অতি চালাকের গলায় দড়ি
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে যাব ভর্তি পরীক্ষা দিতে। আমি এর আগে কোনোদিন যমুনার ওপার যাই নি । আমার সাথে যাচ্ছেন ফুফাত ভাই রফিক, যিনি এর আগে কয়েকবার উত্তরবঙ্গ ঘুরে এসেছেন। সুতরাং সঙ্গী একজন অভিক্ষ লোক। তিনি অতিচালাক এবং বাচাল প্রকৃতির। কম পয়সায় উত্তরালাকায় যাব, তাই ঢাকা বা চন্দ্রা থেকে ভাল পরিবহণের টিকিট না কেটে প্রথমে জয়দেবপুর থেকে লোকাল বাসে ৪০ টাকা করে দুজন টাঙ্গাইল শহরে আসি। মহাসড়ক থেকে রাজশাহীগামী বাসে উঠে দেখি সিট তো দূরের কথা ভিতরে প্রবেশই মুশকিল। প্রবেশপথে আরো কয়েকজনের সাথে দাঁড়িয়েই যেতে হচ্ছে। বাসের সুপারভাইজার এসে ভাড়া চাইতেই রফিক ভাইয়ের আক্কেল গুড়ুম। জনপ্রতি একশো করে দিতে হবে, এর কমে হবে না। আমরা প্রথমে ৫০ করে ও পরে আরো ২০ দিতে চাইলাম। সুপারভাইজার রাজি হল না। ফুফাত ভাই বললেন, এখন ১০০ দিলে তো আমাদের ভাড়া মোট দেড়শ করে পড়ে; তাহলে এভাবে কষ্ট করে আসার কী দরকার ছিল। ১৫০ টাকায় ভাল পরিবহণেই রাজশাহী যাওয়া যায়। আমি বললাম, আপনার জন্যই তো এই অবস্থা। উনি করুণ মুখে আমার দিকে তাকিয়ে রইলেন। সুপারভাইজারের সাথে আমার এই বাচাল ভাইয়ের অনেক বাক-বিতন্ডা হয় এবং ফলশ্রুতিতে আমাদের "এলেঙ্গা" নামক স্থানে নামিয়ে দেয়। লজ্জায় আমার মাথা নিচে নেমে আসে। পাশে চেয়ে দেখি উনি ভাবলেশহীন মুডে প্রকৃতি দেখছেন।
পরবর্তীতে সিরাজগঞ্জগামী বাসে উঠে সিরাজগঞ্জ বাসষ্টেন্ডে নামি। এর ফলে আমার প্রথম যমুনা সেতু দেখা হয় খুব কাছ থেকে। যেহেতু ঝুলে ঝুলে যাচ্ছি। সিরাজগঞ্জ থেকে আরেক বাসে যাই ইশ্বরদী। যদিও সেখানে যাওয়ার দরকার ছিল না। আমার এই সবজান্তা ভাইয়ের অতি চেনা ভাণে সেখান থেকে যাই পাবনার রাজাপুর বাজারে। সেখানে উনার একদূরাত্মীয় থাকেন। আমাদের এই পর্যন্ত ভ্রমণে খরচ হয় জনপ্রতি ১৫০ টাকা। যদিও এখনো আরো ৪০/৫০ টাকার ভ্রমণ বাকি। এখানে আজ রাতে থেকে আগামীকাল বিকেলে রাজশাহী যাব।
একেই বলে অতি চালাকের গলায় দড়ি!
পরবর্তীতে সিরাজগঞ্জগামী বাসে উঠে সিরাজগঞ্জ বাসষ্টেন্ডে নামি। এর ফলে আমার প্রথম যমুনা সেতু দেখা হয় খুব কাছ থেকে। যেহেতু ঝুলে ঝুলে যাচ্ছি। সিরাজগঞ্জ থেকে আরেক বাসে যাই ইশ্বরদী। যদিও সেখানে যাওয়ার দরকার ছিল না। আমার এই সবজান্তা ভাইয়ের অতি চেনা ভাণে সেখান থেকে যাই পাবনার রাজাপুর বাজারে। সেখানে উনার একদূরাত্মীয় থাকেন। আমাদের এই পর্যন্ত ভ্রমণে খরচ হয় জনপ্রতি ১৫০ টাকা। যদিও এখনো আরো ৪০/৫০ টাকার ভ্রমণ বাকি। এখানে আজ রাতে থেকে আগামীকাল বিকেলে রাজশাহী যাব।
একেই বলে অতি চালাকের গলায় দড়ি!
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
ইসমাত ইয়াসমিন ০৫/১১/২০১৩হা হা হা, অতি চালাকের গলায় দড়ি।। পড়ে মজা পেলাম।
-
রাখাল ২৪/১০/২০১৩দারুণ!
-
সাখাওয়াতুল আলম চৌধুরী. ২১/১০/২০১৩আসলেই অতি চালাকের গলায় সবসময়ই দড়ি পরে।আমি নিজেই এর উদাহরণ।অনেক সময় আমিও এই বিড়ম্বনায় পড়ি।একটু কম খরচ কিংবা একটু সময় বাঁচাতে আমাকে এই পর্যন্ত অনেক বিড়ম্বনা সইতে হয়েছে।ধন্যবাদ বাস্তব অভিজ্ঞতার জন্য।
-
সুবীর কাস্মীর পেরেরা ২০/১০/২০১৩হা হা হা কি আর করা
-
আরজু নাসরিন পনি ২০/১০/২০১৩হাহাহাহা
অতি চালাকের গলায় দড়ির পারফেক্ট উদাহরণ ।
তবে যমুনা সেতু দেখা হয়েছে খুব কাছ থেকে তাই বা কম কিসে ...
কোন নির্দিষ্ট সাবজেক্ট টার্গেট আছে ?
অনেক শুভকামনা রইল, সাজিদ ।।