www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

সিদ্ধান্ত

তুমি কি আমাকে বিয়ে করতে চাও না? অধরার প্রশ্নটা শুনে কয়েক সেকেন্ড চোখ বন্ধ করে থাকলো আবীর, কি ব্যাপার,ল চোখ বুজে আছো কেনো? আমার প্রশ্নের উত্তর দাও। ধিরে ধিরে চোখ খুলে আবীর সরাসরি তাকালো অধরার দিকে,পলকহীন  দ্রিষ্টিতে কিছু বোঝার চেষ্টা  করলো কিছুক্ষন, তারপর মৃদূ অথচ দৃঢ় কন্ঠে বললো,
না, চাইনা,অন্তত এখন তো নয়ই, আমার কিছু দায়িত্ত আছে অধরা,সেটা তুমি জানো, আমি সারথপরের মত নিজেকে নিয়ে এখন এভাবে ভাবতে পারিনা।
কয়েক  মূহুরত ছলছল চোখে আবীরের দিকে অপলক তাকিয়ে রইলো, তারপর বরাবরের মতই ধীর স্থীর কন্ঠে বললো ভেবে চিনতে বলছো, কথাগুলো?
হ্যা তাই ভেবেই বলছি,একটু কি কেপে গেলো আবীরের কন্ঠটা!
কি এমন ঘটলো এই চার পাচ দিনের মধ্যে, যে এতো  দৃঢ়তার সাথে "না" বলতে পারলে, অভিমানে কঠিন শোনালো অধরার কন্ঠ।
তুমি বিত্ত  বৈভবের মধ্যে বেড়ে ওঠা মানুষ, কিছু বিষয় তোমার বুঝতে সময় লাগবে অধরা, আমি নিজেকে এখোনো ঠিক প্রস্তুত মনে করছিনা, আমার আরো সময় লাগবে। তাছাড়া এভাবে পারবারিক অসম্মতিতে একটা স্থায়ী সম্পরকের সুচনা হোক আমি মেনে নিতে পারছিনা।
আমি চেষ্টা  করেছি আবীর,বাবাকে আমাদের  বিষয়টা বলেছি, তিনি তোমার সাথে দেখা করে কথাও বলতে চেয়েছেন, কিন্তু হঠাত করে আমার মতের বিরুদ্ধে গিয়ে, দুদিনের মধ্যে তার প্রবাসী বন্ধুর ছেলের সাথে বিয়ে প্রায় পাকা করে ফেলেছেন,কয়েকদিনের মধ্যেই ওরা দেশে এসে আনুসঠানিকতা সম্পন্ন করতে চায়। এ অবস্থায় আমাদের একটা সিদ্ধান্তে আসা খুবই জরুরী, আমিও চাইনি এভাবে কাজি অফিসে গিয়ে বিয়ে করতে। কিন্তু এছাড়াতো কোনো উপায়ো নেই।
আমারো কোনো উপায় নেই অধরা, এই মুহুরতে আমার পক্ষে তোমাকে বিয়ে করা সম্ভব নয়। আমি নিরুপায়। কিছুটা ভারী সরে এক নিশ্বাসে বলে থামলো আবীর।
সহসা ঝটকা দিয়ে উঠে দাড়ালো অধরা হাতের সেল্ফোন আর ব্যাগ খামচে ধরে অনেকটা চিবিয়ে চিবিয়ে অথচ কাপা কন্ঠে বলল, তুমি কি জানো এভাবে আমাকে প্রত্যাক্ষান করা আর আমদের সম্পর্ককে অসবিকার করা একই ব্যাপার, বিয়েতে তোমার যদি এতই আপত্তি তাহলে আমাদের উচিত এখানেই এই সম্পর্কএর ইতি টানা, এবং আমার ধারনা তুমি যে কোন কারনেই হোক তাই চাইছো। এই মুহুরত থেকে আমিও তাই চাই,তোমার মত একজন ভীরু কাপুরুষের সাথে জীবন কাটাতে হচ্ছেনা,ব্যাপারটা আমার জন্য যথেষ্ট সস্তিদায়ক। কথা শেষ করেই ঘুরে ছুটে বেড়িয়ে গেলো অধরা। স্থির নিশ্চল দ্রিস্টিতে তাকিয়ে বোধহয় শেষবারের মত দেখলো অধরাকে আবীর,
অধরা কোনোদিন জানবেনা ওর বাবা ডেকে নয় হল থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে কথা বলেছেন আবীরের সাথে, শুনতে চাননি কিছুই,নির্দেশ বা সিদ্ধান্ত দিয়েছেন কঠোর এবং স্পষ্ট ভাবে
প্রবল প্রতাপশালী শিল্পপতি রাজনিতীবিদ জাফরুল্লাহ সাহেবের সাথে শর্ত মোতাবেক আবীরকে আগামীকালই  মাকে নিয়ে সিংগাপুরের উদ্যেশ্যে রওনা দিতে হবে, জাফর গ্রুপের সিংগাপুর ব্রাঞ্চের তার ভালো বেতনে চাকুরীর বন্দোবস্ত হয়েছে। ছোট বোন টি আপাতত হলে থেকে পড়াশোনা করলেও তার প্রতিও খেয়াল রাখবেন বলে কথা দিয়েছেন জাফর সাহেব।শর্ত মেনে নেয়া ছাড়া আর কোনো পথ খোলা রাখেননি জাফরুল্লাহ চৌধুরি,ছিলো প্রচ্ছন্ন হুমকি আর বিশেষ করে আবীরের মা বোনের নিরাপত্তার বিষয়, একেবারে হৃদয় হীন হননি দিয়েছেন আর্থিক নিরপত্তার নিশ্চয়তা, বিনিময়ে কেড়ে নিয়েছেন একমাত্র মেয়ে অধরার ওপর আবীরের ভালোবাসার অধিকার।
বিষয়শ্রেণী: গল্প
ব্লগটি ৭৯৬ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ১১/০৬/২০১৫

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

  • ২৬/০৬/২০১৫
    বেশ ভাল ।।
  • জহরলাল মজুমদার ২৪/০৬/২০১৫
    ভাল
  • একটু কেমন যেন লাগলো। তবে সব মিলিয়ে স্বাদটা মন্দ নয়।
  • মোবারক হোসেন ১২/০৬/২০১৫
    ভালবাসা কেড়ে নিলেও ফিরে আসে অন্তরে-----।ধন্যবাদ
    আপনাকে।
  • ভালো লাগল
 
Quantcast