সময়ের সাথে জীবনের ভাবনা ১১
গত শনিবার প্রথম আলোর ছুটির দিনে নুহাশের “আলোর মশাল” লেখাটা পড়ছিলাম, পড়ছি আর বারবার আবেগ তাড়িত হয়ে পড়ছিলাম, গলাটা কেমন শুকিয়ে ব্যাথা অনুভব করছিলাম, চোখটা অজান্তেই ছলছল করছিল, আমি বুঝতে পারছিলাম না কেন এতটা আবেগ আমাকে জড়িয়ে ধরলো, নুহাশের লেখা অনেকটা আবেগশুন্য, অনেকটা চরমতম হৃদয় নিংড়ানো মমতা, না পাওয়ার বেদনার শব্দগুচ্ছ দিয়ে সাজানো। অনেকটা ভেবে দেখলাম আমি কেনো আবেগ তাড়িত, আমি কেনো শুন্যতা অনুভব করছি, আমি কেনো এতটা চিন্তিত, নিজেকে বুঝতে চেষ্টা শুরু করলাম, পরে ভাবনার অন্তরালে খুজে পেলাম আমিও চিন্তিত একটা বিষয় নিয়ে, অনেক দিনের চিন্তাটা হঠাৎ আজ খুব আবগের সাথে বেড়িয়ে এসেছে, সেটা ব্রকেন ফ্যামিলির দুশ্চিন্তা, গত বছর থেকেই এই চিন্তাটা আমাকে অনেক রাত নির্ঘুম রেখেছে, চিন্তায় আমার কপালের ভাজ পড়েছিল অনেকদিন, আমার আশংকাগুলো ছিলো- বিয়ে করবো, সৎভাবে জীবনযাপন করতে গেলে একজনের আয়ে নাও হতে পাওে, দুজনকে জব করতে হবে, তাছাড়া যাকে বিয়ে করবো যদি দুজনেই বেশি ব্যবস্তার চাকরি করি তাহলে কি হবে, এখানেই আমি এসে আটকে যেতাম, কি হবে আমাদের বারবার অনেকগুলো প্রশ্ন চলে আসতো, এখনো আসে- দুজনের জব স্টেশন এক জায়গায় না হলে এক সাথে তো থাকতে পারবো না তাহলে আমাদের মাঝে সম্পর্কের কোন গ্যাপ হয়ে যাবে নাতো, একে অপরের প্রতি বিশ্বাস থাকবেতো, দুজনেই ব্যস্ত হলে সংসার বলে কিছু থাকবে, দুজন দু জায়গায় থাকলে কিভাবে নিজেদের স্থির করার প্লান নিবো, সন্তানগুলো মানুষ হবে তো, নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত থাকলে বিয়ে করার প্রয়োজন আছে কি। খুব অস্থির করে তোলে ভাবনাগুলো, আরো কিছু প্রশ্ন মনের মধ্যে ঘুরফিরে আসে- যদি দুজনের জব স্টাটাস এক না হয়, তাহলে দুজন দুজনকে বুঝতে পারবো তো, কেউ হীনম্মন্যতায় ভোগবো নাতো । শৈশবটা যে আদর অনাদর আর নির্যাতনের মধ্যে বড় হয়েছি আমাদের সন্তানগুলো কি সেভাবেই বড় হবে, ওহ আর ভাবতে পারি না, কারন ভবিষ্যত আমি জানি না, আমার মনে হয় সংসার গড়ে ভেঙ্গে যাওয়ার থেকে সংসার না গড়ে তোলাই উত্তম, কারন আমি এই ছোট জীবনে অনেক ব্রকেন ফ্যামিলি দেখেছি, তাদের জীবন সুখকর হয়নি, একে তো চিন্তাগ্রস্থ জীবন তার উপর রয়েছে আত্মসম্মানের প্রশ্ন, সমাজ এদের ভালো চোখে দেখে না, সন্তানরা কখনো বাবার কাছে কখনো মায়ের কাছে থাকে, তাদের ভালোভাবে গড়ে উঠতে দেখিনি, বিশেষ করে দাম্পত্য কলহ চলাকালীন সময়ে সন্তানদের উপর মারত্মক প্রভাব পড়ে, আমি বারবার এসব চিন্তা করে শিউরে উঠি, ভয়ে বিয়ে করতে ইচ্ছে করেনা, মনের মিল না থাকলে শরীর দিয়ে আর কতদিন একসাথে থাকা যায়, এসব দুশ্চিন্তা, নিজের বেড়ে উঠার সাথে সাথে অনেকটা জড়িত, যদি আপনি পছন্দ না করেন আপনার স্ত্রী চাকরি করবে না তাহলে চাকরীজীবি মহিলা বিয়ে না করাটাই ভালো, শুধু ভালো নয় সিদ্ধান্ত এটাই হওয়া উচিত, আর যদি চাকুরীজীবি মহিলা বিয়ে করবেন তাহলে সেভাবেই নিজেকে প্রস্তুতি নিতে হবে, আপনার স্ত্রীর আলাদা একটি পরিচয়কে সম্মান জানাতে হবে, আর যদি আমরা না পারি তাহলে এধরনের মেয়েকে বিয়ে না করাই ভালো, আমার বন্ধুদের জিজ্ঞেস করেছি যারা চাকুরীজীবি মহিলাদের বিয়ে করেছেন, সবাই আমাকে বলেছে যদি না করে পারিস তাহলে বিয়ে করিস না। আবার যারা চাকুরীজীবি ছাড়া মহিলাদের বিয়ে করেছেন, তাদেরও জিজ্ঞেস করেছি, তাদের খুব আক্ষেপ তাদের স্ত্রী কিছু করছে না, অফিসের কলিগদেরও দেখলাম বউয়ের চাকরীর জন্য উঠে পরে লেগেছে, আমি এখন কোন সিদ্ধান্ত নিবো বুঝে উঠতে পারি না, তবে এটুকু বুঝতে পারি একটা সময় আসে যখন বউকে কর্মক্ষম দেখতে চায়, আর এখন এই বিষয়টা একটা প্রচলন চালূ হয়ে গেছে সমাজে, কোথায় যে সুখ আছে বুঝে উঠার জন্য যে অভিজ্ঞতা দরকার তা আমার নেই, আমার আছে কিছু ভীতি, দেখে দেখে কিছু শেখার অভিজ্ঞতা, এদিয়ে কি সিদ্ধান্ত নেয়া যায় না?
November 10, 2013 at 3:53pm
November 10, 2013 at 3:53pm
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
সুলতান মাহমুদ ২০/১১/২০১৩মেনে নিন, অল্পে সন্তুষ্ট থাকুন, কাছে রাখার চেষ্টা করুন