হিয়ার দাহ্যে প্রিয় পর্ব ১৮
#হিয়ার_দাহ্যে_প্রিয়
#তাবেরী ইসলাম
#পর্ব ১৮
এই যে শুনছেন আমি একটা বাচ্চা চাই সিয়াম। আপনার কি ইচ্ছে হয় না বাবা ডাক শুনার সিয়াম প্লিজ। টাসসসসসস করে ছড় বসিয়ে দিব রিমু তুমি এমন হয়ে যাচ্ছ কেন। আমি অবাক হয়ে দেখছি সিয়ামকে। যার এত আগ্রহ ছিলো বাচ্চায় আজ সে বলছে আমাকে মারবে।
আপনি আমাদের বাড়িতে আসেন না। সবার কত কথা কেন এমন করেন। আর এখন আপনি আমায় মারতে চাচ্ছেন এই ভাবে শুধু তো একটা বাচ্চা ছেয়েছি মাত্র। থাকব না আর এই খানে আমি।রিমু প্লিজ রাগ কর না।
বাবার বাড়িতে এসেছি আজ প্রায় ৩ দিন । রাগে সিয়ামের সাথে কথা বলি নি দুদিন । তাতেই উনি উনার ভাই ভাবি, শাশুড়ি, শশুড়,মামা শশুড় সবাইকে নিয়ে হাজির। দুই আব্বু আর মামা শশুড় কথা বলে সব ঠিকঠাক করে নিয়েছেন।সিয়াম আর এমন করবেন না আমার সাথে।
বিকেলে রওনা হলাম এখান থেকে বাসার দিকে। সিয়ামের মুখ গম্ভীর হয়ে আছে। পাশাপাশি চুপচাপ বসে আছি। মনে হচ্ছে কিছু নিয়ে চিন্তিও হয়ে আছেন।
আমার হাত চেপে ধরে নিয়ে বললেন এতদিন কেমন করে থাকলে তুমি,বলে চুমু খেলেন।
আমার পৌছে আব্বুকে ফোন দিয়ে জানালাম চলে এসেছি বাসায়। আমার শাশুড়ি হাত ধরে বললেন এভাবে কেউ রাগ করে নিজের বাড়ি ছেড়ে যায় পাগল মেয়ে। কিছু হলে আমাকে বলবে। আমি মাথা নাড়িয়ে সায় জানালাম।
আজ রাত্রে সিয়ামের ডিউটি আছে তাই চলে গেলেন হসপিটালে। আমি বিন্দাস আছি তাই স্টাডি রুমের বই গুলো ঘুরে ঘুরে দেখছি। হঠাৎ করেই ড্রয়ার খুলতেই বেরিয়ে এলো কিছু কাগজ পত্র সাথে একটা পিস্তল।
আমার আকাশ ভেঙে পডল মিসকেরেজের কাগজ দেখে সেই সাথে এই পিস্তল তাহলে কি সিয়াম অন্য কিছুর সাথে জড়িত আছেন। যা আমি এই আড়াই বছরেও কাছে থেকে বুঝতে পারি নি।
-"খুব করে কান্না পাচ্ছে, কেন এমন হলো সব কিছু। এসব ভাবতে ভাবতেই ঘুমিয়ে গেছি কখন জানি না।ভোর রাতে নিয়াজ ভাইয়ার কাছে কল আসলো সিয়াম হসপিটালে গুরুত্ব আহত।
তন্নি ভাবি আমাকে ডেকে তুলে বললেন রিমু চল তাড়াতাড়ি সিয়াম হসপিটালের অবস্থা গুরুতর। মাথাটা হিলে উঠলো আমার। আমি এক ঘুরের মধ্যে আছি।
হাসপাতালে সবাই বসে আছেন, আমি অস্থির হয়ে আছি শান্তি লাগছে না কিছুতেই। ডাক্তার জানালেন তেমন কিছু হয় নি। হাতে গুলি লেগেছে আর পা ভেংঙ্গে গেছে। কিছুক্ষণ পর জ্ঞান ফিরবে।
একে একে সবাই দেখে এসেছেন সিয়ামকে আমি দরজায় দাড়িয়ে কাঁদছি।হায় ইশারায় কাছে ডাকলেন। আপনি এমন কেন যদি কিছু হয়ে যেত কি হত আমার আর ভবিষ্যত ছেলে মেয়েদের। উনি হেসে উঠলেন, বললেন অনন্ত তাদের জন্য আমি এখনো বেঁচে আছি একদম ফিট দেখ। নিজের বুকের সাথে মিশিয়ে নিলেন। কি করে এমন হলো আপনার ও তুমি বুঝবে না।
একটা মাত্র বাচ্চা বউ ছেড়ে যাই কি করে।আর আপনি বন্দুক আমি দেখে ফেলেছি। মুখে হাত দিয়ে ইসসস চুপ এতো কথা না এটা আমার সেলফ ডিফেন্সের জন্য। তুমি ছাড়া যেন কেউ না জানে ওকে মাই মিসেস।অধর চুয়ে দিলেন সারা মুখে লজ্জায় লাল হয়ে গেল গাল ধুয়া বের হচ্ছে কানে। কি বেশরম লোক।
আর বাচ্চার কি হবে আমার। হবে হবে মিসেস সব ঠিক হবে আগে আমি সুস্থ হয়ে যাই।এই বলে চোখ বুঝে রইলেন।
আজ দুদিন হলো হাসপাতালে বিকেলে নিয়াজ ভাই এসেছেন আমাদের নিয়ে যেতে। ডিসচার্জ আজকেই করে নিবেন উনি। আমি সব গুছিয়ে নিয়ে রেডি ভাইয়া উনাকে ধরে ধরে গাড়িতে বসিয়ে দিলেন। আমার শাশুড়ি আম্মু তো অনেক শক্ত মনের তাই তিনি আমাকে বলে দিয়েছেন উনার সামনে যেন কান্নাকাটি না করি।এতে মন ভেঙ্গে যাবে উনার।
আম্মু নিজের হাতে রান্না করে নিয়ে এসেছেন উনার জন্য খাইয়ে দিতে। খাবার খেয়ে শুয়ে আছেন। সময়ের গতিতে চলছে সব কিছু। এই যে পুরু সপ্তাহ হয়ে গেল সিয়াম বিছানায় শুয়ে বসে দিন কাটে। কাজে থাকলে হয়তো এভাবে বাসায় থাকতেন না।টুই টুই করে ঘুরে বেড়ান সারা শহর।
-"পা টা মালিশ করে দিয়ে এসব ভাবছি। আমার ফুপি শাশুড়ি তো এসে আমাকে কথা শুনিয়ে গেলেন। তবে শশুড় আব্বু উনাকে বকে দিয়েছেন। দুঃসময়ে বোঝা যায় মানুষ কেমন আপন হয়।
রিমু এত কি ভাবছ যাও আমার জন্য এক কাপ চা নিয়ে এসো মসলা দিয়ে। আনছি অপেক্ষা করুন মিস্টার জিরাফ,
-"এই চুপ তুমি আমাকে আবার জিরাফ বলছ,তুমি কি হা টেবলেট কোথাকার। চোখ পাকিয়ে তাকালাম, তাহলে তোমার বংশধর ও টেবলেট মনে রেখ। হ্যাঁ হ্যাঁ রাখব এখন চা দাও প্লিজ।
উনার কপাল চেক করলাম ঠিক আছে হয়তো মাথা ব্যাথা করছে। তন্নি ভাবি চা করে দিলেন আমি সব কিছু নিয়ে রুমে চিলে আসলাম।
সিয়াম শুয়া থেকে উঠে বসলেন। হাত বাড়িয়ে চা দিলাম। আপনি চা খান আমি মাথা টিপে দেই,তাই কর বউ এখন তোমার আদর যত্ন বেশি করে চাই। তাই বুঝি! জি হ্যাঁ বলেই অধরে চুমু একে দিলেন। মুনা আর লাবিব এসেছে তাদের ছোট চাচ্চুকে দেখতে। মেয়েটা চাচ্চু বলতেই পাগল। বুকের ধারে বসে আছে চুপটি করে। লাবিব তো প্রশ্নের বান ডেকে আনছে, চাচ্চু এটা কেন হলো, তো এখানে কেন কিভাবে গুলি লাগল ইত্যাদি।
বিকেল যেন এভাবেই কাটে আমাদের ইদানীং কাল।বাবার বাড়িতে যাব বলেছিলাম আম্মুকে তার একদম মানা। এভাবে জামাই নিয়ে আসলে সেবা শ্রুশষা করবে কে?? অথিতি আপ্যায়নের একটা ব্যপার আছে।
আমি নিজেই ভুলে যাই আমি এখন ওবাড়ির মেহমান। যখন তখন যাওয়া যাবে না। মেয়েদের জীবন কি এমন হয়?? প্রশ্ন জাগে আম্মুকে জিজ্ঞেস করতে, কিন্তু পারি না।
#তাবেরী ইসলাম
#পর্ব ১৮
এই যে শুনছেন আমি একটা বাচ্চা চাই সিয়াম। আপনার কি ইচ্ছে হয় না বাবা ডাক শুনার সিয়াম প্লিজ। টাসসসসসস করে ছড় বসিয়ে দিব রিমু তুমি এমন হয়ে যাচ্ছ কেন। আমি অবাক হয়ে দেখছি সিয়ামকে। যার এত আগ্রহ ছিলো বাচ্চায় আজ সে বলছে আমাকে মারবে।
আপনি আমাদের বাড়িতে আসেন না। সবার কত কথা কেন এমন করেন। আর এখন আপনি আমায় মারতে চাচ্ছেন এই ভাবে শুধু তো একটা বাচ্চা ছেয়েছি মাত্র। থাকব না আর এই খানে আমি।রিমু প্লিজ রাগ কর না।
বাবার বাড়িতে এসেছি আজ প্রায় ৩ দিন । রাগে সিয়ামের সাথে কথা বলি নি দুদিন । তাতেই উনি উনার ভাই ভাবি, শাশুড়ি, শশুড়,মামা শশুড় সবাইকে নিয়ে হাজির। দুই আব্বু আর মামা শশুড় কথা বলে সব ঠিকঠাক করে নিয়েছেন।সিয়াম আর এমন করবেন না আমার সাথে।
বিকেলে রওনা হলাম এখান থেকে বাসার দিকে। সিয়ামের মুখ গম্ভীর হয়ে আছে। পাশাপাশি চুপচাপ বসে আছি। মনে হচ্ছে কিছু নিয়ে চিন্তিও হয়ে আছেন।
আমার হাত চেপে ধরে নিয়ে বললেন এতদিন কেমন করে থাকলে তুমি,বলে চুমু খেলেন।
আমার পৌছে আব্বুকে ফোন দিয়ে জানালাম চলে এসেছি বাসায়। আমার শাশুড়ি হাত ধরে বললেন এভাবে কেউ রাগ করে নিজের বাড়ি ছেড়ে যায় পাগল মেয়ে। কিছু হলে আমাকে বলবে। আমি মাথা নাড়িয়ে সায় জানালাম।
আজ রাত্রে সিয়ামের ডিউটি আছে তাই চলে গেলেন হসপিটালে। আমি বিন্দাস আছি তাই স্টাডি রুমের বই গুলো ঘুরে ঘুরে দেখছি। হঠাৎ করেই ড্রয়ার খুলতেই বেরিয়ে এলো কিছু কাগজ পত্র সাথে একটা পিস্তল।
আমার আকাশ ভেঙে পডল মিসকেরেজের কাগজ দেখে সেই সাথে এই পিস্তল তাহলে কি সিয়াম অন্য কিছুর সাথে জড়িত আছেন। যা আমি এই আড়াই বছরেও কাছে থেকে বুঝতে পারি নি।
-"খুব করে কান্না পাচ্ছে, কেন এমন হলো সব কিছু। এসব ভাবতে ভাবতেই ঘুমিয়ে গেছি কখন জানি না।ভোর রাতে নিয়াজ ভাইয়ার কাছে কল আসলো সিয়াম হসপিটালে গুরুত্ব আহত।
তন্নি ভাবি আমাকে ডেকে তুলে বললেন রিমু চল তাড়াতাড়ি সিয়াম হসপিটালের অবস্থা গুরুতর। মাথাটা হিলে উঠলো আমার। আমি এক ঘুরের মধ্যে আছি।
হাসপাতালে সবাই বসে আছেন, আমি অস্থির হয়ে আছি শান্তি লাগছে না কিছুতেই। ডাক্তার জানালেন তেমন কিছু হয় নি। হাতে গুলি লেগেছে আর পা ভেংঙ্গে গেছে। কিছুক্ষণ পর জ্ঞান ফিরবে।
একে একে সবাই দেখে এসেছেন সিয়ামকে আমি দরজায় দাড়িয়ে কাঁদছি।হায় ইশারায় কাছে ডাকলেন। আপনি এমন কেন যদি কিছু হয়ে যেত কি হত আমার আর ভবিষ্যত ছেলে মেয়েদের। উনি হেসে উঠলেন, বললেন অনন্ত তাদের জন্য আমি এখনো বেঁচে আছি একদম ফিট দেখ। নিজের বুকের সাথে মিশিয়ে নিলেন। কি করে এমন হলো আপনার ও তুমি বুঝবে না।
একটা মাত্র বাচ্চা বউ ছেড়ে যাই কি করে।আর আপনি বন্দুক আমি দেখে ফেলেছি। মুখে হাত দিয়ে ইসসস চুপ এতো কথা না এটা আমার সেলফ ডিফেন্সের জন্য। তুমি ছাড়া যেন কেউ না জানে ওকে মাই মিসেস।অধর চুয়ে দিলেন সারা মুখে লজ্জায় লাল হয়ে গেল গাল ধুয়া বের হচ্ছে কানে। কি বেশরম লোক।
আর বাচ্চার কি হবে আমার। হবে হবে মিসেস সব ঠিক হবে আগে আমি সুস্থ হয়ে যাই।এই বলে চোখ বুঝে রইলেন।
আজ দুদিন হলো হাসপাতালে বিকেলে নিয়াজ ভাই এসেছেন আমাদের নিয়ে যেতে। ডিসচার্জ আজকেই করে নিবেন উনি। আমি সব গুছিয়ে নিয়ে রেডি ভাইয়া উনাকে ধরে ধরে গাড়িতে বসিয়ে দিলেন। আমার শাশুড়ি আম্মু তো অনেক শক্ত মনের তাই তিনি আমাকে বলে দিয়েছেন উনার সামনে যেন কান্নাকাটি না করি।এতে মন ভেঙ্গে যাবে উনার।
আম্মু নিজের হাতে রান্না করে নিয়ে এসেছেন উনার জন্য খাইয়ে দিতে। খাবার খেয়ে শুয়ে আছেন। সময়ের গতিতে চলছে সব কিছু। এই যে পুরু সপ্তাহ হয়ে গেল সিয়াম বিছানায় শুয়ে বসে দিন কাটে। কাজে থাকলে হয়তো এভাবে বাসায় থাকতেন না।টুই টুই করে ঘুরে বেড়ান সারা শহর।
-"পা টা মালিশ করে দিয়ে এসব ভাবছি। আমার ফুপি শাশুড়ি তো এসে আমাকে কথা শুনিয়ে গেলেন। তবে শশুড় আব্বু উনাকে বকে দিয়েছেন। দুঃসময়ে বোঝা যায় মানুষ কেমন আপন হয়।
রিমু এত কি ভাবছ যাও আমার জন্য এক কাপ চা নিয়ে এসো মসলা দিয়ে। আনছি অপেক্ষা করুন মিস্টার জিরাফ,
-"এই চুপ তুমি আমাকে আবার জিরাফ বলছ,তুমি কি হা টেবলেট কোথাকার। চোখ পাকিয়ে তাকালাম, তাহলে তোমার বংশধর ও টেবলেট মনে রেখ। হ্যাঁ হ্যাঁ রাখব এখন চা দাও প্লিজ।
উনার কপাল চেক করলাম ঠিক আছে হয়তো মাথা ব্যাথা করছে। তন্নি ভাবি চা করে দিলেন আমি সব কিছু নিয়ে রুমে চিলে আসলাম।
সিয়াম শুয়া থেকে উঠে বসলেন। হাত বাড়িয়ে চা দিলাম। আপনি চা খান আমি মাথা টিপে দেই,তাই কর বউ এখন তোমার আদর যত্ন বেশি করে চাই। তাই বুঝি! জি হ্যাঁ বলেই অধরে চুমু একে দিলেন। মুনা আর লাবিব এসেছে তাদের ছোট চাচ্চুকে দেখতে। মেয়েটা চাচ্চু বলতেই পাগল। বুকের ধারে বসে আছে চুপটি করে। লাবিব তো প্রশ্নের বান ডেকে আনছে, চাচ্চু এটা কেন হলো, তো এখানে কেন কিভাবে গুলি লাগল ইত্যাদি।
বিকেল যেন এভাবেই কাটে আমাদের ইদানীং কাল।বাবার বাড়িতে যাব বলেছিলাম আম্মুকে তার একদম মানা। এভাবে জামাই নিয়ে আসলে সেবা শ্রুশষা করবে কে?? অথিতি আপ্যায়নের একটা ব্যপার আছে।
আমি নিজেই ভুলে যাই আমি এখন ওবাড়ির মেহমান। যখন তখন যাওয়া যাবে না। মেয়েদের জীবন কি এমন হয়?? প্রশ্ন জাগে আম্মুকে জিজ্ঞেস করতে, কিন্তু পারি না।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
ফয়জুল মহী ২১/০৬/২০২৪ভীষণ ভালো লিখেছেন l
-
শঙ্খজিৎ ভট্টাচার্য ২০/০৬/২০২৪সুন্দর গল্প