সময়ের সাথে জীবনের ভাবনা ৩
পৃথিবীর এমন কেউ কি আছে, যিনি সব সময় নিজের কথা ভাবতে পারে,বা এমন সময় আছে একান্ত নিজের কথা ভাবতে পারে। মনে হয় এমন কেউ নেই বা এমন সময় নেই। আমার ব্যাপারটাই বলি, মাঝে মাঝে ভাবি নিজের জন্য কোন সময় কি আমার রয়েছে, এই যে জীবনের এতো বছর কেটে গেলো আমি কি আমার জন্য কিছু করেছি,স্বার্থপর হয়ে নিজের জন্য একান্ত ভেবেছি, স্বাধীনভাবে নিজেকে পরিচালিত করেছি, অনেকক্ষন ভেবে দেখলাম - মন থেকে জবাব এলো - না, একান্ত ভাবে নিজেকে কখনো ভাবতে পারিনি,নিজের জন্য কিছু করেছি মনে হয় না। বিষয়টা হয়তো পরিষ্কার না বিস্তারিত বলা যেতে পারে, প্রশ্ন টা হলো জীবনটা কি একান্ত আমার না আরো কারো ভাগ রয়েছে। যেমন ছোট সময়টা বাবা মা যা বলেছে তাই করেছি বা করতে হয়েছে, সময় মতো ঘুম, পড়াশুনা, কতো দিন দুপুরে খেলেতে মন চেয়েছে পারি নাই, শুক্রবার আলিফ লায়লা দেখার জন্য কত রিকোয়েস্ট করেছি না দেখতে পারি নাই, স্কুলের মাস্টারদের একটা বড় রকমের প্রভাব ছিলো এই সময়টায়, ভিডিও গেমস খেলতে গিয়ে মার খেতে হলো অনেকদিন, স্কুলের বারান্দায় অবাধ খেলার সুযোগ পাইনি, বাড়ির পাশে শিক্ষকের বাসা হওয়ার কারনে অনেকদিন নিয়মের মধ্যে বাধা পড়েছিলাম, স্কুল ফাকি দিয়ে সিনেমা দেখা, কেরাম খেলতে পারি নাই, একটু অনিয়ম হলে বেতের পিটানো খেতে হয়েছে। এই বাবা মা আর স্কুলের শিক্ষকদের নিয়মের মধ্যে বা তাদের ইচ্ছায় নিজেকে বাচিয়ে রাখতে হয়েছে কিশোর জীবন, কখনোই নিজে যা চাই তা করতে পারি নাই বলা যেতে পারে করা যায়নি। স্কুলের গন্ডি পেরিয়ে কলেজের বারান্দা, নাহ এখানেও নিজেকে নিজে পরিচালিত করি নাই, রাজনৈতিক বিশ্বাসের কারনে একেবারে নিজের একান্ত সত্তাকে বিক্রি করে দিলাম, সংগঠনের নিয়ম মেনে নিজেকে তৈরী করে ফেললাম, নিজের জীবন বলতে কিছুই ছিলো না, বিশ্ববিদ্যালয় এসে নিয়ম ভাঙ্গা শুরু, নিজের ইচ্ছার গুরুত্ব দিতে শিখলাম, নিজেকে নিজের মতো ভাবতে শুরু করলাম কিন্তু এতো দিনের নিয়মের জীবন অবাধ্য হতে পারি নাই, বলা যেতে পারে নিয়ম ভাংগতে ভয় করে। তবে এখানে এসে যা হলো দেশ গড়ার ভাবনা, পৃথিবীর জন্য কিছু করা, শুরু হলো পড়াশুনা, সমাজ সেবা, সিডরের ক্ষতিগ্রস্থদের সেবার জন্য অজপাড়া গ্রামে গিয়ে মাসের পর মাস পড়ে থাকলাম,সামাজিক সংগঠন তৈরী করা, লিটল ম্যাগাজিন বের করা, দৌড়াদৌড়ি, গবেষনা কতো কি, কেটে গেলো বিশ্ববিদ্যালয় জীবন, ভেবে দেখলাম একান্ত আমার কথা ভেবে কি এগুলো করেছি, মনে হয় না। আর এখন জব করি কিন্তু কতো চিন্তা বাবা মা বিয়ে এর জন্য নিজেকে তৈরী করো ভালো জব করো, সমাজ সেবার চিন্তা তো আছেই, এখন প্রশ্ন আমার জন্য কি করলাম, একান্ত আমার কি আছে, শুধু স্বার্থপরতার কিছু আছে? সব কিছুই তো অন্যের জন্য নিজেকে তৈরী করে গেছি আবার মনে হয় অন্যের জন্য করার আড়ালে নিজের জন্যই সবকিছু করলাম নাকি, এই যে অন্যেদের সাথে নিজেকে গুলিয়ে ফেলা, এরই মাঝে কি সার্থকতা রয়েছে, মানুষ কি এটাকেই খুজে যায় নাকি স্বার্থপর হয়ে পড়ে। কিছুদিন হলো ভাবছি একান্ত সময় বলে আমার কিছু আছে, যখন শুধু আমার চিন্তা মাথায় ঘোরে, না না নেই একান্ত আমার বলে কিছু নেই সবার আড়ালে আমি, সবাইকে জড়িয়ে আমি, হ্যা একটা সময় নিজের জন্য পেয়েছি, যখন মাথায় সার্থপরতা ছাড়া কিছুই থাকে না, হ্যা সময়টা হলো হস্ত মৈথুন শেষে পরপরই ক্লান্ত হয়ে যখন বিছানায় গা এলিয়ে দেই, এই সময়টাই সব কিছু ফাকা লাগে একান্ত আমার আর স্বার্থপরতা ছাড়া মাথায় কিছু থাকে না ।
November 30, 2012 at 8:21pm
November 30, 2012 at 8:21pm
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
সাখাওয়াতুল আলম চৌধুরী. ০৭/১১/২০১৩না এভাবে ভাবলে হবে কেন? আপনি পরের জন্য কিছু চেষ্টা করছেন।এটাই তো নিজের পাওয়া।আপনার মতো ভাবলে সবকিছু আপনার শেষ লাইনের মতোই হবে।কেননা ঐটাই নিজের।