www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

দেখা না হলেই ভালো ছিলো তবুও দেখা হলো

২০১৩ সালের মাঝামাঝি এসে
টুকিটাকি ঝগড়ার সুত্রধরে
১যুগেরও বেশী সময়ের বন্ধুত্ব ও দেড় বছরের প্রেমের সম্পর্কের সমাপ্তি ঘটিয়ে দিলরুবা নার্গিসের সাথে আমার ব্রেকাপ হয়ে যায়।

সেদিন দিলরুবা টুইটারে আমাকে আনফলো করে দিয়ে তার টুইটে লিখেছিলো “I Know you’re best but i hate you”
টুইট পড়ে আমি তাকে ব্লক করে দিয়ে একাউন্ট ডিএক্টিভ করে দেই আজও সে একাউন্টে লগিন করিনি।

সেদিন বার বার অবুঝের মত কান্না পাচ্ছিলো,
যার সাথে প্রাইমারীতে নাচানাচি করেছি হাইস্কুলে দোস্ত দোস্ত অভিমান;
কলেজের করিডোর আর বন্ধু মহলে যাদের নাম অমর সাথী সেই সাথীদের জুটি আর নেই।

বার বার কানে বাঁজছিলো দিলরুবার ভুবন মাতানো সম্মোহিত শিষ (দুই আঙুল মুখে পুড়ে অদ্ভুত কায়দায় শিষ বাজাতে পারতো সে) সেই শব্দটা আর শোনা যাবেনা; ভাবতেই ভিতরটায় ফায়ার এর্লাম বাঁজছিলো যেন।

লজ্জা, ঘৃনা অপমানে অনিচ্ছা সত্ত্বেও;
বন্ধু/সহপাঠীদের কিছু না জানিয়ে,
তার কিছু দিনে পরেই আমি ফুফুদের কাছে ইন্ডিয়াতে চলে যাই।

আমরা কেউ কারো যোগাযোগ রাখিনা,
খোঁজ খবর নেইনা এভাবে কর্মব্যস্ততায় দেশ প্রবাস ছুটোছুটি করে কেটে গেল ৬ বছর।

এই ছয় বছরে শুধু একটি প্রশ্ন মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিলো কেমন আছে দিলরুবা কি করছে আজকাল?
আমি সেদিন যতটুকু যন্ত্রনা পেয়ে মর্মাহত ছিলাম,
সেও কি সে রকম কষ্ট পেয়েছে নাকি পায়নি?

১বছর পর্যন্ত বন্ধুদের থেকে তার সম্পর্কে টুকিটাকি আপডেট পেয়েছিলাম,
সে ঢাকার বাহিরে ভর্তি হওয়ায় তেমন কিছু জানাতে পারেনি কেউ।

গত বৃহস্পতিবার,
বিকেলে চিরচেনা জয়দেবপুর রেলস্টেশনের প্লাটফর্মে দাড়িয়ে ময়মনসিংহ থেকে ছেড়ে আসা ট্রেনের অপেক্ষা করছি,
উদ্দেশ্য মেজ আপুকে রিসিভ করা।

স্টেশনে নানা ধরনের মানুষ আর বিভিন্ন ফেরিওয়ালা, ভিখারী দেখে ধুমপানের প্রয়োজন অনুভব করতেই ফাঁকা স্হানে দাড়িয়ে ঠোটের ভাটায় আগুন জ্বালিয়ে দিলাম।

ধোঁয়া উড়ছে, আমি ট্রেনের অপেক্ষারত!
হঠাৎ মেয়েলী কন্ঠে কে যেন বলে উঠলো,
“আবার ঝাঁকরা চুল রেখেছো, সিগারেট খাচ্ছো”
ঘাড় ঘোরাতেই আমার সমস্ত শরীর ঘামতে শুরু করলো;
এ আর কেউ নয় আমার স্বয়ং দিলরুবা!!

আমি কোন কথা বলতে পারছিনা যেন বোবায় ধরেছে
ট্রেন এসে কখন চলে গেলো তাও মনে নেই;
দিলরুবা আমার একটা হাত ধরে টানতে টানতে ততক্ষনে স্টেশনের বাহিরে নিয়ে এসেছে।

পকেটের ভিতরে রাখা ফোনটার ভুমিকম্পে যেন হুশ ফিরে পেলাম,
স্কীনে ভাসছে ‘মেজ আপু’ আপুর কল রিসিভ করে হ্যালো বলার আগেই আপু বলে উঠলো
“তোকে বিরক্ত না করে আমি রিকশা নিয়ে বাসার কাছাকাছি পৌছে গেছি তুই ওর সাথে আড্ডা দে”
দিলরুবা একটা রিকশা নিলো,
চুপচাপ ওর পাশে বসতেই রিকশা ওয়ালাকে বললো
“একটা ভাল সেলুনে নিয়ে যান”
আমি ভয়ে কাঁপছি,
দিলরুবা শক্ত করে ধরে আছে আমার একটা হাত
রিকশা ছুটছে সেলুনের দিকে…..
বিষয়শ্রেণী: গল্প
ব্লগটি ৪২২ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ০৫/১২/২০১৯

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

  • চমৎকার লেখা
  • আমি-তারেক ০৫/১২/২০১৯
    সুন্দর উপস্থাপনা...
  • গল্প ভালো হয়েছে।
  • অসাধারণ একটি লেখা। পড়ে ভালো লাগলো।
    • নুর হোসেন ০৮/১২/২০১৯
      ধন্যবাদ দাদা,
      আপনার চমৎকার মন্তব্যে অনুপ্রেরণা পেলাম।
      ভাল থাকুন।
 
Quantcast