থাগস অব হিন্দুস্থান মুভি প্লট এবং ভয়ংকর খুনিদের ইতিহাস
আমি প্রচুর মুভি দেখি। আমাকে অনেকটা মুভি ম্যানিয়াকও বলতে পারেন। বাংলা হিন্দি, তামিল ইংরেজি, ইরানি সহ বিভিন্ন ভাষার মুভি দেখা হয়। শুধু গল্পটা এবং বানানোটা ভাল হলেই চলে। তবে বেশি দেখা হয় ইংরেজি মুভি। কারণ অন্য ভাষার চেয়ে ইংরেজি ভাষাটা মোটামুটি বোঝা যায় আর ওদের বানানোটাও অনেক ভাল থাকে। হিন্দি মুভি দেখি তবে হিন্দি ভাষাটা আমি কম বুঝি বলে দেখে সুবিধে করতে পারিনা। তারপরও দেখা হয়। হিন্দি মুভির অনেক অভিনেতাই আমার প্রিয়। তবে সবচেয়ে প্রিয় অভিনেতার কথা যদি বলি তবে তিনি অবশ্যই আমির খান। আমির খানের মুভি মানেই অন্য কিছু। আনন্দের সাথে কিছু অর্থবহ প্রাপ্তি। আমির খান অভিনীত সর্বশেষ মুভি দঙ্গল কেন যেন এখনও দেখে উঠতে পারিনি। তবে বর্তমানে আমির খানের যে মুভিটি নিয়ে সবচেয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে এবং যে মুভি দেখার জন্য আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছি তা থাগস অব হিন্দুস্তান। আগ্রহের কারণ মুভি প্লট।
থাগস বাংলায় পরিবর্তন করলে দারায় ঠগি। ঠগি শব্দটি সংস্কৃত ঠগ শব্দ থেকে এসেছে। ঠগ অর্থ-ঠক বা প্রতারক বা ধূর্ত বা প্রবঞ্চক। ভারত শাসনের সূত্রে যেসব শব্দ ইংরেজি ভাষায় যুক্ত হয়েছে থাড সেসবের একটি। শব্দটির মানে, ধপ করে পড়া বা আঘাত করা। এ শব্দটি সংস্কৃত ঠগি শব্দ থেকে এসেছে।
ঠগি কিঃ ঠগি বলতে বোঝায় বিশেষ শ্রেণীর দস্যু দল, যারা পথিকের গলায় রুমাল বা কাপড় জড়িয়ে হত্যা করত। ঠগি বলতে আরও বোঝায় ঠগির কার্য, দস্যুবৃত্তি। শত শত বছর ধরে ভারতবর্ষের বিভিন্ন জায়গায় হারিয়ে যেত অগণিত পথিক। কোথায়, কিভাবে হারাত সেটি জানত না কেউ। কোন এক জাদুবলে যেন তারা মুছে যেত পৃথিবীর বুক থেকে ঐতিহাসিকদের মতে, সপ্তদশ শতকের মাঝামাঝি ও তার পরের কয়েকশ’ বছরে প্রতি বছর গড়ে হাজার চল্লিশেক মানুষ নিখোঁজ হতো। গিনেস বুক অব রেকর্ডসের হিসাবে এ সংখ্যা মোট ২০ লাখ! নিরীহ পথিকদের হত্যা করে মালামাল যারা লুট করত ভারতীয় কিংবদন্তিতে আমরা তাদের ঠগি বলে চিনি। ঠগি ১৭ ও ১৮ শতকের প্রথমদিকে ভারতের পথিকদের জন্য মূর্তিমান এক আতঙ্কের নাম। এরা সব সময় চলত দলবেঁধে। একলা পথিক পেলেই সাদরে তাকে দলের সঙ্গে ভ্রমণের আমন্ত্রণ জানাত। সহযাত্রীদের সৌহার্দ্যরে নিরাপত্তা আর বিশ্বাসের উষ্ণ আমেজে, পথচলার ক্লান্তিতে ঢলে পড়ত শিকার। গরম খাবার পেটে পড়ায় বন্ধ হয়ে আসত চোখ। আর তখনই আসত সর্দারের হুকুম, বাসন মেজে আনার!
বাসন মেজে আন” – বাক্যটি, আপাতদৃষ্টিতে একজন গৃহিণীর খুবই সাধারণ একটা ঘরোয়া আদেশ বলেই মনে হবে সবার কাছে ! কিন্তু কখনো কখনো বিষয়টা তা নাও হতে পারে। এই যেমন- এই বাক্যটাকেই ঠগিরা ব্যবহার করত মানুষ খুন শুরু করার কোড হিসেবে। অর্থাৎ ঠগি সর্দাররা এই কোড ব্যবহার করেই তার শিষ্যদের আদেশ দিত মানুষ শিকার শুরু করতে। আর এইভাবেই প্রায় ২০ লক্ষ নিরীহ পথচারী মারা পড়েছিল তাদের হাতে ষোড়শ – সপ্তদশ শতাব্দী ধরে এই ভারতবর্ষে এবং এর একটা বড় অংশ সংগঠিত হয়েছিল এই বাংলায় ।
মজার বিষয় ছিল যে, ধর্ম বিশ্বাসে ওরা হিন্দু, মুসলিম ও শিখ হলেও সবাই মা ভবানী তথা মা কালীর উপাসক ছিল এবং তার আশীর্বাদ কামনা করত বেশী বেশী শিকারের আশায় ! (সুত্রঃ বাসন মেজে আন” – একটা ঠগি কোড! সুকান্ত কুমার সাহা)
ঠগিরা বংশপরম্পরায় খুন ও দস্যুবৃত্তি করত। ছোটবেলা থেকেই ঠগিরা শিখত কীভাবে শ্বাসরোধ করে ফাঁস দিয়ে হত্যা করতে হয়। বংশপরম্পরা বা শিক্ষানবিসের মাধ্যমে দলে সদস্যদের নেওয়া হতো। ঠগি বালকের শিক্ষা শুরু হতো ১০ বছর বয়সে। তখন সে লুকিয়ে হত্যাকাণ্ড দেখত। বয়স ১৮ হলে নতুন ঠগি সদস্যরা হত্যার অনুমতি পেত। সাধারণত শক্ত কাপড়ের তৈরি হলুদ রংয়ের রুমাল দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে হত্যা করা হতো। হলদে রুমাল থাকত ঠগিদের কোমরে। এ সম্প্রদায়ের মধ্যে পারস্পরিক বিবাহ প্রথারও প্রচলন ছিল। সারাবছরই ঠগিরা সাধারণ মানুষের মতো স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ঘর-সংসার করত। শরতের শুরুতে ওরা দলবেঁধে পথে নামত। তখন ওরা অন্য মানুষ, অর্থাৎ ভ্রাম্যমাণ খুনি! এটাই তখন ওদের একমাত্র পরিচয়। শীত শেষ হলেই সারা বছরের জন্য প্রয়োজনীয় জিনিস কিনে তারা ঘরে ফিরে আসত।
ঠগিরা সাধারণত ব্যবসায়ী, তীর্থযাত্রীর কিংবা সৈন্যের ছদ্মবেশে ভ্রমণ করত। এদেরই লোকজন গোপনে বাজার কিংবা সরাইখানা থেকে পথযাত্রীদের সম্বন্ধে খুঁটিনাটি তথ্য জোগাড় করত। তারপর সুকৌশলে সেই যাত্রীদের সঙ্গে মিশে যেত এবং যাত্রাবিরতিতে হত্যাকাণ্ড ঘটাত। একজন যাত্রীকে খুন করত তিনজনের একটি দল। একজন মাথা ঠেলে দিত, অন্যজন ফাঁস পরাত, আরেকজন পা চেপে ফেলে দিত। কেউ পালিয়ে গেলেও রক্ষা নেই, কাছেপিঠেই ওঁত পেতে থাকত ঠগিদের অন্য কোনো দল। তবে ঠগিরা সবাইকে হত্যা করত না। যেমন- ভিক্ষুক, সংগীতজ্ঞ, নৃত্যশিল্পী, ঝাড়ুদার, তেল বিক্রেতা, কাঠমিস্ত্রি, কামার, বিকলাঙ্গ, কুষ্ঠরোগী, গঙ্গাজলবাহক ও নারীদের হত্যা নিষেধ ছিল। তবে ব্যবসায়ীদের স্ত্রীদের হত্যা করা হতো। সব ঠগিদের দলেই একজন দলনেতা বা সর্দার থাকত। দলনেতাকে বলা হতো জমাদার। সবাই তাকে মেনে চলত। শিকার করার পর যা পাওয়া যেত তা সবাই সমানভাগে ভাগ করে নিত। এমনকি দলে কেউ অনুপস্থিত থাকলেও তার ভাগ ঠিকমতো পেয়ে যেত। ঠগিদের প্রধান তীর্থক্ষেত্র ছিল পশ্চিমবাংলার ’কালিঘাট’ ও বিন্ধ্যাচলের ’ভবানী মন্দির’।
এই ঠগি প্রজাতির মানুষ গুলোর উৎপত্তি হয়েছিল উত্তর ভারতে এবং তারা বহু শতাব্দী ধরে কারও কোন কিছু জানার বাইরেই বংশ পরম্পরায় তাদের কর্মকাণ্ড চালাতে পেরেছিল। কিন্তু ১২৯০ এর দিকে সুলতানের শাসন আমলে কিছু ঠগ ধরা পরে, যাদের সংখ্যা ছিল প্রায় হাজার খানেক। ধরা পড়ার পর তাদের সবাইকে দিল্লীতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল কঠোর শাস্তির জন্য। সম্রাটের পারিষদ বর্গ যদিও ওদের সবার জন্য মৃত্যুদণ্ড চেয়েছিলেন কিন্তু কোন এক অজানা কারণে সুলতান তাদের একজনকেও হত্যা না করে জামাই আদরে নৌকায় তুলে ভাটির দেশে- তথা এই বাংলা মূলকে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন, দিল্লীতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না করার শর্তে। আর তারপর থেকেই- এই বাংলার জলে-স্থলে, মাঠে-ঘাটে ছড়িয়ে পরে এই খুনির দল।
তারপর, ১৮৩০-এর সালে ভারতের প্রশাসক উইলিয়াম হেনরি শ্লীম্যান অত্যন্ত দক্ষতার সাথে দলে দলে ধরে ধরে মৃত্যুদণ্ড, যাবজ্জীবন জেল ও দ্বীপান্তর দিয়ে এদের দমন করেন এবং বাকী গুলো ওনার ভয়ে পেশা পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়। ফলশ্রুতিতে ভারতবর্ষ তথা বাংলা ঠগি মুক্ত হয়।
আমির খানের পরবর্তী মুভি “থাগস অব হিন্দুস্তান” এই ভয়ানক খুনি ঠগিদের নিয়ে। মুভিটি মূলত “ফিলিপ মেইডস টেলর” এর “কনফেসন অব এ থাগ উপন্যাস” অবলম্বনে তৈরি হচ্ছে। আশা করি থাগস অব হিন্দুস্তান হবে হিন্দি মুভির থ্রিলার অ্যাডভেঞ্চার শাখার অন্যতম সংযোজন।
সূত্রঃ উইকিপিডিয়া, বিডি নিউজ, বাসন মেজে আন” – একটা ঠগি কোড! সুকান্ত কুমার সাহা ইত্যাদি।
থাগস বাংলায় পরিবর্তন করলে দারায় ঠগি। ঠগি শব্দটি সংস্কৃত ঠগ শব্দ থেকে এসেছে। ঠগ অর্থ-ঠক বা প্রতারক বা ধূর্ত বা প্রবঞ্চক। ভারত শাসনের সূত্রে যেসব শব্দ ইংরেজি ভাষায় যুক্ত হয়েছে থাড সেসবের একটি। শব্দটির মানে, ধপ করে পড়া বা আঘাত করা। এ শব্দটি সংস্কৃত ঠগি শব্দ থেকে এসেছে।
ঠগি কিঃ ঠগি বলতে বোঝায় বিশেষ শ্রেণীর দস্যু দল, যারা পথিকের গলায় রুমাল বা কাপড় জড়িয়ে হত্যা করত। ঠগি বলতে আরও বোঝায় ঠগির কার্য, দস্যুবৃত্তি। শত শত বছর ধরে ভারতবর্ষের বিভিন্ন জায়গায় হারিয়ে যেত অগণিত পথিক। কোথায়, কিভাবে হারাত সেটি জানত না কেউ। কোন এক জাদুবলে যেন তারা মুছে যেত পৃথিবীর বুক থেকে ঐতিহাসিকদের মতে, সপ্তদশ শতকের মাঝামাঝি ও তার পরের কয়েকশ’ বছরে প্রতি বছর গড়ে হাজার চল্লিশেক মানুষ নিখোঁজ হতো। গিনেস বুক অব রেকর্ডসের হিসাবে এ সংখ্যা মোট ২০ লাখ! নিরীহ পথিকদের হত্যা করে মালামাল যারা লুট করত ভারতীয় কিংবদন্তিতে আমরা তাদের ঠগি বলে চিনি। ঠগি ১৭ ও ১৮ শতকের প্রথমদিকে ভারতের পথিকদের জন্য মূর্তিমান এক আতঙ্কের নাম। এরা সব সময় চলত দলবেঁধে। একলা পথিক পেলেই সাদরে তাকে দলের সঙ্গে ভ্রমণের আমন্ত্রণ জানাত। সহযাত্রীদের সৌহার্দ্যরে নিরাপত্তা আর বিশ্বাসের উষ্ণ আমেজে, পথচলার ক্লান্তিতে ঢলে পড়ত শিকার। গরম খাবার পেটে পড়ায় বন্ধ হয়ে আসত চোখ। আর তখনই আসত সর্দারের হুকুম, বাসন মেজে আনার!
বাসন মেজে আন” – বাক্যটি, আপাতদৃষ্টিতে একজন গৃহিণীর খুবই সাধারণ একটা ঘরোয়া আদেশ বলেই মনে হবে সবার কাছে ! কিন্তু কখনো কখনো বিষয়টা তা নাও হতে পারে। এই যেমন- এই বাক্যটাকেই ঠগিরা ব্যবহার করত মানুষ খুন শুরু করার কোড হিসেবে। অর্থাৎ ঠগি সর্দাররা এই কোড ব্যবহার করেই তার শিষ্যদের আদেশ দিত মানুষ শিকার শুরু করতে। আর এইভাবেই প্রায় ২০ লক্ষ নিরীহ পথচারী মারা পড়েছিল তাদের হাতে ষোড়শ – সপ্তদশ শতাব্দী ধরে এই ভারতবর্ষে এবং এর একটা বড় অংশ সংগঠিত হয়েছিল এই বাংলায় ।
মজার বিষয় ছিল যে, ধর্ম বিশ্বাসে ওরা হিন্দু, মুসলিম ও শিখ হলেও সবাই মা ভবানী তথা মা কালীর উপাসক ছিল এবং তার আশীর্বাদ কামনা করত বেশী বেশী শিকারের আশায় ! (সুত্রঃ বাসন মেজে আন” – একটা ঠগি কোড! সুকান্ত কুমার সাহা)
ঠগিরা বংশপরম্পরায় খুন ও দস্যুবৃত্তি করত। ছোটবেলা থেকেই ঠগিরা শিখত কীভাবে শ্বাসরোধ করে ফাঁস দিয়ে হত্যা করতে হয়। বংশপরম্পরা বা শিক্ষানবিসের মাধ্যমে দলে সদস্যদের নেওয়া হতো। ঠগি বালকের শিক্ষা শুরু হতো ১০ বছর বয়সে। তখন সে লুকিয়ে হত্যাকাণ্ড দেখত। বয়স ১৮ হলে নতুন ঠগি সদস্যরা হত্যার অনুমতি পেত। সাধারণত শক্ত কাপড়ের তৈরি হলুদ রংয়ের রুমাল দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে হত্যা করা হতো। হলদে রুমাল থাকত ঠগিদের কোমরে। এ সম্প্রদায়ের মধ্যে পারস্পরিক বিবাহ প্রথারও প্রচলন ছিল। সারাবছরই ঠগিরা সাধারণ মানুষের মতো স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ঘর-সংসার করত। শরতের শুরুতে ওরা দলবেঁধে পথে নামত। তখন ওরা অন্য মানুষ, অর্থাৎ ভ্রাম্যমাণ খুনি! এটাই তখন ওদের একমাত্র পরিচয়। শীত শেষ হলেই সারা বছরের জন্য প্রয়োজনীয় জিনিস কিনে তারা ঘরে ফিরে আসত।
ঠগিরা সাধারণত ব্যবসায়ী, তীর্থযাত্রীর কিংবা সৈন্যের ছদ্মবেশে ভ্রমণ করত। এদেরই লোকজন গোপনে বাজার কিংবা সরাইখানা থেকে পথযাত্রীদের সম্বন্ধে খুঁটিনাটি তথ্য জোগাড় করত। তারপর সুকৌশলে সেই যাত্রীদের সঙ্গে মিশে যেত এবং যাত্রাবিরতিতে হত্যাকাণ্ড ঘটাত। একজন যাত্রীকে খুন করত তিনজনের একটি দল। একজন মাথা ঠেলে দিত, অন্যজন ফাঁস পরাত, আরেকজন পা চেপে ফেলে দিত। কেউ পালিয়ে গেলেও রক্ষা নেই, কাছেপিঠেই ওঁত পেতে থাকত ঠগিদের অন্য কোনো দল। তবে ঠগিরা সবাইকে হত্যা করত না। যেমন- ভিক্ষুক, সংগীতজ্ঞ, নৃত্যশিল্পী, ঝাড়ুদার, তেল বিক্রেতা, কাঠমিস্ত্রি, কামার, বিকলাঙ্গ, কুষ্ঠরোগী, গঙ্গাজলবাহক ও নারীদের হত্যা নিষেধ ছিল। তবে ব্যবসায়ীদের স্ত্রীদের হত্যা করা হতো। সব ঠগিদের দলেই একজন দলনেতা বা সর্দার থাকত। দলনেতাকে বলা হতো জমাদার। সবাই তাকে মেনে চলত। শিকার করার পর যা পাওয়া যেত তা সবাই সমানভাগে ভাগ করে নিত। এমনকি দলে কেউ অনুপস্থিত থাকলেও তার ভাগ ঠিকমতো পেয়ে যেত। ঠগিদের প্রধান তীর্থক্ষেত্র ছিল পশ্চিমবাংলার ’কালিঘাট’ ও বিন্ধ্যাচলের ’ভবানী মন্দির’।
এই ঠগি প্রজাতির মানুষ গুলোর উৎপত্তি হয়েছিল উত্তর ভারতে এবং তারা বহু শতাব্দী ধরে কারও কোন কিছু জানার বাইরেই বংশ পরম্পরায় তাদের কর্মকাণ্ড চালাতে পেরেছিল। কিন্তু ১২৯০ এর দিকে সুলতানের শাসন আমলে কিছু ঠগ ধরা পরে, যাদের সংখ্যা ছিল প্রায় হাজার খানেক। ধরা পড়ার পর তাদের সবাইকে দিল্লীতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল কঠোর শাস্তির জন্য। সম্রাটের পারিষদ বর্গ যদিও ওদের সবার জন্য মৃত্যুদণ্ড চেয়েছিলেন কিন্তু কোন এক অজানা কারণে সুলতান তাদের একজনকেও হত্যা না করে জামাই আদরে নৌকায় তুলে ভাটির দেশে- তথা এই বাংলা মূলকে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন, দিল্লীতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না করার শর্তে। আর তারপর থেকেই- এই বাংলার জলে-স্থলে, মাঠে-ঘাটে ছড়িয়ে পরে এই খুনির দল।
তারপর, ১৮৩০-এর সালে ভারতের প্রশাসক উইলিয়াম হেনরি শ্লীম্যান অত্যন্ত দক্ষতার সাথে দলে দলে ধরে ধরে মৃত্যুদণ্ড, যাবজ্জীবন জেল ও দ্বীপান্তর দিয়ে এদের দমন করেন এবং বাকী গুলো ওনার ভয়ে পেশা পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়। ফলশ্রুতিতে ভারতবর্ষ তথা বাংলা ঠগি মুক্ত হয়।
আমির খানের পরবর্তী মুভি “থাগস অব হিন্দুস্তান” এই ভয়ানক খুনি ঠগিদের নিয়ে। মুভিটি মূলত “ফিলিপ মেইডস টেলর” এর “কনফেসন অব এ থাগ উপন্যাস” অবলম্বনে তৈরি হচ্ছে। আশা করি থাগস অব হিন্দুস্তান হবে হিন্দি মুভির থ্রিলার অ্যাডভেঞ্চার শাখার অন্যতম সংযোজন।
সূত্রঃ উইকিপিডিয়া, বিডি নিউজ, বাসন মেজে আন” – একটা ঠগি কোড! সুকান্ত কুমার সাহা ইত্যাদি।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
মোঃ ইমরান হোসেন (ইমু) ২৪/০৪/২০১৭
-
সাইয়িদ রফিকুল হক ২৪/০৪/২০১৭ভারতবর্ষের এই ঠগিরা ছিল মানুষ-নামের কুকুর।
-
সাঁঝের তারা ২৪/০৪/২০১৭ভাল তথ্য...
ধন্যবাদ
প্রিয় ভাবুক বন্ধু