www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

এক মুঠো ভালোবাসার রোদ্দুর পর্ব ৪

#এক মুঠো ভালোবাসার রোদ্দুর
#পর্ব ৪
#তাবেরী ইসলাম

তবে কাউকেই কিছুই বলা হয়ে উঠে নি।
রাতে ঘুম আসছিল না ভেবে ভেবে।
চোখ ভুজে ছিলাম কখন ঘুমিয়েছি  মনে নেই।

ঘুম ভেঙ্গে পাশে তাকিয়ে দেখি উনি গুটিশুটি হয়ে ঘুমিয়ে আছে। কাথাটা উনার গায়ে দিয়ে উঠে পরলাম।

শাশুড়ী আম্মু আমাকে দেখেই ডাক দিলেন আমাকে এ দিকে আস তো বড় বৌ।চলে গেলাম উনার কাছে উনি কিছু নাস্তা আর কফি দিয়ে বললেন রুমে যাও নিয়ে।

উনার কথায় নাস্তা নিয়ে রুমে এলাম। উনাকে ডাকব কি করে?

এই যে শুনছেন বলে ডেকেই যাচ্ছি। উনি উঠার নামই নেই, দিলাম পানি চিটা উনি চোখ পিটপিট করে রাগি ভাবে তাকালেন আমার দিকে।

আমি বললাম আম্মু নাস্তা দিয়ে পাঠিয়েছেন উঠে ফ্রেস হয়ে আসুন। তো এভাবে কেউ ডাকে!

আমি কি করব? কখন থেকে ডাকছি আপনি উঠছিলেন না,তাই আর কি নিচু স্বরে বললাম সরি।

আমি খাচ্ছি আর উনি চেয়ে আছেন। ভ্রু কুঁচকে বললাম এভাবে চেয়ে আছেন কেন? আমি কি পেঠুক যে এভাবে চেয়ে দেখতে হবে?

হা হা হা.......... একা একা রেখে খেলে যে কেউ বলবে তুমি পেঠুক। এটা শুনে মন খারাপ হয়ে গেল আমার।

উনি বললেন হয়েছে এবার মন খারাপ কর না তো রিমা। আমি মজা করছিলাম তোমার সাথে। নাকি মজা করাও মানা আছে তোমার সাথে।

একটু পর উনি বাহিরে গেলেন। আজকে আমি রান্না করব আম্মুকে বলে নিয়েছি।কি রাঁধব ভেবে পাচ্ছি না।

নাতাশাকে  রান্না ঘরে নিয়ে এলাম। বললাম একটু বলে দাও সবাই কি কি খেতে পছন্দ করে।ও বলল মাছ আর  মুরগীর মাংস রান্না করে নাও।

ফ্রিজ থেকে ইলিশ মাছ আর মুরগী ভের করে রান্না শুরু করলাম। ইলিশ ভেঁজে টমেটোর দিয়ে ভুনা করেছি। আর মুরগী দিয়ে রোস্ট করেছি।

কাজের খালা খুব মিশুক এক দিনেই উনার সব হিস্ট্রি বলে দিলেন। আমি হাসছি আর উনার কথা শুনছি।

রান্না শেষ করে রুমে এসে ফ্রেস হয়ে নিলাম।চুল থেকে টপটপ পানি পড়ছে আমি টাওয়াল মাথায় পেছিয়ে বসে আছি বারান্দায়।

উনি রুমে এসে বললেন রিমা আজকে তুমি রেঁধেছ খালা বললেন। জ্বী আমি রেঁধেছি ফ্রেস হয়ে আসুন আপনি।

খাবার রেডি করে টেবিলে রাখলাম। আম্মু সবাইকে ডেকে খাবার টেবিলে নিয়ে আসেন।

আমি তো ভয়ে আছি প্রথম রান্না কেমন হবে। আব্বু খেয়েই হাসি দিলেন। আম্মু তো দারুণ রান্না জানো আমার দিকে তাকিয়ে। আমি ও হাসলাম সবাই খেয়ে প্রসংশা করলেন। উনি কিছুই বললেন না।

রুমে এসে জিজ্ঞেস করলাম আপনার রান্না পছন্দ হয় নি। হয়েছে তো । তাহলে খেয়ে কিছুই বললেন না যে।

সবাই বলেছে তো আমি আর কি বলব?বিরক্তি নিয়ে চলে আসছিলাম উনি হাত ধরে আটকিয়ে বললেন কি হয়েছে?

বউ দেখি রাগও করতে জানে। মাথা নিচু করে কানের কাছে মুখ নিয়ে বলে উঠলেন খুব ট্রেস্টি ছিল রান্না।

খুশি হয়ে গেল মন উনার কথায়। তো নতুন বউ এর রান্নার জন্য কি চাই নাজরানা বলতো রিমা।

আমি তো লজ্জায় নুয়ে যাচ্ছি। এখান থেকে পালাতে পারলে হতো।

আমাকে বসিয়ে উনি আলমিরা খুললেন। উনি একটা জুয়েলারি বক্স হাতে ধরিয়ে দিলেন। এগুলো তোমার জন্য।

বক্স খুলে একটা সাদা পাথরের আংটি দেখলাম ভারি সুন্দর। এটা দেখে যে না হাতে নিব উনি নিয়ে গেলেন চু মেরে আংটি টা।

আমি বললাম কি হলো এটা নিয়ে নিলেন কেন? উনি রাগে গজগজ করে নিয়ে ছুড়ে পিছনের পুকুরে ফেলে দিলেন।

আমি শুধু থাকিয়ে দেখলাম বারান্দায় থেকে। এমন কি আছে আংটির মধ্যে আমি উনাকে  জিজ্ঞেস করেই ফেললাম।

 আংটি তো আরও আছে বক্সে একটা না হলে এমন কিছু না। আমি আর কথা বাড়াই নি উনি রেস্ট নিচ্ছেন।আর আমি টিভি দেখছি।

ইন্ডিয়ান সিরিয়ালের একটা প্রভাব রয়েছে সবার মাঝে।কখন সন্ধ্যা হয়েছে বুঝি নি।

উনি এক ঘুম দিয়ে দিলেন এর মধ্যে। উঠেই বললেন এখনো দেখছ টিভি নামায যে পড়তে হবে মনে আছে।
আর ওই বউ শাশুড়ির ঝগড়া যেন আমার ঘরে না হয়।

আমি ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে ছিলাম উনার দিকে। রিমুট টা দিয়ে টিভি অফ করে দিলেন।

এভাবে চলে গেল দু'মাস বিকেলে হঠ্যাৎ মানহার কান্নার শব্দ শুনে  উনি দৌড়ে চলে গেলেন নাতাশার রুমে। উনার ভয়ে নাতাশার ছেলে সোহান দৌড়ে চলে গেল তার নানার ঘরে।

খেলতে গিয়ে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছে মানহাকে সোহান। ওর মাথা আর ঠোঁট একটু কেটে গেছে।

জোহানের চোখে অশ্রুর বাঁধ ভেঙ্গেছে।উনি নাতাশার দিকে রাগান্বিত হয়ে বললেন কে তোকে বলেছে খেলতে দিতে সোহানের সাথে?খেলায় রাখিস নি কেন??

নাতাশা মাথা নিচু করে বলল আমি আসলে ভাবি নি ও পড়ে যাবে ??

নিজের মেয়ে হলে তো ভাবতে তাই না। উনার এই কথা শুনে নাতাশা হাউমাউ করে কেদে উঠলো।

আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে শুনছি কথা গুলো!

উনি তাড়াতাড়ি ডাক্তার ডেকে আনলেন। ডাক্তার মাথা ব্যন্ডেস আর ঠোঁটের কাটায় ওষুধ লাগিয়ে দিল।

মেয়েটা কেঁদে নিরবে শুয়ে আছে।

বাচ্চা মেয়েটার চোখ মুখ লাল হয়ে আছে কান্নার ফলে। আমি তাকিয়ে আছি তার দিকে কি মায়া ভরা মুখ।

খাওয়া দাওয়া শেষে উনি রুমে এসে বললেন মানহা আমাদের কাছে থাকবে।

আমি বললাম কেন ওর আম্মুর কাছে থাকবে না??
উনি রাগে বলেন এখানে থাকলে প্রব্লেম কি শুনি??
আমি আর কিছুই বলি নি।
বলে গেলেন আমি আম্মু আব্বুর রুম থেকে আছি। তোমার ঘুম আসলে ঘুমিয়ে যাও মানহার পাশে।

আমি ঘুমিয়ে পড়েছিলাম একটু পর ঘুম ভাঙ্গলে খেয়াল করি উনি রুমে এখনো আসেন নি।
বিষয়শ্রেণী: গল্প
ব্লগটি ২৮০ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ২২/০৭/২০২১

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

  • ভাস্কর অনির্বাণ ২৩/০৭/২০২১
    শুভকামনা কবি
  • ফয়জুল মহী ২৩/০৭/২০২১
    পড়ে খুব ভালো লাগলো।
  • ভালো।
 
Quantcast