এক মুঠো ভালোবাসার রোদ্দুর পর্ব ২২
#এক মুঠো ভালোবাসার রোদ্দুর
#পর্ব ২২
#তাবেরী ইসলাম
শেষমেশ কথা হলো মেয়ে আমাদের কাছেই থাকবে। চোখ জোড়ায় জল ভরে এলো। ওকে নিয়ে গেলে আমি থাকব কি করে এই ভেবে মুচড়ে উঠলো হৃদয়।
আমি রাগে জোহানের সাথে কথা বলিনি। কি বলব সে এজন্য দেশে এসেছে?নাকি আমার জন্য। আর কত অভিনয়।
পরের দিন দুপুরে রিপোর্ট গুলো এলোমেলো করে দিচ্ছে আমার ভাব না গুলো। দীর্ঘ শ্বাস নিয়ে বসে আছি। রাত্রে যখন জোহান আসলো দরজাটা লাগিয়েই বলে উঠলাম এগুলো কি বলবেন আমাকে।
আপনি ইচ্ছে করে আমার সাথে এমন করছেন। ও অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। এতো অবাক হওয়ার কি আছে শুনি?ও চোখ নামিয়ে নিল আর বলতে লাগলেন আসলে রিমা আমি এসব চাই নি।
আমার আড়ষ্ট গলা ধরে এলো বিস্মিত হয়ে বললাম কি চাই নি বলেন? আপনি এখনো জীনাকে ভালোবাসেন। তার জন্য দিনের পর দিন এত অভিনয়। আবারও আমাকে ঠকিয়েছেন এই আপনি।
ডুকরে কেঁদে উঠলাম কিসের কমতি ছিলো বলেন সংসারে। আপনার বিয়ে, মেয়ে সব কিছুই মেনেই নিয়েছি। তবে কিসের জন্য ঠকালেন আমাকে?? জোহান চলে এলেন আমার কাছাকাছি দু'হাতে গাল ছুয়ে পড়া জল মুছতে ব্যস্ত হয়ে বললেন আমি ভেবেছিলাম তুমি বদলে যাবে।
আমি তীক্ষ্ণ চোখে তাকিয়ে হাত ঝাড়ি দিয়ে সরিয়ে দিলাম। আজ নিজেকে পাথর মনে হচ্ছে। এত ভালোবসে আমি এই মানুষের মন পাই নি। আজব লাগে ভাবতে এত দিনে আমি উনার বিশ্বাস ভরসা জোড়াতে কিছুই পারিনি। হৃদয়ে জায়গা হয় নি আমার।
আমার কথাটা শুনো রিমা, আমি কিচ্ছু শুনতে চাই না আপনার। আমি কখনো ঠকিয়েছি আপনাকে। এই যা জাবটাই করেছি মাত্র। আর কোন কথা আমি শুনি নি বলেন। রাগে সামনে থাকা জগটা ফেলে দিলাম ভেঙ্গে গুড়ো গুড়ো হয়ে গেল।
একদম কাছে আসবেন না দরজা খুলে চলে এলাম আম্মুর ঘরে। বলে দিব উনাকে সব। তাইও করলাম। আম্মু আব্বু রাগান্বিত হয়ে আছেন জোহানের উপর।মাথা নিচু হয়ে আছে জোহানের। আমার তাতে কি??করুণ চোখের চাউনিতে আমার কষ্ট সেরে উঠবে না। আমি নাতাশার রুমে গিয়ে মানহাকে নিয়ে শুয়ে পড়লাম। মনে মনে ঠিক করে নিলাম আমি আর এখানে থাকব না।
অর্ধেক কেঁদেই গেছে আমার। মাথার ব্যথায় কাতর হয়ে উঠে গেলাম রুমে গিয়ে ওষুধের পাতা বের করে নিয়ে এলাম। জোহান আমাকে দেখে এগিয়ে আসছে আমি আর না দাঁড়িয়ে রুমে এসে দরজায় খিল দিলাম।
উনি দরজার বাহিরে হয়তো দাঁড়িয়ে আছেন।রাতে দেরিতে ঘুমানোর ফলে সকালে উঠতে দেরি হলো। জোহান আর আম্মু দরজা ধাক্কা দিয়ে যাচ্ছেন। উঠেই ভ্রু কুচকে তাকালাম তাদের দিকে আম্মু চলে গেলেন আর জোহান আমার হাত ধরে নিয়ে বিছানায় বসিয়ে দিলেন।
কি করেছ রিমা?আমি এভাবে তাকিয়েছি যে কাল কিছুই হয়নি এমন একটা ভাব নিয়ে।উনি বলে উঠলেন কেন তুমি ঘুমের ওষুধ খেয়েছ?উনার প্রশ্ন বোধক চাউনি রাগি ভাব ফুটে উঠলো।
ভালোই তো করেছি মরে তো যাই নি তাহলে মুক্তি দিয়ে দিতাম। উনি আমার কথা শুনে রাগে একটা চড় দিতে চেয়েও দিলেন না। চেয়ে দেখি উনি তাকিয়ে আছেন। আমি কেঁদে ওয়াশরুমের গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আসলাম।
বিকেলে আমি আমার কাপড় চোপড়া সব গুছিয়ে নিলাম। ছোট ভাই গাড়ি নিয়ে এসেছে। উনি এসেই বললেন কাপড় গুছাচ্ছ কেন আমার শালা বাবু কি নিতে এসেছে তোমাকে। কিছুই বলি নি উনার কথায়।
আম্মুকে বললাম আমি চলে যাব যাওয়ার আগে আর দেখা হবে না। আম্মু কেঁদে বললেন কেন করছিস মা এমন। একটা ভুল শুধরে নিলেই হয়। এই বয়সে মাকে কষ্ট না দিলে তোদের হয় না। জোহান নিজের রুমেই আছে। আমি মানহাকে নিয়ে গাড়িতে বসে আছি।
সারা রাস্তা ভেবেছি কি খবিশ নিচ লোক একবারও বললো না? রিমা যাওয়ার কি দরকার? সেদিন আমাকে এখানে আসতে মানা করে দিলেন আর আজ আমি চলে এলাম তাও কিছু বললেন না।
অভিমানে পাহাড় জমে উঠলো মনের কোণে। আম্মু এসব দেখেই বলে ফেললেন রেগে কি চলে এসেছি?মাথা ঝাকালাম শুধু।
খেয়ে দেয়ে বসে আছি রাত প্রায় ১০টা ভাই বোনের সাথে আড্ডা দিচ্ছি। আম্মু এক কথায় কথায় বললেন তো মেয়েকে নিয়ে এসেছিস কেন?ওর কান্নায় তোকে এমনিতেই নিতে জামাই আসতো।
ছোট ভাই এটা শুনে হি হি হি করে হেসে উঠলো। আমি রাগি ভাবে ওর দিকে তাকালাম আর আম্মাকে বললাম আমি এখানে থাকব আর উনি মেয়েকে নিয়ে ওখানে সুখে থাকবেন তা কি হয়??
বাহঃ একটু পর দেখি গেইটে আওয়াজ আসছে ছোট বোন বলে গেল আপু দুলাভাই আসছেন। এই মধ্য রাতেও আম্মুর মায়া উতলে উঠলো। চা নাস্তা সব হাজির।ইচ্ছে হচ্ছে মাথাটা ফাটিয়ে দেই খবিশ লোকের।
শেষ পর্যন্ত রুমে এসেও হাজির। বিরক্তি নিয়ে তাকালাম উনার দিকে। এসেই আমার হাত ধরে বললেন প্লিজ রাগ কর না।আমি ভেবেছিলাম তুমি বদলে যাবে চলে যাবে একটা সময় পর তখন আমি কি নিয়ে থাকতাম বলো। আমি কেদেই দিলাম।
রেগে শার্টের কলার চেয়ে ধরে বললাম চুপ একদম চুপ। এখানে এসে অভিনয় করতে হবে না আপনাকে।কি বুঝাতে এসেছেন এখানে?? যত জগড়া আছে সব আমি একাই করি তাই না।
সোফায় বালিশ ছুড়ে বললাম এখানে ঘুমাবেন নো মোর ওয়াডস। মশা তাড়াচ্ছেন একটু পর পর উনি। মশায় খেলে আমার কি??হঠাৎ এরোসেলের ঘ্রাণে ঘুম চলে গেল। এত ঘ্রাণের ফলে মনে হচ্ছে শ্বাস চলে যাবে তাড়াতাড়ি গিয়ে জানাল খুলে দিলাম।
আর উনি কপালে হাত ঠেকিয়ে ঘুমাচ্ছেন।এক গ্লাস পানি উপরে ছেড়ে দিলাম।
চলবে---
#পর্ব ২২
#তাবেরী ইসলাম
শেষমেশ কথা হলো মেয়ে আমাদের কাছেই থাকবে। চোখ জোড়ায় জল ভরে এলো। ওকে নিয়ে গেলে আমি থাকব কি করে এই ভেবে মুচড়ে উঠলো হৃদয়।
আমি রাগে জোহানের সাথে কথা বলিনি। কি বলব সে এজন্য দেশে এসেছে?নাকি আমার জন্য। আর কত অভিনয়।
পরের দিন দুপুরে রিপোর্ট গুলো এলোমেলো করে দিচ্ছে আমার ভাব না গুলো। দীর্ঘ শ্বাস নিয়ে বসে আছি। রাত্রে যখন জোহান আসলো দরজাটা লাগিয়েই বলে উঠলাম এগুলো কি বলবেন আমাকে।
আপনি ইচ্ছে করে আমার সাথে এমন করছেন। ও অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। এতো অবাক হওয়ার কি আছে শুনি?ও চোখ নামিয়ে নিল আর বলতে লাগলেন আসলে রিমা আমি এসব চাই নি।
আমার আড়ষ্ট গলা ধরে এলো বিস্মিত হয়ে বললাম কি চাই নি বলেন? আপনি এখনো জীনাকে ভালোবাসেন। তার জন্য দিনের পর দিন এত অভিনয়। আবারও আমাকে ঠকিয়েছেন এই আপনি।
ডুকরে কেঁদে উঠলাম কিসের কমতি ছিলো বলেন সংসারে। আপনার বিয়ে, মেয়ে সব কিছুই মেনেই নিয়েছি। তবে কিসের জন্য ঠকালেন আমাকে?? জোহান চলে এলেন আমার কাছাকাছি দু'হাতে গাল ছুয়ে পড়া জল মুছতে ব্যস্ত হয়ে বললেন আমি ভেবেছিলাম তুমি বদলে যাবে।
আমি তীক্ষ্ণ চোখে তাকিয়ে হাত ঝাড়ি দিয়ে সরিয়ে দিলাম। আজ নিজেকে পাথর মনে হচ্ছে। এত ভালোবসে আমি এই মানুষের মন পাই নি। আজব লাগে ভাবতে এত দিনে আমি উনার বিশ্বাস ভরসা জোড়াতে কিছুই পারিনি। হৃদয়ে জায়গা হয় নি আমার।
আমার কথাটা শুনো রিমা, আমি কিচ্ছু শুনতে চাই না আপনার। আমি কখনো ঠকিয়েছি আপনাকে। এই যা জাবটাই করেছি মাত্র। আর কোন কথা আমি শুনি নি বলেন। রাগে সামনে থাকা জগটা ফেলে দিলাম ভেঙ্গে গুড়ো গুড়ো হয়ে গেল।
একদম কাছে আসবেন না দরজা খুলে চলে এলাম আম্মুর ঘরে। বলে দিব উনাকে সব। তাইও করলাম। আম্মু আব্বু রাগান্বিত হয়ে আছেন জোহানের উপর।মাথা নিচু হয়ে আছে জোহানের। আমার তাতে কি??করুণ চোখের চাউনিতে আমার কষ্ট সেরে উঠবে না। আমি নাতাশার রুমে গিয়ে মানহাকে নিয়ে শুয়ে পড়লাম। মনে মনে ঠিক করে নিলাম আমি আর এখানে থাকব না।
অর্ধেক কেঁদেই গেছে আমার। মাথার ব্যথায় কাতর হয়ে উঠে গেলাম রুমে গিয়ে ওষুধের পাতা বের করে নিয়ে এলাম। জোহান আমাকে দেখে এগিয়ে আসছে আমি আর না দাঁড়িয়ে রুমে এসে দরজায় খিল দিলাম।
উনি দরজার বাহিরে হয়তো দাঁড়িয়ে আছেন।রাতে দেরিতে ঘুমানোর ফলে সকালে উঠতে দেরি হলো। জোহান আর আম্মু দরজা ধাক্কা দিয়ে যাচ্ছেন। উঠেই ভ্রু কুচকে তাকালাম তাদের দিকে আম্মু চলে গেলেন আর জোহান আমার হাত ধরে নিয়ে বিছানায় বসিয়ে দিলেন।
কি করেছ রিমা?আমি এভাবে তাকিয়েছি যে কাল কিছুই হয়নি এমন একটা ভাব নিয়ে।উনি বলে উঠলেন কেন তুমি ঘুমের ওষুধ খেয়েছ?উনার প্রশ্ন বোধক চাউনি রাগি ভাব ফুটে উঠলো।
ভালোই তো করেছি মরে তো যাই নি তাহলে মুক্তি দিয়ে দিতাম। উনি আমার কথা শুনে রাগে একটা চড় দিতে চেয়েও দিলেন না। চেয়ে দেখি উনি তাকিয়ে আছেন। আমি কেঁদে ওয়াশরুমের গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আসলাম।
বিকেলে আমি আমার কাপড় চোপড়া সব গুছিয়ে নিলাম। ছোট ভাই গাড়ি নিয়ে এসেছে। উনি এসেই বললেন কাপড় গুছাচ্ছ কেন আমার শালা বাবু কি নিতে এসেছে তোমাকে। কিছুই বলি নি উনার কথায়।
আম্মুকে বললাম আমি চলে যাব যাওয়ার আগে আর দেখা হবে না। আম্মু কেঁদে বললেন কেন করছিস মা এমন। একটা ভুল শুধরে নিলেই হয়। এই বয়সে মাকে কষ্ট না দিলে তোদের হয় না। জোহান নিজের রুমেই আছে। আমি মানহাকে নিয়ে গাড়িতে বসে আছি।
সারা রাস্তা ভেবেছি কি খবিশ নিচ লোক একবারও বললো না? রিমা যাওয়ার কি দরকার? সেদিন আমাকে এখানে আসতে মানা করে দিলেন আর আজ আমি চলে এলাম তাও কিছু বললেন না।
অভিমানে পাহাড় জমে উঠলো মনের কোণে। আম্মু এসব দেখেই বলে ফেললেন রেগে কি চলে এসেছি?মাথা ঝাকালাম শুধু।
খেয়ে দেয়ে বসে আছি রাত প্রায় ১০টা ভাই বোনের সাথে আড্ডা দিচ্ছি। আম্মু এক কথায় কথায় বললেন তো মেয়েকে নিয়ে এসেছিস কেন?ওর কান্নায় তোকে এমনিতেই নিতে জামাই আসতো।
ছোট ভাই এটা শুনে হি হি হি করে হেসে উঠলো। আমি রাগি ভাবে ওর দিকে তাকালাম আর আম্মাকে বললাম আমি এখানে থাকব আর উনি মেয়েকে নিয়ে ওখানে সুখে থাকবেন তা কি হয়??
বাহঃ একটু পর দেখি গেইটে আওয়াজ আসছে ছোট বোন বলে গেল আপু দুলাভাই আসছেন। এই মধ্য রাতেও আম্মুর মায়া উতলে উঠলো। চা নাস্তা সব হাজির।ইচ্ছে হচ্ছে মাথাটা ফাটিয়ে দেই খবিশ লোকের।
শেষ পর্যন্ত রুমে এসেও হাজির। বিরক্তি নিয়ে তাকালাম উনার দিকে। এসেই আমার হাত ধরে বললেন প্লিজ রাগ কর না।আমি ভেবেছিলাম তুমি বদলে যাবে চলে যাবে একটা সময় পর তখন আমি কি নিয়ে থাকতাম বলো। আমি কেদেই দিলাম।
রেগে শার্টের কলার চেয়ে ধরে বললাম চুপ একদম চুপ। এখানে এসে অভিনয় করতে হবে না আপনাকে।কি বুঝাতে এসেছেন এখানে?? যত জগড়া আছে সব আমি একাই করি তাই না।
সোফায় বালিশ ছুড়ে বললাম এখানে ঘুমাবেন নো মোর ওয়াডস। মশা তাড়াচ্ছেন একটু পর পর উনি। মশায় খেলে আমার কি??হঠাৎ এরোসেলের ঘ্রাণে ঘুম চলে গেল। এত ঘ্রাণের ফলে মনে হচ্ছে শ্বাস চলে যাবে তাড়াতাড়ি গিয়ে জানাল খুলে দিলাম।
আর উনি কপালে হাত ঠেকিয়ে ঘুমাচ্ছেন।এক গ্লাস পানি উপরে ছেড়ে দিলাম।
চলবে---
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
ফয়জুল মহী ২৭/০৮/২০২১সুন্দর লিখেছেন l ভালো লাগলো
-
অনিমেষ চক্রবর্তী ২৭/০৮/২০২১অসাধারন
-
সাইয়িদ রফিকুল হক ২৭/০৮/২০২১জীবনের কথকতা।