আমাদের শিক্ষা সফর ও বাংলাদেশের গৌরবের ইতিহাস
সারারাত উত্তেজনায় ঠিকমত ঘুমুতেই পারিনি কারন পরেরদিন ছিল আমাদের শিক্ষা সফর।আমাদের স্কুল থেকে প্রতিবছর শিক্ষা সফরে নিয়ে যাওয়া হয়। ক্লাশ ওয়ানে গিয়েছি নটরডেম কলেজ। টুতে গিয়েছি শিশুমেলায়, আর থ্রিতে আমরা অনেক জায়গায় গিয়েছি। সেদিন সকালে স্কুলে পৌঁছেই সবাই মিস্ এর কান ঝালাপালা করে দিয়েছিলাম,"মিস্ কখন বাস আসবে? মিস্ কখন বাস আসবে?" অবশেষে টিফিনের পর বাস এল আমরা সবাই লাইন করে বাসে যেয়ে উঠলাম। আমি আমার বেষ্ট ফ্রেন্ড রাখির সাথে বসলাম।মিস্ বলল, আমরা প্রথমে শিখা চিরন্তন দেখবো। বাস চলতে শুরু করল সবাই খুব মজা করছিলাম।সোনার গা হোটেলের সামনে দিয়ে সোজা এসে শাহবাগ পার হয়ে সোহরাওয়ার্দি উদ্যানে এসে পৌছুলাম। বাস থেকে নেমে অনেক খানি হাঁটার পর শিখা চিরন্তনের সামনে এসে পৌঁছলাম। আমরা দেখলাম সেখানে আগুন জ্বলছে। মিস্ বললেন এখানে ৭ই মার্চে বঙ্গবন্ধু ভাষণ দিয়েছিলেন। স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন। তখন বাঙ্গালীরা আগুনের শিখার মত গর্জে উঠেছিল। এই আগুন যতদিন জ্বলবে ততদিন বাঙ্গালীরা জেগে থাকবে। এরপর আমাদের নিয়ে যাওয়া হলো শহীদ মিনারে। জুতা খুলে সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে -আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারী..... এই গানটা গেলাম। অনেকে আমাদের ছবি তুললো ভিডিও করলো। আমরা বাংলা বইতে পড়েছি এখানে বাঙলা ভাষার জন্য কত মানুষ প্রাণ দিয়েছে। মিস বললেন আমরা সেই সকল ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এখানে এসেছি।এরপর মিস আমাদের জগন্নাথ হলে নিয়ে গেলেন বললেন এখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হিন্দু ছাত্ররা থাকে। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান হানাদার বাহিনী এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক ছাত্র শিক্ষক কে মেরে ফেলেছে।আমরা দিঘির পাশে একটি হলরুমে বসে খাওয়া দাওয়া করলাম।এরপর সবাই লাইন ধরে বাসে উঠলাম। ফেরার পথে আমার আরেক ফ্রেন্ড সামারা আমার পাশে বসল। ওর পুরো নাম সামারা সাইদ। তাই মজা করে কেউ ওকে সাইদুল্লাহ বলে, কেউ বরে সামরুল আবার কেউ জামরুলও বলে।অবশ্য সামারা এগুলো নিয়ে মাথা ঘামায় না।এভাবে মজা করতে করতে কখন যে ফার্মগেট পৌছে গেছি টেরই পাইনি। আশা করি আগামী বছর ক্লাশ ফোরে মিস্ রা আমাদেরকে আরো সুন্দর জায়গায় নিয়ে যাবেন।
হৃদয়ে একাত্তর
হৃদয়ে একাত্তর
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
রিফাহ্ তাসনিয়া ১৭/১২/২০১৩দোয়া করবেন। আপনি আমার সব লেখা পড়েছেন?
-
সাখাওয়াতুল আলম চৌধুরী. ১৭/১২/২০১৩সত্যিই তোমার লেখার দারুণ ক্ষমতা আছে। দোয়া করি আম্মু তুমি আরও ভালো লিখতে পারো। তোমার ভাবনা গুলো খুবই চমৎকার।
-
ইসমাত ইয়াসমিন ১২/১২/২০১৩আম্মু অনেক সুন্দর লিখেছ।শুভকামনা রইল তোমার জন্য।
-
সুবীর কাস্মীর পেরেরা ১২/১২/২০১৩মুগ্ধ হয়ে পড়লাম