অকৃতজ্ঞ
তুমি জানো কি মা?
তোমার বিশ্বাস্ত আদরের বড় ছেলে আমাকে ভিটে ছাড়া করেছে,
শুধু কবরস্হানটা ছাড়া সব নাকি তাদের?
দলিল পত্রও তাই বলে মা!
আমি ভিটে-মাঠি হীন যাযাবর;
গুজর গুজর খোটা আমার সাথে যায় না-
ঐ যে তোমার বড় ছেলের দুলালী বউ ভেংচি দেয় বাদরের মত,
এক বুক বিষাদ নিয়ে এখন তাই পরবাসী।
নিজের বাড়ী নেই-
বলে ভেবো না পথে ঠাঁই করে নিয়েছি;
এতটা নিচে নামতে হয়নি,
একটা চাকুরী করছি, হাজার বিশেক টাকা পাই;
বাড়ী ভাড়া দিতে হয়না-
কি ভাবছো ঘরজামাই আছি?
ভুল মা ভুল,
তুমি আর বাবা মিলে আমাকে সম্পদ থেকে বঞ্চিত করেছো;
ভাগ্য আমাকে তা করেনি-
সম্পদ পাইনি বটে একটা বাড়ি পেয়েছি,
তোমার চোখের কাঁটা কৃষ্ণকলির বাসা;
ভাগ্যিস আমি তার চোখের কাঁটা হয়নি
নির্ঘাত পথে বসে যেতাম-
বিপদে অভিভাবক হয়ে সেই এখন মাথায় ছাতা ধরেছে।
বাবা তো এখন তাবলীগে ব্যস্ত
বড় ছেলের খাচ্ছে দাচ্ছে মসজিদে ঘুরছে,
এই যে মা বাবার এত আরাধনা প্রভু ভক্তি-
আমাকে অধিকার থেকে বঞ্চিত করার পাপ থেকে বাঁচার জন্যই কি?
নাকি আমার মঙ্গল কামনা করছে,
ছোট ছেলের খোঁজ খবর না নেওয়াই বুঝি-
আর্শীবাদ!
হতেও পারে, উদাসীন পিতার নীরব প্রায়শ্চিত্ত।
আমি খারাপ কাউকো সম্মান দেইনা চরম বেয়াদব,
জ্ঞান হওয়ার পর থেকে পরিবারের সবাই তাই বলে এলে-
কাকে অসম্মান করেছি একটু দেখিয়ে দাও তো মা;
কখনো কোন নারীর সতীত্ব নস্ট করিনি,
মদ গাঁজা ছুইনি;
গভীর রাতে বাড়ী ফিরিনি
বাপের পকেটের টাকাও সরাইনি-
স্কুল-কলেজের পরীক্ষায় রেজাল্ট ভালো না হোক,
পাশ করেছি;
তোমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়াটা সহ্য করতে পারিনি বলে-
তোমার বড় ছেলেকে হাড় জোড়া লাগাতে পাঠিয়েছিলাম তাই আমি বেয়াদব!
কেমন তুমি মা?
পরক্ষনেই বড় ছেলের পক্ষ নিলে,
নিজের আঘাত অপমানের চেয়ে তোমার বড় ছেলে তোমার প্রিয় ছিলো-
কিন্তু আমার প্রিয় ছিলে তুমি,
তুমি কখনো তা অনুভব করোনি;
সেদিন গৃহপালিত পশুর মত তার পা ধরে ক্ষমা চেয়েছি শুধু তোমার কথায়-
নয়তো তুমি ছাড়া কার সাহস ছিলো মা,
আমাকে কাপুরুষের পা ছোঁয়ায়?
শুনেছি ছোট থাকার সময় সবার আদরের ছিলাম,
তাদের কোন আদর চোখে পড়েনি আমার-
শুধু তোমার মমতা ছাড়া আমার কিছু মনে নেই,
নাহ নেই;
বাবাকে ভুলে যাচ্ছি
বোনদেরকে ভুলে গেছি অতীতে-
ভাইকে মনে রাখার প্রশ্নই আসেনা,
তোমাকেও ভুলে যাবো মা;
দশমাস দশদিন পেটে রেখে দুনিয়ায় এনেছো বলে অকৃতজ্ঞ তোমাকে ভুলে যায়নি।
বাড়ী ছাড়তে চাইনি মা,
ও বাড়ীতে আমার মন পড়ে আছে-
শীতের সকালে ধোঁয়া উঠা ভাপা পিঠা চোখে ভাসছে;
তুমি পান খেয়ে আঙুলের চুন মুছছো হেলে পড়া ডালিম গাছে,
বাবা মজা করছে বড় ছেলের সন্তান তার নাতী-নাতনীর সাথে!
কল্পনায় অনুভব করছি এখনও আমার সব আছে শুধু আমি তোমাদের মাঝে নেই-
সম্পদ আমি চাইনি মা,
তোমাদের সাথে মিলে মিশে থাকতে চেয়েছি;
চেয়েছিলাম আমারও একটা সংসার হবে-
আমিও বাবা হবো আমার ছেলে মেয়ে তোমাদের আদরে বড় হবে।
শুধু তোমাদের সাক্ষরে লিপিবদ্ধ একটা দলিল-
আমার সমস্ত আশা ধূলিস্মাৎ করে দিয়েছে মা ধূলিস্মাৎ!
আমি অবহেলিত আমাকে তোমরা ঠকিয়েছো,
ইচ্ছাকৃত না হোক তবুও ভুল তবুও আমি সম্পদচ্যুত-
তোমার আদরের ভরসার বড় ছেলে তোমাদের সাথে সাথে আমাকেও প্রতারিত করেছে,
ভীষন ঠকিয়েছে!
শেষবার যখন ওর সাথে হাত মিলিয়ে তোমার কবরের উপর বাঁশগুলো সাঁজিয়ে দিচ্ছিলাম-
তোমার সাথে সাথে পৃথিবীর সকলের বিশ্বাস আমি সেখানে ফেলে এসেছি,
কোনদিন কাউকো বলিনি মা আজ বলি-
আমার মত প্রতিটি অবহেলিত যুবক তার পরিবারকে ঘৃনা করে আমিও করি;
ক্ষমা করো মা….
আমি তোমাকেও ঘৃনা করি!
ঘৃনার চেয়ে বড় কোন ক্ষমা আর নেই।
(৫ই আগস্ট ২০১৭)
তোমার বিশ্বাস্ত আদরের বড় ছেলে আমাকে ভিটে ছাড়া করেছে,
শুধু কবরস্হানটা ছাড়া সব নাকি তাদের?
দলিল পত্রও তাই বলে মা!
আমি ভিটে-মাঠি হীন যাযাবর;
গুজর গুজর খোটা আমার সাথে যায় না-
ঐ যে তোমার বড় ছেলের দুলালী বউ ভেংচি দেয় বাদরের মত,
এক বুক বিষাদ নিয়ে এখন তাই পরবাসী।
নিজের বাড়ী নেই-
বলে ভেবো না পথে ঠাঁই করে নিয়েছি;
এতটা নিচে নামতে হয়নি,
একটা চাকুরী করছি, হাজার বিশেক টাকা পাই;
বাড়ী ভাড়া দিতে হয়না-
কি ভাবছো ঘরজামাই আছি?
ভুল মা ভুল,
তুমি আর বাবা মিলে আমাকে সম্পদ থেকে বঞ্চিত করেছো;
ভাগ্য আমাকে তা করেনি-
সম্পদ পাইনি বটে একটা বাড়ি পেয়েছি,
তোমার চোখের কাঁটা কৃষ্ণকলির বাসা;
ভাগ্যিস আমি তার চোখের কাঁটা হয়নি
নির্ঘাত পথে বসে যেতাম-
বিপদে অভিভাবক হয়ে সেই এখন মাথায় ছাতা ধরেছে।
বাবা তো এখন তাবলীগে ব্যস্ত
বড় ছেলের খাচ্ছে দাচ্ছে মসজিদে ঘুরছে,
এই যে মা বাবার এত আরাধনা প্রভু ভক্তি-
আমাকে অধিকার থেকে বঞ্চিত করার পাপ থেকে বাঁচার জন্যই কি?
নাকি আমার মঙ্গল কামনা করছে,
ছোট ছেলের খোঁজ খবর না নেওয়াই বুঝি-
আর্শীবাদ!
হতেও পারে, উদাসীন পিতার নীরব প্রায়শ্চিত্ত।
আমি খারাপ কাউকো সম্মান দেইনা চরম বেয়াদব,
জ্ঞান হওয়ার পর থেকে পরিবারের সবাই তাই বলে এলে-
কাকে অসম্মান করেছি একটু দেখিয়ে দাও তো মা;
কখনো কোন নারীর সতীত্ব নস্ট করিনি,
মদ গাঁজা ছুইনি;
গভীর রাতে বাড়ী ফিরিনি
বাপের পকেটের টাকাও সরাইনি-
স্কুল-কলেজের পরীক্ষায় রেজাল্ট ভালো না হোক,
পাশ করেছি;
তোমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়াটা সহ্য করতে পারিনি বলে-
তোমার বড় ছেলেকে হাড় জোড়া লাগাতে পাঠিয়েছিলাম তাই আমি বেয়াদব!
কেমন তুমি মা?
পরক্ষনেই বড় ছেলের পক্ষ নিলে,
নিজের আঘাত অপমানের চেয়ে তোমার বড় ছেলে তোমার প্রিয় ছিলো-
কিন্তু আমার প্রিয় ছিলে তুমি,
তুমি কখনো তা অনুভব করোনি;
সেদিন গৃহপালিত পশুর মত তার পা ধরে ক্ষমা চেয়েছি শুধু তোমার কথায়-
নয়তো তুমি ছাড়া কার সাহস ছিলো মা,
আমাকে কাপুরুষের পা ছোঁয়ায়?
শুনেছি ছোট থাকার সময় সবার আদরের ছিলাম,
তাদের কোন আদর চোখে পড়েনি আমার-
শুধু তোমার মমতা ছাড়া আমার কিছু মনে নেই,
নাহ নেই;
বাবাকে ভুলে যাচ্ছি
বোনদেরকে ভুলে গেছি অতীতে-
ভাইকে মনে রাখার প্রশ্নই আসেনা,
তোমাকেও ভুলে যাবো মা;
দশমাস দশদিন পেটে রেখে দুনিয়ায় এনেছো বলে অকৃতজ্ঞ তোমাকে ভুলে যায়নি।
বাড়ী ছাড়তে চাইনি মা,
ও বাড়ীতে আমার মন পড়ে আছে-
শীতের সকালে ধোঁয়া উঠা ভাপা পিঠা চোখে ভাসছে;
তুমি পান খেয়ে আঙুলের চুন মুছছো হেলে পড়া ডালিম গাছে,
বাবা মজা করছে বড় ছেলের সন্তান তার নাতী-নাতনীর সাথে!
কল্পনায় অনুভব করছি এখনও আমার সব আছে শুধু আমি তোমাদের মাঝে নেই-
সম্পদ আমি চাইনি মা,
তোমাদের সাথে মিলে মিশে থাকতে চেয়েছি;
চেয়েছিলাম আমারও একটা সংসার হবে-
আমিও বাবা হবো আমার ছেলে মেয়ে তোমাদের আদরে বড় হবে।
শুধু তোমাদের সাক্ষরে লিপিবদ্ধ একটা দলিল-
আমার সমস্ত আশা ধূলিস্মাৎ করে দিয়েছে মা ধূলিস্মাৎ!
আমি অবহেলিত আমাকে তোমরা ঠকিয়েছো,
ইচ্ছাকৃত না হোক তবুও ভুল তবুও আমি সম্পদচ্যুত-
তোমার আদরের ভরসার বড় ছেলে তোমাদের সাথে সাথে আমাকেও প্রতারিত করেছে,
ভীষন ঠকিয়েছে!
শেষবার যখন ওর সাথে হাত মিলিয়ে তোমার কবরের উপর বাঁশগুলো সাঁজিয়ে দিচ্ছিলাম-
তোমার সাথে সাথে পৃথিবীর সকলের বিশ্বাস আমি সেখানে ফেলে এসেছি,
কোনদিন কাউকো বলিনি মা আজ বলি-
আমার মত প্রতিটি অবহেলিত যুবক তার পরিবারকে ঘৃনা করে আমিও করি;
ক্ষমা করো মা….
আমি তোমাকেও ঘৃনা করি!
ঘৃনার চেয়ে বড় কোন ক্ষমা আর নেই।
(৫ই আগস্ট ২০১৭)
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
মোহন দাস (বিষাক্ত কবি) ২৫/০১/২০২০অনন্য কাব্য
-
কুয়াশা ২৫/১২/২০১৯অনবদ্য । শুভকামনা রইলো!
-
পি পি আলী আকবর ২৩/১২/২০১৯দারূণ লাগলো
-
শঙ্খজিৎ ভট্টাচার্য ২৩/১২/২০১৯অনবদ্য গদ্য কবিতা
-
সাইয়িদ রফিকুল হক ২২/১২/২০১৯গল্প হলেই ভালো হতো।
-
ফয়জুল মহী ২২/১২/২০১৯খুবই সুন্দর l অনেক ভালোলাগা রেখে গেলাম