


ছবি তোলার সময়। জয়িতা ও তার বন্ধুদের সাথে ছবি তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়ল। তারা বিভিন্ন মজার পোজ দিয়ে ছবি তুলল। কেউ কেউ আবার মজার মুখভঙ্গি করে ছবি তুলছিল, যা দেখে সবাই হাসতে হাসতে লুটোপুটি খেল। ছবিগুলো দেখে বোঝা যাচ্ছিল, এই মুহূর্তগুলো জয়িতার জীবনে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।


জয়িতার বন্ধুদের ধীরে ধীরে বিদায় জানাতে শুরু করল। বিদায়ের সময় সবাই মিলে জয়িতাকে জড়িয়ে ধরে শুভকামনা জানাল। জয়িতা সবার উপহারগুলো খুলে দেখল এবং খুব খুশি হল। প্রতিটি উপহার তার জন্য ছিল বিশেষ এবং মূল্যবান।


জয়িতা তার মা-বাবাকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলল, "এই জন্মদিনটা আমার জীবনের সেরা জন্মদিন। তোমাদের ধন্যবাদ এত সুন্দর আয়োজন করার জন্য।" মা-বাবা হাসিমুখে বললেন, "তুমি আমাদের আনন্দ এবং গর্ব। তোমার হাসি আমাদের জীবনের সবচেয়ে বড় উপহার।"



জয়িতা বুঝতে পারল, জীবনের প্রতিটি দিনকে উপভোগ করতে হয় এবং পরিবারের সবার সাথে মিলেমিশে সময় কাটানো জীবনের অন্যতম সুখ। এই জন্মদিন তাকে শিখিয়েছে, ভালোবাসা এবং আনন্দ ভাগাভাগি করে নেওয়াই জীবনের সত্যিকারের সার্থকতা। তার মনে হল, এই দিনটি তার জীবনের সবচেয়ে স্মরণীয় দিন হয়ে থাকবে।

তাং- ০৯/০৭/২০২৪ ইং (নৈ.গ.)
বিষয়শ্রেণী: গল্প
ব্লগটি ৭১ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ২২/০৯/২০২৪

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

  • suman ২৮/০৯/২০২৪
    নারী শিশু আর নারীদের নিয়ে কজন এমন ভালো লেখা লিখতে পারেন...
  • ফয়জুল মহী ২৬/০৯/২০২৪
    Excellent
 
Quantcast