www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

নির্যাতন

-কী বলছিস, এমন কেন করলি তুই, তোকে কতবার বললাম, মাথাটা ঠান্ডা রাখ, তুই যেই সেই! এখন ঠেলা কীভাবে সামলাবো, আমার মাথায় ধরছে না। হাসপাতালে নাকি এখনও রুমের ভেতর, বেঁচে আছে?
-বেঁচে আছে দেখলাম আব্বা, পেট উঠানামা করছে। ব্লিডিং বন্ধ করব কীভাবে?
-ধুর শালা, চল আমার সঙ্গে, দেখি কী করা যায়। মোবাইল সরিয়ে রেখেছিস তো?
-আব্বা, তুমি এখন যেও না, মোবাইল আমার কাছেই আছে।
-যাবো না মানে! মরে গেলি কী করবি? তখন ডাবল ঝামেলা। তোর শ্বশুর-শ্বাশুরীকে হাতে রাখতে হবে, তা না হলে বিপদ। রুমটা খোল দেখি, চাবি কই?
- আব্বা, আমি সব সামলে নেব, তুমি রুমে ঢুকো না, আমি ব্যবস্থা করছি।
-তোর আসলে মাথাটা পুরাটাই মোটা, আমি না দেখলে তুই সামলাবি কীভাবে!
-আব্বা, ওর গায়ের সবকিছুতো ছিঁড়ে ফেলেছি, একটা সুতাও নাই।
-শালা, হারামজাদা, দরজা খোল।
রুমের ভেতর নিকষ অন্ধকার, বিছানার চাদর মাটিতে পড়ে আছে, ফ্যান ঘুরছে, কোনো শব্দ নেই। রবিনের বাবা জামিল সাহেব সবকিছু খুঁটে খুঁটে দেখছেন আর নীরবে ইশারায় নির্দেশ দিচ্ছেন। জামিল সাহেবের পায়ের তালুতে পিচ্ছিল কী যেন লাগল, আঁতকে উঠলেন তিনি। রক্ত!! খাটের নিচ থেকে রক্ত ভেসে আসছে। রবিন খাটের নিচে ঢুকে শরীরটাকে ধাক্কা দিতে লাগল, জামিল সাহেব দুহাতে টেনে বের করে আনলেন। ঝুমুর তার পুত্রবধূ। পুত্রবধূর নগ্ন দেহে হাত বুলালেন শ্বশুর। মুখ নামিয়ে কান পেতে বুকের শব্দ শুনলেন, বেঁচে আছে। খাটে তোলা হলো ঝুমুরকে। ঝুমুর চোখ বুজে আছে ব্যথায়। সে সব টের পাচ্ছে। তার শ্বশুর তার সারা দেহে হাত বুলিয়ে কিছু একটা মাখছেন। ক্ষতটার ভেতর কী যেন রাখলেন। যন্ত্রণা হলো, তবু কিসের যেন ভালো লাগা, ব্লিডিংটা হয়তো বন্ধ করতে পেরেছেন তিনি।

ঠোঁট নাড়িয়ে ঝুমুর কোনো রকমে উচ্চারণ করল, আর মেরো না রবিন, আমাকে একটা মাস সময় দাও, আমি বাড়ি থেকে বাকি টাকাটা নিয়ে আসব। ঝুমুর ঠোঁট নাড়াতে থাকল, ধীরে, ধীরে, শব্দহীন, বেঁচে থাকার তাগিদে।।
বিষয়শ্রেণী: গল্প
ব্লগটি ৮০১ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ১৭/০৫/২০১৭

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast