ভাল্লুক হলো বনের রাজা
শিশুতোষ গল্প:
ভাল্লুক হলো বনের রাজা
সাইয়িদ রফিকুল হক
শালনার বিশাল জঙ্গলে পশুপাখিদের মিটিং শুরু হবে। এজন্য সকাল থেকেই পশুপাখিদের নদীর পাড়ে জড়ো হতে দেখা যাচ্ছে। আজ এই বনে নতুন রাজা নির্বাচন করা হবে।
এখানে, বাঘ-সিংহ-হাতি নাই বলে এতদিন এই বনে রাজত্ব করেছে একটা বড়সড় মহিষ। হঠাৎ এই বনে একটা ভাল্লুক এসে পড়ায় মহিষটা বিপদে পড়েছে।
ভাল্লুকটা এখানে এসেছে মাত্র সাতদিন। এসেই সে একটা বৃদ্ধ মহিষকে বনের রাজা মানতে চাইলো না। জঙ্গলে ঢোকার ছয়দিনের মধ্যেই সে নিজেকে ‘রাজা’ বলে ঘোষণা দেওয়ায় এখানে একটা গণ্ডগোল শুরু হয়ে গেল। এতে বনের পশুপাখিরা দুই দলে ভাগ হয়ে যায়।
মহিষটা দেখলো, এতে সবার ক্ষতি হবে। একটা বনে তো একসঙ্গে দুইটা রাজা থাকতে পারে না। তাই, সে নিজে রাজা হওয়ার লোভ না করে সবার সঙ্গে পরামর্শের জন্য আজ একটা মিটিং ডেকেছে।
দুপুরের আগে বনের পশুপাখিরা হলুদনদীর তীরে বড় বটগাছটার নিচে জড়ো হয়েছে। এখানে উপস্থিত হয়েছে বনের রাজা মহিষসহ আরও কয়েকটি মহিষ, বনগোরু, বনছাগল, খরগোশ, শিয়াল, হরিণ, বনমোরগ, টিয়া, শালিক, ময়না, তিতির, ঘুঘু, সারসসহ আরও কতকগুলো পশুপাখি। সবাই মহিষের সামনে একটুখানি দূরে বসে রয়েছে। আর ভাল্লুকটা বসে আছে আরেকটু দূরে একটা বড় ঢিবির উপরে। তাকে এখন একটা রাজার মতোই মনে হচ্ছে।
শিয়াল এর আগে কখনও কোনো ভাল্লুক দেখে নাই। আর এতবড় ভাল্লুক সে কেন তার পূর্বপুরুষরাও দেখেছে কিনা সন্দেহ। তাই, সে ভীতসন্ত্রস্ত। সে ভাল্লুকটার বিরুদ্ধে কিছু বলতেও পারছে না আবার মহিষের সঙ্গও ছাড়তে পারছে না। কারণ, শিয়াল আজ থেকে দশ বছর আগে এই মহিষটাকে ‘মামা’ বলে ডেকেছিল।
দুপুরের ঘণ্টাখানেক আগে পশুপাখিদের রাজা-নির্বাচনের মিটিং শুরু হলো। শিয়াল আর খরগোশের নেতৃত্বে অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে।
শিয়াল সবার দিকে তাকিয়ে বললো, “বন্ধুগণ, এখন আপনাদের সামনে কিছু কথা বলবেন আমাদের বর্তমান রাজা মিস্টার মহিষ।”
বয়সের ভারে মহিষটা এতক্ষণ শুয়ে-শুয়ে ঘাস খাচ্ছিলো। আচমকা শিয়ালের এই ঘোষণা শুনে সে খুব কষ্ট করে উঠে দাঁড়ালো। তারপর সে বলতে লাগলো, “বনের সকল বন্ধুকে আমার সালাম ও শুভেচ্ছা। আমাদের বনে হঠাৎ বিরাট একটা ভাল্লুক এসে উপস্থিত হয়েছেন। এখন তিনি বনের রাজা হতে চাচ্ছেন। ইতোমধ্যে ভাল্লুক-মশাই নিজেকে ‘রাজা’ হিসাবে ঘোষণাও দিয়েছেন। কিন্তু একটা বনে তো দুইটা রাজা থাকতে পারে না। আমি পর-পর দুইবার আপনাদের ভোটে রাজা নির্বাচিত হয়েছিলাম। আজ আপনারা ভোটে কিংবা মিলেমিশে যে-কাউকে বনের রাজা বানাতে পারেন। আমার কোনো আপত্তি নাই। ধন্যবাদ সবাইকে।”
মহিষের কথা শেষ হওয়ার সঙ্গে-সঙ্গে দুটো ছাগল সমস্বরে বললো, “মহিষ-রাজা জিন্দাবাদ-জিন্দাবাদ।”
ওদের সঙ্গে আর কেউ কিছু বললো না। হঠাৎ বনমোরগটা ছোট্ট একটা জামগাছের ডালে বসে বলতে লাগলো, “নতুন রাজা, নতুন রাজা চাই। ভাল্লুক-মামা—ভাল্লুক-মামা জিন্দাবাদ।”
এমন সময় খরগোশ বললো, “আমরা এখন সরাসরি ভোটে যাচ্ছি। প্রথমে মহিষ-মামার পক্ষে কে-কে আছেন হাত তোলেন।”
এতে দেখা গেল, মহিষ ভোট পেয়েছে ষোলোটি।
শিয়াল সবার সামনে তা বলে ব্ল্যাকবোর্ডে লিখে রাখলো।
তারপর খরগোশ খুব জোরে বললো, “এবার ভাল্লুক-মামার পক্ষে কে-কে আছেন হাত তোলেন।”
এবার সবাই হাত তুলেছে। খরগোশ মন দিয়ে গুনে দেখলো, ভাল্লুক ভোট পেয়েছে একশ’ সত্তরটা। বিশাল জয়।
এতে শিয়াল মনখারাপ করে কিন্তু কাউকে তা বুঝতে না দিয়ে বললো, “সবার ভোটে এই বনের রাজা নির্বাচিত হয়েছেন আমাদের ভাল্লুক-মামা।”
সবাই হুড় রে বলে হাততালি দিয়ে ভাল্লুককে স্বাগত জানিয়ে শালনা-জঙ্গলের রাজা হিসাবে মেনে নিলো।
নতুন রাজা হিসাবে ভাল্লুক ভাষণ দিবে। কিন্তু শিয়াল তার নাম ঘোষণা করতে দেরি করছে! সবার মনে একটা খটকা লাগে।
এই সময় শিয়াল একটা ফন্দি করে বললো, “ভাল্লুক-মামা অনেক বড় একটা পশু। তিনি যোগ্যতার বলেই আজ আমাদের এই বিশাল জঙ্গলের রাজা নির্বাচিত হয়েছেন। এজন্য আমরা খুব খুশি। কিন্তু আজকের এই খুশির দিনে আমার একটা ছোট্ট আবদার ছিল। ভাল্লুক-মামা যদি উত্তরদিকের বিশাল জঙ্গলের মৌচাক থেকে মধুসংগ্রহ করে সবাইকে খাওয়াতেন তাহলে খুব খুশি হতাম।”
তারপর সে পশুপাখিদের দিকে চেয়ে বললো, “আপনারা কী বলেন?”
সবাই কিছু না বুঝে বললো, “হ, এটা মন্দ না।”
আসলে, শিয়াল ফন্দি করেছে, ভাল্লুকটা বিশাল মৌচাক থেকে মধুসংগ্রহ করতে গিয়ে মারা গেলে মহিষটাই আবার বনের রাজা হবে। তাহলে, শিয়াল বোকা-মহিষটাকে ভুলিয়ে নিজের ক্ষমতা দেখাতে পারবে।
শিয়ালের কথা শুনে ভাল্লুকটা একলাফে ঢিবি থেকে নেমে বললো, “আমি এখনই তোমাদের সবার জন্য মধু নিয়ে আসছি।”
ভাল্লুকটা প্রথমে খরগোশের নিকট থেকে একটা বড় হাঁড়ি চেয়ে নিলো। তারপর সে একটা পাটখড়ি নিয়ে দ্রুত নদীর শেষপ্রান্তে চলে গেল। যাতে কেউ তার কাজকর্ম দেখতে না পায়। কাদার মধ্যে ভাল্লুকটা মিনিটখানেক গড়াগড়ি খেয়ে উত্তরদিকের জঙ্গলের সবচেয়ে বড় মৌচাকটার কাছে গিয়ে পাটখড়ির সাহায্যে চুষে সব মধু বড় হাঁড়িটাতে ফেলতে লাগলো।
মৌমাছিরা ভাল্লুকটাকে দেখে ঘাবড়ে গেল।
ভাল্লুকের মধুসংগ্রহ শেষ হলে মৌমাছিদের রাণী বললো, “ভাই ভাল্লুক, আপনি আমাদের সব মধু চুষে নিয়েছেন—এজন্য আমাদের কোনো দুঃখ নাই। আপনি আমাদের নতুন রাজা হয়েছেন—এতে আমরাও খুব খুশি। কিন্তু আমাদের এই মৌচাকের খবর আপনাকে কে দিয়েছে? তার নামটা বললে আমরা খুব খুশি হবো।”
ভাল্লুক হেসে বললো, “কে আবার, ওই দুষ্টু শিয়ালটা।”
কথা শেষ করে ভাল্লুকটা নদীতে নেমে গোসল সেরে খুব তাড়াতাড়ি আবার পশুপাখিদের মধ্যে ফিরে এলো। ভাল্লুককে অক্ষত-শরীরে ফিরে আসতে দেখে শিয়াল খুব হতাশ হলো। আর খরগোশ মনের আনন্দে সবাইকে মধু খাওয়াতে লাগলো।
সবাই যখন মধুখাওয়ার আনন্দে ব্যস্ত তখন ঝাঁকে-ঝাঁকে মৌমাছি শিয়ালকে কামড়ে মেরে ফেললো। পশুপাখিরা সব দেখে কিছুই করতে পারলো না। শুধু সাবেক বনের রাজা মহিষটা বললো, “কেউ কারও অনিষ্ট চাইলে নিজেরই অনিষ্ট হয়।”
নতুন রাজা ভাল্লুক বলতে লাগলো, “আমরা সবাই মিলেমিশে থাকবো। আমাদের বনভূমিকে রক্ষা করবো। সবাইকে আমার সালাম ও শুভেচ্ছা।”...
সাইয়িদ রফিকুল হক
৩১/১০/২০১৮
ভাল্লুক হলো বনের রাজা
সাইয়িদ রফিকুল হক
শালনার বিশাল জঙ্গলে পশুপাখিদের মিটিং শুরু হবে। এজন্য সকাল থেকেই পশুপাখিদের নদীর পাড়ে জড়ো হতে দেখা যাচ্ছে। আজ এই বনে নতুন রাজা নির্বাচন করা হবে।
এখানে, বাঘ-সিংহ-হাতি নাই বলে এতদিন এই বনে রাজত্ব করেছে একটা বড়সড় মহিষ। হঠাৎ এই বনে একটা ভাল্লুক এসে পড়ায় মহিষটা বিপদে পড়েছে।
ভাল্লুকটা এখানে এসেছে মাত্র সাতদিন। এসেই সে একটা বৃদ্ধ মহিষকে বনের রাজা মানতে চাইলো না। জঙ্গলে ঢোকার ছয়দিনের মধ্যেই সে নিজেকে ‘রাজা’ বলে ঘোষণা দেওয়ায় এখানে একটা গণ্ডগোল শুরু হয়ে গেল। এতে বনের পশুপাখিরা দুই দলে ভাগ হয়ে যায়।
মহিষটা দেখলো, এতে সবার ক্ষতি হবে। একটা বনে তো একসঙ্গে দুইটা রাজা থাকতে পারে না। তাই, সে নিজে রাজা হওয়ার লোভ না করে সবার সঙ্গে পরামর্শের জন্য আজ একটা মিটিং ডেকেছে।
দুপুরের আগে বনের পশুপাখিরা হলুদনদীর তীরে বড় বটগাছটার নিচে জড়ো হয়েছে। এখানে উপস্থিত হয়েছে বনের রাজা মহিষসহ আরও কয়েকটি মহিষ, বনগোরু, বনছাগল, খরগোশ, শিয়াল, হরিণ, বনমোরগ, টিয়া, শালিক, ময়না, তিতির, ঘুঘু, সারসসহ আরও কতকগুলো পশুপাখি। সবাই মহিষের সামনে একটুখানি দূরে বসে রয়েছে। আর ভাল্লুকটা বসে আছে আরেকটু দূরে একটা বড় ঢিবির উপরে। তাকে এখন একটা রাজার মতোই মনে হচ্ছে।
শিয়াল এর আগে কখনও কোনো ভাল্লুক দেখে নাই। আর এতবড় ভাল্লুক সে কেন তার পূর্বপুরুষরাও দেখেছে কিনা সন্দেহ। তাই, সে ভীতসন্ত্রস্ত। সে ভাল্লুকটার বিরুদ্ধে কিছু বলতেও পারছে না আবার মহিষের সঙ্গও ছাড়তে পারছে না। কারণ, শিয়াল আজ থেকে দশ বছর আগে এই মহিষটাকে ‘মামা’ বলে ডেকেছিল।
দুপুরের ঘণ্টাখানেক আগে পশুপাখিদের রাজা-নির্বাচনের মিটিং শুরু হলো। শিয়াল আর খরগোশের নেতৃত্বে অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে।
শিয়াল সবার দিকে তাকিয়ে বললো, “বন্ধুগণ, এখন আপনাদের সামনে কিছু কথা বলবেন আমাদের বর্তমান রাজা মিস্টার মহিষ।”
বয়সের ভারে মহিষটা এতক্ষণ শুয়ে-শুয়ে ঘাস খাচ্ছিলো। আচমকা শিয়ালের এই ঘোষণা শুনে সে খুব কষ্ট করে উঠে দাঁড়ালো। তারপর সে বলতে লাগলো, “বনের সকল বন্ধুকে আমার সালাম ও শুভেচ্ছা। আমাদের বনে হঠাৎ বিরাট একটা ভাল্লুক এসে উপস্থিত হয়েছেন। এখন তিনি বনের রাজা হতে চাচ্ছেন। ইতোমধ্যে ভাল্লুক-মশাই নিজেকে ‘রাজা’ হিসাবে ঘোষণাও দিয়েছেন। কিন্তু একটা বনে তো দুইটা রাজা থাকতে পারে না। আমি পর-পর দুইবার আপনাদের ভোটে রাজা নির্বাচিত হয়েছিলাম। আজ আপনারা ভোটে কিংবা মিলেমিশে যে-কাউকে বনের রাজা বানাতে পারেন। আমার কোনো আপত্তি নাই। ধন্যবাদ সবাইকে।”
মহিষের কথা শেষ হওয়ার সঙ্গে-সঙ্গে দুটো ছাগল সমস্বরে বললো, “মহিষ-রাজা জিন্দাবাদ-জিন্দাবাদ।”
ওদের সঙ্গে আর কেউ কিছু বললো না। হঠাৎ বনমোরগটা ছোট্ট একটা জামগাছের ডালে বসে বলতে লাগলো, “নতুন রাজা, নতুন রাজা চাই। ভাল্লুক-মামা—ভাল্লুক-মামা জিন্দাবাদ।”
এমন সময় খরগোশ বললো, “আমরা এখন সরাসরি ভোটে যাচ্ছি। প্রথমে মহিষ-মামার পক্ষে কে-কে আছেন হাত তোলেন।”
এতে দেখা গেল, মহিষ ভোট পেয়েছে ষোলোটি।
শিয়াল সবার সামনে তা বলে ব্ল্যাকবোর্ডে লিখে রাখলো।
তারপর খরগোশ খুব জোরে বললো, “এবার ভাল্লুক-মামার পক্ষে কে-কে আছেন হাত তোলেন।”
এবার সবাই হাত তুলেছে। খরগোশ মন দিয়ে গুনে দেখলো, ভাল্লুক ভোট পেয়েছে একশ’ সত্তরটা। বিশাল জয়।
এতে শিয়াল মনখারাপ করে কিন্তু কাউকে তা বুঝতে না দিয়ে বললো, “সবার ভোটে এই বনের রাজা নির্বাচিত হয়েছেন আমাদের ভাল্লুক-মামা।”
সবাই হুড় রে বলে হাততালি দিয়ে ভাল্লুককে স্বাগত জানিয়ে শালনা-জঙ্গলের রাজা হিসাবে মেনে নিলো।
নতুন রাজা হিসাবে ভাল্লুক ভাষণ দিবে। কিন্তু শিয়াল তার নাম ঘোষণা করতে দেরি করছে! সবার মনে একটা খটকা লাগে।
এই সময় শিয়াল একটা ফন্দি করে বললো, “ভাল্লুক-মামা অনেক বড় একটা পশু। তিনি যোগ্যতার বলেই আজ আমাদের এই বিশাল জঙ্গলের রাজা নির্বাচিত হয়েছেন। এজন্য আমরা খুব খুশি। কিন্তু আজকের এই খুশির দিনে আমার একটা ছোট্ট আবদার ছিল। ভাল্লুক-মামা যদি উত্তরদিকের বিশাল জঙ্গলের মৌচাক থেকে মধুসংগ্রহ করে সবাইকে খাওয়াতেন তাহলে খুব খুশি হতাম।”
তারপর সে পশুপাখিদের দিকে চেয়ে বললো, “আপনারা কী বলেন?”
সবাই কিছু না বুঝে বললো, “হ, এটা মন্দ না।”
আসলে, শিয়াল ফন্দি করেছে, ভাল্লুকটা বিশাল মৌচাক থেকে মধুসংগ্রহ করতে গিয়ে মারা গেলে মহিষটাই আবার বনের রাজা হবে। তাহলে, শিয়াল বোকা-মহিষটাকে ভুলিয়ে নিজের ক্ষমতা দেখাতে পারবে।
শিয়ালের কথা শুনে ভাল্লুকটা একলাফে ঢিবি থেকে নেমে বললো, “আমি এখনই তোমাদের সবার জন্য মধু নিয়ে আসছি।”
ভাল্লুকটা প্রথমে খরগোশের নিকট থেকে একটা বড় হাঁড়ি চেয়ে নিলো। তারপর সে একটা পাটখড়ি নিয়ে দ্রুত নদীর শেষপ্রান্তে চলে গেল। যাতে কেউ তার কাজকর্ম দেখতে না পায়। কাদার মধ্যে ভাল্লুকটা মিনিটখানেক গড়াগড়ি খেয়ে উত্তরদিকের জঙ্গলের সবচেয়ে বড় মৌচাকটার কাছে গিয়ে পাটখড়ির সাহায্যে চুষে সব মধু বড় হাঁড়িটাতে ফেলতে লাগলো।
মৌমাছিরা ভাল্লুকটাকে দেখে ঘাবড়ে গেল।
ভাল্লুকের মধুসংগ্রহ শেষ হলে মৌমাছিদের রাণী বললো, “ভাই ভাল্লুক, আপনি আমাদের সব মধু চুষে নিয়েছেন—এজন্য আমাদের কোনো দুঃখ নাই। আপনি আমাদের নতুন রাজা হয়েছেন—এতে আমরাও খুব খুশি। কিন্তু আমাদের এই মৌচাকের খবর আপনাকে কে দিয়েছে? তার নামটা বললে আমরা খুব খুশি হবো।”
ভাল্লুক হেসে বললো, “কে আবার, ওই দুষ্টু শিয়ালটা।”
কথা শেষ করে ভাল্লুকটা নদীতে নেমে গোসল সেরে খুব তাড়াতাড়ি আবার পশুপাখিদের মধ্যে ফিরে এলো। ভাল্লুককে অক্ষত-শরীরে ফিরে আসতে দেখে শিয়াল খুব হতাশ হলো। আর খরগোশ মনের আনন্দে সবাইকে মধু খাওয়াতে লাগলো।
সবাই যখন মধুখাওয়ার আনন্দে ব্যস্ত তখন ঝাঁকে-ঝাঁকে মৌমাছি শিয়ালকে কামড়ে মেরে ফেললো। পশুপাখিরা সব দেখে কিছুই করতে পারলো না। শুধু সাবেক বনের রাজা মহিষটা বললো, “কেউ কারও অনিষ্ট চাইলে নিজেরই অনিষ্ট হয়।”
নতুন রাজা ভাল্লুক বলতে লাগলো, “আমরা সবাই মিলেমিশে থাকবো। আমাদের বনভূমিকে রক্ষা করবো। সবাইকে আমার সালাম ও শুভেচ্ছা।”...
সাইয়িদ রফিকুল হক
৩১/১০/২০১৮
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
তূয়া নূর ২৫/০১/২০২০পড়লাম। খুব ভাল।
-
ইবনে মিজান ২৪/০১/২০২০বেশ
-
মোহন দাস (বিষাক্ত কবি) ০৬/০১/২০২০সুন্দর রচনা ।
-
আমীন রুহুল ০৬/০১/২০২০সুন্দর লিখেছেন
-
ফয়জুল মহী ০৬/০১/২০২০দারুণ ,বেশ লাগলো ।
-
হাসান আল মাহদী ০৬/০১/২০২০অসাধারণ
-
নুর হোসেন ০৬/০১/২০২০চমৎকার লিখেছেন ভালো লাগলো।