এক মুঠো ভালোবাসার রোদ্দুর পর্ব ২০
#এক মুঠো ভালোবাসার রোদ্দুর
#পর্ব ২০
#তাবেরী ইসলাম
টরন্টো শহরের একটা পার্কে বসে আছি। শীত শীত উষ্ণ ভাবাছন্ন পরিবেশ। হাতের ফোনে প্রিয় জনের মুখ গুলো ভাসছে।
সবুজের মাঝে ফুল গুলো ঢেউ দুলছে।ভীষন্ন মন বিস্তর ভাবনায় পড়ে আছে। সেদিন গিয়েছিলাম বাড়িতে। আব্বু আম্মুকে দেখে খুশি হয়ে ছিলাম। আম্মু আর সবাই উনাকে নিয়ে ব্যস্ত ছিল।
ভালোই গিয়েছে দুদিন। আম্মুকে মেজ সব বলে দিয়েছে।আম্মু আমাকে বললে মিথ্যে বলেছি উনাকে।তারপরও মেজ উনাকে শুনিয়ে শুনিয়ে অনেক কথা বলেছে।তবুও কিছুও বলি নি। আমি দু'টানায় পড়ে যাই।জোহান রাগে বলেই ফেললেন আমার স্ত্রীকে এভাবে অপমানিত করা তোমার উচিত নয় খালেক। ও তোমার বড় বোন হয় আর আমি যদি কোনো দোষ ত্রুটি করে থাকি তার জন্য আব্বু আম্মু আমাকে কিছু বলতে পারেন তুমি নও।
রাগে গজগজ করে বাহিরে চলে গেলেন। আমি শুধু কেদেছি। আমি জানি এবাড়িতে আমার মূল্য খুব কম।হতে পারে আমি কারো মন পুষিয়ে চলতে পারি নি। আপু ফোনে আব্বুকে অনেক ঝেড়ে দিলেন। খাবার নিয়ে বসে আছি ছোট ভাই আর উনি বাসায় আসলেন একটু দেরিতেই।
উনি খাবেন না বলে চলে গেলেন রুমে। আমি বললাম ওর কথায় কি আসে যায় বলুন??প্লিজ খেয়ে নিন। উনি অবাক হয়ে তাকিয়ে আছেন আমার দিকে।
দেখুন আম্মু, খালেক সবি জেনে গেছেন। মিথ্যে যেহেতু বলেছেন তার তাপ একটুও সইতে হবে। সবাই সবাটা সহজে মেনে নিতে পারে না আমার মত। তাই বলে সম্পর্ক বদলে যায় না। মানিয়ে নিতে হয় আপনিও না হয় মানিয়ে নিবেন আব্বু আম্মু তো কিছুই বলেন নি তাহলে আর কি??আছে এখানে।
গম্ভীর ভাবে বললেন ঠিক আছে তবে তোমার কিছুই এখানে রাখবে না। আমি চাই না এত কিছুর পর তুমি এখানে এসে থাকো।
ভাতের প্লেট এগিয়ে দিয়ে বললাম দু'দিন পর তো চলে যাব। তো দুর দেশ পাড়ি দিয়ে কি করে আসবো। উনি বললেন তুমি খাও আমি দেখছি। আমার পেট ভরা আমি বাহিরে খেয়ে এসেছি।
সকাল হতেই কোনো রকম নাস্তাটা করেই ডাইভার চাচা আমাদের নিয়ে আসেন। আমি জানি এখানে আমার জিনিসপত্রে কেউ একটা টুকাও চুবে না।আমার শাশুড়ি সব আগলে রাখবেন। আসার আগে একদিন উনাকে জোর করে নিয়ে ভাই বোনকে দেখে এসেছি।আম্মু আর ছোট ভাই সাইফ এসেছিল বিদায় দিতে।
জীবন যুদ্ধ এভাবে হবে ভাবি নি।চোখ থেকে দু'ফোটা জল ঝরতে হাতের স্পর্শ আমার ভাবনা গুলো উড়িয়ে দিল।
জোহান চেয়ে আছে আমার দিকে আমার অশ্রু আজ বাঁধ মানছে না। রিল্যাক্স রিমা এভাবে কাঁদবে না। আপনি আমায় আর থাকতেও দেন নি। হ্যাঁ দেই নি তুমি এভাবে কেন অপমান সইবে বলো।যেখানে গুরুত্ব নেই সেখানে না থাকাই ভালো। তাও তো তোমার জোড়াজুড়িতে গিয়েছি সেখানে।
দু'হাত গালে জড়িয়ে মুছে দিলেন জল।মানু দেখ না তোমার আম্মু কেমন বাচ্চাদের মত কাঁদছে।বলো মাম্মাকে যেন না কাঁদে।তাহলে আমরা তাকে পাপ্পি দিব না আর চকলেট ও দিব না।
আমার সাথে মজা নিচ্ছেন বাপ পেটি মিলে। বসিয়ে দিলাম উরাধরা ঘুসি। মানহা এখন পুরোপুরি হাটছে ছুটাছুটিতে মাতিয়ে আছে।
এই এক সপ্তাহে সব কিছু গুছাতে হাপিয়ে উঠেছি।হারব্রড ভিলেজের প্রকৃতিতে মানিয়ে নিতে হবে। ব্যস্ততায় মুখর চারদিক জীবনের পথ।।
দৃষ্টি নন্দন এই কুইন্স পার্ক মন ভালো করে দেবে নিমিষেই। উদাসী ভাবনা ছেড়ে চলে আসো,পেঠ আমার চু চু করছে কিছু খেয়ে নিব।উনি মানহাকে নিয়ে সামনে আর আমি পিছনে হাটছি।
এত জোরে জোরে কেউ হাটে আমি আর পারব না। আমার পায়ের হিলে পায়ের পাতায় পুষ্কা পড়ে গেছে। নতুন জুতা পড়লেই মাঝে মধ্যে পায়ে পুষ্কা পড়ে। আজ আমার বারোটা বাজিয়ে ছাড়ল।
আমি বসে পড়ি এক জায়গায় উনাকে ডেকেও লাভ হয় নি।সূর্য পশ্চিম আকারে ঢলে পড়েছে। আমি যদি হারিয়ে যাই এই ভয়ে হাটা দিলাম কিন্তু এক মুহুর্তে উধাও হয় মানুষ কিভাবে। চার দিকে তাকিয়ে হতাশ হয়ে ফোনটা ব্যগ থেকে হাতে নিলাম। উনি এসেছেন তবে আমি হাপাচ্ছি।
বললাম এভাবে কেউ ফেলে যায়, আর আপনি এক আস্ত বয়রা মানুষ। কত ডেকেছি কানেই নিলেন না, কান কি আকাশে থাকে?? উনি স্মিথ হেসে বললেন সাথেই আছে। তুমি এত অলস জানা ছিল না।
চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে বললাম আমার পায়ে পুষ্কা ফুটেছে আমি হাটব কি করে এত দ্রুত?এখন কি মা, মেয়ে দুজনকে কোলে নিয়ে হাটতে হবে আমার?বলেই উচ্চস্বরে হেসে উঠলেন ভ্রু জোড়া কুঁচকে এলো আমার।
এরপর থেকে বাহিরে এলে সুজ পড়ে বের হবে। উনার হাত ধরে ধীরে ধীরে হেটে গাড়িতে উঠে বসলাম। উনি অয়েন্টমেন্ট খুজে দিলেন। হিল খুলে পায়ের পাতায় অয়েন্টমেন্ট লাগিয়ে নিয়েছি।
রেস্টুরেন্টে বসে আছি এসব।মানহা আর উনি খাচ্ছেন আমি তাকিয়ে দেখছি। উনি খাইয়ে দিচ্ছেন মানহাকে। এসব কেউ খায় ইনুসেন্ট ভাবে তাকিয়ে বললাম। উনি বললেন সবাই খায় একটু ট্রেস্ট করে দেখবে এখন।
আসলেই সুস্বাদু খাবার এখানকার। আনইজি ফিল হচ্ছিলো। আমার হাতে একটা জুস আর মানহার হাত ধরে দাঁড়িয়ে আছি। গাড়ি নিয়ে সামনে এসে গ্লাস খুলে হাত ইশারায় ডাকলেন। ঘনিয়ে এসেছে সন্ধ্যা ল্যাম্প পোস্টের বাতির আলোয় আলোকিত হয়ে উঠেছে।
চুলবে ----
#পর্ব ২০
#তাবেরী ইসলাম
টরন্টো শহরের একটা পার্কে বসে আছি। শীত শীত উষ্ণ ভাবাছন্ন পরিবেশ। হাতের ফোনে প্রিয় জনের মুখ গুলো ভাসছে।
সবুজের মাঝে ফুল গুলো ঢেউ দুলছে।ভীষন্ন মন বিস্তর ভাবনায় পড়ে আছে। সেদিন গিয়েছিলাম বাড়িতে। আব্বু আম্মুকে দেখে খুশি হয়ে ছিলাম। আম্মু আর সবাই উনাকে নিয়ে ব্যস্ত ছিল।
ভালোই গিয়েছে দুদিন। আম্মুকে মেজ সব বলে দিয়েছে।আম্মু আমাকে বললে মিথ্যে বলেছি উনাকে।তারপরও মেজ উনাকে শুনিয়ে শুনিয়ে অনেক কথা বলেছে।তবুও কিছুও বলি নি। আমি দু'টানায় পড়ে যাই।জোহান রাগে বলেই ফেললেন আমার স্ত্রীকে এভাবে অপমানিত করা তোমার উচিত নয় খালেক। ও তোমার বড় বোন হয় আর আমি যদি কোনো দোষ ত্রুটি করে থাকি তার জন্য আব্বু আম্মু আমাকে কিছু বলতে পারেন তুমি নও।
রাগে গজগজ করে বাহিরে চলে গেলেন। আমি শুধু কেদেছি। আমি জানি এবাড়িতে আমার মূল্য খুব কম।হতে পারে আমি কারো মন পুষিয়ে চলতে পারি নি। আপু ফোনে আব্বুকে অনেক ঝেড়ে দিলেন। খাবার নিয়ে বসে আছি ছোট ভাই আর উনি বাসায় আসলেন একটু দেরিতেই।
উনি খাবেন না বলে চলে গেলেন রুমে। আমি বললাম ওর কথায় কি আসে যায় বলুন??প্লিজ খেয়ে নিন। উনি অবাক হয়ে তাকিয়ে আছেন আমার দিকে।
দেখুন আম্মু, খালেক সবি জেনে গেছেন। মিথ্যে যেহেতু বলেছেন তার তাপ একটুও সইতে হবে। সবাই সবাটা সহজে মেনে নিতে পারে না আমার মত। তাই বলে সম্পর্ক বদলে যায় না। মানিয়ে নিতে হয় আপনিও না হয় মানিয়ে নিবেন আব্বু আম্মু তো কিছুই বলেন নি তাহলে আর কি??আছে এখানে।
গম্ভীর ভাবে বললেন ঠিক আছে তবে তোমার কিছুই এখানে রাখবে না। আমি চাই না এত কিছুর পর তুমি এখানে এসে থাকো।
ভাতের প্লেট এগিয়ে দিয়ে বললাম দু'দিন পর তো চলে যাব। তো দুর দেশ পাড়ি দিয়ে কি করে আসবো। উনি বললেন তুমি খাও আমি দেখছি। আমার পেট ভরা আমি বাহিরে খেয়ে এসেছি।
সকাল হতেই কোনো রকম নাস্তাটা করেই ডাইভার চাচা আমাদের নিয়ে আসেন। আমি জানি এখানে আমার জিনিসপত্রে কেউ একটা টুকাও চুবে না।আমার শাশুড়ি সব আগলে রাখবেন। আসার আগে একদিন উনাকে জোর করে নিয়ে ভাই বোনকে দেখে এসেছি।আম্মু আর ছোট ভাই সাইফ এসেছিল বিদায় দিতে।
জীবন যুদ্ধ এভাবে হবে ভাবি নি।চোখ থেকে দু'ফোটা জল ঝরতে হাতের স্পর্শ আমার ভাবনা গুলো উড়িয়ে দিল।
জোহান চেয়ে আছে আমার দিকে আমার অশ্রু আজ বাঁধ মানছে না। রিল্যাক্স রিমা এভাবে কাঁদবে না। আপনি আমায় আর থাকতেও দেন নি। হ্যাঁ দেই নি তুমি এভাবে কেন অপমান সইবে বলো।যেখানে গুরুত্ব নেই সেখানে না থাকাই ভালো। তাও তো তোমার জোড়াজুড়িতে গিয়েছি সেখানে।
দু'হাত গালে জড়িয়ে মুছে দিলেন জল।মানু দেখ না তোমার আম্মু কেমন বাচ্চাদের মত কাঁদছে।বলো মাম্মাকে যেন না কাঁদে।তাহলে আমরা তাকে পাপ্পি দিব না আর চকলেট ও দিব না।
আমার সাথে মজা নিচ্ছেন বাপ পেটি মিলে। বসিয়ে দিলাম উরাধরা ঘুসি। মানহা এখন পুরোপুরি হাটছে ছুটাছুটিতে মাতিয়ে আছে।
এই এক সপ্তাহে সব কিছু গুছাতে হাপিয়ে উঠেছি।হারব্রড ভিলেজের প্রকৃতিতে মানিয়ে নিতে হবে। ব্যস্ততায় মুখর চারদিক জীবনের পথ।।
দৃষ্টি নন্দন এই কুইন্স পার্ক মন ভালো করে দেবে নিমিষেই। উদাসী ভাবনা ছেড়ে চলে আসো,পেঠ আমার চু চু করছে কিছু খেয়ে নিব।উনি মানহাকে নিয়ে সামনে আর আমি পিছনে হাটছি।
এত জোরে জোরে কেউ হাটে আমি আর পারব না। আমার পায়ের হিলে পায়ের পাতায় পুষ্কা পড়ে গেছে। নতুন জুতা পড়লেই মাঝে মধ্যে পায়ে পুষ্কা পড়ে। আজ আমার বারোটা বাজিয়ে ছাড়ল।
আমি বসে পড়ি এক জায়গায় উনাকে ডেকেও লাভ হয় নি।সূর্য পশ্চিম আকারে ঢলে পড়েছে। আমি যদি হারিয়ে যাই এই ভয়ে হাটা দিলাম কিন্তু এক মুহুর্তে উধাও হয় মানুষ কিভাবে। চার দিকে তাকিয়ে হতাশ হয়ে ফোনটা ব্যগ থেকে হাতে নিলাম। উনি এসেছেন তবে আমি হাপাচ্ছি।
বললাম এভাবে কেউ ফেলে যায়, আর আপনি এক আস্ত বয়রা মানুষ। কত ডেকেছি কানেই নিলেন না, কান কি আকাশে থাকে?? উনি স্মিথ হেসে বললেন সাথেই আছে। তুমি এত অলস জানা ছিল না।
চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে বললাম আমার পায়ে পুষ্কা ফুটেছে আমি হাটব কি করে এত দ্রুত?এখন কি মা, মেয়ে দুজনকে কোলে নিয়ে হাটতে হবে আমার?বলেই উচ্চস্বরে হেসে উঠলেন ভ্রু জোড়া কুঁচকে এলো আমার।
এরপর থেকে বাহিরে এলে সুজ পড়ে বের হবে। উনার হাত ধরে ধীরে ধীরে হেটে গাড়িতে উঠে বসলাম। উনি অয়েন্টমেন্ট খুজে দিলেন। হিল খুলে পায়ের পাতায় অয়েন্টমেন্ট লাগিয়ে নিয়েছি।
রেস্টুরেন্টে বসে আছি এসব।মানহা আর উনি খাচ্ছেন আমি তাকিয়ে দেখছি। উনি খাইয়ে দিচ্ছেন মানহাকে। এসব কেউ খায় ইনুসেন্ট ভাবে তাকিয়ে বললাম। উনি বললেন সবাই খায় একটু ট্রেস্ট করে দেখবে এখন।
আসলেই সুস্বাদু খাবার এখানকার। আনইজি ফিল হচ্ছিলো। আমার হাতে একটা জুস আর মানহার হাত ধরে দাঁড়িয়ে আছি। গাড়ি নিয়ে সামনে এসে গ্লাস খুলে হাত ইশারায় ডাকলেন। ঘনিয়ে এসেছে সন্ধ্যা ল্যাম্প পোস্টের বাতির আলোয় আলোকিত হয়ে উঠেছে।
চুলবে ----
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
ন্যান্সি দেওয়ান ০৪/০৯/২০২১Bah
-
সাইয়িদ রফিকুল হক ২০/০৮/২০২১লিখুন। তবে বানানের দিকে খেয়াল রাখবেন প্রিয়।
শুভেচ্ছা। -
ফয়জুল মহী ২০/০৮/২০২১দারুণ
-
আমান শেখ ১৯/০৮/২০২১অসাধারণ, চলবে,,,