www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

দেশ এখন গোপালের খোজে

(১) ইজারা ও দু পয়সা লস

গোপাল একবার নদীর ঘাটে ঘাটের ইজারা নিয়েছিল। নদীর ফেরী ঘাটের ইজারাদার গোপাল ভাড়া ছয় পয়সা থেকে কমিয়ে চার পয়সা করে দিলে- যাতে গরিব লোকদের উপকার হয়। সে বছর দেশের অবস্থাও খুব ভাল ছিল না বলে গোপাল এই ব্যবস্থা নিলে। যাতে গরিব লোকেরা খুশি হয় পরপারে যাতে সুবিধা হয়। তখন একদল ছেলে ইজারাদার গোপালের সঙ্গে দেখা করে বললে, ভাড়া কমানো চলনো না মোটেই। এতে আমাদের খুব আপত্তি আছে। ভাড়া যেমন ছিল ঠিক তেমনিই থাকবে, একেবারেই কমানো চলবে না। এসব করলে একেবারে ভালো হবে না।
গোপাল তো তাদের কথা শুনে অবাক হয়ে বলে, ভাড়া বাড়ালেই জনসাধারন সচরাচর আপত্তি করে থাকে, কিন্তু ভাড়া কমালে তো কেউ আপত্তি করে না- প্রথম শুনলাম আপনাদের কাছ থেকে। গোপাল তখন তাদের জিজ্ঞেস করলে, ভাড়া কমানোতে আপনাদের এত আপত্তি কেন? লোকসান তো হবে আমার। আপনাদের আপত্তির কারন আমার মাথায় একেবারে ঢুকছে না।
তখন সেই অদ্ভূত ছেলেগুলো মুখ ব্যাজার করে বললে, তবে শুনুন মশায়, আমরা রোজ সাঁতেরে ওপারে যাই আর রোজই ভাবি ফেরী নৌকায় না গিয়ে সাঁতরে ওপারে যাওয়ার জন্য পারের খরচ বাবদ ছয় পয়সা আমাদের সঞ্চয় হচ্ছে। এখন আপনি ছয় পয়সার জায়গায় ভাড়া চার পয়সা করায় আমাদের যে প্রতিবারে সাঁতরে যাওয়ার জন্যে মাত্র চার পয়সা করে মনের খাতায় জমবে। তা হলে বুঝুন তো, দুপয়সা করে আমাদের লোকসান হচ্ছে। এই লোকসান কেমন করে মিটবে বলুন।
গোপাল ছেলেদের কথায় না হেসে পারল না। - আমরা এমনই স্বর্থবাজ??????

(২)
বুনো-ওল, বাঘা তেঁতুল

গোপালের শ্বশুরবাড়ির কাছাকাছি কাঙালপাড়া নামে একটি গ্রাম ছিল। তখনকার দিনে কাঙালপাড়ায় লোকদের ভিষণ বদনাম ছিল। তারা অজানা অচেনা লোককে নানাভাবে অযথা ঠাট্টা তামাসা করে নাজেহাল করত। বলতে গেলে, তখনকার দিনে কাঙালপাড়ার লোকদের পাজি বদনাম ছিল। বাইরের লোককে বাগে পেলেই নাস্তানাবুদ করে ছাড়ত। সেজন্য বাইরের লোক যে না জানত, সে ছাড়া আর কেউই ও পথ মাড়াত না জীবনে কখনও।
গোপাল একদিন বিশেষ কার্যোপলক্ষে শ্বশুরবাড়ি যাচ্ছিল ওই গ্রাম দিয়ে দিব্যি সেজেগুজে। পরণে পাটভাড়া শান্তিপুরী জমিদার কোঁচানো ধুতি, গায়ে ধবধবে ফর্সা কামিজ, কাঁধে গরদের চাদর। গোপালের সুন্দর সাজ পোষাক করার কারণ শালীর বিয়ে। গোপাল এখানকার কান্ডকারখানা যদি বা জানত কিন্তু অসাবধানাত বশতঃ সে বেখেয়ালে চলে এসেছে। কাঙালপাড়ার একটি পাজি লোক তাকে নাজেহাল করার জন্য তৎপর হলো, গোপালের বিশেষ ধরণের সাজ-পোষাক দেখে সে আরও খুশী হল। সেই পাজী লোকটা পাশের ডোবা থেকে বেশ কিছু কাদা সারা গায়ে মেখে গোপালকে আচমকা জড়িয়ে ধরে মড়া কান্না জুড়ে দিল। ওরে বাইরে এতদিন তুই কোথায় ছিলি রে। সেই এলি সেই এলি রে, আর কটা দিন আগে এলিনা কেন রে। মামু যে তোর কথা ভাবতে ভাবতেই পটল তুলল রে। এখন কি হবে রে। আমি যে আর তোর দুঃখে থাকতে পারছি না রে। গোপাল বুঝতে পারলে সে পাজি লোকের পাল্লায় পড়েছে।
গোপালের তখন পায়খানা পেয়েছিল, সে তখন বা হাতের চেটোয় পায়খানা করে, সেই লোকটার চেখে মুখে ছিটিয়ে দিয়ে বললে, ওরে আমার প্রাণের দাদা রে দুঃখ করিসনে রে- মামু কি কারও চিরকাল বেঁচে থাকে রে। আমার দুঃখে তোকে আর দুঃখ করতে হবে না রে আমাকে দেখ, আমি সব বুঝে কেমন শান্ত হয়েছি।
সেই পাজি লোকটা বেশ জব্দ হলো। তার চোখে মুখে গোপালের পায়খানা লাগায় সে থুথু করতে করতে আর বমি করতে করতে পুকুরের দিকে ছুটে গেল। পায়খানার গন্ধে সে আর থাকতে পারল না। সকলে বলল, কি হল, কি হল ব্যাপার খানা?
সেই থেকে পাজি লোকগুলো গোপালকে ঘাটাতে আর সাহস পেত না কোনদিন। আর গোপালও বুক চিতিয়ে গা দুলিয়ে দিব্যি সেই পথ দিয়ে যাওয়া আসা করত মনের আনন্দে
বিষয়শ্রেণী: কৌতুক
ব্লগটি ১৭৩৭ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ১৩/০৫/২০১৪

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast