বারান্দা পর্ব
কেমন হতো তাকে যদি না চিনতাম! কেমন হতো তার বাড়ির সরু বারান্দায় উদ্ভিদ্গুলোতে ফুল না ধরলে! জানি না কেমন হতো। শুধু ভাবি, কেমন হতো! ভাবতে ইচ্ছে হয়, ভাবতে খারাপ লাগে না। যদি তার বাড়ির পাশে আমাদের বাড়িটির জায়গা না হতো। তবে কেইবা জানত আমরা কোথায় থাকতাম, এই শহরে নাকি অন্য কোনো পাহাড়তলিতে। সবাই বলত ওখানে যেও না, সেখানে দিনে দুপুরে মানুষ লুকিয়ে লুকিয়ে চলে; কখন কোথায় কার উপর বিপদ এসে পড়ে তার কোনো ঠিক-ঠিকানা নেই। আমার বাবা তবুও একবুক আশা নিয়ে শহরটির পাহাড়তলিতে জায়গা নিয়ে বাড়ি বানালো, বাড়ির নাম রাখল "সবুজ পাহাড়"। বাবার পাহাড় ভালো লাগে, পাহাড়ের গন্ধ আছে এমন জায়গা খুঁজেছে অনেক দিন। কয়েক জনে কয়েক রকম পাহাড়তলির হদিস দিয়েছে, বাবার পছন্দ এটাই। আহা, বাড়ি তো নয় যেন বাড়ির ভেতর এক টুকরো শান্তি। চারদিকে কত সবুজ, কত পাখি, কত আনন্দ। এভাবে সবুজ দেখে দেখে এক পড়ন্ত বিকেলে সেই সরু বারান্দায় চোখ পড়ল। বারান্দার ভেতর লতানো উদ্ভিদ্গুলো বেয়ে বেয়ে বারান্দার বাইরে উঁকি মারছে। ছোট ছোট ফুলে ভরা বারান্দাটি হয়ে উঠেছে এক নতুন সবুজের হাতছানি দেওয়া অখন্ড প্রকৃতির নিদর্শন। আমি নিরন্তর দেখি, ভাবি এই বুঝি পাখি এল; কিচির মিচির শব্দে কবিতার ঝংকার বাজবে। আমার বিশ্বাস নিছক মিথ্যে হলো না, সত্যিই একদিন পাখি এল। পাখির রঙটি ছিল হলুদ। হলুদের আভায় পাখিটির মুখের উপর চোখ পড়তেই খানিকটা স্বচ্ছ মধ্য দুপুরের আভা খেলে গেল। চুড়ি নাকি নূপুর বেজেছিল সেদিন! সে আমি বুঝতে পারি নি। পাখি এসে সবুজের অবিচ্ছিন্ন সৌন্দর্যে হারিয়ে গেল। আমি খুঁজে বেড়ালাম, সে কী রকম পাখি!
পাখির রঙটি হলো হলুদ, এঁকে গেল সবুজ
বিকেল বুঝি সুয্যি ডোবার, সুয্যি হলো লাল
এমন পাখি আর দেখি নি, ঠোঁটের ভাজে লাজ
সন্ধ্যার আঁধার আর নামে নি, ভরা আলোর সাজ।
বিকেল বুঝি সুয্যি ডোবার, সুয্যি হলো লাল
এমন পাখি আর দেখি নি, ঠোঁটের ভাজে লাজ
সন্ধ্যার আঁধার আর নামে নি, ভরা আলোর সাজ।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
মধু মঙ্গল সিনহা ১৫/০৫/২০১৭বেশ ভালো লাগলো।
-
সাঁঝের তারা ১৪/০৫/২০১৭ভাল লাগল।
-
ফয়জুল মহী ১৪/০৫/২০১৭অত্যন্ত সুন্দর অনুভূতি