www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

হিয়ার দাহ্যে প্রিয় পর্ব ১৬

#হিয়ার_দাহ্যে_প্রিয়
#তাবেরী ইসলাম
#পর্ব ১৬


জীবন অদ্ভুত আমার চেয়ে তুই বেশ জানিস। পেশাগত জীবনের রেশ যেন পারিবারিক ক্ষেত্রে প্রভাব না পড়ে সেটা ভাবিস আগে। মেয়েরা ছেলেদের অর্ধেক তাদের সাথে পাল্লা দিতে হবে বুদ্ধিতে। আর ছবির লোকগুলো খুব ক্ষমতাধর। সিয়ামকে আমি ভয়ে ছবিটা দেখিয়ে ফেলেছি।উনি চান না আমরা কোনো ঝামেলায় জড়াই।তাহলে এরা আমাদের ক্ষতি করতে দুবার ভাববে না। ক্ষমতা আর কুৎসিত না হলে কেউ রাত্র দুপুরে মানুষ মারে। রাফসা কিঞ্জিত রেগে বলল তুই এতো বোকা কেন হ্যাঁ। কি দরকার ছিলো ভাইয়াকে দেখানোর।

-'আমার যে ঘুম আসছিলো না ভয়ে। আমি কেঁদেছি খুব। তাই ছবি কেটে দিয়েছেন সিয়াম। তুই নিজের খেয়াল রাখিস। আচ্ছা বায়।

-'নিশুতি রাত্র কাকের কা কা ডাকে ভয় মনে জাগছে।তারাতাড়ি ভাবির পাশে বসে টিভি দেখায় মনোযোগ দেই।ভাবি  মুড়ির বাটি সামনে দিয়ে বললেন কি হয়েছে রিমু মুখ এমন কালো লাগছে কেন?

-'কিছু না ভাবি এমনি। ইন্ডিয়ান সিরিয়ালের চেয়ে এখন পাকিস্তানি আর তুর্কি বা কোরিয়ান নাটক গুলো জনপ্রিয়তা বেশি পেয়েছে। মুড়ি চা দিয়ে খাচ্ছি আর নাটক দেখছি। সিয়াম আজ আগে চলে এলেন বাসায়। স্টাডি রুমে ঘন্টা খানিক সময় কি যেন ফাইল পত্র নিয়ে ঘাটাঘাটি করলেন। খাওয়া দাওয়া করে রুমে এসে বসে আছি সিয়াম ফ্রেশ হয়ে এলেন আমার কাছে। ইদানিং আমার ঘুম আসে না একা একা ভয় লাগে মাঝে মধ্যে। কি হলো আমার মিসেস এর? এমন আনমনা হয়ে আছো কেন?ভ্রু জোড়া কুঁচকে আছে সিয়ামের।

-'কই কিছু না তো। তুমি বললেই হলো গাধী, আমি কি বুঝি না কিছু । ঘুম ঘুম চোখে তাকিয়ে আছি, ভয় পাওয়ার কিছুই নেই আমি আছি তো। মাথার ওড়না ফেলে দিলেন। স্মিত হেসে বললেন আমার কিন্তু এখন একটা ভীষণ ইচ্ছা জাগছে। অধর ছুঁয়ে দিলেন গালে, লজ্জায় লাল আভায় মুড়িয়ে গেল সারা মুখ। চোখে চোখে কথার ছলে রঙ্গিন হলো মুহুর্ত।

এই সময়ে আমি বাহিরে খুব কমই গিয়েছি। কলেজ ছাড়া বাহিরে তেমন কোনো সময় ব্যয় করি নি। সিয়াম ব্যস্ত নিজের কাজে।


-'সিয়াম বসে আছে রাফসার জন্য কফি শপে।মিনিট দশেক পর রাফসা এসে উপস্থিত হয়। বলুন ভাইয়া কি জন্য ডেকেছেন? রিমু কেমন আছে? ও ভালো আছে আর ভয় পেয়ে গেছে একটু।

মূল কথায় আসা যাক,আমি চাচ্ছি না ঐ ছবি টা এখন প্রকাশ করো। এতে তোমার লাইফ রিস্কি হবে আর বিশেষ করে রশীদকে ধরাও যাবে না। ওরা আগাম সতর্ক হয়ে পালিয়ে যাবে। তাতে করে আমাদের লাভের চেয়ে লোকশান বেশি হবে। বুঝতে পারছ আমি কি বলেছি বলে কফিতে চুমুক দিলো সিয়াম।

কিন্তু ভাইয়া আপনি এসব বলছেন কেন? সাংবাদিকতা মানেই তো সাহসিকতার সাথে কাজ করা। এত কিছু পরে জানলেও চলবে। আমাদের মধ্যে যা কথা হয়েছে তা কারো সাথে শেয়ার করবে না। নিজের খেয়াল রেখ। আসি।

-'আজ বিকেলে উনি বাসায় আসলেন দেখে আমি পুরাই অবাক। কি মিষ্টার জিরাফ আজ এতো আগে বাগেই এসে পড়লেন চোখ গোল গোল করে তাকিয়ে আছি।অদ্ভুত তো আমি কি আসতে পারি না??

তা নয় বলে উনার কাপড় হাতে দিয়ে বললাম ফ্রেশ হয়ে আসুন। এক কাপ কফি বানিয়ে নিয়ে এলাম।সিয়াম ফ্রেশ হয়ে ভেজা চুলে গা এলিয়ে দিয়েছে বিছানায়। চিন্তিত হয়ে কাছে গিয়ে কাপটা রেখে হাত দিলাম সিয়ামের কপালে। মাথা ব্যাথা করছে টেনে দাও চুল গুলো বলে হাত রাখলেন কপালের মাধ্যে। কিন্তু আপনার কফি যে ঠান্ডা হয়ে যাবে। যাক তবে তুমি একটুও হাত নড়াবে না।

–'তুমি শুনবে আজ অনেক সুন্দর একজন রোগী এসেছিলো, কি মায়াবী চেহারা। তো আমার কি? আর আপনি ঐ মেয়ের দিকে তাকিয়ে ছিলেন তাই তো বলেই দিলাম চুলে জুড়ে টান।

–'আহহ করছ কি রিমু?ভ্রু কুচকে আছে আমার রাগে। হাত টেনে ধরে বললেন এত জেলাসি রাখও কোথায় তুমি হুম। হাত ঝাড়া দিতে চাইলে চেপে ধরে বললেন ডোন্ট মুব আই নিড ইউর ওয়ার্মস।

রাত্রের খাওয়া শেষে শাশুড়ি আম্মুর সাথে কথা হয়েছে গ্রামে যাব আমরা সবাই। উনার চাচাতো ভাইয়ের বিয়ে। আমার অনেক খুশি খুশি লাগছে অনেক দিন হয় বিয়ে খাই না। আমি আলমারি খুলে কাপড় খুঁজতে শুরু করেছি। সিয়াম চেয়ে আছেন আমার দিকে উৎসুক হয়ে আর মিটমিটিয়ে হাসছেন।

কোমড়ে হাত গুজে বললাম হাসছেন কেন আপনি?? এই যে তুমি কখন থেকে কাপড় খুজতেছ তাই। আলমারি শুদ্ধু নিয়ে যাই,তাহলে তোমার আর কাপড় খুঁজে কষ্ট করতে হবে না। সিয়াম বলেছেন এই এই কি করছ তুমি এটা। সব গুলো কাপড় ছেড়ে দিলাম উনার উপর এবার ঠিক করেন আপনি। হি হি আমি অনেক খুশি।

সিয়াম সব কাপড় গোছাচ্ছেন আর বলছেন আজকে তোমার শাস্তি পাওনা রইল। আমি আপনাকে ভয় পাই না মি. জিরাফ। তাই নাকি আসব কাছে কে কাকে ভয় পায় বুঝা যাবে।


চলবে--
বিষয়শ্রেণী: গল্প
ব্লগটি ২৫৬ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ০৯/০৫/২০২৩

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast