www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

গণমুক্তির ২০ দফা

কোনো রাজনৈতিকদলের সদস্যই জনগণের জন্য রাজনীতি করে না। এই কথাটা দিবালোকের মত স্পষ্ট। তাই আজ দেশে এই অরাজকতা ও হিংস্রতা। সংবিধান আর আইনের দোহাই দিয়ে জনস্বার্থ বিরোধী কাজ হচ্ছে। আমাদের জন্য উপস্থাপন করা হচ্চে জগাখিচুড়ি একটা সংবিধান। যদি রাজনৈতিককর্মীরা দেশের জন্য, জন-সাধারণের জন্য রাজনীতি করেন তাহলে তারা আমার নিম্ন বর্ণিত দাবীগুলোতে একমত হবেন। সরকারের যদি সৎ সাহস থাকে (জনগণের কল্যাণের ব্যাপারে) এবং মৃত্যুর পরে স্রষ্ট্রার কাছে জবাবদিহিতায় বিশ্বাস করেন তাহলে তারা আমাদের সংবিধানে আমাদের "গণনীতি আন্দোলনের"২০ দফা অর্ন্তভূক্ত করবেন।


১. রাষ্ট্রের সকল নাগরিকদের সমানাধিকার নিশ্চিত করতে হবে। আইন ও সংবিধানের মাধ্যমে কোনোরকম বৈষম্য করা যাবে না। রাষ্ট্রপতি , প্রধানমন্ত্রী ও প্রধান বিচারপতি ব্যতীত আর কেউ বিশেষ শ্রেণি (VIP/CIP) বলে বিবেচিত হবে না।

২. নকল শ্রেণির নাগরিকদের জান, মাল, সম্মানের সুরক্ষার দায়িত্ব সরকারের। কোনো নাগরিকের জান-মাল-সম্মানের কোনোরূপ ক্ষতি সাধন হলে রাষ্ট্র দায়ি হবে। সরকার এজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে এবং ক্ষতিগ্রস্তের ক্ষতিপূরণ দেবে। কোনো নাগরিক যেকোনো উপায়েই হোক, নিহত হলে সরকার বাদি হয়ে দায়িদের বিরুদ্ধে যথোপোযুক্ত ব্যবস্থা নিবে এবং প্রথম রক্তপণ সরকার আদায় করবে। এ ক্ষেত্রে নিহতব্যক্তি দায়ি হলেও তার পরিবারকে রক্তপণ দেবে সরকার।

৩. রাষ্ট্রের সকল অসহায়-সম্বলহীন এতিম, বিধবা, অক্ষম ( বয়োবৃদ্ধ ও প্রতিবন্ধী) নাগরিকদের যাবতীয় ব্যয়ভার সরকার বহন করবে। শিক্ষিত বেকারদের যোগ্যতা অনুসারে মাসিক হাত খরচ প্রদান করবে।

৪. সকল নাগরিকদের শিক্ষা গ্রহণ, চাকুরি প্রদানে সমানাধিকার নিশ্চিত করতে হবে। এতে কোনো কোটা প্রথা থাকবে না।

৫. সকল শ্রেণির নাগরিকদের চিকিৎসা সেবা ও ঔষুধ বিনামূল‌্যে প্রদান করতে হবে। প্রতিটি জেলায় কৃষক, শ্রমিক আর শিক্ষকদের জন্য বিশেষায়িত হাসপাতাল থাকবে।

৬. কৃষক আর শ্রমিকদের ( পোষাক, ঔষুধ, চামড়া বা অন্যান্য সকল শ্রমিক) জন্য সরকার বিশেষ নিবন্ধনের ব্যবস্থা করবে এবং তাদের জন্য জীবন-বিমা নিশ্চিত করে অবসর ভাতা প্রদানের ব্যবস্থা করতে হবে।

৭. মূল রাজনৈতিক দল ব্যতীত আর কোনো অঙ্গ সংগঠন থাকতে পারবে না। (তবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র সংসদ, শিক্ষক সংসদ গণতান্ত্রিক ভাবে পরিচালিত হবে। এমনই ভাবে অন্যান্য পেশাজীবিদের মাঝে সংগঠন  থাকবে ও গণতান্ত্রিক উপায়ে তা পরিচালিত হবে।) সকল নাগরিকের যে কোনো (আইনের আওতায়) সংগঠন করার অধিকার (গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে) থাকবে। কোনো ব্যক্তি দুই মেয়াদ বা ১০ বছরের বেশি সংগঠনের প্রধান পদে থাকতে পারবে না।

৮. জাতীয় সংসদে নির্বাচিত ৩০০ আসনের পাশাপাশি সংরক্ষিত ৫০টি আসন থাকবে বিভিন্ন পেশাজীবিদের মধ্য থেকে ( যেমন কৃষক, শ্রমিক, মজদুর, শিক্ষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবি, ধর্মীয় নেতা ইত্যাদি) তারাও বিশেষভাবে নির্বাচিত হবেন এবং অন্যান্য নির্বাচিত সদস্যদের মত আইন প্রণয়নে সমান অধিকার রাখবে।

৯. সকল নাগরিকের রাজনীতি করার সমান সূযোগ পেলেও সুশাসনের জন্য সকল প্রকার বিচারকগণ, সকল সচিব, আইনশৃঙ্খলার জন্য যে কোনো বাহিনীর প্রধান (যারা একদিনের জন্যও দায়িত্বপ্রাপ্ত হবেন) সংসদ সদস্য, মন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি পদের জন্য অযোগ্য বিবেচিত হবেন।

১০. প্রধানমন্ত্রী নির্বাহী প্রধান হবেন বটে, কোনো মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিতে পারবেন না। তিনি সকল বিষয়ে সকল মন্ত্রণালয়ের তদারকি করবেন এবং রাষ্ট্রপতির কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য থাকবেন। তিনি দুই মেয়াদ বা ১০ বছরের বেশি উক্ত পদে থাকতে আর কোনোদিন পারবেন ন।

১১. রাষ্ট্রপতি ( সংসদ সদস্যদের ভোটে) দায়িত্বগ্রহণের পর চিরদিনের জন্য রাজনীতি করার অযোগ্য বিবেচিত হবেন এবং দুই মেয়াদ বা ১০ বছরের বেশি দায়িত্ব পালন করবেন না। রাষ্ট্রের প্রধানের পাশাপাশি, সশস্ত্রবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্বে থাকবেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলে কোনো মন্ত্রণালয় থাকবে না। পুলিশ ও সিমান্তরক্ষী বাহিনীর পাশাপাশি একটি এলিট ফোর্স থাকবে ( সরাসরি বিশেষ বি সি এসের মাধ্যমে)। কোনো ক্রমেই মেয়াদের আগে তাকে পদত্যাগ করানো যাবে ন।

১২. সরকারী, বেসরকারী সকল প্রকার বেতার, টেলিভিশন, পত্রিকা স্বাধীন ও স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান বলে গণ্য হবে। স্বাধীন মত প্রকাশে (ধর্মীয় রীতি নীতি ব্যতীত) কোনো নাগরিককে বাধাগ্রস্থ করা যাবে না। তবে কারো ধর্মীয় অনুভুতিতে ও চিন্তা-ধারায় আঘাত করা যাবে না। কোনো যোগাযোগ ( তার/ তারবিহীন/ ইন্টারনেটে) মাধ্যমে সরকারী নিয়ণ্ত্রণ আরোপ করা যাবে না।

১৩. বিচার বিভাগ সম্পূর্ণরূপে আলাদা ও স্বাধীন থাকবে। নিম্ন থেকে উচ্চ আদালত আপিল বিভাগের বিচারকগণের মাধ্যমে পরিচালিত হবে এবং নিয়োগ-বরখাস্ত হবে। প্রধান বিচারপতি রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে নিয়োগ প্রাপ্ত হবেন এবং তার কাছে জবাবদিহি থাকবে। কিন্তু অপরাধের সাজা মওকুফের ক্ষমতা রাখবেন না। যে কোনো বিচার এক মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে হবে।
কোনো মামলা কোনো প্রকারেই বাদী ব্যতীত প্রত্যাহার করা যাবে না।

১৪. সকল সক্ষম প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিক নির্বাচনের জন্য ( ভোট প্রদান ও প্রার্থী হতে) যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। কিন্তু মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিতে পারবে না। এই দায়িত্বের জন্য বিশেষ যোগ্যতা ও গুণাবলী সংসদ প্রণয়ন করবে।

১৫. সংসদ সদস্যগণ সংসদে আইন প্রণয়ন. পর্যালোচনা, সংশোধন, জনসাধারণের ভাগ্য উন্নয়ণে বিভিন্ন দিক নির্দেশনা ও উন্নয়ণ কার্যক্রম তদারকি ব্যতীত অন্য কোনো কর্মকান্ডে অংশ নিতে পারবে না। যেমন স্থানীয় ও রাষ্ট্রীয় উন্নয়ণের কাজে হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। (ইউনিয়ন পরিষদ ও উপজেলা পরিষদের মাধ্যমে স্থানীয় উন্নয়ণ তদারকি হবে) প্রশাসন উন্নয়ন কাজ করবে।

১৬. সকল নাগরিকের বাক ও চিন্তার প্রকাশের স্বাধীনতা থাকবে। রাষ্ট্রের নির্দিষ্ট স্থান ব্যতীত সভা, সেমিনার, মিছিল, মানব বন্ধন বা অন্যান্য কর্মসূচি করতে পারবে না। তেমনিভাবে নির্দিষ্ট স্থান ব্যতীত কোথাও কোনোরকম পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন, বিজ্ঞাপন লাগাতে পারবে না। আন্দোলনের নামে হরতাল, অবরোধ, ধর্মঘট এই জনপদে নিষিদ্ধ বলে ঘোষিত হবে।

১৭. দূর্নীতি দমন ও শাস্তি প্রদানের জন্য স্বাধীন কমিশন থাকবে। তাদের কোনো কাজে সরকার হস্তক্ষেপ করতে পারবে না ( আইন প্রণয়নে বা বিচার কাজে)। তারাই প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়ন করবে সংবিধানের আলোকে। এই সংস্থা সরাসরি সংসদের কাছে জবাবদিহি করলেও রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে সকল নাগরিকদের বিরুদ্ধে তারা তদন্ত করতে পারবে কোনো রকম শর্ত ছাড়াই। প্রয়োজনে তাদের স্বেচ্ছাচারিতার জন্য সংসদ (সদস্যদের ভোটাভুটিতে) ব্যবস্থা নিতে পারবে।

১৮. রাষ্ট্রপতি,প্রধান মন্ত্রী ও মন্ত্রীমহোদয়গণ ( যখন থেকে দায়িত্ব ভার গ্রহণ করবে) আজীবনের জন্য রাষ্ট্রীয় ভাতা পাবেন ( সংসদ কর্তৃক নির্ধারিত) এবং তাদের কোনো আলাদা উপার্জনের ব্যবস্থা থাকবে না। দুই মেয়াদের পর তারা বা তাদের পরিবারের দুই পুরুষ ( পিতা-মাতা. সন্তান ও সন্তানদের সন্তান) পর্যন্ত কেউ উপরোক্ত পদের জন্য বিবেচিত হবেন না। তারা রাজনৈতিক দলের নীতি-নির্ধারণী কোনো পদে থাকবেন না।

১৯. কেউ সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলে (মেয়াদকালীন) রাজনৈতিক দলের কোনো নীতি-নির্ধারণী পদ ও কমিটিতে থাকতে পারবেন না। এবং তারাও মেয়াদকালীন সময়ে রাষ্টীয় ভাতা ব্যতীত কোনো বিকল্প উপার্জন করতে পারবে না।

২০. নির্বাচন কমিশন সম্পূর্ণ স্বাধীন ও আলাদা থাকবে। নির্বাচনকালীন সময়ে সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে (সংবিধানের ধারার ভিতরে) যে কোনো আইন প্রনয়ন ও প্রয়োগের ক্ষমতা প্রাপ্ত হবেন। জাতীয় সংসদ নির্বাচনকালীন প্রশাসন ( রাষ্ট্রপতির কাছে জবাবদিহিতায়) সম্পূর্ণরূপে কমিশনের অধীনে থাকবে।






×××××সকলের মতামত ও পরামর্শ কাম্য।
বিষয়শ্রেণী: সমসাময়িক
ব্লগটি ৭৭১ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ১০/০১/২০১৪

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast