হিয়ার দাহ্যে প্রিয় পর্ব ১১
#হিয়ার_দাহ্যে_প্রিয়
#তাবেরী ইসলাম
#পর্ব ১১
মেহমানে পরিপূর্ণ ঘর, আমার ছোট বোন এসেছে । জমিয়ে আড্ডা দিয়েছি সবাই মিলে। হলুদ থেকে শুরু করে বিয়ে ঝাকজমক পূর্ণ ভাবে হয়েছে।
সময়ের স্রোতে সব কিছুই চলছে বহমান। বাসাটা ফাঁকা আমি দাঁড়িয়ে আছি বারান্দায়। জ্বর এসেছে আমার সিয়ামের পুরো নিষেধ বাহিরে যাওয়া যাবে না।
বইয়ের নেশা পেয়ে বসেছে আমায় উপন্যাসের পাতায় ডুব দিতে থিলার ধর্মী বই খুঁজে চলছি কিন্তু মন মতো মিলছে না তবে যেটা পেয়েছি সেটাই পড়ছি এখন। কাজের খালা রং চা দিয়ে গেছেন ভুলেই গেছি। পিছনে ফিরতেই সিয়ামকে দেখে অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম এই অসময়ে আপনি, বারে বাসায় তুমি অসুস্থ একা তাই চলে এলাম।
বইটা দেখে বললেন তুমি আবার এসব পড়ছো কেন??কাপড় চোপড়া বের করতে করতে বললেন খাবার খাওনি কেন এখনো মুখ শুকিয়ে গেছে খেয়াল আছে।
আগে ফ্রেশ হয়ে আসুন পরে কথা বলবেন যান তো বলে বইটা রেখে দিলাম। খাবার টেবিল উনার জন্য অপেক্ষা করছি। আজকে সব খালাই রান্না করেছেন।
উনি এসে পাশে বসে বললেন খাবার শুরু করো আমি একটু খেয়েই উঠে যাচ্ছিলাম উনি রাগি চোখে হাত টেনে পাশে বসিয়ে খাবার মুখে তুলে দিলেন। আমার মুখ বিরক্তিতে ভরে উঠলো। অনিচ্ছা সত্ত্বেও খেতে হলো। তারপর জ্বর মেপে ওষুধ খাইয়ে দিলেন।
বিশ্রামের জন্য শুয়ে পড়লাম আসলেই ভালো লাগছিলো না। চাদর মুড়ি দিয়ে শুয়েছি উনি এসে পাশে বসে মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে থাকলেন।ঘুম ধীরে ধীরে গভীর হলো। সিয়ামের গাঢ় দৃষ্টি বিস্তৃত হচ্ছে উসখুস লাগছে খুব।
বাতাসের তীব্র ঝাপটায় জানালার কপাটে জুড়ে বারি খেলো হয়তো মেঘ আসবে। কেঁপে উঠলাম ক্ষণেই ভ্রু কুঁচকে চোখের সামনে ভাসলো সিয়ামের মুখ। তাকিয়ে আছেন জড়িয়ে ধরে, বললেন ঘুমাও কিচ্ছু হয়নি ওকে।
কেটে গেছে দুদিন এখন আগের চেয়ে ভালো জ্বর নেই বললেও চলে। বিকেলে ঘুরতে যাব উনার সাথে। একটা থ্রি-পিস পরে রেডি হয়ে গেছি। আজকে রিক্সা করে ঘুরবো অনেক এক্সাইটেড মন। গুন গুন করে গান গাইছি আমার পরানও যাহা চায়।
সিয়াম দরজায় দাঁড়িয়ে দেখছে রিমুর গুন গুন করা।তা মেডাম আজকে এত খুশির কারণ কি?লজ্জা পেলাম উনার কথায়। উনি মুচকি মুচকি হাসছেন।
হাত টেনে কাছে এসে বললেন পারফেক্ট, চলো। আমি উনাকে বললাম মনে আছে তো আজকে রিক্সা করে ঘুরতে নিয়ে যাবেন। হুম মেডাম মনে আছে।
ওয়াক পয়েন্টের রাস্তায় এসে রিক্সা থেকে নেমে ভেতরে যাই।বাহ! দারুণ অনেক দিন পর মুক্ত হাওয়া খাচ্ছি হাটছি পাশাপাশি চারদিকে সবুজের সমারোহ।সেখানে গিয়ে এক কলিগের সাথে দেখা কথা বার্তা আড্ডা দিয়েছি একটু। ছবি তুলছি হঠাৎ সিয়ামের কল এলো হাসপাতাল থেকে। উনাকে যেতে হবে তারাতাড়ি তাই চলে এলাম বাসায় মন কিছুটা খারাপ হলেও প্রকাশ করি নি।
এই যে সন্ধ্যা থেকে লিখতে চাচ্ছি কিন্তু হচ্ছে না, একটা করে পাতা ছিড়ে নিচে ফেলছি ভাবনা গুলো সব অঘুচালো হয়ে যাচ্ছে। মাথা ব্যথা করছে ব্লাক কফি বানিয়ে নিয়ে এলাম। খেয়ে একটা হালকা ঘুম দিলাম।উঠে দেখি রাত্র দশটা হয়ে গেছে খাবার খেয়ে খালার সাথে কিছু কথা বলে রুমে চলে এলাম।
আবারও লিখতে বসেছি আবারও ছিড়ছি খাতার পাতা মনে হচ্ছে চুল ছিড়ে ফেলি, রকিং চেয়ারে বসে হেলান দিলাম। চোখ ভুজে ভাবনায় ব্যস্ত হলাম, এই যে নিজেকে এত কিছুর মাঝে জড়িয়ে ফেলছি সিয়াম কি জানতে পারলে রাগ করবেন??
রাত্র বাড়ার সাথে আজকে কেমন যেন ভয়টাও মনের মধ্যে ভীড় জমাচ্ছে। একা বাসায় যদি কিছু দেখি আমার হার্ট অ্যাটাক চলে আসবে।ফোন হাতে নিয়ে কল দিলাম ধরলেন না এভাবে পাঁচবার দেবার পরও উনার রেস্পন্স নেই রাগের সাথে অভিমান ভারি হলো।
ফোনটা টেবিলে রেখে রুম পরিস্কার করে নিলাম।
কার্বাড থেকে শার্ট নিয়ে চেঞ্জ করে আসলাম, গুটি গুটি পায়ে বারান্দার দরজা লাগিয়ে কাথা গায়ে শুয়ে পড়লাম। ঘুম না আসলেও ভয়ের জন্য এখন ঘুমাতে হবে আমায়।
সিয়াম জরুরি কাজ শেষ করে কেবিনে ফোনে রিমুর কল দেখে চিন্তিত হয়ে ব্যাক করলো কিন্তু কল কেটে গেলো। তাড়াতাড়ি বাড়ির পথে রওনা হলো রাত্রের খাবার ও এখনো খাওয়া হয়নি সিয়ামের। পথে খাবার প্যাকেট করে নিলো।
বাসায় হন্তদন্ত হয়ে এসে দেখলাম রিমু গুটিসুটি মেরে শুয়ে আছে আর ফোন সাইলেন্ট টেবিলে পড়ে আছে। চিন্তায় অনেক কিছু ভেবে নিয়ে ছিলাম। চোখ পড়লো টেবিলের নিচে কাগজের দিকে হাতে তুলে দেখাম কিছু একটা লিখা। অগোছালো রয়েছে বই খাতা সব।
রাগটা যেভাবে বেড়েছিলো রিমুর মুখ দেখে নিমিষেই চলে গেল অধর চুয়ে দিলাম ললাটে। ফ্রেশ হয়ে এসে চুলের পানির ছিটকে দিলাম রিমুর মুখে ভ্রু কুচকে উঠলো, শার্টের হাতা লম্বা হওয়ায় খুচকে আছে। চুল গুলো খুলে দিলাম।
টেনে বসিয়েছি মাত্র গোল গোল চোখে চেয়ে ওমনি চেচামেচি শুরু করতে যাচ্ছিলো হাত দিয়ে শান্ত করতেই কামড় বসিয়ে দিলো। আউচ এটা কি করলে বলতেই হুশে এলাম।
হচকচিয়ে বললাম কখন এসেছেন, সিয়াম বললেন এই তো একটু আগে খাবার প্লেটে নিয়ে সামনে এসে জিজ্ঞেস করলেন খেয়েছ তুমি। মাথা নাড়িয়ে হুম জানালাম।মেডাম হা করুন আপনার প্রিয় মাছের চাটনি এনেছি বলে সিয়াম মুখে তুলে দিলেন। দারুণ মজার ছিলো স্বাদ। খাবার শেষে আমরা শুয়ে পড়লাম।
তীক্ষ্ণ চোখ তাকাচ্ছেন আমার দিকে, ভ্রু নাচিয়ে তাকালাম নিজের পানে, মুখটা চুপসে গেল কিন্তু বুঝতে দিলাম না।
চলবে --------
#তাবেরী ইসলাম
#পর্ব ১১
মেহমানে পরিপূর্ণ ঘর, আমার ছোট বোন এসেছে । জমিয়ে আড্ডা দিয়েছি সবাই মিলে। হলুদ থেকে শুরু করে বিয়ে ঝাকজমক পূর্ণ ভাবে হয়েছে।
সময়ের স্রোতে সব কিছুই চলছে বহমান। বাসাটা ফাঁকা আমি দাঁড়িয়ে আছি বারান্দায়। জ্বর এসেছে আমার সিয়ামের পুরো নিষেধ বাহিরে যাওয়া যাবে না।
বইয়ের নেশা পেয়ে বসেছে আমায় উপন্যাসের পাতায় ডুব দিতে থিলার ধর্মী বই খুঁজে চলছি কিন্তু মন মতো মিলছে না তবে যেটা পেয়েছি সেটাই পড়ছি এখন। কাজের খালা রং চা দিয়ে গেছেন ভুলেই গেছি। পিছনে ফিরতেই সিয়ামকে দেখে অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম এই অসময়ে আপনি, বারে বাসায় তুমি অসুস্থ একা তাই চলে এলাম।
বইটা দেখে বললেন তুমি আবার এসব পড়ছো কেন??কাপড় চোপড়া বের করতে করতে বললেন খাবার খাওনি কেন এখনো মুখ শুকিয়ে গেছে খেয়াল আছে।
আগে ফ্রেশ হয়ে আসুন পরে কথা বলবেন যান তো বলে বইটা রেখে দিলাম। খাবার টেবিল উনার জন্য অপেক্ষা করছি। আজকে সব খালাই রান্না করেছেন।
উনি এসে পাশে বসে বললেন খাবার শুরু করো আমি একটু খেয়েই উঠে যাচ্ছিলাম উনি রাগি চোখে হাত টেনে পাশে বসিয়ে খাবার মুখে তুলে দিলেন। আমার মুখ বিরক্তিতে ভরে উঠলো। অনিচ্ছা সত্ত্বেও খেতে হলো। তারপর জ্বর মেপে ওষুধ খাইয়ে দিলেন।
বিশ্রামের জন্য শুয়ে পড়লাম আসলেই ভালো লাগছিলো না। চাদর মুড়ি দিয়ে শুয়েছি উনি এসে পাশে বসে মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে থাকলেন।ঘুম ধীরে ধীরে গভীর হলো। সিয়ামের গাঢ় দৃষ্টি বিস্তৃত হচ্ছে উসখুস লাগছে খুব।
বাতাসের তীব্র ঝাপটায় জানালার কপাটে জুড়ে বারি খেলো হয়তো মেঘ আসবে। কেঁপে উঠলাম ক্ষণেই ভ্রু কুঁচকে চোখের সামনে ভাসলো সিয়ামের মুখ। তাকিয়ে আছেন জড়িয়ে ধরে, বললেন ঘুমাও কিচ্ছু হয়নি ওকে।
কেটে গেছে দুদিন এখন আগের চেয়ে ভালো জ্বর নেই বললেও চলে। বিকেলে ঘুরতে যাব উনার সাথে। একটা থ্রি-পিস পরে রেডি হয়ে গেছি। আজকে রিক্সা করে ঘুরবো অনেক এক্সাইটেড মন। গুন গুন করে গান গাইছি আমার পরানও যাহা চায়।
সিয়াম দরজায় দাঁড়িয়ে দেখছে রিমুর গুন গুন করা।তা মেডাম আজকে এত খুশির কারণ কি?লজ্জা পেলাম উনার কথায়। উনি মুচকি মুচকি হাসছেন।
হাত টেনে কাছে এসে বললেন পারফেক্ট, চলো। আমি উনাকে বললাম মনে আছে তো আজকে রিক্সা করে ঘুরতে নিয়ে যাবেন। হুম মেডাম মনে আছে।
ওয়াক পয়েন্টের রাস্তায় এসে রিক্সা থেকে নেমে ভেতরে যাই।বাহ! দারুণ অনেক দিন পর মুক্ত হাওয়া খাচ্ছি হাটছি পাশাপাশি চারদিকে সবুজের সমারোহ।সেখানে গিয়ে এক কলিগের সাথে দেখা কথা বার্তা আড্ডা দিয়েছি একটু। ছবি তুলছি হঠাৎ সিয়ামের কল এলো হাসপাতাল থেকে। উনাকে যেতে হবে তারাতাড়ি তাই চলে এলাম বাসায় মন কিছুটা খারাপ হলেও প্রকাশ করি নি।
এই যে সন্ধ্যা থেকে লিখতে চাচ্ছি কিন্তু হচ্ছে না, একটা করে পাতা ছিড়ে নিচে ফেলছি ভাবনা গুলো সব অঘুচালো হয়ে যাচ্ছে। মাথা ব্যথা করছে ব্লাক কফি বানিয়ে নিয়ে এলাম। খেয়ে একটা হালকা ঘুম দিলাম।উঠে দেখি রাত্র দশটা হয়ে গেছে খাবার খেয়ে খালার সাথে কিছু কথা বলে রুমে চলে এলাম।
আবারও লিখতে বসেছি আবারও ছিড়ছি খাতার পাতা মনে হচ্ছে চুল ছিড়ে ফেলি, রকিং চেয়ারে বসে হেলান দিলাম। চোখ ভুজে ভাবনায় ব্যস্ত হলাম, এই যে নিজেকে এত কিছুর মাঝে জড়িয়ে ফেলছি সিয়াম কি জানতে পারলে রাগ করবেন??
রাত্র বাড়ার সাথে আজকে কেমন যেন ভয়টাও মনের মধ্যে ভীড় জমাচ্ছে। একা বাসায় যদি কিছু দেখি আমার হার্ট অ্যাটাক চলে আসবে।ফোন হাতে নিয়ে কল দিলাম ধরলেন না এভাবে পাঁচবার দেবার পরও উনার রেস্পন্স নেই রাগের সাথে অভিমান ভারি হলো।
ফোনটা টেবিলে রেখে রুম পরিস্কার করে নিলাম।
কার্বাড থেকে শার্ট নিয়ে চেঞ্জ করে আসলাম, গুটি গুটি পায়ে বারান্দার দরজা লাগিয়ে কাথা গায়ে শুয়ে পড়লাম। ঘুম না আসলেও ভয়ের জন্য এখন ঘুমাতে হবে আমায়।
সিয়াম জরুরি কাজ শেষ করে কেবিনে ফোনে রিমুর কল দেখে চিন্তিত হয়ে ব্যাক করলো কিন্তু কল কেটে গেলো। তাড়াতাড়ি বাড়ির পথে রওনা হলো রাত্রের খাবার ও এখনো খাওয়া হয়নি সিয়ামের। পথে খাবার প্যাকেট করে নিলো।
বাসায় হন্তদন্ত হয়ে এসে দেখলাম রিমু গুটিসুটি মেরে শুয়ে আছে আর ফোন সাইলেন্ট টেবিলে পড়ে আছে। চিন্তায় অনেক কিছু ভেবে নিয়ে ছিলাম। চোখ পড়লো টেবিলের নিচে কাগজের দিকে হাতে তুলে দেখাম কিছু একটা লিখা। অগোছালো রয়েছে বই খাতা সব।
রাগটা যেভাবে বেড়েছিলো রিমুর মুখ দেখে নিমিষেই চলে গেল অধর চুয়ে দিলাম ললাটে। ফ্রেশ হয়ে এসে চুলের পানির ছিটকে দিলাম রিমুর মুখে ভ্রু কুচকে উঠলো, শার্টের হাতা লম্বা হওয়ায় খুচকে আছে। চুল গুলো খুলে দিলাম।
টেনে বসিয়েছি মাত্র গোল গোল চোখে চেয়ে ওমনি চেচামেচি শুরু করতে যাচ্ছিলো হাত দিয়ে শান্ত করতেই কামড় বসিয়ে দিলো। আউচ এটা কি করলে বলতেই হুশে এলাম।
হচকচিয়ে বললাম কখন এসেছেন, সিয়াম বললেন এই তো একটু আগে খাবার প্লেটে নিয়ে সামনে এসে জিজ্ঞেস করলেন খেয়েছ তুমি। মাথা নাড়িয়ে হুম জানালাম।মেডাম হা করুন আপনার প্রিয় মাছের চাটনি এনেছি বলে সিয়াম মুখে তুলে দিলেন। দারুণ মজার ছিলো স্বাদ। খাবার শেষে আমরা শুয়ে পড়লাম।
তীক্ষ্ণ চোখ তাকাচ্ছেন আমার দিকে, ভ্রু নাচিয়ে তাকালাম নিজের পানে, মুখটা চুপসে গেল কিন্তু বুঝতে দিলাম না।
চলবে --------
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
শুভজিৎ বিশ্বাস ১১/০১/২০২৩ভালো লিখেছেন।
-
এ কে সুমন ২৪/১০/২০২২লেখাটা লম্বা হলেও ভালো হয়েছে।
-
জামাল উদ্দিন জীবন ০৯/১০/২০২২বেশ
-
শঙ্খজিৎ ভট্টাচার্য ০৭/১০/২০২২সুন্দর
-
ফয়জুল মহী ০৬/১০/২০২২সুগভীর অনুভূতির লেখা