ভালোবাসার গল্প
৯০ দশকের গরমের সময়ের কোন এক দুপুরে শফিক ঢাকার এক মহিলা কলেজের গেটের সামনে দু'টো গাছ পাকা পেঁপে হাতে দাড়িয়েছিল। গায়ে নীল রঙের একটা হাফ হাতা শার্ট। হাতের
পেঁপে দু'টো রীনার মা পাঠিয়েছেন। এই পেঁপে দিয়ে যাবার উছিলায় রীনার কলেজের নামটা জেনে নিয়েছে। বন্ধু মহলের আর কারো কাছে এই খবর টুকুও নেই। নিজে পরিবারের দরিদ্র অবস্থার কারনে ঢাকা এসে ভর্তি হতে পারেনি। তাই বলে রীনাকে হারিয়ে ফেলবে? অসম্ভব।
এই গরমের মধ্যে ম্যাডামরা ক্লাস নেয় কি করে রীনা বুঝতে চেষ্টা করেও পারে না। ক্লাস না নিলে কি হয়? ক্লাস শেষ হওয়ার ঘন্টা বাজার সাথে সাথে রীনার মনে হল পৃথিবীর সবচে ভালো মানুষটি হলো দপ্তরী হাসেম ভাই। রীনা খুব দ্রুত বইটা ব্যাগে ভরে ক্লাস
থেকে বেড়িয়ে যায়।
গেট দিয়ে হাজার হাজার মেয়ে বের হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে শফিকের কাছে। সবার একই রকম জামা। সবাই কেই রীনা বলে মনে হচ্ছে। গায়ের নীল শার্টটা ভিজে গেছে। দেখে মনে হচ্ছে ধোয়ার পর না শুকিয়ে পড়ে চলে এসেছে। প্রচন্ড গরমে কাঁচের বোতলের এক বোতল পেপসি খেয়েছে। কিছুক্ষন খুব ভালো লেগেছিল। এখন সেই একই অবস্থা। কুনুই বেয়ে ঘাম গড়িয়ে পড়ছে। পেঁপে দু'টো কে মনে হচ্ছে দশ কেজি ওজনের। আজ
যদি রীনা কলেজে না আসে? নিজেকে খুব অসহায় মনে হচ্ছে।
রীনা রাস্তার ওপার থেকে দেখল নীল শার্ট পড়ে ওর খুব পরিচিত কেউ দাড়িয়ে। এই নীল শার্ট না চেনার কথা না। নিজের ঈদের জামা কেনার টাকা আর স্কুলের টিফিন খাওয়ার টাকা বাঁচিয়ে শার্টের কাপড় কিনে দিয়েছিল শফিক কে। দূর থেকে শফিককে খুব অসহায় লাগছে।
হাতে দু'টো পেঁপে। কতক্ষণ দাড়িয়েছিল শফিক বলতে পারবে না। রীনার ডাকে নিজেকে ফিরে পেল।
-তুই এখানে?
শফিক কি বলবে খুঁজে পেল না। ওর মনে হচ্ছে পায়ের নিচে মাটি নেই। যখন তখন পড়ে যাবে।
-কখন এসেছিস? কেমন আছিস?
শফিক কোন মতে বলল,
-সকালে এসেছি। তোর মা মানে খালাম্মা এই পেঁপে দু'টো পাঠিয়েছেন।
-হ্যা বুঝেছি। বাসায় চল সেজো আপা-দুলাভাই আছে তোকে দেখলে অনেক খুশি হবে।
শফিক কিছু বলল না। রীনা রিকশা ঠিক করে শফিক কে উঠতে বলল। শফিক কিছু বুঝতে না পেরে তাঁকিয়ে রইল। রীনা ওকে টেনে রিকশায় তুলল।
রীনার পাশে জীবনের প্রথম রিকশায় বসল শফিক। জাজিরায় হলে এই ঘটনা স্বপ্নেও ভাবা যেতনা। শফিকের খুব লজ্জা লাগছে। তাই
মাথা নিচু করে বসে আছে। শফিক কি একবার রীনার হাতটা ধরবে? নাহ থাক। মাথা তুলে রীনার
দিকে তাঁকালো। রীনা সোজা সামনে তাঁকিয়ে। কয়েকটা চুল বাতাসে উড়ছে রীনার। এত সুন্দর হয়ে গেছে কেন রীনা? ওর
পাশে কি শফিককে খুব বেশি বেমানান লাগছে?
অসহায় ওই ছেলেটির ভালো নাম মোঃ শফিকুল ইসলাম। আমার বাবা। আর সুন্দরী ওই কলেজ পড়ুয়া মেয়েটির নাম তাসলিমা আখতার রীনা। আমার মা।
পরম করুণাময় তাদের ভালোবাসায় সিক্ত রাখুক চিরদিন।
বিঃদ্রঃ কিছু ক্ষেত্রে লেখকএর স্বধীনতা ব্যবহার করেছি। মূল গল্প অবশ্যই ঠিক রেখেছি।
পেঁপে দু'টো রীনার মা পাঠিয়েছেন। এই পেঁপে দিয়ে যাবার উছিলায় রীনার কলেজের নামটা জেনে নিয়েছে। বন্ধু মহলের আর কারো কাছে এই খবর টুকুও নেই। নিজে পরিবারের দরিদ্র অবস্থার কারনে ঢাকা এসে ভর্তি হতে পারেনি। তাই বলে রীনাকে হারিয়ে ফেলবে? অসম্ভব।
এই গরমের মধ্যে ম্যাডামরা ক্লাস নেয় কি করে রীনা বুঝতে চেষ্টা করেও পারে না। ক্লাস না নিলে কি হয়? ক্লাস শেষ হওয়ার ঘন্টা বাজার সাথে সাথে রীনার মনে হল পৃথিবীর সবচে ভালো মানুষটি হলো দপ্তরী হাসেম ভাই। রীনা খুব দ্রুত বইটা ব্যাগে ভরে ক্লাস
থেকে বেড়িয়ে যায়।
গেট দিয়ে হাজার হাজার মেয়ে বের হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে শফিকের কাছে। সবার একই রকম জামা। সবাই কেই রীনা বলে মনে হচ্ছে। গায়ের নীল শার্টটা ভিজে গেছে। দেখে মনে হচ্ছে ধোয়ার পর না শুকিয়ে পড়ে চলে এসেছে। প্রচন্ড গরমে কাঁচের বোতলের এক বোতল পেপসি খেয়েছে। কিছুক্ষন খুব ভালো লেগেছিল। এখন সেই একই অবস্থা। কুনুই বেয়ে ঘাম গড়িয়ে পড়ছে। পেঁপে দু'টো কে মনে হচ্ছে দশ কেজি ওজনের। আজ
যদি রীনা কলেজে না আসে? নিজেকে খুব অসহায় মনে হচ্ছে।
রীনা রাস্তার ওপার থেকে দেখল নীল শার্ট পড়ে ওর খুব পরিচিত কেউ দাড়িয়ে। এই নীল শার্ট না চেনার কথা না। নিজের ঈদের জামা কেনার টাকা আর স্কুলের টিফিন খাওয়ার টাকা বাঁচিয়ে শার্টের কাপড় কিনে দিয়েছিল শফিক কে। দূর থেকে শফিককে খুব অসহায় লাগছে।
হাতে দু'টো পেঁপে। কতক্ষণ দাড়িয়েছিল শফিক বলতে পারবে না। রীনার ডাকে নিজেকে ফিরে পেল।
-তুই এখানে?
শফিক কি বলবে খুঁজে পেল না। ওর মনে হচ্ছে পায়ের নিচে মাটি নেই। যখন তখন পড়ে যাবে।
-কখন এসেছিস? কেমন আছিস?
শফিক কোন মতে বলল,
-সকালে এসেছি। তোর মা মানে খালাম্মা এই পেঁপে দু'টো পাঠিয়েছেন।
-হ্যা বুঝেছি। বাসায় চল সেজো আপা-দুলাভাই আছে তোকে দেখলে অনেক খুশি হবে।
শফিক কিছু বলল না। রীনা রিকশা ঠিক করে শফিক কে উঠতে বলল। শফিক কিছু বুঝতে না পেরে তাঁকিয়ে রইল। রীনা ওকে টেনে রিকশায় তুলল।
রীনার পাশে জীবনের প্রথম রিকশায় বসল শফিক। জাজিরায় হলে এই ঘটনা স্বপ্নেও ভাবা যেতনা। শফিকের খুব লজ্জা লাগছে। তাই
মাথা নিচু করে বসে আছে। শফিক কি একবার রীনার হাতটা ধরবে? নাহ থাক। মাথা তুলে রীনার
দিকে তাঁকালো। রীনা সোজা সামনে তাঁকিয়ে। কয়েকটা চুল বাতাসে উড়ছে রীনার। এত সুন্দর হয়ে গেছে কেন রীনা? ওর
পাশে কি শফিককে খুব বেশি বেমানান লাগছে?
অসহায় ওই ছেলেটির ভালো নাম মোঃ শফিকুল ইসলাম। আমার বাবা। আর সুন্দরী ওই কলেজ পড়ুয়া মেয়েটির নাম তাসলিমা আখতার রীনা। আমার মা।
পরম করুণাময় তাদের ভালোবাসায় সিক্ত রাখুক চিরদিন।
বিঃদ্রঃ কিছু ক্ষেত্রে লেখকএর স্বধীনতা ব্যবহার করেছি। মূল গল্প অবশ্যই ঠিক রেখেছি।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
ইকবাল হাসান ২৬/০৪/২০১৫
দোয়া রাখি আল্লাহ আপনার বাবা-মায়ের এমন ভালবাসা সারা জীবন অটুট রাখুক।।