www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

এক মুঠো ভালোবাসার রোদ্দুর পর্ব ২

#এক মুঠো ভালোবাসার রোদ্দুর
#পর্ব ২
#--তাবেরী ইসলাম

বললেন এতক্ষণ ঠিক ছিল এখন কি হল?

আমি কান্না করেই যাচ্ছি হেঁচকি উঠে গেছে থামছেই না সেই সাথে কিছুটা কাঁপছি।

আমার ননদ পানির বোতামটা উনার হাতে দিয়ে আমাকে দিতে ইশারা করল।
উনি পানি দিয়ে বললেন রিমা খাও পানিটা ঠিক হয়ে যাবে রিলাক্স। পানি খেলাম সাথে একটা ওরেঞ্জ জুস দিয়ে দিলেন। এটা খাও ভালো লাগবে।

আমার কান্নাটা আবার বেড়ে গেল,উনি মুখ কানের কাছে এনে ফিসফিস করে বললেন এত কাঁদবে না তোমার মেকাপ নষ্ট হয়ে যাবে তো আর পেত্নি লাগবে তোমাকে দেখতে।

আমি উনার দিকে রাগান্বিত ভাবে তাকালাম পাশ থেকে ননদ বলে উঠল ভাবি এত কাঁদবে না তো আর দেখ আমার মেয়েটা কিভাবে তাকিয়ে আছে।
আমি বাচ্চাটার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলাম।

এর মধ্যে উনার বাড়িতে এসে পৌছলাম। আমার শাশুড়ী আমাদের বরন করার জন্য দাঁড়িয়ে আছেন।
উনি আমাদের বরন করে ঘরে ভেতর নিয়ে বসালেন।
আত্নীয় স্বজন বাড়িতে বেশ নেই হইচই একটু কম।
ভালোই হলো আমার জন্য।

ঘরের দিকে চোখ বুলাতে লাগলাম আহামরি তেমন কিছুই না কিছু পুরানো ডিজাইনের কাজ করা আর পুরাই পাকা ঘর।

আমার চাচাতো, মামাতো জ্বা আর ননদ মিলে আমাকে উনার রুমে রেখে আসলেন।আমার ননদ বলে গেল কিছু লাগলে বল ভাবি, ফোনটা রেখে গেলাম কল দিও। নাতাশা নামে সেভ করা আছে দেখ।আমি মাথা নাড়ালাম।রাত্র সাড়ে ১২টা উনি রুমে আসলেন।

আমি উঠে সালাম করে ঘুমটা দিয়ে  আবার বিছানায় বসে পড়লাম। উনি কাছে এসে এত ফরমালিটি প্রয়োজন নেই রিমা বলে ঘুমটা তুলে দিলেন।আমি আসলে এই মুহুর্তে কাঁপছি ভয় ও কাজ করছে।

এসে যদি পুরুষত্ব দেখিয়ে বসেন, যার জন্য এখন মোটেই প্রস্তুত নই আমি। আমি মাথা নিচু করে আছি।

উনি বললেন ভয় পেয় না রিমা।অনেক কথা বলার পর একটু ইজি ফিল করতে লাগলাম। আমি উনাকে বললাম কাপড় বদলাবো ওয়ারুম উনি দেখিয়ে দিলেন।
 
আমি একটা বাদামি সুতি গোলগ্রাউন ড্রেস পরে বের হলাম। চুল গুলো ঠিক করে পিছনে তাকাতেই দরজার আওয়াজ হলো। উনি এই ফাঁকে উনি দু কাপ কপি কিছু খাবার নিয়ে আসেন ।

সব কিছু ট্রি টেবিলের উপর রাখলেন।
আমি বললাম নামাজ টা পড়বেন না উনি বললেন কপি টা খেয়ে পড়ব। আমি বললাম আচ্ছা।

কফি খাচ্ছি আর উনি গল্প করছেন। পরিবারের সবার ছবি দেখিয়ে তাদের পরিচয় দিচ্ছেন।আমি শুধু হুম হা বলে দেখে যাচ্ছি।

খাওয়া করে নামাযটা পড়ে নিলাম দু জনে।মনের মধ্যে নানা অনুভুতি ভয় সংকট থেকেই গেল।

হঠাৎ উনি বলে উঠলেন চল বারান্দায়,আজকে পূর্ণ চাঁদ আকাশে বলতে পার পূর্ণিমা ।

উনি হাত ধরে নিয়ে গিয়ে ছোট সোফায় বসিয়ে দিলেন লজ্জায় অনুভূতিরা কাঁপুনি তুলছে।

উনার দিকে তাকানো যাচ্ছে না,এক মনে তাকিয়ে আছেন আমার দিকে। তোমার জন্য একটা গিফট নাও খুলে দেখ পছন্দ কিনা।
বাক্সটা খুলে দেখলাম একটা সোনার নাকফুল আর হাতের ব্রেস।  হুম খুব পছন্দ হয়েছে।

হাতে ব্রেস নিয়ে বাড়িয়ে দিলাম উনার দিকে ইশারায় পড়াতে বললাম। উনি হাত বাড়িয়ে পড়িয়ে দিয়ে বললেন বড় হয়ে গেছে না। পরে বাহিরে গেলে কাটিয়ে ছোট করে আনব কেমন।
 
চোখ ছোট ছোট করে বললেন এবার কি নাক ফুলটাও পড়িয়ে দিতে হবে তোমায়।আমি মাথা নিচু করে লজ্জায় দু দিকেই মাথা নাড়িয়ে ফেললাম।

এটা কি হলো বুঝতেই  পারলাম না।উনি আমার দিকে চেয়ে হাসছেন আবারও।

তোমাকে অনেক কিছু বলার ছিল রিমা জানি না কিভাবে নিবে উনি বলে উঠে দাড়ালেন।
আকাশ পানে চেয়ে চাঁদ দেখতে লাগলেন আর গম্ভীর হয়ে দীর্ঘ শ্বাস ছাড়লেন। বললেন আমার একটু সময়
লাগবে তোমাকে মানিয়ে নিতে।

আমি বললাম আপনার নামটাই তো জানা হলো না।
উনি ভ্রু কুচকে অবাক হয়ে তাকিয়ে হেসে উঠলেন।

উঠে এসে পাশে বসে বললেন এখানো জানো না বিষ্ময়ে! তাহলে বিয়ে করলে কাকে??নাম হলো মাশরুখ এহসান জোহান। আমি ভীষণ লজ্জা ফেলাম উনার কথায়।
 
বসে থেকে আমার ঘুম চলে আসল আর উনি কথা বলেই যাচ্ছন। হঠাৎ আমার দিকে খেয়াল করতেই উনি দেখলেন আমি উনার কাদে মাথা দিয়ে ঘুমিয়ে আছি।

মনে হলো হাওয়ায় ভাসছি উনি কোলে করে বিছানায় শুয়ে দিলেন আমাকে। সকালে ঘুম ভাঙ্গল কারো ডাকে মাথা একটু ভার হয়ে আছে।

উনি সোফায় বসে আছেন আমার সামনে বললেন উঠো। বাড়িতে অনেক মেহমান আছে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আসো আর এই শাড়িটা পড় এখন অন্তত।

পাটের জাম কালারের শাড়ি নিয়ে ফ্রেস হয়ে আসলাম এর মধ্যে নাতাশা আসলো। বলল ভাবি তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নাও সবাই তোমাকে দেখার জন্য অপেক্ষা করছে।

রেডি হওয়া পর নাতাশা এসে আমাকে নিয়ে গেল শাশুড়ী মায়ের কাছে। নাস্তা করার পর সবাই আমাকে ঘিরে বসে আছে আর পরিবারের এটা সেটা গল্প করছেন।

কেউ একজন বলে উঠল উনার নাকি একটা বাচ্চা আছে।আমার শাশুড়ী দমক দিয়ে নিয়ে চলে গেলেন।
সবাই কিছু একটা কানাকানি করছিল।
যা আমার দৃষ্টি এড়ায় নি।

হঠাৎ নাতাশা এসে বলল ভাবি সাথে তার পুচকি মেয়েটা। কি মিষ্টি মেয়ে আমি ওকে কোলে নিলাম। খিলখিল করে হাসছে মেয়েটা।

ভাবি এবার শাড়িটা বদলে এই কালচে টিয়া রঙ্গের গ্রাউন পড়ে নাও।তোমাদের বাড়ির মেহমানসহ সবাই চলে আসবেন একটু পর।

আর ভাইয়া কোথায় গেল। এই পাজামা পাঞ্জাবি সব রেখে গেলাম আমি একটু আসছি। আর  মুখের মেকাপ আমি করে দিব তোমায় ভাইয়া এত মেকাপ পছন্দ করে না বলে চলে গেল নাতাশা।
বিষয়শ্রেণী: গল্প
ব্লগটি ২৯৪ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ১৮/০৭/২০২১

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

  • বুবুরাম ১৯/০৭/২০২১
    বাহ
  • দারুণ
  • ভাষা আরও সমৃদ্ধ হোক।
 
Quantcast