হিয়ার দাহ্যে প্রিয় পর্ব ১৭
#হিয়ার_দাহ্যে_প্রিয়
#তাবেরী ইসলাম
#পর্ব ১৭
গ্রামের পরিবেশ মনোরম পরিবেশে ভালো লাগা ছুয়ে যায়। গ্রামে এসেছি আজ দু'দিন। খেজুর গুড়ের রস দিয়ে গরম গরম চা খাওয়া হচ্ছে। আর সেটা মি. জিরাফ মিস করছেন,তাই ভিডিও কলে উনাকে দেখাচ্ছি। আজ সূর্য কোন দিকে উঠলো! কেন কি হয়েছে। এই যে তুমি এতো সকাল চা খাচ্ছ তাই জিজ্ঞেস করলাম। অহ, এমনি মন চাইলো তাই, তা কেউ কি আমাকে ভাবছে, রিমু লজ্জায় মুখ লাল হয়ে গেল। কবে আসছেন আপনি এখানে।
–'হা হা হা আমি ভাবছি বিয়ের দিন আসব। কেন কিছু লাগবে তোমার??
-'রিমু মুখ ছোট করে উত্তর দিলো, না কিছু লাগবে না।আপনি আসলেই হতো। বলে মন খারাপ করে কল কেটে দিল। ধরব না কল আর।
এই কথাবার্তা আর আড্ডা দিয়ে সকালের নাস্তা করে নিলাম আমরা। যেহেতু গ্রামে আছি তাই রান্না থেকে আমি মুক্ত সারাদিন সিয়ামের কাজিনদের সঙ্গে কাটাবো। আমার শাশুড়ি একটু গম্ভীর হলেও আমার শশুড় দারুন মানুষ। আমি আর ভাবি শপিং করেই এসেছি। আমরা পরিবারের সবাই একই ডিজাইনের পোশাক পড়ব।
-'আমি গ্রামে মানুষ হলেও, এখন মনে হয় আমি বহুদিন গ্রামের হাওয়া ভোগ করি না। সিয়ামের চাচাতো বোন এসেই বলছে ভাবি, কেমন চমক দিলাম তোমায় কত দিন পর দেখা হচ্ছে আমাদের।
আমি হেসে দিলাম,মুহুর্ত গুলো চলে যায় দ্রুত। রাতে ছোট করে মেহেদির অনুষ্ঠান করা হলো। সেজেগুজে সবাই ব্যস্ত মেহেদি লাগাতে।
সিয়াম ডাক দিলো রিমুকে এদিকে আসতো।আসছি বলতে ধাক্কা লাগলো অন্যন্যার সাথে তার হাতের জুসটা পড়লো দু'জনের গায়ে। আমি দুঃখিত দেখি নি আলসে।
অনন্যা চেঁচিয়ে উঠলো নাকি ইচ্ছে করে করেছ, সবার মনোযোগ এখন আমাদের দিকে, সিয়াম দৌড়ে আসলেন। দিলে তো জামা নষ্ট করে,নাকি এসব আগে দেখনি। আমি চেয়ে আছি অনন্যার দিকে মানুষ একটুর জন্য কিভাবে চেঁচামেচি করতে পারে। সিয়াম তাৎক্ষনা বলে উঠলেন অনন্যা ও তোর ভাবি হয়, জাস্ট একটুর জন্য কেউ এমন করে।
আমার শাশুড়ি ও চলে এসেছেন এখানে সিয়াম উনাকে সব বললেন। উনি বললেন ঘরে যাও।
- সিয়াম রেগে আমার হাত চেপে ধরে নিয়ে আসলেন।রুমে দরজা বন্ধ করে দিলেন, দেখে হাটতে পার নাদ তুমি। আমি নিচের দিকে তাকিয়ে আছি। চোখ থেকে পানি ঝরছে। যাও ড্রেস চেঞ্জ করে আসো।
হাতে মেহেদি শুকিয়ে গেছে সেজন্য নষ্ট হয় নি।কত মজা করছে সবাই সেজন্য আমার একটু মন খারাপ হলো। ফ্রেশ হয়ে বসতে সিয়াম কাছে এসে বললেন ওই মেয়ের আশেপাশেও যেন তোমায় না দেখি, আমি শুধু মাথা দুলিয়ে হ্যাঁ বুঝালাম।
বাহ! মেহেদি তো ধারুন হয়েছে তো সুন্দর। কিন্তু মিস্টার আমার যে পেঠে ক্ষুধা লাগছে এখন কি খাব। উনি নিজেই রান্না করতে গেলেন। ডিম পোচ আর নুডুস করে নিয়ে আসলেন। খেতে অতটা মজা না হলেও টেস্ট মন্দ ছিলো না।আজ কি থেকে কি হয়ে গেল। শাশুড়ি আম্মু আর আব্বু ও চলে এসেছেন সেখান থেকে।
সকাল বেলা ফুপি শাশুড়ি এসে সাধছেন বিয়েতে সবাইকে যাওয়ার জন্য। অনন্যা মেয়েটাও এসেছে উনার সাথে। আড় চোখে ওর বাঁকা চাউনি বুঝিয়ে দিচ্ছে ও ইচ্ছে করে আসে নি। আমার সামনে এসে হাত ধরে বলল সরি ভাবি। আসলে আমার উচিত হয় নি এমন করার, সিয়াম হাত ছাড়িয়ে বললেন ইটস ওকে।আমি শুধু চেয়ে আছি,শাশুড়ি আম্মুর ইশারায় হ্যাঁ বললাম।
কিন্তু বাধ সাধলেন সিয়াম বলল আজি বাসায় যেতে চাই আমরা সাথে রিমুকেও যেতে হবে। উনার রাগের কথা সবাই জানেন, তাই ফুপি শাশুড়ির মন খারাপ করে বলে উঠলেন ঠিক আছে।আব্বু বললেন আমরা বাকিরা যাব তো সমস্যা নেই।
এই বিয়েতে আসব বলে কত কিছু কেনা আর এখন বিয়েতেই যাব না ওই শাকচুন্নির জন্য দুঃখ পেলাম। সিয়াম এসেই বললেন জিনিস পত্র গোছাতে, আমরা বেড়াতে যাব চা বাগানে। আমি তো অবাক এখন আবার কি হলো উনার। সিয়াম স্মিথ হেসে বললেন তোমার মুড অফ সেজন্য যাচ্ছি জলদি কর দেরি হয়ে যাবে।
আব্বু আম্মুকে বলে আমরা বেরিয়ে পড়লাম কারে করে। ঘুরাঘুরি করে সন্ধ্যার দিকে বাসা পৌছলাম। রাতের খাবার সাথে নিয়ে এসেছেন সিয়াম।এই একটা মানুষ যে আমায় এত আগলে রাখতে জানেন।
-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
সবকিছু ঠিকঠাক চলছে, সিয়াম আজকে ভোর বেলাই চলে গেলেন হসপিটালে।ডাক্তার মানেই এই রকম রাত বিরাতে কাজ থাকে।
নামাজ পড়ে ঘুমিয়ে রইলা।ভাইয়া ভাবি আর পিচ্ছি গুলো চলে এসেছে গ্রামের বাড়ি থেকে সাপ্তাহ খানিক হলো। মেহেদির রাত্রের ঘটনা নিয়ে কেউ আর কিছু বলে নি।
আজকে আমি রাঁধব, ভাবির সাথে সেই তোরজোর শুরু করে দিয়েছি রান্নার। সিয়ামের প্রিয় ভ্যাজিটেবল চিকেন আর গোস্তো বুনা, সাথে সিদ্ধ সাদা ভাত।ভাবি দেখোতে কেমন হয়েছে। দারুণ টেস্ট হয়েছে, আজকে ছোট ভাই পটে যাবে রিমু। আমি লাজুক হাসলাম। তন্নি ভাবি চলে গেলেন।
আমি এসে ফ্রেশ হয়ে নিলাম। রাফসার সাথে কথা হয় না অনেক দিন। আমার গল্পও চাপা হয় নি আর। মাঝে মধ্যে মনে হয় কি হবে এসব দিয়ে। স্টাডি রুম থেকে গল্পের বই নিয়ে আসলাম। কল করলাম রাফসাকে।
-'হ্যালো রাফসা কি খবর?? আজ কাল তোকে খুঁজেই পাওয়া যায় না। ভীষণ ব্যস্ত রে চাকরি জীবন মানে গাধার মতো খাটুনি খাটতে হবে না হলে চলবে। হা হা হা কথা শিখে গেছিস তুই। তা কেমন যাচ্ছে তোর। এই তো আলহামদুলিল্লাহ। তো বিয়ে কবে বল। বিয়ে সামনের মাসে। বাহ!বেশ ভালো। দাওয়াত পাচ্ছি তো।না তোকে দেব কেন দাওয়াত হ্যা কে তুই। শয়তান ভালো হবে না বলে দিলাম।
চলবে------
#তাবেরী ইসলাম
#পর্ব ১৭
গ্রামের পরিবেশ মনোরম পরিবেশে ভালো লাগা ছুয়ে যায়। গ্রামে এসেছি আজ দু'দিন। খেজুর গুড়ের রস দিয়ে গরম গরম চা খাওয়া হচ্ছে। আর সেটা মি. জিরাফ মিস করছেন,তাই ভিডিও কলে উনাকে দেখাচ্ছি। আজ সূর্য কোন দিকে উঠলো! কেন কি হয়েছে। এই যে তুমি এতো সকাল চা খাচ্ছ তাই জিজ্ঞেস করলাম। অহ, এমনি মন চাইলো তাই, তা কেউ কি আমাকে ভাবছে, রিমু লজ্জায় মুখ লাল হয়ে গেল। কবে আসছেন আপনি এখানে।
–'হা হা হা আমি ভাবছি বিয়ের দিন আসব। কেন কিছু লাগবে তোমার??
-'রিমু মুখ ছোট করে উত্তর দিলো, না কিছু লাগবে না।আপনি আসলেই হতো। বলে মন খারাপ করে কল কেটে দিল। ধরব না কল আর।
এই কথাবার্তা আর আড্ডা দিয়ে সকালের নাস্তা করে নিলাম আমরা। যেহেতু গ্রামে আছি তাই রান্না থেকে আমি মুক্ত সারাদিন সিয়ামের কাজিনদের সঙ্গে কাটাবো। আমার শাশুড়ি একটু গম্ভীর হলেও আমার শশুড় দারুন মানুষ। আমি আর ভাবি শপিং করেই এসেছি। আমরা পরিবারের সবাই একই ডিজাইনের পোশাক পড়ব।
-'আমি গ্রামে মানুষ হলেও, এখন মনে হয় আমি বহুদিন গ্রামের হাওয়া ভোগ করি না। সিয়ামের চাচাতো বোন এসেই বলছে ভাবি, কেমন চমক দিলাম তোমায় কত দিন পর দেখা হচ্ছে আমাদের।
আমি হেসে দিলাম,মুহুর্ত গুলো চলে যায় দ্রুত। রাতে ছোট করে মেহেদির অনুষ্ঠান করা হলো। সেজেগুজে সবাই ব্যস্ত মেহেদি লাগাতে।
সিয়াম ডাক দিলো রিমুকে এদিকে আসতো।আসছি বলতে ধাক্কা লাগলো অন্যন্যার সাথে তার হাতের জুসটা পড়লো দু'জনের গায়ে। আমি দুঃখিত দেখি নি আলসে।
অনন্যা চেঁচিয়ে উঠলো নাকি ইচ্ছে করে করেছ, সবার মনোযোগ এখন আমাদের দিকে, সিয়াম দৌড়ে আসলেন। দিলে তো জামা নষ্ট করে,নাকি এসব আগে দেখনি। আমি চেয়ে আছি অনন্যার দিকে মানুষ একটুর জন্য কিভাবে চেঁচামেচি করতে পারে। সিয়াম তাৎক্ষনা বলে উঠলেন অনন্যা ও তোর ভাবি হয়, জাস্ট একটুর জন্য কেউ এমন করে।
আমার শাশুড়ি ও চলে এসেছেন এখানে সিয়াম উনাকে সব বললেন। উনি বললেন ঘরে যাও।
- সিয়াম রেগে আমার হাত চেপে ধরে নিয়ে আসলেন।রুমে দরজা বন্ধ করে দিলেন, দেখে হাটতে পার নাদ তুমি। আমি নিচের দিকে তাকিয়ে আছি। চোখ থেকে পানি ঝরছে। যাও ড্রেস চেঞ্জ করে আসো।
হাতে মেহেদি শুকিয়ে গেছে সেজন্য নষ্ট হয় নি।কত মজা করছে সবাই সেজন্য আমার একটু মন খারাপ হলো। ফ্রেশ হয়ে বসতে সিয়াম কাছে এসে বললেন ওই মেয়ের আশেপাশেও যেন তোমায় না দেখি, আমি শুধু মাথা দুলিয়ে হ্যাঁ বুঝালাম।
বাহ! মেহেদি তো ধারুন হয়েছে তো সুন্দর। কিন্তু মিস্টার আমার যে পেঠে ক্ষুধা লাগছে এখন কি খাব। উনি নিজেই রান্না করতে গেলেন। ডিম পোচ আর নুডুস করে নিয়ে আসলেন। খেতে অতটা মজা না হলেও টেস্ট মন্দ ছিলো না।আজ কি থেকে কি হয়ে গেল। শাশুড়ি আম্মু আর আব্বু ও চলে এসেছেন সেখান থেকে।
সকাল বেলা ফুপি শাশুড়ি এসে সাধছেন বিয়েতে সবাইকে যাওয়ার জন্য। অনন্যা মেয়েটাও এসেছে উনার সাথে। আড় চোখে ওর বাঁকা চাউনি বুঝিয়ে দিচ্ছে ও ইচ্ছে করে আসে নি। আমার সামনে এসে হাত ধরে বলল সরি ভাবি। আসলে আমার উচিত হয় নি এমন করার, সিয়াম হাত ছাড়িয়ে বললেন ইটস ওকে।আমি শুধু চেয়ে আছি,শাশুড়ি আম্মুর ইশারায় হ্যাঁ বললাম।
কিন্তু বাধ সাধলেন সিয়াম বলল আজি বাসায় যেতে চাই আমরা সাথে রিমুকেও যেতে হবে। উনার রাগের কথা সবাই জানেন, তাই ফুপি শাশুড়ির মন খারাপ করে বলে উঠলেন ঠিক আছে।আব্বু বললেন আমরা বাকিরা যাব তো সমস্যা নেই।
এই বিয়েতে আসব বলে কত কিছু কেনা আর এখন বিয়েতেই যাব না ওই শাকচুন্নির জন্য দুঃখ পেলাম। সিয়াম এসেই বললেন জিনিস পত্র গোছাতে, আমরা বেড়াতে যাব চা বাগানে। আমি তো অবাক এখন আবার কি হলো উনার। সিয়াম স্মিথ হেসে বললেন তোমার মুড অফ সেজন্য যাচ্ছি জলদি কর দেরি হয়ে যাবে।
আব্বু আম্মুকে বলে আমরা বেরিয়ে পড়লাম কারে করে। ঘুরাঘুরি করে সন্ধ্যার দিকে বাসা পৌছলাম। রাতের খাবার সাথে নিয়ে এসেছেন সিয়াম।এই একটা মানুষ যে আমায় এত আগলে রাখতে জানেন।
-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
সবকিছু ঠিকঠাক চলছে, সিয়াম আজকে ভোর বেলাই চলে গেলেন হসপিটালে।ডাক্তার মানেই এই রকম রাত বিরাতে কাজ থাকে।
নামাজ পড়ে ঘুমিয়ে রইলা।ভাইয়া ভাবি আর পিচ্ছি গুলো চলে এসেছে গ্রামের বাড়ি থেকে সাপ্তাহ খানিক হলো। মেহেদির রাত্রের ঘটনা নিয়ে কেউ আর কিছু বলে নি।
আজকে আমি রাঁধব, ভাবির সাথে সেই তোরজোর শুরু করে দিয়েছি রান্নার। সিয়ামের প্রিয় ভ্যাজিটেবল চিকেন আর গোস্তো বুনা, সাথে সিদ্ধ সাদা ভাত।ভাবি দেখোতে কেমন হয়েছে। দারুণ টেস্ট হয়েছে, আজকে ছোট ভাই পটে যাবে রিমু। আমি লাজুক হাসলাম। তন্নি ভাবি চলে গেলেন।
আমি এসে ফ্রেশ হয়ে নিলাম। রাফসার সাথে কথা হয় না অনেক দিন। আমার গল্পও চাপা হয় নি আর। মাঝে মধ্যে মনে হয় কি হবে এসব দিয়ে। স্টাডি রুম থেকে গল্পের বই নিয়ে আসলাম। কল করলাম রাফসাকে।
-'হ্যালো রাফসা কি খবর?? আজ কাল তোকে খুঁজেই পাওয়া যায় না। ভীষণ ব্যস্ত রে চাকরি জীবন মানে গাধার মতো খাটুনি খাটতে হবে না হলে চলবে। হা হা হা কথা শিখে গেছিস তুই। তা কেমন যাচ্ছে তোর। এই তো আলহামদুলিল্লাহ। তো বিয়ে কবে বল। বিয়ে সামনের মাসে। বাহ!বেশ ভালো। দাওয়াত পাচ্ছি তো।না তোকে দেব কেন দাওয়াত হ্যা কে তুই। শয়তান ভালো হবে না বলে দিলাম।
চলবে------
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
শঙ্খজিৎ ভট্টাচার্য ২০/০৬/২০২৪বেশ
-
ফয়জুল মহী ১৯/০৬/২০২৪খুব সুন্দর করে বললেন মনের কথা।