শিকড়ের টানে
শিকড়ের টানে
সাইয়িদ রফিকুল হক
চাকরি চলে গেল ভাইরাস-আতঙ্কে,
অফিসের খরচ বাঁচাতে ছাঁটাই হলো কর্মচারী,
বাজারদর হঠাৎ বৃদ্ধি পেল একটুখানি!
বাড়িওয়ালার নোটিশ এলো বিরাট
ভাড়াসহ এবার বাড়বে পানির বিল!
অর্থ বাড়ে না, বাড়ে শুধু অর্থদাবির বিল,
বেকার মানুষের আর তো থাকা চলে না শহরে,
আর চাকরি চলে গেছে তা বলা যায় না কাউকে!
গুম হয়ে বসে রইলেন ভদ্রলোক তিনদিন,
হঠাৎ তার মনে পড়লো: গ্রামে আছে টিনের ঘর,
একটুখানি মেরামত করলে তা হবে আগের মতো।
বিদ্যুৎ না-থাকলেও শখে জ্বালাবেন হারিকেন,
আলো নিয়ে তাকে আর কখনো ভাবতে হবে না,
গ্রামে আরও আছে চারপাশের শাকসবজি,
না-খেয়ে মরার মতো অবস্থা হবে না তার,
নির্ঘুম রাতে শহর ছাড়ার কথা ভাবলেন তিনি।
কেউ এলো না তাকে একটু সাহায্য করতে,
পারলে অনেকে তাকে করে রাখে কোণঠাসা!
পরিবারপরিজন আগেই দিলেন সব পাঠিয়ে,
তবুও ওরা বেঁচে থাক মুক্ত আলো-বাতাস খেয়ে,
অচিরেই শহরের পাততাড়ি গুটাবেন তিনি।
আজীবনের মতো সকল হিসাবনিকাশ চুকিয়ে
আবার তিনি ফিরে যাবেন সেই মাতৃক্রোড়ে,
এই শহরে কেউ নাই তার একটু দরদী!
শহরে এসেছিলেন তিনি, স্বপ্ন দেখতেন শহুরে,
তবুও তিনি আজ একেবারে নিঃস্ব, সততার পুঁজিতে,
রাতের আঁধারে ভাড়াবাসা থেকে নেমে এলেন তিনি
কেউ তাকে জিজ্ঞাসা করলো না একটু ভালোমন্দ!
এই শহরে কার আছে এত বাজে সময়?
শুধু নিস্তব্ধ শহর কেঁদে উঠে বললো, ‘তুমি যেতে পারবে না!
তুমি চলে গেলে আমার বুকে মানুষ থাকে না যে অবশিষ্ট!’
থমকে দাঁড়ায় ভদ্রলোক, তবুও ফিরে চলে শিকড়ের টানে।
সাইয়িদ রফিকুল হক
১৮/০১/২০২১
সাইয়িদ রফিকুল হক
চাকরি চলে গেল ভাইরাস-আতঙ্কে,
অফিসের খরচ বাঁচাতে ছাঁটাই হলো কর্মচারী,
বাজারদর হঠাৎ বৃদ্ধি পেল একটুখানি!
বাড়িওয়ালার নোটিশ এলো বিরাট
ভাড়াসহ এবার বাড়বে পানির বিল!
অর্থ বাড়ে না, বাড়ে শুধু অর্থদাবির বিল,
বেকার মানুষের আর তো থাকা চলে না শহরে,
আর চাকরি চলে গেছে তা বলা যায় না কাউকে!
গুম হয়ে বসে রইলেন ভদ্রলোক তিনদিন,
হঠাৎ তার মনে পড়লো: গ্রামে আছে টিনের ঘর,
একটুখানি মেরামত করলে তা হবে আগের মতো।
বিদ্যুৎ না-থাকলেও শখে জ্বালাবেন হারিকেন,
আলো নিয়ে তাকে আর কখনো ভাবতে হবে না,
গ্রামে আরও আছে চারপাশের শাকসবজি,
না-খেয়ে মরার মতো অবস্থা হবে না তার,
নির্ঘুম রাতে শহর ছাড়ার কথা ভাবলেন তিনি।
কেউ এলো না তাকে একটু সাহায্য করতে,
পারলে অনেকে তাকে করে রাখে কোণঠাসা!
পরিবারপরিজন আগেই দিলেন সব পাঠিয়ে,
তবুও ওরা বেঁচে থাক মুক্ত আলো-বাতাস খেয়ে,
অচিরেই শহরের পাততাড়ি গুটাবেন তিনি।
আজীবনের মতো সকল হিসাবনিকাশ চুকিয়ে
আবার তিনি ফিরে যাবেন সেই মাতৃক্রোড়ে,
এই শহরে কেউ নাই তার একটু দরদী!
শহরে এসেছিলেন তিনি, স্বপ্ন দেখতেন শহুরে,
তবুও তিনি আজ একেবারে নিঃস্ব, সততার পুঁজিতে,
রাতের আঁধারে ভাড়াবাসা থেকে নেমে এলেন তিনি
কেউ তাকে জিজ্ঞাসা করলো না একটু ভালোমন্দ!
এই শহরে কার আছে এত বাজে সময়?
শুধু নিস্তব্ধ শহর কেঁদে উঠে বললো, ‘তুমি যেতে পারবে না!
তুমি চলে গেলে আমার বুকে মানুষ থাকে না যে অবশিষ্ট!’
থমকে দাঁড়ায় ভদ্রলোক, তবুও ফিরে চলে শিকড়ের টানে।
সাইয়িদ রফিকুল হক
১৮/০১/২০২১
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
Md. Rayhan Kazi ২০/০১/২০২১চমৎকার লেখনী
-
স্বপন রোজারিও (মাইকেল) ১৯/০১/২০২১সুন্দর
-
আলমগীর সরকার লিটন ১৯/০১/২০২১খুব সুন্দর লেখেছেন কবি দা
-
পি পি আলী আকবর ১৯/০১/২০২১সুন্দর
-
ফয়জুল মহী ১৮/০১/২০২১বেশ চমৎকার