চিরকুট অথবা বৃষ্টি
বৃষ্টি বাড়ছে না।
টিপ টিপ করে পড়ছে। আমার গ্রামের মানুষের কাছে এই বৃষ্টির একটা বিশেষ নাম আছে। 'ছিড়া ছিড়া বিষ্টি!' কেউ যদি ঘরের ভেতর থেকে বারান্দায় বসে থাকা কাউকে জিজ্ঞেস করে
-'বাইরে বিষ্টি কেমুন রে?'
বারান্দার মানুষটা খুব আগ্রহের সাথে বলবে
-'ছিড়া ছিড়া বিষ্টি!'
'ছিড়া ছিড়া বিষ্টিতে ভেজার মধ্যে কোন আনন্দ আমি খুজে পাই না। বরং লসই বেশি। মাথা অল্প অল্প ভিজবে তাই অলসতার কারনে বৃষ্টির পানি মাথায়ই শুকাবে। তারপর আসবে জ্বর।
আমার জন্যই কিনা জানিনা, বৃষ্টি বাড়ছে না।
এরই মধ্যে আমার পাশে এক ব্যবসায়ী এসে দাড়িয়েছে। বয়স বারো তেরো। গায়ে একটা শার্ট। উপরের তিনটা বোতাম খোলা। ভালো করে লক্ষ করার পর বুঝলাম খোলা না বোতামই নাই। আর কোমর ঢিলা একটা হাফ প্যান্ট। একটু পর পরই ব্যবসায়ী সাহেব প্যান্ট টেনে ধরে তার যন্ত্রপাতি রক্ষা করছে। ইনি ফুল ব্যবসায়ী। হাতে বেশ কিছু গোলাপ। উনার ব্যবসাকে ভ্রাম্যমাণ বানিজ্য বলা যায়। যদিও অর্থনীতিতে এ ধরনের কোন বানিজ্যের কথা উল্লেখ আছে বলে আমার জানা নাই।
উনার সাথে কথা বলে জানা গেল উনিও ঝুম বৃষ্টির অপেক্ষায়।
'বহুত দিন বিষ্টিত নাইনা।' বলে ব্যবসায়ী সাহেব উদাস মুখে দাড়িয়ে রইলেন।
অপেক্ষার সময়টা ব্যবসায়ী সাহেবের বেশ গেল। ছ'টা ফুল বিক্রি করে ফেললেন। সিগনাল পড়লে গাড়ির জানালায় গিয়ে বলেন 'ফুল লাগবোনি? ফুল?' সিগনাল শেষ হলে উনি আবার এসে আমার পাশে দাড়ান।
অপেক্ষা করতে করতে এক সময় বিক্রেতার মুখে আক্ষেপ শোনা গেল,
"ট্যাংকিতে মনলয় মাল নাইক্কা!'
আমারও তাই মনে হল,
'ট্যাংকিতে আজ মনে হয় মাল শর্ট পড়েছে।'
তাই 'ছিড়া ছিড়া বৃষ্টি'র মাঝেই হাটতে শুরু করলাম। ফুল বিক্রেতাও আমার পাশে হাটছেন। কোথায় যাচ্ছি কেউ জানিনা।
আসলে আমরা কেউই জানিনা আমরা কোথায় যাচ্ছি। কোথায় পথের শেষ!
পাতলুন ঢিলা ব্যবসায়ীর নাম ছামীম। আমার ধারনা আসল নাম 'শামীম!'
ছামীম এখন আমার পাশেই হাটছে। একহাতে প্যান্ট টেনে ধরে আছে অন্য হাতে ফুল। সামরিক যাদুঘরের সামনে এসে ছামীম তার ফুল গুলো আমার হাতে দিল। আমি ফুল হাতে ফুটপাতে হাটছি। পাশেই রাস্তায় নানা রকম গাড়ি ছুটে যাচ্ছে। হঠাৎ সব থেমে গেল। জ্যাম। শুদ্ধ বাংলায় 'জাম।' বাঙালী কথায় কথায় বলে,
-'রাস্তায় এত জাম! উফ!! এই শহরে আর না।'
কিন্তু তবুও কেউ শহর ছাড়ে না। অদ্ভুত মায়ায় পড়ে থাকে ব্যাস্ত এই নগরীতে।
মেয়ে দু'টি জানালা দিয়ে মুখ বের করে আকাশ দেখছে। ছিড়া বৃষ্টি তাদের আকাশ দেখায় কোন বাঁধার সৃষ্টি করছে না। দু'জনের পড়নেই নেভি ব্লু স্কুল ড্রেস। এক জনের চোখে চশমা। ছিড়া বৃষ্টির পানিতে ওর চশমার কাঁচ ঘোলা হয়ে যাওয়ার কথা। এ যুগের বাচ্চারা আকাশ দেখতে পায় না। এমনকি স্বপ্নেও না। তাদের স্বপ্ন জুড়ে উঁচু উঁচু বিল্ডিং! আকাশদেখার আনন্দে এই মেয়েটা সম্ভবত ঘোলা কাচের ভেতর দিয়েই আকাশ দেখছে। মৃদু কালো মেঘে ঢাকা আকাশ।
ছামীমের দিকে তাকিয়ে বললাম,
-তুমি যাচ্ছিস কোথায়?
ছামীম চোখ নাচিয়ে বলল,
-খাইতে।
-কই খাইতে যাবি?
-আপনের লগে।
-আমার পকেটে কয় টাকা আছে জানিস?
-আমি জানমু কেমনে?
-আটাশ টাকা।
-আমার কাছে সব মিলায়া দেড়শ হইবো।
ছামীমের সাথে খাওয়ার পর ছামীম আমাকে এক নতুন জিনিস দেখালো। পাতার বিড়ি। জর্দার জর্দা শুকনো বট পাতার ভেতর রেখে পেচিয়ে সুতা দিয়ে বেঁধে ফেলতে হয়। তারপর আগুন ধরিয়ে সুখটান। ছামীম সুখটান দিয়ে গভীর সুখে হারিয়ে গেল। সহজ কথায় 'পিনিকে' পড়ে গেল। টান দিতে দিতে ছামীম একটা কথাই বলছিল বার বার।
-বেরি পিনিক বাই। পিনিকই পিনিক।
ছামীমকে 'বেরি পিনিকে রেখে আমি বেরিয়ে পড়লাম।
বৃষ্টি আর বাড়লো না। প্রকৃতি সবাইকে নিয়ে ছোট্ট কিছু নাটক তৈরি করে। আমার সাথে করলো বৃষ্টি নিয়ে। এই নাটকের উদ্দেশ্য ছিল পাতলুন ঢিলা ব্যবসায়ীর সাথে আমার পরিচয় করানো। প্রকৃতি সফল। যে কোন ভাবেই হোক ছামীমের সাথে আমার আবার দেখা হবে। ব্যবস্থা প্রকৃতিই করবে। নিজ দায়িত্বে।
ফিলোসফিকাল কথা বলতে বলতে মেসে পৌছে গেলাম। মেসে ঢোকার মুখে ম্যানেজার মিয়া থামালেন। উনাকে আমরা ম্যানেজার মিয়া নামেই ডাকি। ম্যানেজার মিয়া নামের আড়ালে তার আসল নাম হারিয়ে গেছে। এমনি স্কুল জীবনে আমার নামটাও হারিয়ে গিয়ে ছিল। নাম হয়ে গিয়েছিল গাধা। গাধার মত কান নাড়তে পারতাম বলে এই নাম।
ম্যানেজার মিয়া আমাকে একটা দুই ভাজ করা কাগজ ধরিয়ে দিলেন।
সম্ভবত চিঠি টাইপ কিছু। কিংবা চিরকুট। খুলব কিনা ভাবতে ভাবতে রুমে চলে এলাম। আমার রুমমেট ছোট ভাই নেই। সে আবার বিরাট ধার্মিক মানুষ। ওর জন্যই হয়তো আমার মত বিরাট বক ধার্মিকের ঘরও একটা অদ্ভুত পবিত্র স্নীগ্ধতায় ভরে থাকে। ছেলেটা আমাকে একদমই দেখতে পারে না। দুই বার রুম বদলানোর চেষ্টা করেছে। সঠিক কারন জানি না। ভেবেও পাই নাই। আমি সিগারেট খাইনা। অন্য কোন মাদকের অভ্যাসও নাই। ওর সাথে কথাও বিশেষ বলি না।
বদ অভ্যাস বলতে রাত বিরাতে ঘর থেকে বেরিয়ে যাওয়া। তাও একদম নিঃশব্দে। আবার রাত বিরাতে ঘরে ঢোকা। একই ভাবে। ওর কি সমস্যা বুঝতে পারি না।
চিরকুট কার হতে পারে বুঝতে পারছি না। আমার মত নগন্যকে কে দেবে এসব? যে কিনা নিজেকে সমুদ্রের খুব কাছের লোক বলে দাবী করে।
"আমি জানি আপনি হাতের লেখাটা চিনবেন।
খুব অবাক হচ্ছেন তাই না সৈকত ভাই?? আমি কি করে আপনাকে খুজে বের করলাম! আসলেই আমি নিজেও খানিকটা অবাক। একটা সময় আপনি না ভাবে আমাকে বিস্মিত করতেন। আমি অবাক হয়ে ভাবতাম আপনি নিশ্চই মহাপুরুষ টাইপ কিছু। প্রতিটা মেয়েরই একটা সময় পার হয় যখন সে লতানো উদ্ভিদের মত হয়ে যায়। আমি ঝুপ করে আপনার প্রেমে পড়ে গেলাম। অথচ ডুব দিলেন আপনি। আমার মায়ের সাথে যোগাযোগ ছিল। মা আমাকে কোন দিনই বলেনি। কিন্তু আমি জানি। আপনার সাথে যেদিন দেখা হবে সেদিন বলব।
আমি জানিনা আপনি ডুব দিয়ে ছিলেন কেন। কিন্তু একটা সময় আমি আবিস্কার করলাম আপনি মহাপুরুষ নন। আপনি ফাউল পুরুষ। আর তখনই ঠিক করলাম আপনাকে একদিন চমকে দেব। কেমন হলো চমকটা?
-অতন্দ্রীলা"
মনে মনে বললাম,
-"আহ! মধু!! মধু!!!"
(এই গল্পে পাঠককে গল্পের ভিতরে ঢুকিয়ে দিতে চেষ্টা করেছি। তারপর নিজে বেরিয়ে গেছি। সফলতা জানিনা। আমার নিজের মতামত ০%। এখন পাঠক তার মনের মত করে গল্প সাজাবে। ইচ্ছা হলে সাজাবে।না ইচ্ছা হলে নাই।)
-তরীকুল ইসলাম।
এই "সৈকত" কে নিয়ে আগের গল্পের লিংক,http://www.tarunyo.com/tariquulislam/blog/post20150413031923/
টিপ টিপ করে পড়ছে। আমার গ্রামের মানুষের কাছে এই বৃষ্টির একটা বিশেষ নাম আছে। 'ছিড়া ছিড়া বিষ্টি!' কেউ যদি ঘরের ভেতর থেকে বারান্দায় বসে থাকা কাউকে জিজ্ঞেস করে
-'বাইরে বিষ্টি কেমুন রে?'
বারান্দার মানুষটা খুব আগ্রহের সাথে বলবে
-'ছিড়া ছিড়া বিষ্টি!'
'ছিড়া ছিড়া বিষ্টিতে ভেজার মধ্যে কোন আনন্দ আমি খুজে পাই না। বরং লসই বেশি। মাথা অল্প অল্প ভিজবে তাই অলসতার কারনে বৃষ্টির পানি মাথায়ই শুকাবে। তারপর আসবে জ্বর।
আমার জন্যই কিনা জানিনা, বৃষ্টি বাড়ছে না।
এরই মধ্যে আমার পাশে এক ব্যবসায়ী এসে দাড়িয়েছে। বয়স বারো তেরো। গায়ে একটা শার্ট। উপরের তিনটা বোতাম খোলা। ভালো করে লক্ষ করার পর বুঝলাম খোলা না বোতামই নাই। আর কোমর ঢিলা একটা হাফ প্যান্ট। একটু পর পরই ব্যবসায়ী সাহেব প্যান্ট টেনে ধরে তার যন্ত্রপাতি রক্ষা করছে। ইনি ফুল ব্যবসায়ী। হাতে বেশ কিছু গোলাপ। উনার ব্যবসাকে ভ্রাম্যমাণ বানিজ্য বলা যায়। যদিও অর্থনীতিতে এ ধরনের কোন বানিজ্যের কথা উল্লেখ আছে বলে আমার জানা নাই।
উনার সাথে কথা বলে জানা গেল উনিও ঝুম বৃষ্টির অপেক্ষায়।
'বহুত দিন বিষ্টিত নাইনা।' বলে ব্যবসায়ী সাহেব উদাস মুখে দাড়িয়ে রইলেন।
অপেক্ষার সময়টা ব্যবসায়ী সাহেবের বেশ গেল। ছ'টা ফুল বিক্রি করে ফেললেন। সিগনাল পড়লে গাড়ির জানালায় গিয়ে বলেন 'ফুল লাগবোনি? ফুল?' সিগনাল শেষ হলে উনি আবার এসে আমার পাশে দাড়ান।
অপেক্ষা করতে করতে এক সময় বিক্রেতার মুখে আক্ষেপ শোনা গেল,
"ট্যাংকিতে মনলয় মাল নাইক্কা!'
আমারও তাই মনে হল,
'ট্যাংকিতে আজ মনে হয় মাল শর্ট পড়েছে।'
তাই 'ছিড়া ছিড়া বৃষ্টি'র মাঝেই হাটতে শুরু করলাম। ফুল বিক্রেতাও আমার পাশে হাটছেন। কোথায় যাচ্ছি কেউ জানিনা।
আসলে আমরা কেউই জানিনা আমরা কোথায় যাচ্ছি। কোথায় পথের শেষ!
পাতলুন ঢিলা ব্যবসায়ীর নাম ছামীম। আমার ধারনা আসল নাম 'শামীম!'
ছামীম এখন আমার পাশেই হাটছে। একহাতে প্যান্ট টেনে ধরে আছে অন্য হাতে ফুল। সামরিক যাদুঘরের সামনে এসে ছামীম তার ফুল গুলো আমার হাতে দিল। আমি ফুল হাতে ফুটপাতে হাটছি। পাশেই রাস্তায় নানা রকম গাড়ি ছুটে যাচ্ছে। হঠাৎ সব থেমে গেল। জ্যাম। শুদ্ধ বাংলায় 'জাম।' বাঙালী কথায় কথায় বলে,
-'রাস্তায় এত জাম! উফ!! এই শহরে আর না।'
কিন্তু তবুও কেউ শহর ছাড়ে না। অদ্ভুত মায়ায় পড়ে থাকে ব্যাস্ত এই নগরীতে।
মেয়ে দু'টি জানালা দিয়ে মুখ বের করে আকাশ দেখছে। ছিড়া বৃষ্টি তাদের আকাশ দেখায় কোন বাঁধার সৃষ্টি করছে না। দু'জনের পড়নেই নেভি ব্লু স্কুল ড্রেস। এক জনের চোখে চশমা। ছিড়া বৃষ্টির পানিতে ওর চশমার কাঁচ ঘোলা হয়ে যাওয়ার কথা। এ যুগের বাচ্চারা আকাশ দেখতে পায় না। এমনকি স্বপ্নেও না। তাদের স্বপ্ন জুড়ে উঁচু উঁচু বিল্ডিং! আকাশদেখার আনন্দে এই মেয়েটা সম্ভবত ঘোলা কাচের ভেতর দিয়েই আকাশ দেখছে। মৃদু কালো মেঘে ঢাকা আকাশ।
ছামীমের দিকে তাকিয়ে বললাম,
-তুমি যাচ্ছিস কোথায়?
ছামীম চোখ নাচিয়ে বলল,
-খাইতে।
-কই খাইতে যাবি?
-আপনের লগে।
-আমার পকেটে কয় টাকা আছে জানিস?
-আমি জানমু কেমনে?
-আটাশ টাকা।
-আমার কাছে সব মিলায়া দেড়শ হইবো।
ছামীমের সাথে খাওয়ার পর ছামীম আমাকে এক নতুন জিনিস দেখালো। পাতার বিড়ি। জর্দার জর্দা শুকনো বট পাতার ভেতর রেখে পেচিয়ে সুতা দিয়ে বেঁধে ফেলতে হয়। তারপর আগুন ধরিয়ে সুখটান। ছামীম সুখটান দিয়ে গভীর সুখে হারিয়ে গেল। সহজ কথায় 'পিনিকে' পড়ে গেল। টান দিতে দিতে ছামীম একটা কথাই বলছিল বার বার।
-বেরি পিনিক বাই। পিনিকই পিনিক।
ছামীমকে 'বেরি পিনিকে রেখে আমি বেরিয়ে পড়লাম।
বৃষ্টি আর বাড়লো না। প্রকৃতি সবাইকে নিয়ে ছোট্ট কিছু নাটক তৈরি করে। আমার সাথে করলো বৃষ্টি নিয়ে। এই নাটকের উদ্দেশ্য ছিল পাতলুন ঢিলা ব্যবসায়ীর সাথে আমার পরিচয় করানো। প্রকৃতি সফল। যে কোন ভাবেই হোক ছামীমের সাথে আমার আবার দেখা হবে। ব্যবস্থা প্রকৃতিই করবে। নিজ দায়িত্বে।
ফিলোসফিকাল কথা বলতে বলতে মেসে পৌছে গেলাম। মেসে ঢোকার মুখে ম্যানেজার মিয়া থামালেন। উনাকে আমরা ম্যানেজার মিয়া নামেই ডাকি। ম্যানেজার মিয়া নামের আড়ালে তার আসল নাম হারিয়ে গেছে। এমনি স্কুল জীবনে আমার নামটাও হারিয়ে গিয়ে ছিল। নাম হয়ে গিয়েছিল গাধা। গাধার মত কান নাড়তে পারতাম বলে এই নাম।
ম্যানেজার মিয়া আমাকে একটা দুই ভাজ করা কাগজ ধরিয়ে দিলেন।
সম্ভবত চিঠি টাইপ কিছু। কিংবা চিরকুট। খুলব কিনা ভাবতে ভাবতে রুমে চলে এলাম। আমার রুমমেট ছোট ভাই নেই। সে আবার বিরাট ধার্মিক মানুষ। ওর জন্যই হয়তো আমার মত বিরাট বক ধার্মিকের ঘরও একটা অদ্ভুত পবিত্র স্নীগ্ধতায় ভরে থাকে। ছেলেটা আমাকে একদমই দেখতে পারে না। দুই বার রুম বদলানোর চেষ্টা করেছে। সঠিক কারন জানি না। ভেবেও পাই নাই। আমি সিগারেট খাইনা। অন্য কোন মাদকের অভ্যাসও নাই। ওর সাথে কথাও বিশেষ বলি না।
বদ অভ্যাস বলতে রাত বিরাতে ঘর থেকে বেরিয়ে যাওয়া। তাও একদম নিঃশব্দে। আবার রাত বিরাতে ঘরে ঢোকা। একই ভাবে। ওর কি সমস্যা বুঝতে পারি না।
চিরকুট কার হতে পারে বুঝতে পারছি না। আমার মত নগন্যকে কে দেবে এসব? যে কিনা নিজেকে সমুদ্রের খুব কাছের লোক বলে দাবী করে।
"আমি জানি আপনি হাতের লেখাটা চিনবেন।
খুব অবাক হচ্ছেন তাই না সৈকত ভাই?? আমি কি করে আপনাকে খুজে বের করলাম! আসলেই আমি নিজেও খানিকটা অবাক। একটা সময় আপনি না ভাবে আমাকে বিস্মিত করতেন। আমি অবাক হয়ে ভাবতাম আপনি নিশ্চই মহাপুরুষ টাইপ কিছু। প্রতিটা মেয়েরই একটা সময় পার হয় যখন সে লতানো উদ্ভিদের মত হয়ে যায়। আমি ঝুপ করে আপনার প্রেমে পড়ে গেলাম। অথচ ডুব দিলেন আপনি। আমার মায়ের সাথে যোগাযোগ ছিল। মা আমাকে কোন দিনই বলেনি। কিন্তু আমি জানি। আপনার সাথে যেদিন দেখা হবে সেদিন বলব।
আমি জানিনা আপনি ডুব দিয়ে ছিলেন কেন। কিন্তু একটা সময় আমি আবিস্কার করলাম আপনি মহাপুরুষ নন। আপনি ফাউল পুরুষ। আর তখনই ঠিক করলাম আপনাকে একদিন চমকে দেব। কেমন হলো চমকটা?
-অতন্দ্রীলা"
মনে মনে বললাম,
-"আহ! মধু!! মধু!!!"
(এই গল্পে পাঠককে গল্পের ভিতরে ঢুকিয়ে দিতে চেষ্টা করেছি। তারপর নিজে বেরিয়ে গেছি। সফলতা জানিনা। আমার নিজের মতামত ০%। এখন পাঠক তার মনের মত করে গল্প সাজাবে। ইচ্ছা হলে সাজাবে।না ইচ্ছা হলে নাই।)
-তরীকুল ইসলাম।
এই "সৈকত" কে নিয়ে আগের গল্পের লিংক,http://www.tarunyo.com/tariquulislam/blog/post20150413031923/
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
ফয়জুল মহী ২০/০৪/২০১৬এইভাবে আরো ভাল ভাল লেখা উপহার দিবেন.
-
মোবারক হোসেন ০৮/০৬/২০১৫গল্পের শুরুটা মুগ্ধ করার মত। ধন্যবাদ
-
স্বপ্নীল মিহান ২৬/০৫/২০১৫ভালো লেগেছে, এগিয়ে যান, কিবোর্ড থামাবেন না।
-
এনামুল হক ১৫/০৫/২০১৫অসাধারন শুরু টা ভালই ছিল, আরো লেখবেন আসা করা যায় ভবিস্যতে আরো ভাল লিখতে পারবেন,
-
আবিদ আল আহসান ১৩/০৫/২০১৫সুন্দর