সেই যে আমার প্রেমগাথা-(১ম পর্ব)
সময়টা বর্ষাকাল।কখনো আঁধার কালো আকাশ আবার কখনো রিম ঝিম বৃষ্টির খেলা।ভালোই লাগতো যখন আকাশ থেকে রুম-ঝুম ছন্দে বৃষ্টি পড়তো।আর আমি কলেজ ফাঁকি দিয়ে বাসায় বসে বসে কবিতা লিখতাম।আর ল্যাপটপ অন করে বৃষ্টি ঝরা বিকেল বেলায় ফেইসবুকে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতাম।আমার অগোছালো কবিতাগুলি সবার সাথে শেয়ার করতাম।সেই সূত্র ধরে আমাকে সবাই কবি/লেখিকা বলে ডাকতো।এভাবে একদিন বন্ধুদের মাঝে জনপ্রিয় হয়ে গেলাম।
প্রেম করবো বা কাউকে ভালোবাসব কখনো ভাবিনি।সেই দিকে একদম মনযোগ দিতাম না।সব বন্ধুদের মাঝে আমিই একমাত্র মেয়ে ছিলাম,যে কখনো কারো প্রেমে পড়েনি।তবে অনেক প্রপোজ পেতাম।সেগুলো হেসে উড়িয়ে দিতাম,মাথায় নিতাম না।সারাদিন কলেজ করে বিকেল থেকে শুরু করে অনেক রাত পর্যন্ত ফেইসবুক নিয়ে বসে থাকতাম।
তেমনি একদিন একটা ফ্রেন্ডরিকুয়েস্ট আসলো,একসেপ্ট করলাম।সাথে সাথে ম্যাসেজ দিলো।রিপ্লেও দিলাম কিন্তু তেমন কেয়ার করতাম না।অনেক দেরীতে দেরীতে মেসেজের উত্তরগুলো পাঠাতাম।অল্প অল্প করে কথা বলতে বলতে ভালো বন্ধু হয়ে গেলাম।প্রত্যেক দিন কথা হতো।যখন অনলাইনে থাকতাম তখনি কথা বলতাম।কখনো কারো ফোন নাম্বার চাই নি।
আমরা ঢাকায় থাকতাম।আমি মিরপুর আর সে ধানমন্ডিতে।আমার ক্যাম্পাস যদিও ধানমন্ডিতেই ছিলো তবুও তার সাথে কখনো দেখা হয় নি।শুধু মাত্র টাইমলাইনে থাকা কয়েকটা ছবিই দেখেছিলাম।
যদিও এতক্ষন পর্যন্ত যার কথা বলছিলাম,তবে তার নামটা বলেই দেই।তার নাম ছিলো নুহাস মাহমুদ।আমি নুহাস বলেই ডাকতাম।
ছুটির দিনে নুহাস গ্রামের বাড়ি যাবে।তার গ্রামের বাড়ি বরিশাল বিভাগের কোন এক জেলায়।ঐ দিন নুহাস প্রথম আমার কাছ থেকে ফোন নাম্বার চেয়ে ছিলো।যদিও ফোন নাম্বার দিতে রাজি হচ্ছিলাম না।অনেক অজুহাত দেখয়েছিলাম,তবুও লাভ হয়নি।ওর কথার কাছে হেরে গেলাম।তার অনেক অনুরোধে পর নাম্বারটা দিয়ে ১ মিনিট কথা বলতে রাজি হলাম।তখন বলেছিলাম একবার কল দিতে,আর কখনো যেনো কল না দেয়।সেও রাজি হলো।সেই দিনই প্রথম তার সাথে কথা বলেছিলাম।সে অনেক খুশি হয়েছিলো।ধন্যবাদ জানাতে কৃপনতা করেনি।
বাড়িতে পৌঁছে মেসেজ দিলো,বলল “আপনি তো কঠিন মানুষ,বাড়িতে আসলাম,সারদিন একটাও ফোন দেননি।একটা বারও জিজ্ঞাসা করেননি সুস্থমত বাড়িতে পৌঁছেছি কি না?
আমি চুপ হয়ে রইলাম,সরি বলা ছাড়া আর কোন কথা মাথায় আসতো না।
এভাবে ঈদ চলে এলো,সে আমার সাথে যোগাযোগ করার জন্যে অনেক চেষ্টা করল,কিন্তু আমি ফোনগুলো বার বার কেটে দিতাম।শুধু সে কল দিবে বলে ভয়ে ফোন সাইলেন্স মোডে রেখে দিতাম।যেনো শব্দ না হয়,কেও রিসিভ না করতে পারে।
ঈদের পর একদিন রাতে শেষ বর্ষাকালের সেই রুম ঝুম বৃষ্টি।নুহাসের সাথে মেসেজে কথা বলছিলাম।এক সময় নুহাস একটা কবিতা পাঠালো।
তুমি চাইলে বৃষ্টি,
মেঘও ছিল রাজী।
অপেক্ষা সুদূর বর্ষনের
দুরে পাখি গাইছে গান
বৃষ্টি তোমার আহবান ।
সাদা রংএর স্বপ্ন গুলো,
দিলো নাকো ছুটি।
তাই তো আমি বসে একা
ঘাস ফুলেদের সাথে,
আমি একাই কথা বলি,
ঘাস ফুল গুলো ছন্ন ছাড়া।
অসম্পূর্ণ কবিতাটা অনেক সুন্দর ছিলো।বলতে গেলে কবিতার প্রেমে পড়ে গিয়েছিলাম।
তখন নুহাস একটা গেইম খেলার কথা বলল,কবিতার ছন্দ দিয়ে।দুইজন কবিতার মাধ্যমে কথা বলবো।আমি ভাবলাম মন্দ নয়।কথা বলতে বলতে কবিতা লিখা যাবে।
সে শুরু করল,
……………………………………..
বৃষ্টি প্রেমিক তার প্রেয়সীকে বলে-
“বৃষ্টির রুম ঝুম ছন্দে
মন যে আজ উতলা।
এই অবুঝ রাতে যদি
তোমার হাতটা ধরি,
ধরা দিবে আমায়?”
প্রেয়সী বলে,
“না,দিবো না ধরা,
হবে না তোমার আশা পূরণ”
ভ্রু কুঁচকে প্রেমিক বলে,
“কেন?”
প্রেয়সী বলে,
“পারবে না ধরতে,
ধরতে গেলে যে-
যে জালানা দিয়ে পালিয়ে যাবো।”
প্রেমিক হেসে বলে,
“দিবো না যে পালাতে,
আটকে রাখবো হৃদয়ের মাঝে”
তখনি থেমে গেলাম,আর কিছু বলিনি।সে বললো,“আরে মজা করে বলছি,সিরিয়াসলি নিবেন না।”
তখন আমি বললাম,“ঠিক আছে”।বলে ফেইসবুক থেকে বেড়িয়ে আসলাম।
(চলবে…………)
প্রেম করবো বা কাউকে ভালোবাসব কখনো ভাবিনি।সেই দিকে একদম মনযোগ দিতাম না।সব বন্ধুদের মাঝে আমিই একমাত্র মেয়ে ছিলাম,যে কখনো কারো প্রেমে পড়েনি।তবে অনেক প্রপোজ পেতাম।সেগুলো হেসে উড়িয়ে দিতাম,মাথায় নিতাম না।সারাদিন কলেজ করে বিকেল থেকে শুরু করে অনেক রাত পর্যন্ত ফেইসবুক নিয়ে বসে থাকতাম।
তেমনি একদিন একটা ফ্রেন্ডরিকুয়েস্ট আসলো,একসেপ্ট করলাম।সাথে সাথে ম্যাসেজ দিলো।রিপ্লেও দিলাম কিন্তু তেমন কেয়ার করতাম না।অনেক দেরীতে দেরীতে মেসেজের উত্তরগুলো পাঠাতাম।অল্প অল্প করে কথা বলতে বলতে ভালো বন্ধু হয়ে গেলাম।প্রত্যেক দিন কথা হতো।যখন অনলাইনে থাকতাম তখনি কথা বলতাম।কখনো কারো ফোন নাম্বার চাই নি।
আমরা ঢাকায় থাকতাম।আমি মিরপুর আর সে ধানমন্ডিতে।আমার ক্যাম্পাস যদিও ধানমন্ডিতেই ছিলো তবুও তার সাথে কখনো দেখা হয় নি।শুধু মাত্র টাইমলাইনে থাকা কয়েকটা ছবিই দেখেছিলাম।
যদিও এতক্ষন পর্যন্ত যার কথা বলছিলাম,তবে তার নামটা বলেই দেই।তার নাম ছিলো নুহাস মাহমুদ।আমি নুহাস বলেই ডাকতাম।
ছুটির দিনে নুহাস গ্রামের বাড়ি যাবে।তার গ্রামের বাড়ি বরিশাল বিভাগের কোন এক জেলায়।ঐ দিন নুহাস প্রথম আমার কাছ থেকে ফোন নাম্বার চেয়ে ছিলো।যদিও ফোন নাম্বার দিতে রাজি হচ্ছিলাম না।অনেক অজুহাত দেখয়েছিলাম,তবুও লাভ হয়নি।ওর কথার কাছে হেরে গেলাম।তার অনেক অনুরোধে পর নাম্বারটা দিয়ে ১ মিনিট কথা বলতে রাজি হলাম।তখন বলেছিলাম একবার কল দিতে,আর কখনো যেনো কল না দেয়।সেও রাজি হলো।সেই দিনই প্রথম তার সাথে কথা বলেছিলাম।সে অনেক খুশি হয়েছিলো।ধন্যবাদ জানাতে কৃপনতা করেনি।
বাড়িতে পৌঁছে মেসেজ দিলো,বলল “আপনি তো কঠিন মানুষ,বাড়িতে আসলাম,সারদিন একটাও ফোন দেননি।একটা বারও জিজ্ঞাসা করেননি সুস্থমত বাড়িতে পৌঁছেছি কি না?
আমি চুপ হয়ে রইলাম,সরি বলা ছাড়া আর কোন কথা মাথায় আসতো না।
এভাবে ঈদ চলে এলো,সে আমার সাথে যোগাযোগ করার জন্যে অনেক চেষ্টা করল,কিন্তু আমি ফোনগুলো বার বার কেটে দিতাম।শুধু সে কল দিবে বলে ভয়ে ফোন সাইলেন্স মোডে রেখে দিতাম।যেনো শব্দ না হয়,কেও রিসিভ না করতে পারে।
ঈদের পর একদিন রাতে শেষ বর্ষাকালের সেই রুম ঝুম বৃষ্টি।নুহাসের সাথে মেসেজে কথা বলছিলাম।এক সময় নুহাস একটা কবিতা পাঠালো।
তুমি চাইলে বৃষ্টি,
মেঘও ছিল রাজী।
অপেক্ষা সুদূর বর্ষনের
দুরে পাখি গাইছে গান
বৃষ্টি তোমার আহবান ।
সাদা রংএর স্বপ্ন গুলো,
দিলো নাকো ছুটি।
তাই তো আমি বসে একা
ঘাস ফুলেদের সাথে,
আমি একাই কথা বলি,
ঘাস ফুল গুলো ছন্ন ছাড়া।
অসম্পূর্ণ কবিতাটা অনেক সুন্দর ছিলো।বলতে গেলে কবিতার প্রেমে পড়ে গিয়েছিলাম।
তখন নুহাস একটা গেইম খেলার কথা বলল,কবিতার ছন্দ দিয়ে।দুইজন কবিতার মাধ্যমে কথা বলবো।আমি ভাবলাম মন্দ নয়।কথা বলতে বলতে কবিতা লিখা যাবে।
সে শুরু করল,
……………………………………..
বৃষ্টি প্রেমিক তার প্রেয়সীকে বলে-
“বৃষ্টির রুম ঝুম ছন্দে
মন যে আজ উতলা।
এই অবুঝ রাতে যদি
তোমার হাতটা ধরি,
ধরা দিবে আমায়?”
প্রেয়সী বলে,
“না,দিবো না ধরা,
হবে না তোমার আশা পূরণ”
ভ্রু কুঁচকে প্রেমিক বলে,
“কেন?”
প্রেয়সী বলে,
“পারবে না ধরতে,
ধরতে গেলে যে-
যে জালানা দিয়ে পালিয়ে যাবো।”
প্রেমিক হেসে বলে,
“দিবো না যে পালাতে,
আটকে রাখবো হৃদয়ের মাঝে”
তখনি থেমে গেলাম,আর কিছু বলিনি।সে বললো,“আরে মজা করে বলছি,সিরিয়াসলি নিবেন না।”
তখন আমি বললাম,“ঠিক আছে”।বলে ফেইসবুক থেকে বেড়িয়ে আসলাম।
(চলবে…………)
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
অনিরুদ্ধ বুলবুল ১১/০১/২০১৯
-
আব্দুল হক ৩০/১১/২০১৮বেশ!
-
সাইয়িদ রফিকুল হক ৩০/১১/২০১৮ধারাবাহিক গল্প।
-
মোঃ নূর ইমাম শেখ বাবু ৩০/১১/২০১৮অসাধারণ
অভিনন্দন রইল -
আলোর মিছিলে'র সফল অগ্রযাত্রায় এর ৪র্থ সংখ্যাটি প্রকাশিত হতে যাচ্ছে।
মাতৃভাষা দিবস সংখ্যার জন্য লেখা আহ্বান করা হয়েছে।
https://www.bangla-kobita.com/oniruddho/matryvasa-dibos/
গল্প প্রবন্ধ কবিতা - যে কেউ পাঠাতে পারেন। ধন্যবাদ।