যখন যেখানে যেমন (বৈকালিক পর্ব)
কবিতার নিবেদিত ভাষা আর সহজ সরল স্বাভাবিক এক রূপের অস্বাভাবিক চাটুকারবৃত্তি প্রেমিকাকে বেশ আনন্দ দিত সেটা আমি খুব বুঝতে পারতাম যখন থেকে মনোবিজ্ঞানের বইগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়া শুরু করলাম। আমাকে বলা হলো, তুই ইঞ্জিনিয়ারিং পড়, কিংবা ডাক্তারি। শেষেরটা মোটামুটি লাগলেও অচৈতন্যের মোহ আমাকে ততদূর যেতে দেয় নি। আমি শেষে মনের ওপর ইঞ্জিনিয়ারিং আর ডাক্তারি করার ব্রত নিলাম। যে মনটাকে এতটা স্নেহ আর ভালোবাসার মায়াজালে বড় করেছি সেটাকে কোনো একজন কোনো এক ফাঁকে চৈত্রের কাঠফাঁটা রোদ্দুর দিয়ে গেল। ভেবেছিলাম, মাটি খন্ড-বিখন্ড হয়ে আমাকে পাতালে বসবাসের রাস্তা করে দিয়েছে, বরং উল্টোটা ঘটে গেল। চোখের জল মুছতে না মুছতেই হাজির হলো মন নিয়ন্ত্রণকারী বিপরীত লিঙ্গ; বহু চেষ্টা করলাম, নিজের মন নিজের কাছে রাখা গেল না তবুও। আমি জ্যোতিষ শাস্ত্র না জানলেও বিশ্বাস করতাম, বিশ্বাস না করে উপায়ও নেই; সেদিন দেখলাম সত্যি সত্যি আমার মন কেড়ে নেওয়া প্রেমিকা দিব্যি চলে গেল। সেই সঙ্গে দিয়ে গেল অবিশ্বাসের নাগপাস। কাউকে বিশ্বাস করতে না পারার দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে বেশ বেগ পেতে হলো আমাকে। আমি সেদিন থেকে সন্ন্যাস নিলাম। মেয়েদের প্রথম প্রথম খুব ঘৃণা করতাম, দেখলাম এতেও হচ্ছে না; রাতের অসতর্ক মনে কোন ফাঁকে ঢুকে যাচ্ছে সেই হাবিজাবি। মেয়েদেরকে দেবী ভাবতাম তারপর, এতেও কতটুকু হলো! সবকিছু যখন ব্যর্থ ঠিক তখনই সে এল। তার হাতে আমার হাত, তার ঠোঁটে আমার ঠোঁট...এভাবে যেতে যেতে পথ হারিয়ে যখন বুঝলাম আমি আর মনোবিজ্ঞানী হতে পারব না, তখন বাইরে চলে যাওয়ার জন্য ঊঠে-পড়ে লাগলাম। আমার বাইরে যাওয়ার আগেরদিন সে মারা গেল, বলে গেল, তুমি সেখানে ভালো থেকো।
সেই পুরোনো শেওলা পড়া পুকুরটার কথা মনে পড়ত, শব্দগুলো কেমন আচ্ছন্ন করে রাখত আমাকে; পুকুরটির হাওয়া আর জলের শব্দ খুব তাল-লয় মেনে চলত যেটা আমি আমার জীবনে প্রতিফলন ঘটাতে পারিনি বলে পুকুরটির সামনে আর কোনোদিন যাওয়ার সাহস পাইনি।
সেই পুরোনো শেওলা পড়া পুকুরটার কথা মনে পড়ত, শব্দগুলো কেমন আচ্ছন্ন করে রাখত আমাকে; পুকুরটির হাওয়া আর জলের শব্দ খুব তাল-লয় মেনে চলত যেটা আমি আমার জীবনে প্রতিফলন ঘটাতে পারিনি বলে পুকুরটির সামনে আর কোনোদিন যাওয়ার সাহস পাইনি।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
তরুন ইউসুফ ০২/০৪/২০১৫ভাল লাগল
-
সুব্রত সামন্ত (বুবাই) ৩১/০৩/২০১৫প্রচলিত কথায় অপ্রচলিত মূর্ছনা শুনলাম।
-
অ ৩১/০৩/২০১৫বেশ আবেগী লেখা ।