এখন কোনো মিছিল হয় না
এখন কোনো মিছিল হয় না
সাইয়িদ রফিকুল হক
একদিন কত মিছিল হতো এখানে!
এই শহরে, এই জনপদে, এই মহানগরীতে,
মানুষের পদভারে প্রকম্পিত হতো পথ আর রাজপথ!
মানুষের হাতে-হাতে থাকতো কতরকমের প্লাকার্ড
কিংবা কত রঙিন ফেস্টুন আর লিফলেট!
আরও থাকতো কত শব্দমালার বাহারি ব্যানার!
এখন কিছু নাই চারিপাশে!
সমস্ত রাস্তা যেন আজ পড়ে আছে একেবারে শূন্য হয়ে!
রাজপথ, মহাসড়ক, কংক্রিটের সকল রাস্তাও আজ জনশূন্য
কোথাও যেন কোনো মানুষের দেখা নাই!
কোথাও যেন কোনো মানুষের সাড়াশব্দ নাই!
সবখানে পড়ে রয়েছে শূন্যতার বিরাট হাহাকার।
আমেরিকার একটি শহরে দেখেছি লকডাউনের বিরুদ্ধে
সামান্য প্রতিবাদ করতে, কিন্তু মিছিল হয় নাই সেখানে!
আর আমাদের মিছিলের দেশে আজ একটিও মিছিল না!
এখানে আজ সামান্য মিছিলের নামে
আজ আর গাড়ি-ভাংচুর করা হচ্ছে না!
প্রতিবাদের নামে কোনো বিশেষ নাটক মঞ্চস্থ হচ্ছে না!
একটি মৃত্যুকে কেন্দ্র করে আগে হঠাৎ-হঠাৎ জমে উঠতো
কতরকমের মিছিল! কত রঙ-রূপ ছিল তার!
আজ কোনো মিছিল নাই এই মহানগরীতে!
আজ কোনো মিছিল নাই এই মিছিলের দেশ বাংলাদেশে!
সবাই কেমন যেন ঝিমিয়ে পড়েছে!
কী এক নিস্তব্ধতায় সবাই ভীষণ বিমর্ষ আর চিন্তিত!
মানুষগুলো কি হঠাৎ করে মিছিল করা ছেড়ে দিয়েছে?
নাকি মিছিলের আজ কোনো অনুমতি নাই?
সবই আছে—তবুও মিছিল হচ্ছে না কেন?
মানুষের পদভারে প্রকম্পিত হচ্ছে না আবার রাজধানী ঢাকা!
এখন মিছিল করবে কার বিরুদ্ধে মানুষ খুঁজে পায় না তার ঠিকানা,
অথবা মানুষ আজ জানে না এখন মিছিল করবে কার বিরুদ্ধে!
পৃথিবীতে একটা ভাইরাস এসেছে আজ,
করোনা-নামে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে এই ভাইরাস পৃথিবীর সব দেশে,
বাংলাদেশের মিছিলের নগরীও এখন তাই একেবারে ঘুমিয়ে রয়েছে!
যারা মিছিলের ভাড়াটিয়া কর্মী ছিল আজ তারা জীবন বাঁচাতে ব্যস্ত,
মানুষের পদভারে আজ আর জেগে ওঠে না এই রাজপথ!
ঘরে-ঘরে বন্দি আজ মানুষের আত্মা মানুষ।
আগে কত মিছিল হতো এই জনপদে,
প্রতিদিন মিছিল হতো দুই-চার কিংবা দশটি করে!
একটি-দুটি কিংবা তিন-চারটি মৃত্যুকে কেন্দ্র করে
দৈনন্দিন কাজের মতো জমে উঠতো সেই মিছিল!
এখন প্রতিদিন পৃথিবীতে মরছে হাজার-হাজার মানুষ!
বাংলাদেশেও মরছে নিয়মিত কয়েকজন করে,
মানুষের এই মৃত্যুতে তবুও কোনো মিছিল নাই!
সবার চোখে এখন সয়ে গেছে এই অমোঘ মৃত্যু,
সবাই বলে এটা নাকি প্রকৃতির নির্মম প্রতিশোধ!
এতো-এতো মানুষের মৃত্যু
তবুও মিছিল নাই কোনো!
এতো মৃত্যু তবুও কাউকে দোষী করে আজ আর
দেশের কিংবা বিদেশের রাজপথে আজ কোনো শ্লোগান দেওয়া হয় না!
দেশের কিংবা পৃথিবীর কোনো আদালতে-উচ্চআদালতে আজ আর
কারও বিরুদ্ধে প্রবল প্রতিরোধের বাসনায় মামলাদায়ের করা হয় না!
এখন রাজপথে আর কোনো মিছিল হয় না!
এখানে আজ কোনো মিছিল নাই!
এখানে আজ কোনো মিছিল হয় না।
পৃথিবীর সব মিছিল আর সব প্রতিবাদ আজ থমকে গেছে শুধু মৃত্যুভয়ে।
সাইয়িদ রফিকুল হক
০৩/০৫/২০২০
সাইয়িদ রফিকুল হক
একদিন কত মিছিল হতো এখানে!
এই শহরে, এই জনপদে, এই মহানগরীতে,
মানুষের পদভারে প্রকম্পিত হতো পথ আর রাজপথ!
মানুষের হাতে-হাতে থাকতো কতরকমের প্লাকার্ড
কিংবা কত রঙিন ফেস্টুন আর লিফলেট!
আরও থাকতো কত শব্দমালার বাহারি ব্যানার!
এখন কিছু নাই চারিপাশে!
সমস্ত রাস্তা যেন আজ পড়ে আছে একেবারে শূন্য হয়ে!
রাজপথ, মহাসড়ক, কংক্রিটের সকল রাস্তাও আজ জনশূন্য
কোথাও যেন কোনো মানুষের দেখা নাই!
কোথাও যেন কোনো মানুষের সাড়াশব্দ নাই!
সবখানে পড়ে রয়েছে শূন্যতার বিরাট হাহাকার।
আমেরিকার একটি শহরে দেখেছি লকডাউনের বিরুদ্ধে
সামান্য প্রতিবাদ করতে, কিন্তু মিছিল হয় নাই সেখানে!
আর আমাদের মিছিলের দেশে আজ একটিও মিছিল না!
এখানে আজ সামান্য মিছিলের নামে
আজ আর গাড়ি-ভাংচুর করা হচ্ছে না!
প্রতিবাদের নামে কোনো বিশেষ নাটক মঞ্চস্থ হচ্ছে না!
একটি মৃত্যুকে কেন্দ্র করে আগে হঠাৎ-হঠাৎ জমে উঠতো
কতরকমের মিছিল! কত রঙ-রূপ ছিল তার!
আজ কোনো মিছিল নাই এই মহানগরীতে!
আজ কোনো মিছিল নাই এই মিছিলের দেশ বাংলাদেশে!
সবাই কেমন যেন ঝিমিয়ে পড়েছে!
কী এক নিস্তব্ধতায় সবাই ভীষণ বিমর্ষ আর চিন্তিত!
মানুষগুলো কি হঠাৎ করে মিছিল করা ছেড়ে দিয়েছে?
নাকি মিছিলের আজ কোনো অনুমতি নাই?
সবই আছে—তবুও মিছিল হচ্ছে না কেন?
মানুষের পদভারে প্রকম্পিত হচ্ছে না আবার রাজধানী ঢাকা!
এখন মিছিল করবে কার বিরুদ্ধে মানুষ খুঁজে পায় না তার ঠিকানা,
অথবা মানুষ আজ জানে না এখন মিছিল করবে কার বিরুদ্ধে!
পৃথিবীতে একটা ভাইরাস এসেছে আজ,
করোনা-নামে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে এই ভাইরাস পৃথিবীর সব দেশে,
বাংলাদেশের মিছিলের নগরীও এখন তাই একেবারে ঘুমিয়ে রয়েছে!
যারা মিছিলের ভাড়াটিয়া কর্মী ছিল আজ তারা জীবন বাঁচাতে ব্যস্ত,
মানুষের পদভারে আজ আর জেগে ওঠে না এই রাজপথ!
ঘরে-ঘরে বন্দি আজ মানুষের আত্মা মানুষ।
আগে কত মিছিল হতো এই জনপদে,
প্রতিদিন মিছিল হতো দুই-চার কিংবা দশটি করে!
একটি-দুটি কিংবা তিন-চারটি মৃত্যুকে কেন্দ্র করে
দৈনন্দিন কাজের মতো জমে উঠতো সেই মিছিল!
এখন প্রতিদিন পৃথিবীতে মরছে হাজার-হাজার মানুষ!
বাংলাদেশেও মরছে নিয়মিত কয়েকজন করে,
মানুষের এই মৃত্যুতে তবুও কোনো মিছিল নাই!
সবার চোখে এখন সয়ে গেছে এই অমোঘ মৃত্যু,
সবাই বলে এটা নাকি প্রকৃতির নির্মম প্রতিশোধ!
এতো-এতো মানুষের মৃত্যু
তবুও মিছিল নাই কোনো!
এতো মৃত্যু তবুও কাউকে দোষী করে আজ আর
দেশের কিংবা বিদেশের রাজপথে আজ কোনো শ্লোগান দেওয়া হয় না!
দেশের কিংবা পৃথিবীর কোনো আদালতে-উচ্চআদালতে আজ আর
কারও বিরুদ্ধে প্রবল প্রতিরোধের বাসনায় মামলাদায়ের করা হয় না!
এখন রাজপথে আর কোনো মিছিল হয় না!
এখানে আজ কোনো মিছিল নাই!
এখানে আজ কোনো মিছিল হয় না।
পৃথিবীর সব মিছিল আর সব প্রতিবাদ আজ থমকে গেছে শুধু মৃত্যুভয়ে।
সাইয়িদ রফিকুল হক
০৩/০৫/২০২০
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
মশিউর ইসলাম (বিব্রত কবি) ০৩/০৫/২০২০
-
ফয়জুল মহী ০৩/০৫/২০২০লেখা পড়ে বিমোহিত হলাম।
-
স্বপন রোজারিও (মাইকেল) ০৩/০৫/২০২০করোনার ফলে সব কিছু পরিবর্তন হয়ে গেছে। ঘরে সুস্থ্য থাকুন।
মুগ্ধ হলাম পাঠ করে