তাজা মাছ
বাবার সাথে বাজারে যেতাম। যেতাম বলছি তার কারণ আছে। বাবার সঙ্গে এখন আর যেতে পারি না। বাবার সাথে দুরত্ব বেড়েছে এমনটি নয়। বাবা অনেকদিন হল ঘরের বাইরে বের হন না। যদিও কোনো কোনো শীতের দিনে কালেভদ্রে বাড়ির ছাদে উঠেন। সিড়িতে পা ফেলে উঠতে থাকেন। পরিবারের অন্যরা চেয়ে থাকেন বাবার দিকে; ঠিকঠাক উঠতে পারছেন তো! বাবা ছাদে উঠে কিছুক্ষন হাঁটেন। তারপর ছাদে থাকা একটি চেয়ারে বসে মাথাটা স্থির করতে চান। কিন্তু বাবার মাথা অনবরত কাঁপতে থাকে। একসময় বাবার মাথা সামনের দিকে ঝুঁকে পড়ে। কেউ ভাববে, বাবা হয়তো ঘুমিয়ে পড়েছেন। অথচ বাবার তখন আর মাথাটা সোজা রাখার মতো শক্তিটুকুন থাকে না। বাবা এভাবে আর কিছুসময় থাকলেই টলে পড়ে যাবেন। এমনটি কয়েকবার হয়েছে যে আমরা ছাদে উঠে বাবাকে ছাদের মেঝেতে নির্জীব পড়ে থাকতে দেখেছি। ‘বাবা বাবা’ চিৎকার করে বাবাকে জড়িয়ে ধরে বাবার বুকের কাছে কান পেতে শুনেছি- বাবা ঠিক আছেন তো। বাবার তখন নড়াচড়া করার বিন্দুমাত্র স্নায়ুশক্তি নেই। আমাদের তখন ধরাধরি করে বাবাকে ছাদ থেকে ঘরের ভেতর নিয়ে আসতে হয়।
বাবা ছাদে থাকলে আমরা কিছুক্ষন পরপর ছাদে উঠি- বাবা কী করছেন দেখার জন্য। বাবার এই স্নায়ুরোগের চিকিৎসা অনেকদিন ধরে চলছে। প্রতিবেশী দেশে গিয়েও লাভ হলো না। বাবা দিন দিন ঘরের ভেতর বন্দী হয়ে যেতে লাগলেন। বাবাকে বাইরে নেওয়ার সাহস আমাদের আর রইল না।
আমি এখন একাই বাজারে যাই। মাছগুলো টিপে টিপে দেখি নরম হয়ে গেছে কিনা। মাথার ফুলকা খুলে টকটকে লালচে রঙ খুঁজে বেড়াই। নিজেকে খুব অসহায় মনে হয়। বারবার বাবার হাতটাই হাতড়ে ফিরি। বাসায় বাজার নিয়ে ফিরলে অন্যদের মুখে পঁচা মাছ আনার দমকা হাওয়া আমার গায়ে আগের মতো লাগে না। বাবা ছাড়া আমার যে তাজা মাছ চেনা হয় না, হতে পারে না।
তাজা মাছগুলো হারিয়ে গেছে আমার জীবন থেকে। বাবা নিষ্পলক কম্পমান মাথা নিয়ে আমার দিকে চোখ তোলার চেষ্টা করেন। পারেন না। আমি কাছে গিয়ে বাবার হাতে আমার হাতটা রাখি। বাবা হাত মুঠো করার চেষ্টা করেন। একসময় ক্লান্ত হয়ে হাল ছেড়ে দেন। আমি আস্তে করে আমার দু হাতের মুঠোর ভেতর বাবার দুটো হাতকে জড়িয়ে ধরি। বাবা কি তখন হেসে উঠেন, বুঝতে পারি না।
বাবা ছাদে থাকলে আমরা কিছুক্ষন পরপর ছাদে উঠি- বাবা কী করছেন দেখার জন্য। বাবার এই স্নায়ুরোগের চিকিৎসা অনেকদিন ধরে চলছে। প্রতিবেশী দেশে গিয়েও লাভ হলো না। বাবা দিন দিন ঘরের ভেতর বন্দী হয়ে যেতে লাগলেন। বাবাকে বাইরে নেওয়ার সাহস আমাদের আর রইল না।
আমি এখন একাই বাজারে যাই। মাছগুলো টিপে টিপে দেখি নরম হয়ে গেছে কিনা। মাথার ফুলকা খুলে টকটকে লালচে রঙ খুঁজে বেড়াই। নিজেকে খুব অসহায় মনে হয়। বারবার বাবার হাতটাই হাতড়ে ফিরি। বাসায় বাজার নিয়ে ফিরলে অন্যদের মুখে পঁচা মাছ আনার দমকা হাওয়া আমার গায়ে আগের মতো লাগে না। বাবা ছাড়া আমার যে তাজা মাছ চেনা হয় না, হতে পারে না।
তাজা মাছগুলো হারিয়ে গেছে আমার জীবন থেকে। বাবা নিষ্পলক কম্পমান মাথা নিয়ে আমার দিকে চোখ তোলার চেষ্টা করেন। পারেন না। আমি কাছে গিয়ে বাবার হাতে আমার হাতটা রাখি। বাবা হাত মুঠো করার চেষ্টা করেন। একসময় ক্লান্ত হয়ে হাল ছেড়ে দেন। আমি আস্তে করে আমার দু হাতের মুঠোর ভেতর বাবার দুটো হাতকে জড়িয়ে ধরি। বাবা কি তখন হেসে উঠেন, বুঝতে পারি না।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
Susovan jana ২২/০৫/২০১৭বাঃ বেশ ভাল
-
রুবেল চন্দ্র দাস ২১/০৫/২০১৭Taja mach ekhon vaja bro
-
মুহম্মদ কবীর সরকার(Mahdi Kaabir) ২১/০৫/২০১৭মন খারাপের গল্প, ভাল লাগলো তবে