শুধু একদিন তোমাদের এই অভিনয়
শুধু একদিন তোমাদের এই অভিনয়
সাইয়িদ রফিকুল হক
শোনো দেশবাসী:
আবার এসেছে ভাষার মাস
রক্তআখরে লেখা একুশে ফেব্রুআরি,
তোমাদের আলমারি থেকে এবার
ধীরে-ধীরে হাসিমুখে বের কর
ইস্ত্রিরি করা সাদা পায়জামা-পাঞ্জাবি
আর মিহি-সুতার জামদানি-শাড়ি!
আগামীকাল সকালবেলা প্রভাতফেরি,
একুশে ফেব্রুআরি আবার এসে গেছে!
তোমরা নগ্নপায়ে হাঁটবে শুধু রাস্তায়
আর শুধু একদিন সামান্য কিছুক্ষণ!
তোমাদের এই নন্দিত-অভিনয়
আর কতদিন চলবে বাংলার বুকে?
তারপর আবার তোমরা ফিরে যাবে
তোমাদের আগের সেই স্বমূর্তিতে!
আবার তোমরা ইংরেজি-প্রেমে
শুরু করবে তোমাদের অমৃত-বচন!
এই একটি দিনের জন্য তোমরা
সারাবছর বসে থাকো অধীর আগ্রহে,
কবে আসবে একুশে ফেব্রুআরি
কবে আসবে শহীদদিবস!
আর তখনই শুরু হবে তোমাদের সেই
আগের মতো বাংলা-প্রেমের নাটক!
আর তোমাদের এই বাংলা-নাটকের মহড়া
আর কতদিন চলবে? আর কতদিন?
তোমরা বেশ ভালো অভিনয় জানো,
তাইতো বছর-বছর মেতে আছো অভিনয়ে,
আর তাই, আজও তোমাদের বুকের ভিতরে
গড়ে ওঠেনি বাংলা-প্রেম কিংবা দেশপ্রেম,
আর তোমাদের হৃৎযন্ত্রে ঠাঁই পায়নি বাংলাভাষা
বাইরে তোমাদের বাংলা-প্রেমের সমুদ্র-জোয়ারে
লোকালয় ভেসে যাচ্ছে,
আর রাশি-রাশি ফেনায় ডুবে যাচ্ছে মানুষজন!
এই তো তোমাদের লোকদেখানো ভাষাপ্রেমের নমুনা।
তোমরা আর কত খেলবে আমাদের ভাষা নিয়ে?
আর কে দিয়েছে তোমাদের এই অধিকার?
আজও তোমরা হয়ে আছো আপাদমস্তক-ভণ্ড!
আর তোমাদের কণ্ঠেই অবিরাম বাজছে
বাংলা-প্রেমের প্রহসনমূলক গান,
নিজের জন্মদাত্রী-মাকে ‘মা’ বলে
ডাকতে বুঝি তোমাদের আজ খুব লজ্জা করে?
আর নিজের মাকে বুঝি তোমাদের লাগে না ভালো!
বিদেশী মাকে তোমরা সবাই মিলে করেছো কবুল
তবুও তোমরা দাবি করছো এই মায়েরই সন্তান বলে!
তোমাদের এই স্পর্ধা দেখে লজ্জিত হই প্রতিমুহূর্তে
আর তোমাদের সীমাহীন ধৃষ্টতা দেখে
চমকিত হই বারবার।
বাংলা মায়ের পুত্র হলে তোমরা
পদচুম্বন কর এখনই বাংলার,
আর দূর করো তোমাদের
৪৫ বছরের সঞ্চিত এই ভণ্ডামি!
অনেক করেছো তোমরা—
ভাষার নামে নিজেরা হয়েছো লাভবান
আর ভাষা হয়েছে বঞ্চিত,
স্বাধীন দেশে এখনও নির্বাসিত বাংলা!
তোমাদের পায়জামা-পাঞ্জাবির
ভাঁজগুলো রেখে দাও অক্ষত,
আর মাত্র একটা দিন বাকী
তারপর তোমরা নেমে পড়বে রঙ্গমঞ্চে!
আর বক্তৃতার ধূলা উড়াবে রেসের ঘোড়ার মতো,
আর শুধু এরই একদিন পরে আবার তোমরা
ভালোবাসা জানাবে তোমাদের ইংরেজি শব্দে!
আর ছেলে-মেয়েদের পড়তে বলবে
বেশি-বেশি ইংরেজি।
এই দেশে এখনও ইংরেজি ছাড়া চাকরি হয় না!
আর কথায়-কথায় ইংরেজি না বললে
স্মার্ট হওয়া যায় না—
আর সস্তা-পাণ্ডিত্য জাহির করার জন্য
লোকসমাজে চাই শুধু ইংরেজি, ইংরেজি, ইংরেজি...
তবুও শুনে রাখো তোমরা মূর্খজীব একটি কথা:
এই বাংলায় যে যতো অক্ষত-মূর্খ আজ
সে ততো বেশি প্রয়োগ করছে ইংরেজি ভাষা!
সাইয়িদ রফিকুল হক
মিরপুর, ঢাকা, বাংলাদেশ।
সাইয়িদ রফিকুল হক
শোনো দেশবাসী:
আবার এসেছে ভাষার মাস
রক্তআখরে লেখা একুশে ফেব্রুআরি,
তোমাদের আলমারি থেকে এবার
ধীরে-ধীরে হাসিমুখে বের কর
ইস্ত্রিরি করা সাদা পায়জামা-পাঞ্জাবি
আর মিহি-সুতার জামদানি-শাড়ি!
আগামীকাল সকালবেলা প্রভাতফেরি,
একুশে ফেব্রুআরি আবার এসে গেছে!
তোমরা নগ্নপায়ে হাঁটবে শুধু রাস্তায়
আর শুধু একদিন সামান্য কিছুক্ষণ!
তোমাদের এই নন্দিত-অভিনয়
আর কতদিন চলবে বাংলার বুকে?
তারপর আবার তোমরা ফিরে যাবে
তোমাদের আগের সেই স্বমূর্তিতে!
আবার তোমরা ইংরেজি-প্রেমে
শুরু করবে তোমাদের অমৃত-বচন!
এই একটি দিনের জন্য তোমরা
সারাবছর বসে থাকো অধীর আগ্রহে,
কবে আসবে একুশে ফেব্রুআরি
কবে আসবে শহীদদিবস!
আর তখনই শুরু হবে তোমাদের সেই
আগের মতো বাংলা-প্রেমের নাটক!
আর তোমাদের এই বাংলা-নাটকের মহড়া
আর কতদিন চলবে? আর কতদিন?
তোমরা বেশ ভালো অভিনয় জানো,
তাইতো বছর-বছর মেতে আছো অভিনয়ে,
আর তাই, আজও তোমাদের বুকের ভিতরে
গড়ে ওঠেনি বাংলা-প্রেম কিংবা দেশপ্রেম,
আর তোমাদের হৃৎযন্ত্রে ঠাঁই পায়নি বাংলাভাষা
বাইরে তোমাদের বাংলা-প্রেমের সমুদ্র-জোয়ারে
লোকালয় ভেসে যাচ্ছে,
আর রাশি-রাশি ফেনায় ডুবে যাচ্ছে মানুষজন!
এই তো তোমাদের লোকদেখানো ভাষাপ্রেমের নমুনা।
তোমরা আর কত খেলবে আমাদের ভাষা নিয়ে?
আর কে দিয়েছে তোমাদের এই অধিকার?
আজও তোমরা হয়ে আছো আপাদমস্তক-ভণ্ড!
আর তোমাদের কণ্ঠেই অবিরাম বাজছে
বাংলা-প্রেমের প্রহসনমূলক গান,
নিজের জন্মদাত্রী-মাকে ‘মা’ বলে
ডাকতে বুঝি তোমাদের আজ খুব লজ্জা করে?
আর নিজের মাকে বুঝি তোমাদের লাগে না ভালো!
বিদেশী মাকে তোমরা সবাই মিলে করেছো কবুল
তবুও তোমরা দাবি করছো এই মায়েরই সন্তান বলে!
তোমাদের এই স্পর্ধা দেখে লজ্জিত হই প্রতিমুহূর্তে
আর তোমাদের সীমাহীন ধৃষ্টতা দেখে
চমকিত হই বারবার।
বাংলা মায়ের পুত্র হলে তোমরা
পদচুম্বন কর এখনই বাংলার,
আর দূর করো তোমাদের
৪৫ বছরের সঞ্চিত এই ভণ্ডামি!
অনেক করেছো তোমরা—
ভাষার নামে নিজেরা হয়েছো লাভবান
আর ভাষা হয়েছে বঞ্চিত,
স্বাধীন দেশে এখনও নির্বাসিত বাংলা!
তোমাদের পায়জামা-পাঞ্জাবির
ভাঁজগুলো রেখে দাও অক্ষত,
আর মাত্র একটা দিন বাকী
তারপর তোমরা নেমে পড়বে রঙ্গমঞ্চে!
আর বক্তৃতার ধূলা উড়াবে রেসের ঘোড়ার মতো,
আর শুধু এরই একদিন পরে আবার তোমরা
ভালোবাসা জানাবে তোমাদের ইংরেজি শব্দে!
আর ছেলে-মেয়েদের পড়তে বলবে
বেশি-বেশি ইংরেজি।
এই দেশে এখনও ইংরেজি ছাড়া চাকরি হয় না!
আর কথায়-কথায় ইংরেজি না বললে
স্মার্ট হওয়া যায় না—
আর সস্তা-পাণ্ডিত্য জাহির করার জন্য
লোকসমাজে চাই শুধু ইংরেজি, ইংরেজি, ইংরেজি...
তবুও শুনে রাখো তোমরা মূর্খজীব একটি কথা:
এই বাংলায় যে যতো অক্ষত-মূর্খ আজ
সে ততো বেশি প্রয়োগ করছে ইংরেজি ভাষা!
সাইয়িদ রফিকুল হক
মিরপুর, ঢাকা, বাংলাদেশ।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
ম্রীনময় সরকার ০৪/০৩/২০১৭আপনাকে ধন্যবাদ আমাদের জাগ্রত করার জন্য
-
ডঃ সুজিতকুমার বিশ্বাস ০২/০৩/২০১৭অনেক কথা। শুভেচ্ছা।
-
রাবেয়া মৌসুমী ০২/০৩/২০১৭খুব সুন্দর েলেখেছন,খািট সত্যকথা,
-
আব্দুল হক ০১/০৩/২০১৭নাইস! লং ! ।গুড!
-
জহির মাহমুদ ০১/০৩/২০১৭কিছুটা সত্য ' এই বাংলায় যে যতো অক্ষত-মূর্খ আজসে ততো বেশি প্রয়োগ করছে ইংরেজি ভাষা! ' সামগ্রিক উপস্থাপনা অনবদ্য ....
-
রবিউল ইসলাম রাব্বি ০১/০৩/২০১৭সময় উপযোগী কাব্য রচনা...
তারুণ্যের অঙ্গীকার নতুন করে সাড়া পাক প্রতি সাহসী সমস্যরে...
অসাধারন সর্বপরি
শ্রদ্ধেয় কবিকে আমন্ত্রণ আমার কবিতা পাতায়