এক মুঠো ভালোবাসার রোদ্দুর পর্ব ৭
#এক মুঠো ভালোবাসার রোদ্দুর
#পর্ব ৭
#তাবেরী ইসলাম
আমি আপনার কাছে কিছু জানতে চাই। সরাসরি জিজ্ঞেস করি মানহা কি আপনার মেয়ে?? উনি রাগে গ্লাস মেজেতে ফেলে আমার হাতের বাহু চেপে ধরে বললেন কে বলেছে তোমাকে। চলে গেলেন বেরিয়ে।
আমিও উনার পিছনে বেরিয়ে আসতে পা বাড়ালাম তাতেই ঘটলো বিপত্তি। মনেই ছিল না মেঝেতে গ্লাসের কাচ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। আআহ বলে উঠতেই দেখলাম পায়ে রক্ত গড়িয়ে পড়ছে।
বরাবরই রক্ত দেখলে মাথাটা ঘুরে আমার। আম্মু বলে চিৎকার দিলাম।
নাতাশা দৌড়ে আসলো। এসেই নাতাশা আমাকে ধরে বিছানায় বসালো। এরপর আম্মুও রুমে এসে চিন্তিত হয়ে বললেন কি হয়েছে পা থেকে রক্ত পড়ছে কেন?
তোমরা কি জগড়া করেছ ওযে বেরিয়ে গেল হঠাৎ করে?আমি আম্মুকে বললাম তেমন কিছু না আম্মু ।
আম্মু মুখে চিন্তার ভাজ ফেলে চলে গেলেন।
নাতাশা আমার পা ড্রেসিং করে দিল। ব্যথায় আমি কুকরে উঠালাম। পায়জামা বদলে আমি প্লাজু পড়ে নিলাম। নাতাশা এক প্লেটে করে খাবার আর ওষুধ দিয়ে বলল ভাবি খাবার খেয়ে ওষুধ খেয়ে নিও।নাহলে কিন্তু ব্যথা বাড়বে।
বেডে বসে ভাবছি, মনের ব্যথা অনেক আবার পায়ের ব্যথায় কি হবে।আমি কেন উনার জন্য না খেয়ে থাকব?সব কিছু জানার অধিকার আমার আছে।
রাত্রে উনি বাড়ি দেরিতেই ফিরলেন। চোখমুখ লাল ছিল উনার । আম্মু জিজ্ঞেস করলেন আজকে কি আকাম করেছ মনে আছে?দেখছ মেয়েটার পা কত খানি কেটে গেছে।উনি রুমে এসে আমার পা চুয়ে দেখলেন ।
উনি সোফায় শুয়ে পড়লেন। ঘুম থেকে উঠে উনাকে
সোফায় দেখলাম। মনে মনে বিরক্ত হলাম। নিচে পা দিতেই আহ! শব্দ করে উঠলাম।
উনি হচকচিয়ে উঠলেন দাড়িয়ে বললেন আমি এগিয়ে দিচ্ছি ওয়াশ লরুমে দিকে। না চাইতেও উনার হাত ধরতে হলো কোনো কথা বললাম না।
এভাবে দুইদিন চলে গেল পা আগের চেয়ে ভালো। সন্ধ্যায় আমি চা নি বারান্দায় বসে আছি উনি আমার সামনে বসা। রিমা আমার কিছু কথা ছিল। আমি মুখ ঘুরিয়ে নিলাম।
উনার চেহারায় স্পষ্ট চিন্তার চাপ দেখলাম। উনি পাশে এসে বসে বললেন তার আগে আমাকে কথা দাও তুমি আমাকে কখনো ছেড়ে যাবে না রিমা।
ছেড়ে যাওয়ার কথা আসছে কেন এখানে? বলে ভ্রু কুচকে তাকালাম উনার দিকে।
আছে হয়তো কিছু আবার কিছুই না। তবে তোমাকে কথা দিতে হবে যে হুটহাট কিছুই কবে না।
হুম কথা দিলাম তবে আপনি আমাকে সব সত্তিটা বলবেন। যদি একটুও মিথ্যে পাই কি করব জানি না??
ঠিক আছে বলছি, অতীত স্মৃতিতে পাড়ি দিলেন। জীনার সাথে আমার প্রথম পরিচয় ফেসবুকে। ধীরে ধীরে আমাদের কথা বাতা বাড়তে লাগল। সাথে সম্পর্কটাও গভীর হলো। একদিন জীনা আমাকে প্রপোজ করল ওকে বিয়ে করতে। আমিও মনে মনে জীনাকে ভালোবাসতে শুরু করেছি এর মধ্যে। তাই জীনার কথায় হ্যাঁ বলে দেই। এভাবেই গেল কিছু দিন।হঠাৎ একদিন বলল তার বিয়ের জন্য নাকি বাড়িতে বর দেখা শুরু হয়েছে। আমি চিন্তায় পড়ে গেলাম। এখন সবে মাত্র আমি লিগ্যাল কার্ড পাব।
এখন বাড়ি আসব কি করে? টাকা পয়সাও হাতে থাকা জরুরি। আমি জীনাকে বুঝিয়ে শুনিয়ে গেলন আরো কিছু দিন। এর একমাস পর আমি লিগ্যাল পাসপোর্ট পেয়ে যাই।
তাড়াতাড়ি করে বাড়ি আসি। আব্বু আম্মু হঠাৎ আমাকে এভাবে আসতে দেখে খুশিই হয়েছিলেন। তারা জানতেন আমি জীনার জন্য এসেছি।
আমাকে বিয়ের কথা বললে,আমার জীনাকে পছন্দ বলে জানাই আম্মুকে।
আম্মু কিছু বলেন নি আব্বু অনেক রেগে গিয়েছিলেন। মেয়ে নিজে পছন্দ করেছি সেটা কেন আগে বলি নি।
উনি এক জায়গায় মেয়ে দেখে পছন্দ হয়েছে বলে এসেছিলেন। আমি উনাকে আম্মুকে দিয়ে জীনার ছবি দেখাই।ওর মর্ডান ছবি দেখেই আব্বু না করে দেন।
আমিও জেদ ধরি আমি জীনাকেই বিয়ে করব।ওদের বাড়িতে প্রস্তাব দিতেই ওরা রাজি হয়ে যায়।
আব্বু শেষে মানসম্মান বাঁচাতে কোনো রকম বিয়েটা মেনে নিলেন।
প্রথমে আমাদের সংসার ছিল ভালোবাসা কানায় কানায়।ধীরে ধীরে সব কিছু ঠিক হতে থাকল।
বিয়ের ২মাস পরে আমি আবার চলে আসি কানাডায়।
ও আমাদের বাড়িতে খুব কমই থাকত। বাবার বাড়িতেই বেশিরভাগ সময় থাকত। আম্মু আব্বুর খুঁজ তেমন নিত না।
আমি ভাবতাম হয়তো সময় দিতে পারে তাই হবে।আম্মু আমাকে প্রায় বলতেন জোহান জীনা তো আমাদের সাথে ফোনে কথা বলে না।
তোরা কি রাগ অভিমান করেছিস কিছু নিয়ে। আমি আম্মুকে বলে তুমি খুঁজ নিলেই তো হয়।ছেলের বউ যখন মন চাইবে কথা বলবে।
আমাদের কোনো রাগ অভিমান হয় নি আম্মু।হয়তো পড়ার চাপে কম কথা বলে।
আমি ওকে বলব তোমার সাথে কথা বলে।
চলবে --
#পর্ব ৭
#তাবেরী ইসলাম
আমি আপনার কাছে কিছু জানতে চাই। সরাসরি জিজ্ঞেস করি মানহা কি আপনার মেয়ে?? উনি রাগে গ্লাস মেজেতে ফেলে আমার হাতের বাহু চেপে ধরে বললেন কে বলেছে তোমাকে। চলে গেলেন বেরিয়ে।
আমিও উনার পিছনে বেরিয়ে আসতে পা বাড়ালাম তাতেই ঘটলো বিপত্তি। মনেই ছিল না মেঝেতে গ্লাসের কাচ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। আআহ বলে উঠতেই দেখলাম পায়ে রক্ত গড়িয়ে পড়ছে।
বরাবরই রক্ত দেখলে মাথাটা ঘুরে আমার। আম্মু বলে চিৎকার দিলাম।
নাতাশা দৌড়ে আসলো। এসেই নাতাশা আমাকে ধরে বিছানায় বসালো। এরপর আম্মুও রুমে এসে চিন্তিত হয়ে বললেন কি হয়েছে পা থেকে রক্ত পড়ছে কেন?
তোমরা কি জগড়া করেছ ওযে বেরিয়ে গেল হঠাৎ করে?আমি আম্মুকে বললাম তেমন কিছু না আম্মু ।
আম্মু মুখে চিন্তার ভাজ ফেলে চলে গেলেন।
নাতাশা আমার পা ড্রেসিং করে দিল। ব্যথায় আমি কুকরে উঠালাম। পায়জামা বদলে আমি প্লাজু পড়ে নিলাম। নাতাশা এক প্লেটে করে খাবার আর ওষুধ দিয়ে বলল ভাবি খাবার খেয়ে ওষুধ খেয়ে নিও।নাহলে কিন্তু ব্যথা বাড়বে।
বেডে বসে ভাবছি, মনের ব্যথা অনেক আবার পায়ের ব্যথায় কি হবে।আমি কেন উনার জন্য না খেয়ে থাকব?সব কিছু জানার অধিকার আমার আছে।
রাত্রে উনি বাড়ি দেরিতেই ফিরলেন। চোখমুখ লাল ছিল উনার । আম্মু জিজ্ঞেস করলেন আজকে কি আকাম করেছ মনে আছে?দেখছ মেয়েটার পা কত খানি কেটে গেছে।উনি রুমে এসে আমার পা চুয়ে দেখলেন ।
উনি সোফায় শুয়ে পড়লেন। ঘুম থেকে উঠে উনাকে
সোফায় দেখলাম। মনে মনে বিরক্ত হলাম। নিচে পা দিতেই আহ! শব্দ করে উঠলাম।
উনি হচকচিয়ে উঠলেন দাড়িয়ে বললেন আমি এগিয়ে দিচ্ছি ওয়াশ লরুমে দিকে। না চাইতেও উনার হাত ধরতে হলো কোনো কথা বললাম না।
এভাবে দুইদিন চলে গেল পা আগের চেয়ে ভালো। সন্ধ্যায় আমি চা নি বারান্দায় বসে আছি উনি আমার সামনে বসা। রিমা আমার কিছু কথা ছিল। আমি মুখ ঘুরিয়ে নিলাম।
উনার চেহারায় স্পষ্ট চিন্তার চাপ দেখলাম। উনি পাশে এসে বসে বললেন তার আগে আমাকে কথা দাও তুমি আমাকে কখনো ছেড়ে যাবে না রিমা।
ছেড়ে যাওয়ার কথা আসছে কেন এখানে? বলে ভ্রু কুচকে তাকালাম উনার দিকে।
আছে হয়তো কিছু আবার কিছুই না। তবে তোমাকে কথা দিতে হবে যে হুটহাট কিছুই কবে না।
হুম কথা দিলাম তবে আপনি আমাকে সব সত্তিটা বলবেন। যদি একটুও মিথ্যে পাই কি করব জানি না??
ঠিক আছে বলছি, অতীত স্মৃতিতে পাড়ি দিলেন। জীনার সাথে আমার প্রথম পরিচয় ফেসবুকে। ধীরে ধীরে আমাদের কথা বাতা বাড়তে লাগল। সাথে সম্পর্কটাও গভীর হলো। একদিন জীনা আমাকে প্রপোজ করল ওকে বিয়ে করতে। আমিও মনে মনে জীনাকে ভালোবাসতে শুরু করেছি এর মধ্যে। তাই জীনার কথায় হ্যাঁ বলে দেই। এভাবেই গেল কিছু দিন।হঠাৎ একদিন বলল তার বিয়ের জন্য নাকি বাড়িতে বর দেখা শুরু হয়েছে। আমি চিন্তায় পড়ে গেলাম। এখন সবে মাত্র আমি লিগ্যাল কার্ড পাব।
এখন বাড়ি আসব কি করে? টাকা পয়সাও হাতে থাকা জরুরি। আমি জীনাকে বুঝিয়ে শুনিয়ে গেলন আরো কিছু দিন। এর একমাস পর আমি লিগ্যাল পাসপোর্ট পেয়ে যাই।
তাড়াতাড়ি করে বাড়ি আসি। আব্বু আম্মু হঠাৎ আমাকে এভাবে আসতে দেখে খুশিই হয়েছিলেন। তারা জানতেন আমি জীনার জন্য এসেছি।
আমাকে বিয়ের কথা বললে,আমার জীনাকে পছন্দ বলে জানাই আম্মুকে।
আম্মু কিছু বলেন নি আব্বু অনেক রেগে গিয়েছিলেন। মেয়ে নিজে পছন্দ করেছি সেটা কেন আগে বলি নি।
উনি এক জায়গায় মেয়ে দেখে পছন্দ হয়েছে বলে এসেছিলেন। আমি উনাকে আম্মুকে দিয়ে জীনার ছবি দেখাই।ওর মর্ডান ছবি দেখেই আব্বু না করে দেন।
আমিও জেদ ধরি আমি জীনাকেই বিয়ে করব।ওদের বাড়িতে প্রস্তাব দিতেই ওরা রাজি হয়ে যায়।
আব্বু শেষে মানসম্মান বাঁচাতে কোনো রকম বিয়েটা মেনে নিলেন।
প্রথমে আমাদের সংসার ছিল ভালোবাসা কানায় কানায়।ধীরে ধীরে সব কিছু ঠিক হতে থাকল।
বিয়ের ২মাস পরে আমি আবার চলে আসি কানাডায়।
ও আমাদের বাড়িতে খুব কমই থাকত। বাবার বাড়িতেই বেশিরভাগ সময় থাকত। আম্মু আব্বুর খুঁজ তেমন নিত না।
আমি ভাবতাম হয়তো সময় দিতে পারে তাই হবে।আম্মু আমাকে প্রায় বলতেন জোহান জীনা তো আমাদের সাথে ফোনে কথা বলে না।
তোরা কি রাগ অভিমান করেছিস কিছু নিয়ে। আমি আম্মুকে বলে তুমি খুঁজ নিলেই তো হয়।ছেলের বউ যখন মন চাইবে কথা বলবে।
আমাদের কোনো রাগ অভিমান হয় নি আম্মু।হয়তো পড়ার চাপে কম কথা বলে।
আমি ওকে বলব তোমার সাথে কথা বলে।
চলবে --
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
আলমগীর সরকার লিটন ২৮/০৭/২০২১চমৎকার অনেক অভিনন্দন ও শুভ কামনা
-
ফয়জুল মহী ২৮/০৭/২০২১Valo laglo