এক মুঠো ভালোবাসার রোদ্দুর পর্ব ১২ ও ১৩
#এক মুঠো ভালোবাসার রোদ্দুর
#পর্ব ১২
#তাবেরী ইসলাম
বৃষ্টির ছন্দে মুখর চারদিক।উনি মোবাইলে গান ছেড়েছেন।
“এই মেঘলা দিনে একলা
ঘরে থাকে না তো মন,
কাছে যাব কবে পাব
ওগো তোমার নিমন্ত্রণ।
মুহূর্ত গুলো রঙ্গিন হয়ে উঠেছে, ভাবনার এলোমেলো বর্ষণ ছুয়ে যাচ্ছে প্রবাহিত প্রহর। লজ্জায় মুড়ে গেছে মুখের লাল আভায়।
হঠাৎ উনি বলে উঠলেন এত ক্ষুয়ে ক্ষুয়ে যাচ্ছ কেন? মনে হচ্ছে এই বুঝি শেষ। উপভোগ কর পরিবেশটাকে বলে পানি আমার দিকে ছিটে দিচ্ছেন আর মুচকি হাসছেন।
এই কাছে আসায় যদি এই হয় তোমার অবস্থা তবে আরো কাছে আসতে চাই।কপলে অধর ছুয়ে হৃদয়ে বসত করে আরো বেশি ভালোবাসতে চাই।
কখন যে এতো কাছে এসেছেন বুঝতেই পারি নি।উনার বুকে চোখ বুজেই আছি।
মোবাইলে রিংটোনের শব্দে গানটা থেমে গেল। উনি বিরক্তি নিয়ে ফোনটা রিসিভ করলেন। কথা বলতে রুমে চলে গেলেন। আমি এখনো দাঁড়িয়ে বৃষ্টি উপভোগ করছি।
নাতাশা এসে বলছে ভাবি তুমি আমাকে একটু সাহায্য কর না।এদের জন্য আমি কিছুই পারছি না।
মানহা আমি কোলে নিয়ে বললাম চল তোমার রুমে। ওর রুম গুছিয়ে রাখতে আর কাপড় চোপড়া গোছাতে সাহায্য করলাম। কাল সকালে নাতাশা ওর বাড়িতে যাবে।
নাতাশা একটা কথা ছিল! আমি মানহাকে নিতে চাই। নাতাশা মাথা নিচু করে বলল আমি জানি ভাবি। ওর মন খারাপটা আমি বুঝতে পারি।
তাই বলে দিলাম নিব বলে এখননি নিচ্ছি না নাতাশা আমি তোমার মন বুঝি। বোনের মত আমায় ভাবতে পার।
আরো কিছু দিন তোমায় এ দ্বায়িত্ব নিতে হবে। ওর চোখ জলে চিকচিক করে উঠলো। নাতাশার চোখের জল মুছে দিলাম। আমি চাই না ওর জীবন অন্য রকম হোক। স্বাভাবিক ভাবেই আট-দশটা বাচ্চার মত বাঁচুক।
আমার ভেতর ভারি হয়ে আসছে মানহাকে নাতাশার কাছে স্বাভাবিক ভাবেই রেখে এলাম।
কাঁদছি খুব করে ইচ্ছে হচ্ছে।আমার ভাবনা গুলো ভাবিয়ে তোলে বারবার সৎ মা শব্দটা যেন না আসে কখনো।
-----------------------------------
আজানের মধুর ধ্বনিতে ভেঙে গেল ঘুম।নামাজ টা পড়ার জন্য উনাকে ডেকে দিলাম। বারান্দায় গ্রিলে পর্দাটা আমি বলে লাগিয়েছি। ছোট ছোট রঙ্গিন এই পর্দা গুলো বাতাসে দুলছে।
বৃষ্টিস্নাত এই প্রভাতে সূর্যের ক্ষীণ আলোয় আলোকিত হবে একটুপর । ডায়েরি পাতার পৃষ্টা উল্টে যাচ্ছে। কি আছে এতে উৎসুক মন দেখতে চায়।
হাতে নিয়ে দেখলাম প্রয়োজনীয় কিছু লেখা উনার আর কিছু নেই।কিচ্ছুক্ষণ পর রান্না ঘর থেকে কফি আর আমার জন্য লেবুর চা নিয়ে আসি।
নাতাশা রেডি হয়ে আছে সিহাব এসে নিয়ে যাবে। মানহাকে নিয়ে যাবে। উনি নাতাশাকে বলে দিলেন খেয়াল রাখতে মানহার।
রোদের তীব্রতায় তীক্ষ্ণ ভাঁজ পড়েছে কপালে। ঘামাক্ত শরীরে এতো ঘুরেন কি করে বলে উঠলাম।
আছি তো আর ক'টা দিন একটু ঘুরে বেড়াই বন্ধুদের সাথে। দুপুরের খাওয়া শেষে বিকেলে আমরা গাছের চারা গুলো রোপণ করলাম।
উনি সিড়িতে পা ভিজিয়ে বসে আছেন।আমি চা নিয়ে এসেছি উনার জন্য।
এত গাছ লাগিয়ে কি করবে রিমা?? তুমিও তো কিছুদিন পর চলে যাবে আমার সাথে।
চা...টা পান করুন। গাছ লাগানো আমার পছন্দ তাই।আর চারা গুলো আমার আম্মুর হাতের। এ গাছ গুলোর দিকে তাকালে আম্মুকে মনে পড়বে।
আমাদের বাড়িতে কত গাছ আপনি দেখেন নি?? আমি চাই আমার বাচ্চারা নিজের গাছের ফল ফুলে তৃপ্ত থাকুক।
বাচ্চা মানে!! উনি তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকালেন আমার দিকে। আমি ভীষণ অস্বস্তিতে পরে গেলাম।উনি এটা বুঝে গেলেন। তাই বলে উঠলেন মানহা এসব খাবে আর দেখবে কখন।
বড় হলে বিয়েপর শশুড় বাড়ি চলে যাবে। তাই বলে আমার মেয়ে পর হয়ে যাবে না।আর আপনি দেশে না আসলেও আমরা মা মেয়ে দুজনই বছর দুয়েক পরে পরে আসব গাল ফুলিয়ে বললাম।
উনি হাসছেন আর বলছেন আসা যাওয়া যা খরচ তা কি আমার শশুড় দিবেন?আমিও বলে দিলাম আপনার শশুড়ের মেয়ের জামাই আছেন উনিই দিবেন।
উনি এখনো হাসছেন আমি চলে এলাম ঘরে।
মাগরিবের আজানের প্রতিধ্বনি ভেসে আছে। নামায পরেই আব্বুর চা নাস্তা নিয়ে গেলাম কিছু গল্প হলো। আব্বু ভীষণ খুশি গাছ লাগিয়েছি বলে। কত গুলো উপদেশ ও দিলেন।
--------------------------------------------------
#পর্ব ১৩
সকাল বেলায় আমার একমাত্র ফুফি শাশুড়ি এসে হাজির হলেন।উনার জন্য চা নাস্তা বানাচ্ছি আর ফুফি আমাকে আপাদমস্তক পযবেক্ষন করছেন।
আব্বু বসে চা খাচ্ছেন।ফুফি আব্বুকে বললেন ভাইসাব তোমার ছেলের বউ খুব থুরথরা (এটা সিলেটের গ্রামীণ ভাষা)।দুদিনেই রান্না ঘর নিজের আয়ত্বে নিয়া নিয়েছে।
আব্বু বলেন তো কি হয়েছে?? তোর ভাবির বয়স হইছে আর কত রান্ধিয়া তোমরারে খাওয়াইত।
ফুফি আবার বলে উঠলেন এর লাগি কিতা নিজের হাতের মুঠিত রাখতা না নি?
আব্বু বললেন সবি জাগায় আছে শুধু তোর চিন্তা ঠিক নায়।বাট্টি ফুরি আনছ আর কত আল্লাদ দেখাইবায়।বলে উনি চলে গেলেন আম্মুর কাছে।
আমি শুধু শুনেছি সব কথা। আব্বু এসে বললেন মন খারাপ করিস না মা। আমার ছোট বোন তো।
আমি মন খারাপ করে চলে এলাম রুমে।উনি ঘুম থেকে উঠেই বললেন কে এসেছে রিমা। আমি বললাম আপনার ফুফি এসেছেন।
আমার হাত ধরে বললেন এসব শুনে মন খারাপ কর না।বাহিরের লোক অনেক কিছুই বলে তাই বলে কি সব কথা মনে ধরতে হবে?
যাও আমার নাস্তা রেডি কর আমি আসছি বলে ওয়াশরুমে চলে গেলেন। আমি চা নাস্তা রেডি করে নিলাম। ফুফি আমার শাশুড়ি আম্মুর কান পাকিয়ে দিচ্ছেন কথা বলে বলে।
উনি চেয়ারে বসেই ফুফিকে জিজ্ঞেস করলেন বউ দেখতে এসে কেউ এসব বলে?তোমার এত চিন্তা কিসের শুনি?এসব কথা বলার জন্য আমাদের বাড়িতে না আসলেই চলবে চেঁচিয়ে বললেন।
রাগে চা নিয়ে রুমে চলে এসেছেন উনি। এরকম প্রায় ছোট খাট বিষয় আমি আগেও দেখে এসেছি।আমি খাট বলে অনেকেই অনেক কিছুই বলতে।
সত্যি বলতে আল্লার কৃপা যেখানে থাকে সেখানে কারো কথায় কিছু আসে যায় না।
বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা হতে যাচ্ছে আমি এখনো আমার ফুলের গাছ গুলোর দিকে তাকিয়ে আছি আনমনে। উনার হাতের স্পর্শে পাশে ফিরে তাকালাম, এখনো কি মন খারাপ রিমা?
ফুফি এরকমই মেয়েকে তো আমার কাছে বিয়ে দিতে পারেন নি তাই তোমাকে নিয়ে এত কথা।এমনিতে ওদের সাথে সম্পর্কের দূরত্ব বেড়ে গেছে আগেই।তুমি মোটেই এসব নিয়ে ভাববে না।
সন্ধ্যার পর আমার প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র গুলো উনি গুছিয়ে ফাইলে রাখছেন। আমার 2টা ডায়েরি ও আছে ব্যগে।
উনার হাতে আমার ডায়েরি গুলো দেখে মনে ভয় চলে আসলো। ডায়েরির পাতা উল্টিয়ে চোখ বুলালেন কয়েকটি পাতায়।
আমি উনাকে পাস্তার প্লেট টা সামনে বাড়িয়ে দিলাম। উনি ডায়েরি গুলো রেখে খেতে লাগলেন। আমি এই ফাঁকে সরিয়ে নিলাম ডায়েরি। তবে মনের ভয় প্রকাশ করি নি।
তবে কি আমি আবার ঠকে যাচ্ছি ভাবনা উগ্রে যাচ্ছে উনার মনের কোণে??নিশিত বাতায়ন চন্দ্রীমা চাঁদ বাতাসে দুলছে গ্রিলের পর্দা।বারান্দা সোফায় বসে ঘুম ঘুম চোখে দেখছি উনাকে।
অভিমান ঘিরে আছে বৃত্তের বলয়ে মনের গহীনে।সে কি আমারই আছে? তার হৃদয়ে আমার বিচরণ। আমার চোখ জোড়ে গেল ঘুমের দেশে। কাঁদে মাথা আজও দিয়ে রেখছি একেবল ভরসা নয় ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ,না বলা কিছু কথা কিছু অনুভূতির।
চলবে----
#পর্ব ১২
#তাবেরী ইসলাম
বৃষ্টির ছন্দে মুখর চারদিক।উনি মোবাইলে গান ছেড়েছেন।
“এই মেঘলা দিনে একলা
ঘরে থাকে না তো মন,
কাছে যাব কবে পাব
ওগো তোমার নিমন্ত্রণ।
মুহূর্ত গুলো রঙ্গিন হয়ে উঠেছে, ভাবনার এলোমেলো বর্ষণ ছুয়ে যাচ্ছে প্রবাহিত প্রহর। লজ্জায় মুড়ে গেছে মুখের লাল আভায়।
হঠাৎ উনি বলে উঠলেন এত ক্ষুয়ে ক্ষুয়ে যাচ্ছ কেন? মনে হচ্ছে এই বুঝি শেষ। উপভোগ কর পরিবেশটাকে বলে পানি আমার দিকে ছিটে দিচ্ছেন আর মুচকি হাসছেন।
এই কাছে আসায় যদি এই হয় তোমার অবস্থা তবে আরো কাছে আসতে চাই।কপলে অধর ছুয়ে হৃদয়ে বসত করে আরো বেশি ভালোবাসতে চাই।
কখন যে এতো কাছে এসেছেন বুঝতেই পারি নি।উনার বুকে চোখ বুজেই আছি।
মোবাইলে রিংটোনের শব্দে গানটা থেমে গেল। উনি বিরক্তি নিয়ে ফোনটা রিসিভ করলেন। কথা বলতে রুমে চলে গেলেন। আমি এখনো দাঁড়িয়ে বৃষ্টি উপভোগ করছি।
নাতাশা এসে বলছে ভাবি তুমি আমাকে একটু সাহায্য কর না।এদের জন্য আমি কিছুই পারছি না।
মানহা আমি কোলে নিয়ে বললাম চল তোমার রুমে। ওর রুম গুছিয়ে রাখতে আর কাপড় চোপড়া গোছাতে সাহায্য করলাম। কাল সকালে নাতাশা ওর বাড়িতে যাবে।
নাতাশা একটা কথা ছিল! আমি মানহাকে নিতে চাই। নাতাশা মাথা নিচু করে বলল আমি জানি ভাবি। ওর মন খারাপটা আমি বুঝতে পারি।
তাই বলে দিলাম নিব বলে এখননি নিচ্ছি না নাতাশা আমি তোমার মন বুঝি। বোনের মত আমায় ভাবতে পার।
আরো কিছু দিন তোমায় এ দ্বায়িত্ব নিতে হবে। ওর চোখ জলে চিকচিক করে উঠলো। নাতাশার চোখের জল মুছে দিলাম। আমি চাই না ওর জীবন অন্য রকম হোক। স্বাভাবিক ভাবেই আট-দশটা বাচ্চার মত বাঁচুক।
আমার ভেতর ভারি হয়ে আসছে মানহাকে নাতাশার কাছে স্বাভাবিক ভাবেই রেখে এলাম।
কাঁদছি খুব করে ইচ্ছে হচ্ছে।আমার ভাবনা গুলো ভাবিয়ে তোলে বারবার সৎ মা শব্দটা যেন না আসে কখনো।
-----------------------------------
আজানের মধুর ধ্বনিতে ভেঙে গেল ঘুম।নামাজ টা পড়ার জন্য উনাকে ডেকে দিলাম। বারান্দায় গ্রিলে পর্দাটা আমি বলে লাগিয়েছি। ছোট ছোট রঙ্গিন এই পর্দা গুলো বাতাসে দুলছে।
বৃষ্টিস্নাত এই প্রভাতে সূর্যের ক্ষীণ আলোয় আলোকিত হবে একটুপর । ডায়েরি পাতার পৃষ্টা উল্টে যাচ্ছে। কি আছে এতে উৎসুক মন দেখতে চায়।
হাতে নিয়ে দেখলাম প্রয়োজনীয় কিছু লেখা উনার আর কিছু নেই।কিচ্ছুক্ষণ পর রান্না ঘর থেকে কফি আর আমার জন্য লেবুর চা নিয়ে আসি।
নাতাশা রেডি হয়ে আছে সিহাব এসে নিয়ে যাবে। মানহাকে নিয়ে যাবে। উনি নাতাশাকে বলে দিলেন খেয়াল রাখতে মানহার।
রোদের তীব্রতায় তীক্ষ্ণ ভাঁজ পড়েছে কপালে। ঘামাক্ত শরীরে এতো ঘুরেন কি করে বলে উঠলাম।
আছি তো আর ক'টা দিন একটু ঘুরে বেড়াই বন্ধুদের সাথে। দুপুরের খাওয়া শেষে বিকেলে আমরা গাছের চারা গুলো রোপণ করলাম।
উনি সিড়িতে পা ভিজিয়ে বসে আছেন।আমি চা নিয়ে এসেছি উনার জন্য।
এত গাছ লাগিয়ে কি করবে রিমা?? তুমিও তো কিছুদিন পর চলে যাবে আমার সাথে।
চা...টা পান করুন। গাছ লাগানো আমার পছন্দ তাই।আর চারা গুলো আমার আম্মুর হাতের। এ গাছ গুলোর দিকে তাকালে আম্মুকে মনে পড়বে।
আমাদের বাড়িতে কত গাছ আপনি দেখেন নি?? আমি চাই আমার বাচ্চারা নিজের গাছের ফল ফুলে তৃপ্ত থাকুক।
বাচ্চা মানে!! উনি তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকালেন আমার দিকে। আমি ভীষণ অস্বস্তিতে পরে গেলাম।উনি এটা বুঝে গেলেন। তাই বলে উঠলেন মানহা এসব খাবে আর দেখবে কখন।
বড় হলে বিয়েপর শশুড় বাড়ি চলে যাবে। তাই বলে আমার মেয়ে পর হয়ে যাবে না।আর আপনি দেশে না আসলেও আমরা মা মেয়ে দুজনই বছর দুয়েক পরে পরে আসব গাল ফুলিয়ে বললাম।
উনি হাসছেন আর বলছেন আসা যাওয়া যা খরচ তা কি আমার শশুড় দিবেন?আমিও বলে দিলাম আপনার শশুড়ের মেয়ের জামাই আছেন উনিই দিবেন।
উনি এখনো হাসছেন আমি চলে এলাম ঘরে।
মাগরিবের আজানের প্রতিধ্বনি ভেসে আছে। নামায পরেই আব্বুর চা নাস্তা নিয়ে গেলাম কিছু গল্প হলো। আব্বু ভীষণ খুশি গাছ লাগিয়েছি বলে। কত গুলো উপদেশ ও দিলেন।
--------------------------------------------------
#পর্ব ১৩
সকাল বেলায় আমার একমাত্র ফুফি শাশুড়ি এসে হাজির হলেন।উনার জন্য চা নাস্তা বানাচ্ছি আর ফুফি আমাকে আপাদমস্তক পযবেক্ষন করছেন।
আব্বু বসে চা খাচ্ছেন।ফুফি আব্বুকে বললেন ভাইসাব তোমার ছেলের বউ খুব থুরথরা (এটা সিলেটের গ্রামীণ ভাষা)।দুদিনেই রান্না ঘর নিজের আয়ত্বে নিয়া নিয়েছে।
আব্বু বলেন তো কি হয়েছে?? তোর ভাবির বয়স হইছে আর কত রান্ধিয়া তোমরারে খাওয়াইত।
ফুফি আবার বলে উঠলেন এর লাগি কিতা নিজের হাতের মুঠিত রাখতা না নি?
আব্বু বললেন সবি জাগায় আছে শুধু তোর চিন্তা ঠিক নায়।বাট্টি ফুরি আনছ আর কত আল্লাদ দেখাইবায়।বলে উনি চলে গেলেন আম্মুর কাছে।
আমি শুধু শুনেছি সব কথা। আব্বু এসে বললেন মন খারাপ করিস না মা। আমার ছোট বোন তো।
আমি মন খারাপ করে চলে এলাম রুমে।উনি ঘুম থেকে উঠেই বললেন কে এসেছে রিমা। আমি বললাম আপনার ফুফি এসেছেন।
আমার হাত ধরে বললেন এসব শুনে মন খারাপ কর না।বাহিরের লোক অনেক কিছুই বলে তাই বলে কি সব কথা মনে ধরতে হবে?
যাও আমার নাস্তা রেডি কর আমি আসছি বলে ওয়াশরুমে চলে গেলেন। আমি চা নাস্তা রেডি করে নিলাম। ফুফি আমার শাশুড়ি আম্মুর কান পাকিয়ে দিচ্ছেন কথা বলে বলে।
উনি চেয়ারে বসেই ফুফিকে জিজ্ঞেস করলেন বউ দেখতে এসে কেউ এসব বলে?তোমার এত চিন্তা কিসের শুনি?এসব কথা বলার জন্য আমাদের বাড়িতে না আসলেই চলবে চেঁচিয়ে বললেন।
রাগে চা নিয়ে রুমে চলে এসেছেন উনি। এরকম প্রায় ছোট খাট বিষয় আমি আগেও দেখে এসেছি।আমি খাট বলে অনেকেই অনেক কিছুই বলতে।
সত্যি বলতে আল্লার কৃপা যেখানে থাকে সেখানে কারো কথায় কিছু আসে যায় না।
বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা হতে যাচ্ছে আমি এখনো আমার ফুলের গাছ গুলোর দিকে তাকিয়ে আছি আনমনে। উনার হাতের স্পর্শে পাশে ফিরে তাকালাম, এখনো কি মন খারাপ রিমা?
ফুফি এরকমই মেয়েকে তো আমার কাছে বিয়ে দিতে পারেন নি তাই তোমাকে নিয়ে এত কথা।এমনিতে ওদের সাথে সম্পর্কের দূরত্ব বেড়ে গেছে আগেই।তুমি মোটেই এসব নিয়ে ভাববে না।
সন্ধ্যার পর আমার প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র গুলো উনি গুছিয়ে ফাইলে রাখছেন। আমার 2টা ডায়েরি ও আছে ব্যগে।
উনার হাতে আমার ডায়েরি গুলো দেখে মনে ভয় চলে আসলো। ডায়েরির পাতা উল্টিয়ে চোখ বুলালেন কয়েকটি পাতায়।
আমি উনাকে পাস্তার প্লেট টা সামনে বাড়িয়ে দিলাম। উনি ডায়েরি গুলো রেখে খেতে লাগলেন। আমি এই ফাঁকে সরিয়ে নিলাম ডায়েরি। তবে মনের ভয় প্রকাশ করি নি।
তবে কি আমি আবার ঠকে যাচ্ছি ভাবনা উগ্রে যাচ্ছে উনার মনের কোণে??নিশিত বাতায়ন চন্দ্রীমা চাঁদ বাতাসে দুলছে গ্রিলের পর্দা।বারান্দা সোফায় বসে ঘুম ঘুম চোখে দেখছি উনাকে।
অভিমান ঘিরে আছে বৃত্তের বলয়ে মনের গহীনে।সে কি আমারই আছে? তার হৃদয়ে আমার বিচরণ। আমার চোখ জোড়ে গেল ঘুমের দেশে। কাঁদে মাথা আজও দিয়ে রেখছি একেবল ভরসা নয় ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ,না বলা কিছু কথা কিছু অনুভূতির।
চলবে----
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
কে এন এন লিংকু ০৮/০৮/২০২১good
-
নাসরীন আক্তার রুবি ০৫/০৮/২০২১চমৎকার লিখেছেন
-
স্বপন রোজারিও (মাইকেল) ০৫/০৮/২০২১Nice.