www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

এক মুঠো ভালোবাসার রোদ্দুর পর্ব ১১

#এক মুঠো ভালোবাসার রোদ্দুর
#পর্ব ১১
#তাবেরী ইসলাম

গাড়ির প্রচন্ড হর্ণের শব্দে আমার ঘুম চলে গেল।চোখ পিট পিট করে তাকালাম উনার দিকে। উনি বললেন বাড়িতে এসে গেছ। আমি চারি দিকে চোখ বুলিয়ে নিলাম।

আমি সিটবেলটা খুলে গাড়ি থেকে নেমে পড়লাম। উনি অনেক গুলো ব্যাগ হাতে দাঁড়িয়ে আছেন। ছোট এসে উনাকে নিয়ে ঘরে চলে গেল।

আমি দাঁড়িয়ে বাড়িটা দেখছি কেমন নতুন নতুন লাগছে। চা নাস্তার কিছুপর আম্মু খাবারের জন্য ডাক দিলেন।

আমি উনাকে বললাম আব্বু , মেজো, ছোট অপেক্ষা করছে খেতে আসুন।তাদের খাওয়ার পর আমি আম্মু আমরা বোনেরা খেয়ে নিলাম।

উনার বিশ্রামের জন্য রুমটা ঠিক করে দিলাম। ঘুমিয়ে পড়েছেন হয়তো।

আমি ছোটবোন আর আম্মু সাথে সারা বিকেল গল্প করে কাটিয়ে দিলাম।

এভাবেই ব্যস্ততায় খাওয়া দাওয়া গল্প গুজবে একটা রাত্র পেরিয়ে দিন চলে গেল।

আজ বিকেলে চলে যাব আমরা। নিজের প্রয়োজনীয় জিনিস পত্র বই গুলো ব্যাগে ভরে নিলাম।

আম্মুকে বলে আমার ফুলের ২টা টপ গন্ধরাজ, আরেকটা ফুলের ডাল নিলাম। আমি নামও জানি না সেই ফুল গাছের। সাথে আম্মু নারিকেল,তেজপাতার চারাও দিলেন।

আব্বু আম্মু সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে, সন্ধ্যার দিকে আমার রওনা দিলাম।আমি উনাকে বললাম আজকে যেহেতু সন্ধ্যায় যাচ্ছি তো আমাকে ফুচকা খাওয়াতে হবে।

বাহিরের এসব খাবার খাওয়ার জন্য এতো পাগল কেন?

আমি বললাম ফুচকা খেতে কত ট্রেস্টি আপনি যানেন? উনি ভ্রু কুঁচকে তাকালেন আমার দিকে।

এক ঘন্টার রাস্তা বোরিং তো লাগছেই। তাই গাড়ির রেডিও ছেড়ে দিলাম। উনি তাকিয়ে আছেন আমার দিকে।

আমাকে তো আর ফুসকা খাওয়াবেন না। মন খারাপ করে বলে দিলাম। উনি হাসছেন আমার কথা শুনে।

আমি রাগে বললাম হাসার কি হলো?  তুমি মাঝে মধ্যেই বেশি বুঝ সেটা কি তুমি জান বউ?

আমি উনার কথায় চুপসে গেলাম। মনে মনে বললাম বেটার এমন কি হলো যে এত প্রেম প্রেম ভাব দেখাছেন।

অধেক পথ যাওয়ার পর উনি নিজে থেকেই ফুচকা নিয়ে এসেছেন আমার  জন্য।

আমি খাচ্ছি খুব মজা করে উনি গাড়িতে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন বাহিরে। কেউ খাইয়ে দিলে খেতে পারি আর আমার এখন হাত ভরানোর ইচ্ছে নেই।

আমি বললাম এই রাস্তায় কেউ কাউকে খাইয়ে দেয় কিভাবে? উনি বললেন কেউ তো আর আমাদের চিনবে না। সমস্যা নেই আমি গাড়িতে বসছি বলে মিটমিটিয়ে হাসছেন।

আমি তো ভীষণ লজ্জা পরে গেলাম। কিভাবে খাওয়াব উনাকে?

সাহস করে দিলাম ঝাল যুক্ত ফুচকাটা উনার মুখে। উনি ২থেকে ৩টে  খেয়ে হা হু করে বাহিরে গিয়ে পানি খেলেন।

আমি মনে মনে বললাম বুঝুন এবার ঠেলা।উনি পানির বোতলটা হাতে বলেন এসব কেউ খায় কি ঝাল?

ঝালই মজা আপনার অভ্যাস নেই তাই এমন হচ্ছে।খাওয়া শেষে বললাম কিছু ফুচকা বাড়িতে সবার জন্য নিলে ভালো হয়।

বাসায় এসেই আম্মুকে রান্না ঘরে দেখতে পেলাম।গিয়ে উনাকে সালাম করে জড়িয়ে ধরলাম।

আম্মু বললেন  চলে এসেছে আমার মেয়েটা এক দিনেই ঘর ফাঁকা ফাঁকা  লাগছিল।ফুচকার ভাটি টা উনার হাতে দিয়ে দিলাম।

জার্নি করে আসায় ক্লান্ত লাগছে বেশ। ফেশ হয়ে শুয়ে থাকলাম। বারান্দার জানালা খুলে দিতে হু হু বাতাস বইছে।

প্রকৃতি নিদারুণ সাজ মেঘের ঘনঘটা নিশ্চয়ই বৃষ্টি আসবে।গাছ ফুল পাতা ভিজিয়ে দিবে এই বারান্দা।

উনি এসেই আমার হাত ধরে বারান্দায় নিয়ে গেলেন। স্বাভাবিক ভাবেই কপালে সূক্ষ্ম ভাঁজ চলে আসলো। ইশারায় বুঝালাম কি?

উনি বৃষ্টিতে হাত বাড়িয়ে বলছেন একি হাত দাও তোমার। বৃষ্টির ছোয়ায় শিউরিত হয়ে উঠলাম।  এই ভেজা ক্ষণ কিছু মৌন্যতায় কাটুক। হৃদয়ে ভাসুক কিছু অনূভুতি এই সময় থমকে যাক।

উনি কথা বলেই যাচ্ছেন হাত আমার হাতে বৃষ্টি ছুয়ে।


চলবে---
বিষয়শ্রেণী: গল্প
ব্লগটি ২৯৫ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ০৩/০৮/২০২১

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast