www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

অচেনা-সুন্দরীদের দেখে হাসবেন না এবং তাদের প্রেমেও পড়বেন না



অচেনা-সুন্দরীদের দেখে হাসবেন না এবং তাদের প্রেমেও পড়বেন না।
সাইয়িদ রফিকুল হক

অচেনা যেকোনো জিনিসই খারাপ। অচেনা-মানুষ খারাপ। অচেনা-জায়গা খারাপ। আর অচেনা জায়গায় মানুষ চিনতে ভুল করলে আপনি ভয়ানক বিপদে পড়ে যেতে পারেন। আর এই বিপদের কোনো মাত্রা নেই। অচেনা-মানুষমাত্রই আপদবিপদের সূচনা! আর সেটা যদি অচেনা-জায়গায় কোনো অচেনা-সুন্দরী হয়, তাহলে আপনার বিপদের মাত্রা কীরূপ হবে, আশা করি সেটা বুঝতে পারছেন। তাই, সতর্ক থাকবেন।
বিপদ এখানেই শেষ নয়। সবচেয়ে বড় বিপদ হলো আজকালকার পথেঘাটে দেখা যেকোনো অচেনা-সুন্দরী! এই অচেনা-সুন্দরী থেকে খুব সাবধান! আর এদের বাইরের রূপটা দেখে কারও কাছে তা প্রস্ফুটিত-গোলাপের মতো মনে হলেও আসলে কিন্তু তা নয়। গোলাপে কাঁটা আছে, আর অচেনা-সুন্দরীতেও আছে বিস্তর ঝামেলা-কাঁটা। চোখের দেখায় কাউকে ভালো লাগলেই ভালোবাসা হয়ে যায় না। কেউ আপনাকে দেখে রাস্তাঘাটে, বাসে-ট্রেনে, লঞ্চে-ইস্টিমারে-ফুটপাতে একটু হাসতে পারে। আর এই হাসির অর্থ কিন্তু প্রেম বা ভালোবাসা নয়। অচেনা-সুন্দরীরা আজকাল কারণে-অকারণেও হাসে। কারণ, তারা বুঝে গেছে, এই দেশে একশ্রেণীর পুরুষ আছে, যারা সুন্দরী-মেয়ে দেখলে তাড়ি-খাওয়া মানুষের মতো একমুহূর্তে মাতাল হয়ে যায়। এরা একনজরে, চোখের পলকে, মুহূর্তের মধ্যে যেকোনো সুন্দরীকে দেখে তাকে হস্তগত করার জন্য আধাপাগল থেকে পুরাপাগল পর্যন্ত হয়ে যেতে পারে। এমনকি এরকম আধাপাগল অনেকেই হয়ে গেছে। গুরুবচন শোনা যায়, ঠকলে নাকি বাপের কাছেও বলতে নেই। তাই, অনেকে ঠকে বলে, আবার অনেকে ঠকে কাউকে কিছু বলে না। নিজের ভিতরে যন্ত্রণার আগুন চেপে-চেপে রাখে। আর এই আগুনে পুড়ে-পুড়ে সে হয় মহান প্রেমিক মজনু!
মজনুর একটা লক্ষ্য-উদ্দেশ্য ছিল। কিন্তু এদের কোনো লক্ষ্য-উদ্দেশ্য নেই। শেষকালে এরা আধাবাউল হয়ে তাবলীগের নামে চিল্লা দিয়ে পড়ে থাকে। সুন্দরীদের পাল্লায় পড়ে আজকাল অনেকে লোকদেখানো-ধার্মিক হচ্ছে। এই দেশে এখন ধার্মিকের চেয়ে ধার্মিক-পদে অভিনয়কারীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি! এই দেশের মতো নানারকম ভন্ড পৃথিবীর আর-কোনো দেশে দেখতে পাওয়া যায় না বলে আমার বিশ্বাস।

যাক, কথা বলছিলাম অচেনা-সুন্দরীদের নিয়ে। অবশ্য এগুলো সবই সেই অচেনা-সুন্দরীকেন্দ্রিক। আমাদের সমাজে মানুষ এখনও পুরাপুরি সভ্য হয়নি। সে মানুষও হতে চায়, ধার্মিকও হতে চায়, আবার সে মাঝে-মাঝে ভণ্ডও হতে চায়। বিশেষ করে যৌবনে কিংবা একটু দূর-যৌবনে হাতের কাছে সুন্দরীদের নাগাল পেলে সে যেন সুন্দরবনের রয়েল বেঙ্গল টাইগার হয়ে উঠতে চায়। আর এইসময় তার কোনো হিতাহিতজ্ঞান থাকে না। সে একনিমিষে পশু হয়ে যেতে দ্বিধাবোধ করে না। সে পশু হয়েও আবার তার পশুত্বের পক্ষে জোরালো যুক্তি-উত্থাপন করে থাকে। আজকাল অনেক শিক্ষিত-অশিক্ষিত সুন্দরী-মেয়েদের একাধিক বয়ফ্রেন্ড-দেহফ্রেন্ড-বেডফ্রেন্ড-পার্টটাইমফ্রেন্ড-বিজনেসফ্রেন্ড-ক্লাসফ্রেন্ড ইত্যাদি রয়েছে। আর কেউ যদি এই আছে বা রয়েছে কথাটা সরাসরি বিশ্বাস করতে না চান, তাহলে, অন্তত বিশ্বাস করুন যে, তাদের এসব থাকতে পারে। অহেতুক একজন অচেনা-সুন্দরীর জন্য আপনি কেন নিজের জীবনে আচমকা একটা সর্বনাশা ভয়াল-ঝড় কিংবা ঘূর্ণিঝড় ডেকে আনবেন?

এই সমাজের অনেক সুন্দরী যে কার নিয়ন্ত্রণে তা সহজে বোঝা যায় না। এদের মালিক কে তা সহজে জানা যায় না। সুন্দরীরা এখন নানাজালে নানাফাঁদে জড়িত। এরা এদের রূপ-যৌবনকে একেবারে বোতল উপুড় করে তেল ঢেলে নিঃশেষ করার মতো শূন্য করে অর্থউপার্জনে ব্যস্ত। আর এরা অর্থের বিনিময়ে নিজেকে মানুষের কাছে বিলিয়ে দিচ্ছে। এরা ভবিষ্যৎ বলতে বোঝে শুধু টাকা, টাকা, আর টাকা। তবে এদের কাছে টাকার চেয়েও বড় সোনা-ডলার-ইউরো-কেডিদিনার-পাউন্ড ইত্যাদি।
লোভ যে মানুষকে কোথায় নিয়ে যেতে পারে, তা এই যুগের বিভ্রান্ত-মানুষদের নিজের চোখে না দেখলে কারও বিশ্বাস হবে না। মানুষ এখন বোকার মতো নিজের দেহটাকে বিলিয়ে দিচ্ছে অর্থগৃধ্ন-পশুদের হাতে। আর পশুরা মজা করে লুটে নিচ্ছে রূপযুবতীদের কুমারীত্ব! বনের পশু ভালো। তবুও মানুষ-নামধারী এইসব মানুষ ভালো নয়।
বাইরে এখন মানুষের পোশাক দেখলে আগেকার যুগের রাজাবাদশাহরাও লজ্জা পেতো। পোশাকেআশাকে মানুষ এখন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে একেবারে সেরা অবস্থানে এসে দাঁড়িয়েছে। এই মানুষদের পোশাকি চেহারা দেখলে কেউ ভাবতেই পারবে না যে, এই মেয়েটি বা এই ছেলেটি এতো-এতো কর্দমাক্ত!
এবার জেনে নিন অচেনা-সুন্দরীরা কেন বিপজ্জনক:

১. সুন্দরীদের সঙ্গে মাস্তান-গডফাদারদের ওঠাবসা, চলাফেরা, মেলামেশা! আর তাদের সঙ্গে রয়েছে সুন্দরীদের সাংঘাতিক ঘনিষ্ঠতা। আপনি এই অচেনা-সুন্দরীর খপ্পরে পড়লে বেঘোরে আপনার প্রাণটা চলে যেতে পারে। তাই, খুব সাবধান!
২. সুন্দরীরা এখন মাদকসেবী, আর সহজে অঢেল টাকা-রোজগারের আশায় তারা বুঝেশুনে, জেনেশুনে মাদক-কারবারের সঙ্গে জড়িত। অনেক সুন্দরীই এখন ইয়াবা-সেবনে ব্যস্ত।
৩. সুন্দরীদের বুদ্ধি কম, হিতাহিতজ্ঞান কম। কিন্তু মানুষ-বশ করার যোগ্যতা বেশি। তাই, আপনি যেকোনো অচেনা-সুন্দরীর নাগালের বাইরে থাকুন।
৪. সুন্দরীরা রাতারাতি নিজেকে দেশের কেউ একটা ভাবতে পছন্দ করে। আর তাই, এরা সিনেমা-নাটকে আর মডেলিংয়ে অভিনয় করার নামে নিজেকে হারিয়ে ফেলে। আর এইসব হারানো মানুষকে খুঁজে পাওয়া খুবই কঠিন। আপনি এখন থেকে নিজেকে আবিষ্কার করুন।
৫. এদের পরিচর্যার জন্য সবসময় একাধিক মানুষ থাকে। আর এদের সঙ্গে থাকে কয়েকজন মাস্তান কিংবা আধামাস্তান কিংবা পাতিমাস্তান। আর এই লোকগুলো একেবারে বেজন্মা। বুঝতেই পারছেন, আপনার বিপদ কতখানি।
৬. মনে রাখবেন, এই দুনিয়ায় ফুল, শিশু আর সুন্দরীদের বন্ধুর কোনো অভাব হয় না।
৭. সুন্দরীরা অসৎচরিত্রের মানুষকে বেশি ভালোবাসে। কারণ, তারা (অসৎচরিত্রের লোকগুলো) হয় ডাকাবুকা আর সুন্দরীর জন্য নিবেদিতপ্রাণ। তাই, আপনি সাবধান।
৮. এখনকার অনেক অচেনা-সুন্দরীই প্রেমের অভিনয় করে থাকে। এরা কখনও ভালোবাসতে জানে না। এরা হয় দারুণ অভিনয়শিল্পী।
৯. এইসব অচেনা-সুন্দরীর বিয়েশাদীর কোনো ঠিক-ঠিকানা নাই। এদের একাধিক স্বামী থাকতে পারে। আর এদের সঙ্গে আপনি জড়িয়ে পড়লে আপনার প্রাণটা কোনোরকমে আপাততঃ বেঁচে গেলেও পরবর্তীতে কিন্তু বাঁচতে পারবেন না। কারণ, এক্ষেত্রে আপনার এইডস-সহ বিবিধ জটিল ও কঠিন রোগে আক্রান্ত হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। তাই, সময় থাকতে অচেনা-সুন্দরী থেকে এখনই সাবধান হউন।
১০. এদের স্টাইল দেখে কখনও মুগ্ধ হবেন না। এরা তথাকথিত “শিক্ষিতও” হতে পারে। তাই বলে একটুও চমকাবেন না। আর সবসময় মনে রাখবেন: এরা শুধু প্রেমের অভিনয় করতে জানে। কিন্তু কাউকে ভালোবাসতে পারে না। আপনার নিজের জীবনকে আপনি ভালোবাসুন।
একজন অচেনা-সুন্দরীর সঙ্গে আপনার যেকোনো জায়গায় বা স্থানে দেখা হতে পারে। আপনি খুব সতর্কতার সঙ্গে তাকে এড়িয়ে চলুন। সে কখনও-কখনও বিপদে পড়ার অভিনয় করতে পারে। আবার কখনও-কখনও একজন সহজ-সরল-ভালোমানুষ বা ভালো-ছেলে খুঁজে তাকে বিয়ে করার কথা বলতে পারে। কিন্তু এতে আপনি একটুও ঘাবড়াবেন না। আর সামান্যতম বিচলিতও হবেন না। সে আপনাকে ঘায়েল করার জন্য আপনাকে শুনিয়ে-শুনিয়ে এসব বলতে পারে। আপনি বুদ্ধিমান হলে তখনই সটকে পড়বেন। এরা বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা-সহ সর্বত্র ছড়িয়েছিটিয়ে রয়েছে। আর এরা আহামরি ধরনের কিছু নয়। এদের পিছনে ছুটে আপনি আপনার নিজের জীবন ও পরিবারের ধ্বংস ডেকে আনবেন না। আর আপনার যা আছে তা-ই নিয়ে সদাসর্বদা সন্তুষ্ট থাকুন। আর এতেই আপনার সারাজীবনের মঙ্গল।

এইসব অচেনা-সুন্দরীর বিচরণের স্থান:
এরা দেশের প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে, মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানীতে, প্রাইভেট টিভি-চ্যানেলে, প্রাইভেট ব্যাংকে, কর্পোরেট অফিসে, প্রতিষ্ঠিত ফার্মে, বিভিন্ন এনজিওতে, আর সরকারি বিবিধ প্রতিষ্ঠানে ছড়িয়েছিটিয়ে রয়েছে। এরা টাকার কাছে বিক্রি হতে ভালোবাসে। এরা কারও ভালোবাসার উপযুক্ত নয়।

রাস্তাঘাটে অচেনা-সুন্দরীরা ইয়ারকি-ফাজলামি করতে ভালোবাসে:
সুন্দরীরা মনে করে থাকে, তার রূপের নেশায় সবাই বিমোহিত। তাই, সে যা করবে তা-ই তাকে মানাবে। সে প্রেমের অভিনয় করে, কিন্তু ভালোবাসে না। কারণ, তার একাধিক পাত্র রয়েছে। সে যে-কাউকে আকর্ষণ করে মজা পায়। ধোঁকা দিতে তার ভালো লাগে। আর সে কাউকে ধোঁকা দিতে ভালোবাসে। এগুলো এসময়কার সুন্দরীদের একটা খেলামাত্র।
আরও মনে রাখবেন: অচেনা-সুন্দরীরা আপনাকে ভালোবাসার জন্য রাস্তাঘাটে হাসেনি। সে আপনার সর্বনাশ করার জন্য এক-টুকরো-হাসি উপহার দিয়ে আপনাকে বড়শীর মাছ বানাতে চাইছে। আর সে আপনার সঙ্গে প্রেম-প্রেম খেলে আপনাকে ঘায়েল করে আনন্দ পেতে চাইছে। আর আপনি তাকে কেন এই সুযোগ দেবেন? অতএব, সময় থাকতে বুদ্ধিমান এখনই সাবধান।

সাইয়িদ রফিকুল হক
মিরপুর, ঢাকা, বাংলাদেশ।
বিষয়শ্রেণী: সমসাময়িক
ব্লগটি ৬৯০ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ১৪/০৭/২০১৬

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

  • শাফিউল কায়েস ২৭/০৫/২০১৮
    ভালো লাগলো
  • পরশ ১৯/০৭/২০১৬
    ভাল
  • Prio Via,
    ধরা খাইছুইন নাতো?

    ধ ন্য বা দ, সচেতন করার জন্য
  • সজীব ১৪/০৭/২০১৬
    thanks for your advice.
 
Quantcast