বই
আজ আমার জন্মদিন, তুমি মনেই রাখতে পারলে না, তুমি আমার প্রতি একেবারেই উদাসীন। আমি চলে যাবো। স্নিগ্ধার চোখে জল। এই নিয়ে দু দুটো জন্মদিন পেরিয়ে গেল, তুমি তোমার কাজ নিয়েই ব্যস্ত থাকো। আমি কিছু বলতে যাবো স্নিগ্ধা আবার মায়াবী কন্ঠে বলে উঠল- আর না, আমি ব্রেক আপ চাই, তুমি তোমার রাস্তা মাপো। আমার জন্য এমনিতেই তোমার অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে, তুমি নিজেই বলেছ। আমি ওর মুখটাকে আমার দিকে টেনে আনলাম, আর কিছু বলো না, এবার দেখো ম্যাজিক। এই দেখো, কী এটা। স্নিগ্ধার এক কথা, আর দেখতে হবে না। আমি গিফট খুলে দিলাম। সে চুপ, আর কোনো শব্দ নেই।সে নাক ডুবিয়ে গন্ধ নিচ্ছে। চুলগুলো ছড়িয়ে আছে স্নিগ্ধার, আমি আলতো করে হাত বুলালাম। সে হারিয়ে গেছে, একেবারেই হারিয়ে গেছে। বইয়ের চেয়ে প্রিয় তো তার কাছে আর কিছু নেই। পূরবী বসুর এক সেট বই যখন তার চোখের সামনে তখন আমাকে আর কীই বা দরকার। আমার খুব ভালো লাগে এই দুর্বলতাটুকু। সে বইয়ের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়েছে সেই ছোটবেলা থেকে। আমি বলি, বইই তোমার সব, আমি তো কিছু নই। আসলে, আমি খুব খুশি যে, আমার চেয়ে সে বইকে খুব ভালোবাসে। এই ভালোবাসাটাই খাঁটি, শেষ পর্যন্ত সঙ্গ দিতে পারে। বইয়ের শব্দ, ভাষা, মলাট, পৃষ্টা সবকিছু জুড়ে থাকে মায়া-মমতা-বন্ধুত্ব-অভিজ্ঞতা।
বিয়ের পর স্নিগ্ধাকে কাঁদতে দেখি নি। প্রতিদিন চলে তার বই পড়া, চলে সাংসারিক কাজ। ওর ইচ্ছের উপরই ছেড়ে দিয়েছি ওর ভবিষ্যতকে। ও অবশ্য চাকরি নেয় নি। ঘরের বাইরে-ভেতরে এক অপূর্ব জগত তৈরি করে নিয়েছে; বাগান করেছে। রাত জেগে ওকে লেখালেখি করতে দেখেছি। দেখেছি, সকাল হলেই আমার মা-বাবার জন্য কোনো কিছু করতে এতটুকু পিছপা সে হয় নি। পরিশ্রমের চিহ্নগুলো তার সুশ্রী মুখে হালকা আঁচড় টানলেও সে দমে যায়নি, ক্রমাগত এগিয়ে গেছে ভালোবাসা নিয়ে। কর্মই তার কাছে সব ভালোবাসা; এ কি বই থেকে শেখা দর্শন!
বেশ কিছু দিন আমার মন খুব বিচলিত। সামজিক অন্তর্জালে একজনের সঙ্গে পরিচয়। সাক্ষাতে কথা হলো; খুব চটপটে, দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা আছে ওর মধ্যে। ওকে কবিতার তেজী নায়িকাটির মতো মনে হয়। এভাবে যেতে যেতে আমি যেন তার প্রতি আবেগী হয়ে উঠি। আবেগের এই মহাসমারোহে আমি খেঁই হারালাম। ভাবলাম, জীবন তো এমনই; ধরাবাঁধা নিয়ম দিয়ে কি জীবন চলে। ধুর, ছাই, যা চলছে তাই ভালো। মেয়েটির কথা স্নিগ্ধাকে বলতেই সে নতুন বই পাওয়ার মতো চুপ হয়ে গেল; সে ব্যাপারটি আশা করে নি। কিন্তু আমিও আমার আবেগকে লুকিয়ে হেলাফেলা করতে পারব না। বিয়ে হলো, একটু নীরবে। আমার দ্বিতীয় বিয়ে বিথীর সঙ্গে।
বছর খানেক গেল। স্নিগ্ধা তার ঘরে। আমি ওর ঘরের দিকে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ বাইরে থেকে শোরগোল শোনা গেল। আমি বাইরে গিয়ে দেখি একদল সাংবাদিক। বীথির মডেল হওয়ার ইচ্ছে ছিল, তবে কী!! সাংবাদিকরা আমাকে দেখে চেঁচিয়ে বলল, এখানে কি লেখিকা স্নিগ্ধা চৌধুরী থাকেন? বীথি উত্তর দিল, না তো, এখানে কেউ থাকেন না।
আমি স্নিগ্ধার রুমে। সে লিখছে গভীর মনোযোগে, গভীর বিশ্বাসে। এই আরাধনা অদ্বিতীয় ছন্দে এগিয়ে চলছে যেখানে আমাদের মতো কেউ বিচ্ছেদ ঘটাতে পারে না।
বিয়ের পর স্নিগ্ধাকে কাঁদতে দেখি নি। প্রতিদিন চলে তার বই পড়া, চলে সাংসারিক কাজ। ওর ইচ্ছের উপরই ছেড়ে দিয়েছি ওর ভবিষ্যতকে। ও অবশ্য চাকরি নেয় নি। ঘরের বাইরে-ভেতরে এক অপূর্ব জগত তৈরি করে নিয়েছে; বাগান করেছে। রাত জেগে ওকে লেখালেখি করতে দেখেছি। দেখেছি, সকাল হলেই আমার মা-বাবার জন্য কোনো কিছু করতে এতটুকু পিছপা সে হয় নি। পরিশ্রমের চিহ্নগুলো তার সুশ্রী মুখে হালকা আঁচড় টানলেও সে দমে যায়নি, ক্রমাগত এগিয়ে গেছে ভালোবাসা নিয়ে। কর্মই তার কাছে সব ভালোবাসা; এ কি বই থেকে শেখা দর্শন!
বেশ কিছু দিন আমার মন খুব বিচলিত। সামজিক অন্তর্জালে একজনের সঙ্গে পরিচয়। সাক্ষাতে কথা হলো; খুব চটপটে, দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা আছে ওর মধ্যে। ওকে কবিতার তেজী নায়িকাটির মতো মনে হয়। এভাবে যেতে যেতে আমি যেন তার প্রতি আবেগী হয়ে উঠি। আবেগের এই মহাসমারোহে আমি খেঁই হারালাম। ভাবলাম, জীবন তো এমনই; ধরাবাঁধা নিয়ম দিয়ে কি জীবন চলে। ধুর, ছাই, যা চলছে তাই ভালো। মেয়েটির কথা স্নিগ্ধাকে বলতেই সে নতুন বই পাওয়ার মতো চুপ হয়ে গেল; সে ব্যাপারটি আশা করে নি। কিন্তু আমিও আমার আবেগকে লুকিয়ে হেলাফেলা করতে পারব না। বিয়ে হলো, একটু নীরবে। আমার দ্বিতীয় বিয়ে বিথীর সঙ্গে।
বছর খানেক গেল। স্নিগ্ধা তার ঘরে। আমি ওর ঘরের দিকে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ বাইরে থেকে শোরগোল শোনা গেল। আমি বাইরে গিয়ে দেখি একদল সাংবাদিক। বীথির মডেল হওয়ার ইচ্ছে ছিল, তবে কী!! সাংবাদিকরা আমাকে দেখে চেঁচিয়ে বলল, এখানে কি লেখিকা স্নিগ্ধা চৌধুরী থাকেন? বীথি উত্তর দিল, না তো, এখানে কেউ থাকেন না।
আমি স্নিগ্ধার রুমে। সে লিখছে গভীর মনোযোগে, গভীর বিশ্বাসে। এই আরাধনা অদ্বিতীয় ছন্দে এগিয়ে চলছে যেখানে আমাদের মতো কেউ বিচ্ছেদ ঘটাতে পারে না।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
মো: রিদওয়ানুল ইসলাম রিফাত ১৮/০৫/২০১৭সুন্দর
-
শেলি ১৭/০৫/২০১৭সুন্দর
-
মধু মঙ্গল সিনহা ১৭/০৫/২০১৭আসলে ভালো লাগার মতই ছিল লেখাটা।অনেক ধন্যবাদ।