এক মুঠো ভালোবাসার রোদ্দুর পর্ব ৫
#এক মুঠো ভালোবাসার রোদ্দুর
#পর্ব ৫
#তাবেরী ইসলাম
উঠে চলে গেলাম ওয়াশরুমে। রুম থেকে বেরিয়ে পা বাড়ালাম আম্মুর রুমে। মাঝের বারান্দায় এসেই শুনলাম উনার স্বর।
আম্মুকে বলছেন এভাবে নিজের মেয়ে দুরে রাখব কি করে?? বল আম্মু!
কত দিন আর এভাবে লুকিয়ে রাখবে বলেন?? রিমা তো এক দিন না এক দিন সত্য জানবে।
নাতাশা বলে উঠল মানহা আমার কাছেই থাকুক সমস্যা কি?উনি দমক দিয়ে নাতাশাকে বলেন আমি এখনো এমন নই যে নিজের মেয়ে মানুষ করতে পাব না।
আর আমি বেঁচে আছি। তোমার সংসার আছে নাতাশা সারাজীবন এভাবে যাবে না। একটু বুঝার চেষ্টা কর।
আমার পা থমকে গেল ওখানেই।মনের মধ্যে হাজার প্রশ্ন উঁকি দিয়ে উঠলো।
তাহলে কি ভাবির সেদিনের কথা গুলো সত্য ছিল?? চলে এলাম রুমে। শুয়ে পড়লাম মানহার পাশে চুপচাপ। আজ নিজেকে খুব একা মনে হচ্ছে।
চাওয়া পাওয়ার হিসেব কি এভাবেই ছিলো?
দু'ফুটা অশ্রু গড়িয়ে পড়ল চোখের কোন থেকে।
চোখ ভুজে পাড়ি জমালাম ঘুমের দেশে।
ঘুম থেকে উঠে দেখলাম উনি সোফায় বসে আছেন কফি হাতে। বিধ্বস্ত চেহারা চোখ গুলো ফুলে লাল হয়ে আছে।
আমি উঠেই বললাম আজকে এত সকাল ঘুম থেকে উঠলেন তো আমাকে ডেকে দিতে পারতেন।
আপনি ঠিক আছেন তো?
উনি মলিন হেসে বললেন আমি ঠিক আছি রিমা।মানহার অবস্থা কেমন এখন।
ও আগের চেয়ে ভালো আছে।আপনি চিন্তা করবেন ঠিক হয়ে যাবে সব।
উনি এসে মেয়ের পাশে বসে কুটিয়ে কুটিয়ে দেখতে লাগলেন। আমি ফ্রেশ হয়ে এসে নাস্তা করে নিলাম।
এ কদিনে মানহা পুরুই সুস্থ হয়ে গেছে।বিশেষ করে জোহানের যত্ন গুলোই ছিল আলাদা।
বিষন্ন মনে দাঁড়িয়ে আছি চাদের ফুল গাছের পাশে।
আর ভাবছি অনেক কিছুই অনিচ্ছা সত্ত্বেও মেনে নিতে হবে।
বিয়ের পর একটা মেয়ের শশুর বাড়িই সব আমার বেলায় ও তাই।কিন্তু খুব বেড়া জ্বালে আবদ্ধ মনে হচ্ছে।
উনি দরজায় এসে চেচিয়ে বলে উঠলেন রিমা এখানে একা একা দাঁড়িয়ে আছ কেন?
আমি তোমাকে খুঁজে মরছি আর তুমি এখানে। আমার দিকে চেয়ে বললেন তোমার কি মন খারাপ?
আমি হাসার চেষ্টা করে বললাম না তো এমনি দাঁড়িয়ে ছিলাম ভালো লাগছিল তাই।
বাজারে যাচ্ছি তোমার কিছু লাগলে বলো। আমার জন্য কত গুলো কিটকাট আর বরই আচার নিয়ে আসবেন।
উনি বললেন একটু পর মাগরিব হয়ে যাবে চলে আস বলে আমার হাত ধরে নিয়ে আসলেন।
মানহা নাতাশার কোলেই আছে একটু আরটু কথা শিখছে। আমি টিভি অন করতেই ও টিভি দেখছে আর হাসছে।
বাহঃ পিচ্ছি দেখি টিভিও দেখে বলে কোলে আনলাম।
আমার সাথে মানহার একটা ভাব হয়ে গেছে।
যাই হোক বাচ্চা মেয়ে তার প্রতি কোনো অভিযোগ নেই।কিন্তু জোহানের প্রতি অভিযোগ, অভিমান অনেক জমে আছে।
আমি তার মুখ থেকেই শুনতে চাই সব কিছু। কেন এত লুকোচুরি??
এভাবে কেটে গেল আরো এক সপ্তাহ। নিজেকে ভারি ভারি মনে হয়। মনের কথা গুলো কাউকে না হউক আপুকে বলা দরকার।
সন্ধ্যার উনি এসে বললেন রিমা বাসায় আসতে দেরি হবে তুমি খেয়ে নিও অপেক্ষা কর না।
আমি সিদ্দিকের বাসায় যাচ্ছি খেয়ে দেয়ে আসব ওকে
বলে উনি চলে গেলেন।
খাওয়া দাওয়া শেষে রুমের দরজা না লাফিয়ে একটু পাক করে রেখে দিলাম। এতে দেখা যাবে রুমে কেউ আসছে কিনা।
আমি রাঙ্গা আপুকে ট্রেক্স দিলাম কিছু দরকার ছিলো কথা বলা যাবে এখন।
আর একটা কথা উনার আগে বিয়ে ছিলো একটা বাচ্চাও আছে।
আমি বেশ কিছু বলব না শুধু তোমার কাছ থেকে পর্রামশ চাই।
আপু সাথে সাথেই কল দিলেন। ভালো মন্দ কথার পর আসলাম আসল কথায়।
আপু জিজ্ঞেস করলেন,তুই জানলি কি করে জোহানের বাচ্চা আছে?
আমি বললাম সেদিন রাত্রে আমি নিজের কানে শুনেছি মানহা উনার মেয়ে। এমন কি সেদিন নাশাতাকেও নিজের মেয়ে না বলে দমক দিয়েছেন।
এটা যদি সত্য হয় তোর শাশুড়ি খুব চালাক রিমা।আর হ্যাঁ ওদের ব্যবহার কেমন তোর প্রতি।
আপু সব কিছুই ঠিক আছে খাওয়া দাওয়া, কাপড় চোপড়া, সব কিছুতেই আমি মানুষিক ও শারীরিক শান্তিতে আছি আপু।
তাহলে এত ভাবিস না রিমা আমি তো আছি আপু সব ঠিক করে দিব।কিন্তু বাড়িতে আম্মু আব্বু জানলে বিষয়টা কিভাবে নিবে?
এসব কিছু এখন জানানো প্রয়োজন নেই।আর আমি পরে সময় করে কথা বলছি, বলে আপু ফোন রেখে দিলেন।
ঘুমের মধ্যে অনুভব হলো একটা হাত আমায় জড়িয়ে আছে। সকালের স্নিগ্ধ আলোর বিচরণ হবে খানিক পরে।
ফজরের নামাজের জন্য ওযু করে আসলাম। এসে উনাকে ডেকে দিলাম নামাজের জন্য।
নামাজ শেষে আমি বারান্দার দিকের জানালার দুটো পাট খুলে দিলাম হালকা বাতাস বইছে বাহিরে।
উনি বাহিরে হাটতে গেছেন। আমি শুয়ে পড়লাম চোখ লেগে গেল আবার।
সূর্যের হলদে আভায় চিকচিক করছে আর পাখির কিচিরমিচির ভেসে উঠছে বাতাসে।
মনে হলো কারো হাতের ছায়া পড়ছে আমার চোখে। আজও উনি বারান্দায় বসে চায়ের কাপে চুমুক দিচ্ছেন।
জীবন কত সুন্দর কিছু জিনিস শুধু জঠিল করে।মুগ্ধতা ভরা মুখ। ঘুম ঘোর চোখে বারান্দা থেকে চলে গেলাম ওয়াশরুমে।
আজ সন্ধ্যায় উনার ফ্রেন্ডের বোনের হলুদে যাচ্ছি আমরা। নাতাশাও যাবে কিন্তু কি পড়ব বুঝতে পারছি না।
জলপাই রঙ্গের ড্রেস হাতে ধরিয়ে বললেন এটা পড়বে আর বাকি গুলা গুছিয়ে রাখ আলমারিতে।
সন্ধ্যায় আমরা চলে গেলাম ওখানে নাতাশার জন্য খারাপ লাগছে ও আসে নি।
ওখানে যেতেই উনার ফ্রেন্ড এসে ভাবি এসেছেন বলে ঘরে নিয়ে গেল।
চলবে--
#পর্ব ৫
#তাবেরী ইসলাম
উঠে চলে গেলাম ওয়াশরুমে। রুম থেকে বেরিয়ে পা বাড়ালাম আম্মুর রুমে। মাঝের বারান্দায় এসেই শুনলাম উনার স্বর।
আম্মুকে বলছেন এভাবে নিজের মেয়ে দুরে রাখব কি করে?? বল আম্মু!
কত দিন আর এভাবে লুকিয়ে রাখবে বলেন?? রিমা তো এক দিন না এক দিন সত্য জানবে।
নাতাশা বলে উঠল মানহা আমার কাছেই থাকুক সমস্যা কি?উনি দমক দিয়ে নাতাশাকে বলেন আমি এখনো এমন নই যে নিজের মেয়ে মানুষ করতে পাব না।
আর আমি বেঁচে আছি। তোমার সংসার আছে নাতাশা সারাজীবন এভাবে যাবে না। একটু বুঝার চেষ্টা কর।
আমার পা থমকে গেল ওখানেই।মনের মধ্যে হাজার প্রশ্ন উঁকি দিয়ে উঠলো।
তাহলে কি ভাবির সেদিনের কথা গুলো সত্য ছিল?? চলে এলাম রুমে। শুয়ে পড়লাম মানহার পাশে চুপচাপ। আজ নিজেকে খুব একা মনে হচ্ছে।
চাওয়া পাওয়ার হিসেব কি এভাবেই ছিলো?
দু'ফুটা অশ্রু গড়িয়ে পড়ল চোখের কোন থেকে।
চোখ ভুজে পাড়ি জমালাম ঘুমের দেশে।
ঘুম থেকে উঠে দেখলাম উনি সোফায় বসে আছেন কফি হাতে। বিধ্বস্ত চেহারা চোখ গুলো ফুলে লাল হয়ে আছে।
আমি উঠেই বললাম আজকে এত সকাল ঘুম থেকে উঠলেন তো আমাকে ডেকে দিতে পারতেন।
আপনি ঠিক আছেন তো?
উনি মলিন হেসে বললেন আমি ঠিক আছি রিমা।মানহার অবস্থা কেমন এখন।
ও আগের চেয়ে ভালো আছে।আপনি চিন্তা করবেন ঠিক হয়ে যাবে সব।
উনি এসে মেয়ের পাশে বসে কুটিয়ে কুটিয়ে দেখতে লাগলেন। আমি ফ্রেশ হয়ে এসে নাস্তা করে নিলাম।
এ কদিনে মানহা পুরুই সুস্থ হয়ে গেছে।বিশেষ করে জোহানের যত্ন গুলোই ছিল আলাদা।
বিষন্ন মনে দাঁড়িয়ে আছি চাদের ফুল গাছের পাশে।
আর ভাবছি অনেক কিছুই অনিচ্ছা সত্ত্বেও মেনে নিতে হবে।
বিয়ের পর একটা মেয়ের শশুর বাড়িই সব আমার বেলায় ও তাই।কিন্তু খুব বেড়া জ্বালে আবদ্ধ মনে হচ্ছে।
উনি দরজায় এসে চেচিয়ে বলে উঠলেন রিমা এখানে একা একা দাঁড়িয়ে আছ কেন?
আমি তোমাকে খুঁজে মরছি আর তুমি এখানে। আমার দিকে চেয়ে বললেন তোমার কি মন খারাপ?
আমি হাসার চেষ্টা করে বললাম না তো এমনি দাঁড়িয়ে ছিলাম ভালো লাগছিল তাই।
বাজারে যাচ্ছি তোমার কিছু লাগলে বলো। আমার জন্য কত গুলো কিটকাট আর বরই আচার নিয়ে আসবেন।
উনি বললেন একটু পর মাগরিব হয়ে যাবে চলে আস বলে আমার হাত ধরে নিয়ে আসলেন।
মানহা নাতাশার কোলেই আছে একটু আরটু কথা শিখছে। আমি টিভি অন করতেই ও টিভি দেখছে আর হাসছে।
বাহঃ পিচ্ছি দেখি টিভিও দেখে বলে কোলে আনলাম।
আমার সাথে মানহার একটা ভাব হয়ে গেছে।
যাই হোক বাচ্চা মেয়ে তার প্রতি কোনো অভিযোগ নেই।কিন্তু জোহানের প্রতি অভিযোগ, অভিমান অনেক জমে আছে।
আমি তার মুখ থেকেই শুনতে চাই সব কিছু। কেন এত লুকোচুরি??
এভাবে কেটে গেল আরো এক সপ্তাহ। নিজেকে ভারি ভারি মনে হয়। মনের কথা গুলো কাউকে না হউক আপুকে বলা দরকার।
সন্ধ্যার উনি এসে বললেন রিমা বাসায় আসতে দেরি হবে তুমি খেয়ে নিও অপেক্ষা কর না।
আমি সিদ্দিকের বাসায় যাচ্ছি খেয়ে দেয়ে আসব ওকে
বলে উনি চলে গেলেন।
খাওয়া দাওয়া শেষে রুমের দরজা না লাফিয়ে একটু পাক করে রেখে দিলাম। এতে দেখা যাবে রুমে কেউ আসছে কিনা।
আমি রাঙ্গা আপুকে ট্রেক্স দিলাম কিছু দরকার ছিলো কথা বলা যাবে এখন।
আর একটা কথা উনার আগে বিয়ে ছিলো একটা বাচ্চাও আছে।
আমি বেশ কিছু বলব না শুধু তোমার কাছ থেকে পর্রামশ চাই।
আপু সাথে সাথেই কল দিলেন। ভালো মন্দ কথার পর আসলাম আসল কথায়।
আপু জিজ্ঞেস করলেন,তুই জানলি কি করে জোহানের বাচ্চা আছে?
আমি বললাম সেদিন রাত্রে আমি নিজের কানে শুনেছি মানহা উনার মেয়ে। এমন কি সেদিন নাশাতাকেও নিজের মেয়ে না বলে দমক দিয়েছেন।
এটা যদি সত্য হয় তোর শাশুড়ি খুব চালাক রিমা।আর হ্যাঁ ওদের ব্যবহার কেমন তোর প্রতি।
আপু সব কিছুই ঠিক আছে খাওয়া দাওয়া, কাপড় চোপড়া, সব কিছুতেই আমি মানুষিক ও শারীরিক শান্তিতে আছি আপু।
তাহলে এত ভাবিস না রিমা আমি তো আছি আপু সব ঠিক করে দিব।কিন্তু বাড়িতে আম্মু আব্বু জানলে বিষয়টা কিভাবে নিবে?
এসব কিছু এখন জানানো প্রয়োজন নেই।আর আমি পরে সময় করে কথা বলছি, বলে আপু ফোন রেখে দিলেন।
ঘুমের মধ্যে অনুভব হলো একটা হাত আমায় জড়িয়ে আছে। সকালের স্নিগ্ধ আলোর বিচরণ হবে খানিক পরে।
ফজরের নামাজের জন্য ওযু করে আসলাম। এসে উনাকে ডেকে দিলাম নামাজের জন্য।
নামাজ শেষে আমি বারান্দার দিকের জানালার দুটো পাট খুলে দিলাম হালকা বাতাস বইছে বাহিরে।
উনি বাহিরে হাটতে গেছেন। আমি শুয়ে পড়লাম চোখ লেগে গেল আবার।
সূর্যের হলদে আভায় চিকচিক করছে আর পাখির কিচিরমিচির ভেসে উঠছে বাতাসে।
মনে হলো কারো হাতের ছায়া পড়ছে আমার চোখে। আজও উনি বারান্দায় বসে চায়ের কাপে চুমুক দিচ্ছেন।
জীবন কত সুন্দর কিছু জিনিস শুধু জঠিল করে।মুগ্ধতা ভরা মুখ। ঘুম ঘোর চোখে বারান্দা থেকে চলে গেলাম ওয়াশরুমে।
আজ সন্ধ্যায় উনার ফ্রেন্ডের বোনের হলুদে যাচ্ছি আমরা। নাতাশাও যাবে কিন্তু কি পড়ব বুঝতে পারছি না।
জলপাই রঙ্গের ড্রেস হাতে ধরিয়ে বললেন এটা পড়বে আর বাকি গুলা গুছিয়ে রাখ আলমারিতে।
সন্ধ্যায় আমরা চলে গেলাম ওখানে নাতাশার জন্য খারাপ লাগছে ও আসে নি।
ওখানে যেতেই উনার ফ্রেন্ড এসে ভাবি এসেছেন বলে ঘরে নিয়ে গেল।
চলবে--
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
নাসরীন আক্তার রুবি ২৫/০৭/২০২১চমৎকার
-
ভাস্কর অনির্বাণ ২৪/০৭/২০২১একমুঠো ভাললাগা হে প্রিয় কবি
-
রেদওয়ান আহমেদ বর্ণ ২৪/০৭/২০২১ভালো লাগলো প্রিয় মানুষ
-
ভাস্কর অনির্বাণ ২৪/০৭/২০২১ভালো লাগা রেখে গেলাম কবি।
-
স্বপন রোজারিও (মাইকেল) ২৪/০৭/২০২১দারুণ হয়েছে।
ধন্যবাদ সুন্দরতম লেখার জন্য।
শুভেচ্ছা অবিরাম।