অপেক্ষা
ইতালির গনপরিবহণ আটাকের "আউতোবুসে (Autobus) বসে ভিয়া চামেরীতে যাচ্ছি সেলিম ভাইয়ের আলিমেন্টারীতে তার সাথে দেখা করার জন্য। উনি আমাকে একটা কাজ দেওয়ার কথা। অনেক দিন বেকারের মত অবস্থা। নিয়মিত কোনো কাজ করতে পারছি না। ইতালিতে কাজ নেই, ব্যবসার অবস্থাও না থাকার মতো।অনিয়মিত কিছু কাজ করছি, তাতে শুধু বাসা ভাড়া (মেস করে) ও খাওয়ার পয়সা জোগাড় হচ্ছে। দেশে পয়সা পাঠায় না ছয়মাস ধরে। এই বিদেশ থাকার কোনো মানে হয় না। কিন্তু কী করবো? দেশে গিয়েই বা কী করবো। আমার তো আবার মামার জোর নেই যে (এম,এ পাশের পরও ) কোনো চাকুরী পাবো।
বাসে চড়ে সারাক্ষণ প্রতিটি স্টপেছে নজর রাখতে হচ্ছে আটাকের ইন্সপেক্টর (আমরা বিদেশীরা যাদের মামু বলে থাকি) আছে কীনা। আমার কাছে বাস টিকিট নেই। আগে এক ইউরো করে ছিল, এখন তা বাড়িয়ে দেড় ইউরো করা হয়েছে। মরার পরে খাড়ার ঘা। বাম চোখের নিচের পাঁপড়ি লাফাচ্ছে। আমার এমনই কপাল! শিক্ষিত লোকেরা যাকে কুসংস্কার বলে, আমার বেলা তাই ফলে। সব সময় দেখেছি বাম চোখের পাতা লাফালে কোনো না কোনো খারাপ প্রভাব ফলে। আজ যে কপালে কী আছে কে জানে, মামুর হাতে ধরা খেয়ে একশ ইউরো জরিমানা, নাকি সেলিম ভাই আসলে কোনো কাজ সংগ্রহ করতে পারেন নি?
সবাই কেমন যেন হয়ে গেছে। কেউ কথা দিয়ে কথা না রাখাটাকে প্যাসন হিসেবে নিয়েছে। আগে মানুষের চোখের ভাষা বোঝা যেতো এখন তাও যায় না, চোখের ভাষা যদি হয় মোলায়েম, মনের আঘাত তেমনি কঠিন।
সেলিম ভাই তেমন নন। এর আগে একবার আমাকে কিছু টেম্পরারি কাজ দিয়েছেন। আমি উনার অনেক কাজ হাসি মুখে করে দিয়েছি। কারো কোনো সাতে পাঁচে আমি কখনো ছিলাম না। কারো অন্তরালে কারো সমালোচনা করতে পছন্দ করি না। আমার একমাত্র সম্বল আমার সততা আর সরলতা। আমি জানি উনি আমার জন্য একটা কাজ অবশ্যই বের করে দিবেন। উনার পক্ষে সেটা সম্ভব।
ধরেই নিচ্ছি আজ বাসে মামু উঠবে। যেভাবে চোখের পাতা লাফাচ্ছে। সারাক্ষণ রাস্তায় নজর রাখছি। মাঝে মাঝে স্টপেছ ছাড়াও মামুরা উঠে পড়ে, আমাকে লাফিয়ে নামার প্রস্তুত থাকতে হবে। যার পকেটে ভালো করে নাস্তার পয়সা থাকে না, তার জন্য বাসের টিকিট নয়। ছোট বেলা থেকেই দেখে এসেছি সততার কোনো মূল্য নেই, শুধু বইয়ের পাতায় লেখা কিছু উপদেশ বাণীূ। এখন আমি আবার তা ছাড়তেও পারছি না। মিথ্যে বলতে পারি না, কোনো খারাপ চিন্তাও করতে পারি না। একজন আমাকে প্রতারণার মাধ্যমে আমার একটা কাজ ভাগিয়ে নিয়ে যায়, আমি তাকে বলতে পারি না, কী বলব? সেও হয়তো আমার চে বেশি কষ্টে আছে। তাছাড়া আমি প্রতিবাদের মতো ভাষাও জানি না। আমার মনে একটাই আশা বিধাতা নিশ্চয়ই আমার একটা রিযিকের ব্যবস্থা রেখেছেন। সময় হলে ঠিকই তা লেগে যাবে। এখন শুধু প্রতিক্ষা!!
সেলিম ভাইয়ের মুখ দেখে যেমন মনে হলো প্রশান্ত, তেমনি চোখও বলছে সুখবরের বার্তা। আমাকে দেখে বলল, তোমার জন্য বসে আছি! দেরী হলো যে
আমি ভেবে পেলাম না, সময়ের আগেই এসেছি। তারপরও বললাম, বাসের জন্য ...
নাস্তা করেছো?
নাহ। আমি এমনিতেই সকালের নাস্তা করি না।
চলো আগে নাস্তা করি।
আমাকে নিয়ে একটা বারে ঢুকে করনেত্তো ও কাফ্ফে খাওয়ালেন। বললেন, চলো একটা জায়গা যাই, একটা সুন্দর পস্তো (জায়গা ) পাওয়া গেছে, আমার নতুন সুপার মার্কটের জন্য দেখি সুবিধার হবে কীনা?
আমি দ্বিধা ঝেরে বললাম, আমার কাজের কী খবর?
আরে রাখো কাজ, এখন কি আর কাজ হাতে আসে? খুজে বের করতে হয়।
আপনি তো বলেছিলেন?
বলেছিলাম, এখনো পাই নি। সমস্যা নেই, অপেক্ষা করো, আমার সুপার মার্কেট চালু হলে তোমাকে ঢুকিয়ে দেবো। এখন চলো..
আমি উনার পিছন পিছন চললাম, এর ছাড়া আমার কী আর করার আছে। এই আলেমেন্টারঅ চালুর আগেও আমাকে বলেছিলৈন, এখানে আমার জন্য কাজের ব্যবস্থা করবেন। পরে সেখানে উনার এক বন্ধুকে ঢুকিয়ে বললেন, ছোট্টবেলার বন্ধু নইলে আমাকে ঢুকাতেন।
আমি অপেক্খাতে আছি আমার ভাগ্য ফেরার আশায়। সামনে সেলীম ভাই।
বাসে চড়ে সারাক্ষণ প্রতিটি স্টপেছে নজর রাখতে হচ্ছে আটাকের ইন্সপেক্টর (আমরা বিদেশীরা যাদের মামু বলে থাকি) আছে কীনা। আমার কাছে বাস টিকিট নেই। আগে এক ইউরো করে ছিল, এখন তা বাড়িয়ে দেড় ইউরো করা হয়েছে। মরার পরে খাড়ার ঘা। বাম চোখের নিচের পাঁপড়ি লাফাচ্ছে। আমার এমনই কপাল! শিক্ষিত লোকেরা যাকে কুসংস্কার বলে, আমার বেলা তাই ফলে। সব সময় দেখেছি বাম চোখের পাতা লাফালে কোনো না কোনো খারাপ প্রভাব ফলে। আজ যে কপালে কী আছে কে জানে, মামুর হাতে ধরা খেয়ে একশ ইউরো জরিমানা, নাকি সেলিম ভাই আসলে কোনো কাজ সংগ্রহ করতে পারেন নি?
সবাই কেমন যেন হয়ে গেছে। কেউ কথা দিয়ে কথা না রাখাটাকে প্যাসন হিসেবে নিয়েছে। আগে মানুষের চোখের ভাষা বোঝা যেতো এখন তাও যায় না, চোখের ভাষা যদি হয় মোলায়েম, মনের আঘাত তেমনি কঠিন।
সেলিম ভাই তেমন নন। এর আগে একবার আমাকে কিছু টেম্পরারি কাজ দিয়েছেন। আমি উনার অনেক কাজ হাসি মুখে করে দিয়েছি। কারো কোনো সাতে পাঁচে আমি কখনো ছিলাম না। কারো অন্তরালে কারো সমালোচনা করতে পছন্দ করি না। আমার একমাত্র সম্বল আমার সততা আর সরলতা। আমি জানি উনি আমার জন্য একটা কাজ অবশ্যই বের করে দিবেন। উনার পক্ষে সেটা সম্ভব।
ধরেই নিচ্ছি আজ বাসে মামু উঠবে। যেভাবে চোখের পাতা লাফাচ্ছে। সারাক্ষণ রাস্তায় নজর রাখছি। মাঝে মাঝে স্টপেছ ছাড়াও মামুরা উঠে পড়ে, আমাকে লাফিয়ে নামার প্রস্তুত থাকতে হবে। যার পকেটে ভালো করে নাস্তার পয়সা থাকে না, তার জন্য বাসের টিকিট নয়। ছোট বেলা থেকেই দেখে এসেছি সততার কোনো মূল্য নেই, শুধু বইয়ের পাতায় লেখা কিছু উপদেশ বাণীূ। এখন আমি আবার তা ছাড়তেও পারছি না। মিথ্যে বলতে পারি না, কোনো খারাপ চিন্তাও করতে পারি না। একজন আমাকে প্রতারণার মাধ্যমে আমার একটা কাজ ভাগিয়ে নিয়ে যায়, আমি তাকে বলতে পারি না, কী বলব? সেও হয়তো আমার চে বেশি কষ্টে আছে। তাছাড়া আমি প্রতিবাদের মতো ভাষাও জানি না। আমার মনে একটাই আশা বিধাতা নিশ্চয়ই আমার একটা রিযিকের ব্যবস্থা রেখেছেন। সময় হলে ঠিকই তা লেগে যাবে। এখন শুধু প্রতিক্ষা!!
সেলিম ভাইয়ের মুখ দেখে যেমন মনে হলো প্রশান্ত, তেমনি চোখও বলছে সুখবরের বার্তা। আমাকে দেখে বলল, তোমার জন্য বসে আছি! দেরী হলো যে
আমি ভেবে পেলাম না, সময়ের আগেই এসেছি। তারপরও বললাম, বাসের জন্য ...
নাস্তা করেছো?
নাহ। আমি এমনিতেই সকালের নাস্তা করি না।
চলো আগে নাস্তা করি।
আমাকে নিয়ে একটা বারে ঢুকে করনেত্তো ও কাফ্ফে খাওয়ালেন। বললেন, চলো একটা জায়গা যাই, একটা সুন্দর পস্তো (জায়গা ) পাওয়া গেছে, আমার নতুন সুপার মার্কটের জন্য দেখি সুবিধার হবে কীনা?
আমি দ্বিধা ঝেরে বললাম, আমার কাজের কী খবর?
আরে রাখো কাজ, এখন কি আর কাজ হাতে আসে? খুজে বের করতে হয়।
আপনি তো বলেছিলেন?
বলেছিলাম, এখনো পাই নি। সমস্যা নেই, অপেক্ষা করো, আমার সুপার মার্কেট চালু হলে তোমাকে ঢুকিয়ে দেবো। এখন চলো..
আমি উনার পিছন পিছন চললাম, এর ছাড়া আমার কী আর করার আছে। এই আলেমেন্টারঅ চালুর আগেও আমাকে বলেছিলৈন, এখানে আমার জন্য কাজের ব্যবস্থা করবেন। পরে সেখানে উনার এক বন্ধুকে ঢুকিয়ে বললেন, ছোট্টবেলার বন্ধু নইলে আমাকে ঢুকাতেন।
আমি অপেক্খাতে আছি আমার ভাগ্য ফেরার আশায়। সামনে সেলীম ভাই।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
জসীম উদ্দীন মুহম্মদ ১৫/০৯/২০১৪ভাল লেগেছে ---।