হিয়ার দাহ্যে প্রিয় পর্ব ৯ ও ১০
#হিয়ার_দাহ্যে_প্রিয়
#তাবেরী ইসলাম
#পর্ব ৯
রেস্টুরেন্টে বসে আছি মেনু বুকে দীর্ঘ নজর দিয়ে খাবার অর্ডার করলেন। খিদে তোমার সহ্য হয় না সেটা মনে আছে আমার। উনি খাবার মুখের সামনে বাড়িয়ে বললেন চুপচাপ খাবে কোনো কথা শুনতে চাই না। চোখ গুলো ভারি হয়ে আসছে জলে। খাবার মুখে নিয়ে জল মুছে নিলাম।
মানছি আমি যা করেছি অন্যায় ছিলো। তবে এখন আমি সত্যিই চাইছি সব কিছু । অন্যমনস্ক হয়ে কখন সিয়ামের আঙ্গুলে কামড় বসিয়ে দিলাম বুঝতে পারি নি। বাহ! এটা কিসের প্রকাশ বলে অধরে দুষ্টু হাসি ঝুলিয়ে রেখেছেন।
গাড়ি চলছে আপন গতিতে জিজ্ঞেস করলাম কোথায় যাচ্ছি? ঘুম ঘুম ভাব যেন ধাওয়া করছে আমায়। উনার নিশ্চুপ ভঙ্গির কোনো ভাবান্তর হলো না।চোখ ভুজে মাথা এলিয়ে দিলাম। ধীরে ধীরে গভীর হলো ঘুমের ঘোর।সিয়াম একপলক চেয়ে দেখলো রিমুর ঘুমন্ত মুখ। মুচকি হাসি দিয়ে গাড়ির গ্লাস তুলে দিলো যাতে বাতাসে চোখ মুখ কুচকে না উঠে।
গাড়ির ব্রেক কষলো জোরে কেঁপে উঠলাম। সিটবেল্ট খুলতে খুলতে বললেন এত ঘুম কাতুরে হলে চলে।বললাম তাতে আপনার কি?? ব্যাগ থেকে ফেসটাওয়াল নিয়ে মুছে নিলাম মুখ। ছোট আয়না দেখে ঠোঁটে লিপলোজ লাগাচ্ছি। উনার দৃষ্টি নিবন্ধ আমার ঠোঁটের দিকে। এত পরিপাটির কি আছে?
চটজলদি বের হও নইলে ঠোঁটের এই কোমলতা হরণ করতে আমার সময় লাগবে না। কান গরম হয়ে গেছে এমন কথা শুনে। হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন হাত ধরেই পাশাপাশি হাটছি দুজনে।নিরবতা চেয়ে আছে আমাদের মাঝে। শিমুল ফুলে ফুলে ভরে উঠেছে বাগান রুপ বৈচিত্র ভর পুর চারপাশ। সুনামগঞ্জ শহরের সবুজ শ্যামলীমা নিশ্চিত উপভোগ্য।
অদুরে বসে আছেন নিয়াজ ভাইয়া তন্নি ভাবি, লাবিব মুনা লাবণ্যের সাথে ছুটাছুটি করছে। অহনা আর মারুফ ঐদিকটায় হাটছে। বেঞ্জে বসে আছি উনি চা নিয়ে আসলেন। বিকেলের রোদ গায়ে মাখতে ভীষণ লাগছে। চায়ে চুমুক দিতেই জিব্ব টা পুড়ে গেল উম্ম করে ফেলে দিলাম মুখের চা। সিয়াম বসা থেকে উঠে এলেন আমার কাছাকাছি। হাতের চা নিয়ে বললেন এভাবে কেউ চা খায় ইস্টুপিট। চোখ ছোট করে তাকালাম উষ্ণ চায়ের স্বাদ পেতেই খেতে নিয়েছিলাম আমি কি জানতাম জিব্বা পুড়ে যাবে।
একি উনি আমার এটো চা খেয়ে ফেলেছেন!রাশ ভারি মনে মুখ ঘুরিয়ে নিলাম। খাব না আমি এটা আপনি খান। তীক্ষ্ণ ভাজ পড়লো কপালে পাশ ঘেঁষে কোমড় জড়িয়ে ধরলেন। কম্পিত বক্ষে ধুরুধুরু শব্দের ঘনঘটা। নিজ হাতে তুলে দিলেন মুখে চা। নিঃশব্দে পান করতে হল এ যেন ঠান্ডা শরবত।
ফিসফিসিয়ে বললেন ঠোঁট পুড়ে গেলে আমার স্বাদ নিতে যে বাধা হবে তাই এমন করলাম কোমল স্পর্শ গাল ছুয়ে দিলেন। মুনা কোমরে হাত রেখে দাড়িয়ে বলছে চাচ্চু আমার একটু আদর করে না।
ঘোমরা মুখে বাঁকা চোখে তাকিয়ে আছে সিয়াম কোলে তুলে গাল টেনে ধরে বললেন পাক্কা আম্মু কেউ আদর করে না তোমায়। দুজনেই পাপ্পি দিলাম মুনার লাল গালে হেসে উঠলো ক্ষণেই।
চকলেট পেয়ে সে আমার গলা জড়িয়ে আছে।কেবেট্রি হলে দাত গুলো যাবে। হাটছি বাতাসের শীতল স্পর্শ কাঁপিয়ে তুলছে ভেতর। গৌধুলি লগ্ন হাতে হাত ফুলে ফুলে রাঙ্গা পবন। কত সুন্দর হয় সব কিছু যদি মন এক হয়। ঘুরাঘুরি ছবি তুলে কেটে গেল অনেক খানি সময়।
গাড়ি চলছে শা শা বাতাসের গতিতে। শহরের রাস্তায় প্রবেশ হতেই জ্বলমলে বাতির আলোয় ভরে উঠেছে চারপাশ। অহনা মারুফ আমি গল্পের ঝুড়ি নিয়ে বসেছি। গাড়ির সামনের আয়নার তাকিয়ে দেখেছন অনেক বার আমাদের হাসাহাসি। আমার দিকে তাকিয়ে ভ্রু কুচকে ফেললেন, গম্ভীর হয়ে ধমক দিয়ে উঠলেন। এত কথা কিসের আমার সাথে কখনো এভাবে কথা বলো না ফিসফিসিয়ে বললেন যা আমার কর্ণ গোচরে পৌঁছে যায় লহমায়।
মুহূর্তেই নিরতা বিরাজ হলো গাড়ির ভেতর। অহনার মুখে বিরক্তির ভাব প্রকাশ পেল।বলে উঠলো ভাইয়া এটা কি হলো??
তীক্ষ্ণ চাউনিতে রাগিস্বরে বললেন তোদের এত বক বক কোথা থেকে আসে। সবকটা বাচাল চরিত্র। হাতের ইশারায় চুপ থাকতে বলি অহনাকে। অহনা গাল ফুলিয়ে দৃষ্টি বাহিরে নিবন্ধ করে।
বিলাস বহুল হোটেলের সামনে গাড়ি থামালেন। রাত্রের খাবার এখানেই করা হবে। চট করে হাত ধরে নিজের গায়ের জেকেট টা পড়িয়ে দিলেন। হাতে হাত ঘসে বললেন বরফ বানিয়ে রেখেছো হাত খেয়াল আছে। সবাই এগিয়ে গেছে আমাদের আগেই পিছনের টেবিলে বসে পড়লেন।
শান্ত পরিবেশ নিয়ন লাল হলুদ বাতির সংমিশ্রণে সাজানো দেয়াল। মিউজিক বক্সের গান মুহূর্তকে আরো রাঙিয়ে তুলছে।
----------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
#হিয়ার_দাহ্যে_প্রিয়
#তাবেরী ইসলাম
#পর্ব ১০
বাড়িতে যাব বলে সিয়ামের সাথে বেড়িয়েছি।ভাবতেই আনন্দ অভিমান মন এলোমেলো করে দিচ্ছে। অহনার বিয়ের দাওয়াত দিতেই আসছি।
মনের কোণে জমে উঠলো কত স্মৃতি। এই বাড়ি এই আঙ্গিনায় কেটে আমার ছাব্বিশ বসন্ত। শৈশব থেকে নানা স্মৃতি মায়ার পসরা।
গাড়ির জানালা বেধ করে বাতাস বইছে মৃদুমন্ধ। কখন পৌছে গেলাম বুঝতে পারি নি। গাড়ি থামতেই খেয়াল হল পুকুর পাড়।এই হইচইপূর্ণ বাড়ি আজ অনেকটাই নিরব।
আম্মাকে দেখে চোখের অশ্রুগুলো বাধ ভেঙেছে সব অভিমান, অভিযোগ ভুলে।অসুস্থতার খাতিরে প্রায় আমাকে নানা কথা শুনতে হতো।টনসিলের অপারেশন টা সিয়াম নিজ দ্বায়িত্বেই করিয়েছিলেন।।
ভাগ্যিস সেটা দ্বায়িত্ব কিংবা ভালোবাসা হোক কোনো কমতি ছিলো না। সুস্থতার নিয়ামত পেয়েছি এটাই জীবনের জন্য অনেক কিছু।
ভাবনার ঘোর উবে গেল আম্মার জামাই আপ্যায়নের ব্যবস্থা দেখে। সিয়ামের অবস্থা নাজেহাল। ভাবলেই হাসি পাচ্ছে।
দেখতে দেখতে দুদিন চলেই গেল। সিয়ামের কাজ থাকায় চলে আসতে হলো। বিয়ের আয়োজনের তোড়জোড় চলছে পুরো দমে। শপিং করেছি সিয়ামের পছন্দেই দুটি সুতার কাজের শাড়ি কিনেছি হলুদের জন্য।
মুহূর্ত গুলো ব্যস্ত যাচ্ছে, সিয়াম এর মধ্যেই সময় দিচ্ছেন আমাদের। জুয়েলারি শপে নাক ফুলের বাহার কিন্তু পছন্দই হচ্ছে না। হতাশ হয়ে অন্যদিকে যাচ্ছিলাম সিয়াম এসে সাদা স্টোনের ফুল নাকে পড়িয়ে দিয়ে ফিচেল কন্ঠে বললেন বাহ!দারুণ লাগছে।
বউ যে আমার নিরামিষ হয়ে যাচ্ছেন সেই খেয়াল আছে। তীক্ন চোখে তাকিয়ে বললাম নিরামিষের কি আছে এখানে??
অনেক কিছুই আছে সে এখন বুঝেও না বুঝার মত ভান করবে।রাগের তীব্রতা বাড়ল আমার। বিয়েতে ড্রেস নিয়েছি।
অহনার সব কেনাকাটা শেষ। কিছু আত্নীয় স্বজনে ভরে মুখরিত বাসা।ক্লান্ত থাকায় ঘুমিয়ে পড়েছি সিয়ামের আগেরি।
ভোর প্রভাতের আলো জানালা ভেদ করে রুমে ডুকছে।আমার ওড়না হাতে পিছিয়ে সিয়ামের ঘুম ঘুম চেহারা সত্ত্যিই মায়া বাড়িয়ে দিচ্ছে।
প্রেমে পড়লেই সব কিছু সুন্দর রঙ্গিন মনে হয় হয়তো তাই। এলোমেলো চুল অগোছালো কাপড় চোপড়। মনের স্পৃহা একটু বাড়িয়ে দিল। অধর চুয়ে দিলাম উনার ললাটে।
লেবুর চায়ের পেয়ালা হাতে বারান্দার ফুল গুলো দেখছি। হাতের কাপটা সিয়াম নিয়ে চুমুক দিয়ে বললেন বেশ! মজা হয়ে। বিরক্তের মুখ কুচকে এলো আমার।কিছু হয় নি এমন ভাবে আবার বললেন যাও তো আরেকটা নিয়ে আসো
--চলবে
#তাবেরী ইসলাম
#পর্ব ৯
রেস্টুরেন্টে বসে আছি মেনু বুকে দীর্ঘ নজর দিয়ে খাবার অর্ডার করলেন। খিদে তোমার সহ্য হয় না সেটা মনে আছে আমার। উনি খাবার মুখের সামনে বাড়িয়ে বললেন চুপচাপ খাবে কোনো কথা শুনতে চাই না। চোখ গুলো ভারি হয়ে আসছে জলে। খাবার মুখে নিয়ে জল মুছে নিলাম।
মানছি আমি যা করেছি অন্যায় ছিলো। তবে এখন আমি সত্যিই চাইছি সব কিছু । অন্যমনস্ক হয়ে কখন সিয়ামের আঙ্গুলে কামড় বসিয়ে দিলাম বুঝতে পারি নি। বাহ! এটা কিসের প্রকাশ বলে অধরে দুষ্টু হাসি ঝুলিয়ে রেখেছেন।
গাড়ি চলছে আপন গতিতে জিজ্ঞেস করলাম কোথায় যাচ্ছি? ঘুম ঘুম ভাব যেন ধাওয়া করছে আমায়। উনার নিশ্চুপ ভঙ্গির কোনো ভাবান্তর হলো না।চোখ ভুজে মাথা এলিয়ে দিলাম। ধীরে ধীরে গভীর হলো ঘুমের ঘোর।সিয়াম একপলক চেয়ে দেখলো রিমুর ঘুমন্ত মুখ। মুচকি হাসি দিয়ে গাড়ির গ্লাস তুলে দিলো যাতে বাতাসে চোখ মুখ কুচকে না উঠে।
গাড়ির ব্রেক কষলো জোরে কেঁপে উঠলাম। সিটবেল্ট খুলতে খুলতে বললেন এত ঘুম কাতুরে হলে চলে।বললাম তাতে আপনার কি?? ব্যাগ থেকে ফেসটাওয়াল নিয়ে মুছে নিলাম মুখ। ছোট আয়না দেখে ঠোঁটে লিপলোজ লাগাচ্ছি। উনার দৃষ্টি নিবন্ধ আমার ঠোঁটের দিকে। এত পরিপাটির কি আছে?
চটজলদি বের হও নইলে ঠোঁটের এই কোমলতা হরণ করতে আমার সময় লাগবে না। কান গরম হয়ে গেছে এমন কথা শুনে। হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন হাত ধরেই পাশাপাশি হাটছি দুজনে।নিরবতা চেয়ে আছে আমাদের মাঝে। শিমুল ফুলে ফুলে ভরে উঠেছে বাগান রুপ বৈচিত্র ভর পুর চারপাশ। সুনামগঞ্জ শহরের সবুজ শ্যামলীমা নিশ্চিত উপভোগ্য।
অদুরে বসে আছেন নিয়াজ ভাইয়া তন্নি ভাবি, লাবিব মুনা লাবণ্যের সাথে ছুটাছুটি করছে। অহনা আর মারুফ ঐদিকটায় হাটছে। বেঞ্জে বসে আছি উনি চা নিয়ে আসলেন। বিকেলের রোদ গায়ে মাখতে ভীষণ লাগছে। চায়ে চুমুক দিতেই জিব্ব টা পুড়ে গেল উম্ম করে ফেলে দিলাম মুখের চা। সিয়াম বসা থেকে উঠে এলেন আমার কাছাকাছি। হাতের চা নিয়ে বললেন এভাবে কেউ চা খায় ইস্টুপিট। চোখ ছোট করে তাকালাম উষ্ণ চায়ের স্বাদ পেতেই খেতে নিয়েছিলাম আমি কি জানতাম জিব্বা পুড়ে যাবে।
একি উনি আমার এটো চা খেয়ে ফেলেছেন!রাশ ভারি মনে মুখ ঘুরিয়ে নিলাম। খাব না আমি এটা আপনি খান। তীক্ষ্ণ ভাজ পড়লো কপালে পাশ ঘেঁষে কোমড় জড়িয়ে ধরলেন। কম্পিত বক্ষে ধুরুধুরু শব্দের ঘনঘটা। নিজ হাতে তুলে দিলেন মুখে চা। নিঃশব্দে পান করতে হল এ যেন ঠান্ডা শরবত।
ফিসফিসিয়ে বললেন ঠোঁট পুড়ে গেলে আমার স্বাদ নিতে যে বাধা হবে তাই এমন করলাম কোমল স্পর্শ গাল ছুয়ে দিলেন। মুনা কোমরে হাত রেখে দাড়িয়ে বলছে চাচ্চু আমার একটু আদর করে না।
ঘোমরা মুখে বাঁকা চোখে তাকিয়ে আছে সিয়াম কোলে তুলে গাল টেনে ধরে বললেন পাক্কা আম্মু কেউ আদর করে না তোমায়। দুজনেই পাপ্পি দিলাম মুনার লাল গালে হেসে উঠলো ক্ষণেই।
চকলেট পেয়ে সে আমার গলা জড়িয়ে আছে।কেবেট্রি হলে দাত গুলো যাবে। হাটছি বাতাসের শীতল স্পর্শ কাঁপিয়ে তুলছে ভেতর। গৌধুলি লগ্ন হাতে হাত ফুলে ফুলে রাঙ্গা পবন। কত সুন্দর হয় সব কিছু যদি মন এক হয়। ঘুরাঘুরি ছবি তুলে কেটে গেল অনেক খানি সময়।
গাড়ি চলছে শা শা বাতাসের গতিতে। শহরের রাস্তায় প্রবেশ হতেই জ্বলমলে বাতির আলোয় ভরে উঠেছে চারপাশ। অহনা মারুফ আমি গল্পের ঝুড়ি নিয়ে বসেছি। গাড়ির সামনের আয়নার তাকিয়ে দেখেছন অনেক বার আমাদের হাসাহাসি। আমার দিকে তাকিয়ে ভ্রু কুচকে ফেললেন, গম্ভীর হয়ে ধমক দিয়ে উঠলেন। এত কথা কিসের আমার সাথে কখনো এভাবে কথা বলো না ফিসফিসিয়ে বললেন যা আমার কর্ণ গোচরে পৌঁছে যায় লহমায়।
মুহূর্তেই নিরতা বিরাজ হলো গাড়ির ভেতর। অহনার মুখে বিরক্তির ভাব প্রকাশ পেল।বলে উঠলো ভাইয়া এটা কি হলো??
তীক্ষ্ণ চাউনিতে রাগিস্বরে বললেন তোদের এত বক বক কোথা থেকে আসে। সবকটা বাচাল চরিত্র। হাতের ইশারায় চুপ থাকতে বলি অহনাকে। অহনা গাল ফুলিয়ে দৃষ্টি বাহিরে নিবন্ধ করে।
বিলাস বহুল হোটেলের সামনে গাড়ি থামালেন। রাত্রের খাবার এখানেই করা হবে। চট করে হাত ধরে নিজের গায়ের জেকেট টা পড়িয়ে দিলেন। হাতে হাত ঘসে বললেন বরফ বানিয়ে রেখেছো হাত খেয়াল আছে। সবাই এগিয়ে গেছে আমাদের আগেই পিছনের টেবিলে বসে পড়লেন।
শান্ত পরিবেশ নিয়ন লাল হলুদ বাতির সংমিশ্রণে সাজানো দেয়াল। মিউজিক বক্সের গান মুহূর্তকে আরো রাঙিয়ে তুলছে।
----------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
#হিয়ার_দাহ্যে_প্রিয়
#তাবেরী ইসলাম
#পর্ব ১০
বাড়িতে যাব বলে সিয়ামের সাথে বেড়িয়েছি।ভাবতেই আনন্দ অভিমান মন এলোমেলো করে দিচ্ছে। অহনার বিয়ের দাওয়াত দিতেই আসছি।
মনের কোণে জমে উঠলো কত স্মৃতি। এই বাড়ি এই আঙ্গিনায় কেটে আমার ছাব্বিশ বসন্ত। শৈশব থেকে নানা স্মৃতি মায়ার পসরা।
গাড়ির জানালা বেধ করে বাতাস বইছে মৃদুমন্ধ। কখন পৌছে গেলাম বুঝতে পারি নি। গাড়ি থামতেই খেয়াল হল পুকুর পাড়।এই হইচইপূর্ণ বাড়ি আজ অনেকটাই নিরব।
আম্মাকে দেখে চোখের অশ্রুগুলো বাধ ভেঙেছে সব অভিমান, অভিযোগ ভুলে।অসুস্থতার খাতিরে প্রায় আমাকে নানা কথা শুনতে হতো।টনসিলের অপারেশন টা সিয়াম নিজ দ্বায়িত্বেই করিয়েছিলেন।।
ভাগ্যিস সেটা দ্বায়িত্ব কিংবা ভালোবাসা হোক কোনো কমতি ছিলো না। সুস্থতার নিয়ামত পেয়েছি এটাই জীবনের জন্য অনেক কিছু।
ভাবনার ঘোর উবে গেল আম্মার জামাই আপ্যায়নের ব্যবস্থা দেখে। সিয়ামের অবস্থা নাজেহাল। ভাবলেই হাসি পাচ্ছে।
দেখতে দেখতে দুদিন চলেই গেল। সিয়ামের কাজ থাকায় চলে আসতে হলো। বিয়ের আয়োজনের তোড়জোড় চলছে পুরো দমে। শপিং করেছি সিয়ামের পছন্দেই দুটি সুতার কাজের শাড়ি কিনেছি হলুদের জন্য।
মুহূর্ত গুলো ব্যস্ত যাচ্ছে, সিয়াম এর মধ্যেই সময় দিচ্ছেন আমাদের। জুয়েলারি শপে নাক ফুলের বাহার কিন্তু পছন্দই হচ্ছে না। হতাশ হয়ে অন্যদিকে যাচ্ছিলাম সিয়াম এসে সাদা স্টোনের ফুল নাকে পড়িয়ে দিয়ে ফিচেল কন্ঠে বললেন বাহ!দারুণ লাগছে।
বউ যে আমার নিরামিষ হয়ে যাচ্ছেন সেই খেয়াল আছে। তীক্ন চোখে তাকিয়ে বললাম নিরামিষের কি আছে এখানে??
অনেক কিছুই আছে সে এখন বুঝেও না বুঝার মত ভান করবে।রাগের তীব্রতা বাড়ল আমার। বিয়েতে ড্রেস নিয়েছি।
অহনার সব কেনাকাটা শেষ। কিছু আত্নীয় স্বজনে ভরে মুখরিত বাসা।ক্লান্ত থাকায় ঘুমিয়ে পড়েছি সিয়ামের আগেরি।
ভোর প্রভাতের আলো জানালা ভেদ করে রুমে ডুকছে।আমার ওড়না হাতে পিছিয়ে সিয়ামের ঘুম ঘুম চেহারা সত্ত্যিই মায়া বাড়িয়ে দিচ্ছে।
প্রেমে পড়লেই সব কিছু সুন্দর রঙ্গিন মনে হয় হয়তো তাই। এলোমেলো চুল অগোছালো কাপড় চোপড়। মনের স্পৃহা একটু বাড়িয়ে দিল। অধর চুয়ে দিলাম উনার ললাটে।
লেবুর চায়ের পেয়ালা হাতে বারান্দার ফুল গুলো দেখছি। হাতের কাপটা সিয়াম নিয়ে চুমুক দিয়ে বললেন বেশ! মজা হয়ে। বিরক্তের মুখ কুচকে এলো আমার।কিছু হয় নি এমন ভাবে আবার বললেন যাও তো আরেকটা নিয়ে আসো
--চলবে
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
Md. Rayhan Kazi ২৫/০৬/২০২২অসাধারণ
-
শুভজিৎ বিশ্বাস ২০/০৬/২০২২চমৎকার
-
মোঃ বুলবুল হোসেন ০২/০৫/২০২২opurbo
-
এ কে সুমন ৩০/০৪/২০২২খুব সুন্দর লেখনশৈলী
-
আব্দুর রহমান আনসারী ২৫/০৪/২০২২চমৎকার
-
সাইয়িদ রফিকুল হক ২৫/০৪/২০২২আপনার লেখায় উন্নতি হয়েছে।
শুভকামনা। -
ফয়জুল মহী ২৫/০৪/২০২২অত্যন্ত সুন্দর ও পরিপাটি লেখা।