আমার একদিন
কলেজে এসেছি ফরম ফিলাপের জন্য আরো কিছু দিন সময় বাড়ানো হলে বাড়িতে হাতে পায়ে পড়ে কিছু একটা ব্যবস্থা করতে পারব।
কিন্তু বাড়িতে এসে একথা বলতেই এক চড় খেতে হলো। আসলে জীবন অদ্ভুদ আমার মা কখনো কিছুই বলেন নি। উনার কোনো প্রক্রিয়া ছিলো না আমার পড়াশোনায়। রান্না একটু উলঠ পালট হলেই বকা শুরু।
এমন মেয়ে কে নিয়ে নিবে মুখের ঝাজ যা তাতে দু-দিন ঠিক বলে মনে হয় না। গরু ছাগল নিয়া মচিবতে আছি আল্লাহ দেখ আমার অবস্থা।
এসব শুনতে শুনতে অভ্যস্ত হয়ে গেছি। মাঝে মধ্যে কষ্ট হয় যাবার কোনো জায়গা থাকতো তো অনেক আগেই চলে যেতাম। দূরভাগ্য আমার না আছে রুপ লাবণ্য আর না ফর্সা চামড়ার হরিণীর মতো চোখ একে তো খাট মেয়ে।
কন্যা দায় গ্রস্ত পিতার পিটে বোঝা স্বরুপ আছি।চার দেয়ালে বন্দী মনে হয়। মাঝে মাঝে কান্না পায় এর শেষ কোথায়।
আমি যেন সবার চোখে এক প্রকার বোঝা বয়স বাড়ছে বিয়ে হচ্ছে না। দু এক জন ছাড়া আমায় কেউ সাপোর্ট করেন না। তাও বোন হিসেবে না পেরে যাকে বলে।
পড়া ছেড়েছি আজ প্রায় ৩বছর হবে, আর সেই পড়া আমার জীবনের জন্য অভিশাপ। এমন কোনো কথা হয় নি পড়া নিয়ে আমার। শিক্ষিত মেয়ে হয়ে কি হবে ঘরের হাড়ি সেই তো মাঝতে হবে।
তাই আজ ছিড়ে ফেলেছি সব কাগজ বাস্তবতা অনেক কঠিন। মানিয়ে নিয়েতে হবে সব আমাকে।
কোনো রকম একটা সমন্ধ আমায় পছন্দ করে গেল।ছেলে ব্যাংকে চাকরি করে আর কি চাই, এটাই অনেক।
পরিবার নিয়ে এসে পাকা কথা হলো। ছেলের সাথে আমার আলাদা করে কথা বলার জন্য দেওয়া হলো।
উনিই শুরুতেই নাম জিজ্ঞেস করলেন
বললাম তামান্না ইসলাম। নামাজ কালাম পারো আর আমাকে কি পছন্দ হয়েছে।
মাথা নিচু করে হ্যাঁ জানালাম। আমার একটা কথা বিয়ে টা যেন ঘরোয়া হয় তবে আমি খুশি হব।উনি হেসে বললেন চলেন।সবার কথা বার্তায় বিয়ে টিক হলো শুক্রবার।
ঘনিয়ে এলো সময় মান অভিমানের জন্য আমার এই নিরবতা। সবার বিয়েতে তো ডাক ডোল বাজানো হয়েছে আমার নাইবা হলো। আমি এখন থেকে গেলেই মুক্তি।
সত্যিই উনি উনার পরিবার আর কাছের মানুষ ছাড়া কাউকেই আনেন নি। বিয়ে টিক সময়ে সম্পন্ন হয়ে গেল।আমি নামক বোঝা পরিবার থেকে নেমে গেল অবশেষে।৷
কেঁদেছি অনেক এটা সুখের কান্না। লোকটার একটু বয়স তাতে কি ভালো মানুষ নিতান্তই একজন।হালকা ফুল দিয়ে সাজানো রুমে বসে আছি। ভাবছি জীবনের বদলে যাওয়া সময় গুলোর কথা।
উনি এসে হাতে একটা ছোট গিপ্ট বক্স দিলেন। বললেন রাত্র অনেক হয়েছে শুয়ে পড়। আমি তোমার থেকে প্রায় ৮বছরের বড় হব। সময়ের সাথে আমারা চেষ্টা করব সব কিছু ঠিক করে নিতে।
এভাবে কেটে গেল বছর মানিয়ে নিয়েছি আমরা। একদিন বললাম মুহিব আমি আর এ শহরে থাকতে চাই না। পরিবারের সাথে আমার দূরত্ব বেড়ে গেছে। আমি আর বাবার বাড়িতে যাই না বলতে সময় করে উঠতে পারি না।
কয়েকটি টিউশনি করিয়ে আর ঘরের কাজ করে সারা দিন চলে যায়। মুহিতের ট্রানেস্পার হয়েছে উনার নিজের শহর রাজশাহীতে।
সব কিছু প্যাক করে নিয়েছি আর একবার বাড়িতে গিয়ে দেখা করব। আম্মু আব্বুর আর আপুদের জন্য কিছু শপিং করেছি।
আর হয়তো এশহরে আসা হবে না তেমন আর না পরিবারের সাথে। মনে হচ্ছে আমি বিদেশ যাচ্ছি আব্বু আম্মুর আদিখ্যেতা দেখলে এখন হাসি পায়। আম্মু জানতে চাইলেন চলে যাচ্ছি কেন?? বলে দিলাম ঘর বাড়ি ছাড়া কয়দিন থাকব এখানে। জামাই এত রুজি করে একটা বাড়ি করতে পারল না এখনো। কিছুই বললাম না শুধু হাসলাম। সারাদিন থেকে বিকেলে চলে এলাম।
চলে যাচ্ছি এ শহর ছেড়ে হয়তো আসব কখনো হয়তো বা না।
#আমার একদিন
#তাবেরী ইসলাম
চলবে -----
কিন্তু বাড়িতে এসে একথা বলতেই এক চড় খেতে হলো। আসলে জীবন অদ্ভুদ আমার মা কখনো কিছুই বলেন নি। উনার কোনো প্রক্রিয়া ছিলো না আমার পড়াশোনায়। রান্না একটু উলঠ পালট হলেই বকা শুরু।
এমন মেয়ে কে নিয়ে নিবে মুখের ঝাজ যা তাতে দু-দিন ঠিক বলে মনে হয় না। গরু ছাগল নিয়া মচিবতে আছি আল্লাহ দেখ আমার অবস্থা।
এসব শুনতে শুনতে অভ্যস্ত হয়ে গেছি। মাঝে মধ্যে কষ্ট হয় যাবার কোনো জায়গা থাকতো তো অনেক আগেই চলে যেতাম। দূরভাগ্য আমার না আছে রুপ লাবণ্য আর না ফর্সা চামড়ার হরিণীর মতো চোখ একে তো খাট মেয়ে।
কন্যা দায় গ্রস্ত পিতার পিটে বোঝা স্বরুপ আছি।চার দেয়ালে বন্দী মনে হয়। মাঝে মাঝে কান্না পায় এর শেষ কোথায়।
আমি যেন সবার চোখে এক প্রকার বোঝা বয়স বাড়ছে বিয়ে হচ্ছে না। দু এক জন ছাড়া আমায় কেউ সাপোর্ট করেন না। তাও বোন হিসেবে না পেরে যাকে বলে।
পড়া ছেড়েছি আজ প্রায় ৩বছর হবে, আর সেই পড়া আমার জীবনের জন্য অভিশাপ। এমন কোনো কথা হয় নি পড়া নিয়ে আমার। শিক্ষিত মেয়ে হয়ে কি হবে ঘরের হাড়ি সেই তো মাঝতে হবে।
তাই আজ ছিড়ে ফেলেছি সব কাগজ বাস্তবতা অনেক কঠিন। মানিয়ে নিয়েতে হবে সব আমাকে।
কোনো রকম একটা সমন্ধ আমায় পছন্দ করে গেল।ছেলে ব্যাংকে চাকরি করে আর কি চাই, এটাই অনেক।
পরিবার নিয়ে এসে পাকা কথা হলো। ছেলের সাথে আমার আলাদা করে কথা বলার জন্য দেওয়া হলো।
উনিই শুরুতেই নাম জিজ্ঞেস করলেন
বললাম তামান্না ইসলাম। নামাজ কালাম পারো আর আমাকে কি পছন্দ হয়েছে।
মাথা নিচু করে হ্যাঁ জানালাম। আমার একটা কথা বিয়ে টা যেন ঘরোয়া হয় তবে আমি খুশি হব।উনি হেসে বললেন চলেন।সবার কথা বার্তায় বিয়ে টিক হলো শুক্রবার।
ঘনিয়ে এলো সময় মান অভিমানের জন্য আমার এই নিরবতা। সবার বিয়েতে তো ডাক ডোল বাজানো হয়েছে আমার নাইবা হলো। আমি এখন থেকে গেলেই মুক্তি।
সত্যিই উনি উনার পরিবার আর কাছের মানুষ ছাড়া কাউকেই আনেন নি। বিয়ে টিক সময়ে সম্পন্ন হয়ে গেল।আমি নামক বোঝা পরিবার থেকে নেমে গেল অবশেষে।৷
কেঁদেছি অনেক এটা সুখের কান্না। লোকটার একটু বয়স তাতে কি ভালো মানুষ নিতান্তই একজন।হালকা ফুল দিয়ে সাজানো রুমে বসে আছি। ভাবছি জীবনের বদলে যাওয়া সময় গুলোর কথা।
উনি এসে হাতে একটা ছোট গিপ্ট বক্স দিলেন। বললেন রাত্র অনেক হয়েছে শুয়ে পড়। আমি তোমার থেকে প্রায় ৮বছরের বড় হব। সময়ের সাথে আমারা চেষ্টা করব সব কিছু ঠিক করে নিতে।
এভাবে কেটে গেল বছর মানিয়ে নিয়েছি আমরা। একদিন বললাম মুহিব আমি আর এ শহরে থাকতে চাই না। পরিবারের সাথে আমার দূরত্ব বেড়ে গেছে। আমি আর বাবার বাড়িতে যাই না বলতে সময় করে উঠতে পারি না।
কয়েকটি টিউশনি করিয়ে আর ঘরের কাজ করে সারা দিন চলে যায়। মুহিতের ট্রানেস্পার হয়েছে উনার নিজের শহর রাজশাহীতে।
সব কিছু প্যাক করে নিয়েছি আর একবার বাড়িতে গিয়ে দেখা করব। আম্মু আব্বুর আর আপুদের জন্য কিছু শপিং করেছি।
আর হয়তো এশহরে আসা হবে না তেমন আর না পরিবারের সাথে। মনে হচ্ছে আমি বিদেশ যাচ্ছি আব্বু আম্মুর আদিখ্যেতা দেখলে এখন হাসি পায়। আম্মু জানতে চাইলেন চলে যাচ্ছি কেন?? বলে দিলাম ঘর বাড়ি ছাড়া কয়দিন থাকব এখানে। জামাই এত রুজি করে একটা বাড়ি করতে পারল না এখনো। কিছুই বললাম না শুধু হাসলাম। সারাদিন থেকে বিকেলে চলে এলাম।
চলে যাচ্ছি এ শহর ছেড়ে হয়তো আসব কখনো হয়তো বা না।
#আমার একদিন
#তাবেরী ইসলাম
চলবে -----
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
শঙ্খজিৎ ভট্টাচার্য ২০/০৬/২০২৪নাইস
-
রাফিয়া নূর পূর্বিতা ২৩/০১/২০২৩Nice
-
শুভজিৎ বিশ্বাস ২২/১২/২০২২বাস্তবধর্মী
-
বোরহানুল ইসলাম লিটন ১২/১২/২০২২অতিশয় হৃদয়ষ্পর্শী!
-
ফয়জুল মহী ১২/১২/২০২২লেখা নান্দনিক ।
-
সাইয়িদ রফিকুল হক ১১/১২/২০২২পড়বো আরও একদিন।
-
শ.ম.ওয়াহিদুজ্জামান ১১/১২/২০২২বেশ।