www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

আমার শৈশব - ৩

আমার শৈশব - ৩
September 1, 2013 at 11:43pm

মাঝে মাঝেই ঝড় হতো ভৌগোলিক কারনে।

ঝড়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে আনন্দের আর সীমা থাকতো না। সেদিনের জন্য পড়াশোনার ছুটি। হ্যারিকেন বা মোমের আলোয় রাতের কাজ কর্ম সারতেন মা। আর আমরা এ ফ্ল্যাট ও ফ্ল্যাটের ছোটরা মিলে আইস-বাইস খেলায় মেতে উঠতাম।

পরদিন সকালে দেখতাম ঝড়ের ধ্বংস চিহ্ন। বড় হয়ে বুঝেছি এক একটা ঝড় কত ক্ষত চিহ্ন এঁকে দিয়ে যায় কত পরিবারে। সত্তরে উপকূলবর্তী অঞ্চলে যে সামুদ্রিক জলচ্ছাস হয়েছিলো সেটার স্মৃতি বড় বেদনাদায়ক। ঠিক সংখ্যা টা মনে নেই... সেই সময় অনেক প্রাণহানি হয়েছিল। সারা পৃথিবী থেকে ত্রান এসেছিল। কিন্তু সেই আগের মত কি আর সব ফিরে পাওয়া যায়। একবার চলে গেলে তা যে আর ফেরেনা।

এতো গেলো ঝড়ের কথা। একবার আমাদের সে মস্ত মাঠটা পুরো সাদা হয়ে গিয়েছিলো শিলাবৃষ্টির বরফে। সবুজ ভেজা মাঠে মার্বেল আকৃতির বরফে কি যে এক অপরূপ দৃশ্য দেখেছিলাম! কোনটা ন্যাপথলিন গুলির মত, কোনটা মুক্তার মত!

বাবা অনুমতি দিয়েছিলেন শিল কুড়িয়ে আনতে। দৌড়ুতে দৌড়ুতে মাঠে নেমে বাটি ভরতি করে কুড়িয়ে আনলাম সেই মনি মুক্তো। একটা গ্লাসের মধ্যে একটা পলতে মতন কাপড় রেখে তাতে কিছুটা সে শিল রেখে চাপ দিলেন... তারপর সেই পলতে টা ধরে টান দিতেই ... অবাক বিস্ময়ে দেখলাম একটা আস্ত বরফের গ্লাস!
অবশ্য আনন্দটা বেশীক্ষণ রইল না! একটু পরেই সেটা গলে জল হয়ে গেলো।

আর জমা জলের কথা তো আগেই বলেছি। তবুও বৃষ্টি পড়লেই সেটাতে ভেজা আর মায়ের হাতে মার খাওয়া এক সাথে হতই হতো। আর তারপর তো জ্বর হয়টাও স্বাভাবিক ছিল এবং অবধারিত স্কুল কামাই!

বিকেল বেলা বৃষ্টি পড়লে আর একটা ঘটনা ঘটত। বৃষ্টি থামলেই কোথা থেকে চীনাবাদামওয়ালা হাঁক দিতে দিতে বেড়িয়ে পড়ত। একদম গরম গরম ভাজা সে বাদাম। খোসা ছাড়িয়ে বিকেল বেলা চলত বাদাম পর্ব।
আর বন্যার সাথে তখনও আমার পরিচয় হয়নি। শুনতাম , কাগজে দেখতাম। নদীর ভাঙনও তাই।

জল ই জীবন আবার জলই কত রূপে ফিরে ফিরে আসে।
বিষয়শ্রেণী: অভিজ্ঞতা
ব্লগটি ১২৩৭ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ২৫/০৯/২০১৩

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

  • সৌম্যকান্তি জানা ২৫/০৯/২০১৩
    শৈশবের অনুভূতিগুলো অসাধারন! অবিস্মরনীয়। সবার জীবনেই কম-বেশি এই সব সুখ স্মৃতি আছে। এই লেখা পড়ে ফেলে আসা রঙিন দিনগুলোকে আবার চোখের সামনে দেখতে পেলাম। নস্টালজিক হয়ে পড়লাম। ধন্যবাদ।
    • স্বাতী বিশ্বাস ২৭/০৯/২০১৩
      সত্যি ই সবার শৈশবে কিছু না কিছু রঙিন স্মৃতি থাকে। সেগুলো আমাদের বড় বেলার একঘেয়েমিপনা কাটাবার এক আশ্চর্য মহৌষধি। এটা না থাকলে আমরা ঠিক থাকতে পারবো না।
  • মায়ের মার না খেলে শৈশবই বৃথা
    • স্বাতী বিশ্বাস ২৭/০৯/২০১৩
      ঠিক। মায়ের মার ই তো আসল শিক্ষা! শুধু আদরে তো বাঁদর তৈরি হয়।
      • হাঃহাঃহাঃ খাটি কথা বলছেন। আমার ছোট বেলার কিছু মার খাওয়ার কথা মনে পড়ছে। আমার মত মার খাইছেন বলে মনে হয়না
        • স্বাতী বিশ্বাস ২৮/০৯/২০১৩
          সে তুলনা আর এখন কি করে করবো? মানে তাহলে তো আমার মা আর আপনার মা আমাদের পেটাবেন আর একজন রেফারী স্টপ ওয়াচ নিয়ে দেখবেন যে কে কত মার খেতে পারে। দারুণ ভাবনা না? টি ভি র টি আর পি বেড়ে যাবে , সারা বিশ্বের লোক আমাদের মার খাওয়া দেখবেন, কত স্পন্সর আসবেন! শুধু মায়ের হাতে মার খেয়ে যেতে হবে ! হা হা হা ঃ)
          • গ্রামীন ফোনরে বললে স্পন্সর দিতে পারে। আর প্রথম আলো তো অবশ্যই আসবে "মার খেয়ে বদলে যান স্লোগানে" করবেন নাকি এমন কিছু? যোগাযোগ করবেন স্পন্সরদের?
            • স্বাতী বিশ্বাস ২৮/০৯/২০১৩
              হ্যা! চলুন শুরু করাই যাক! :)
              • (Y)
                • স্বাতী বিশ্বাস ০১/১০/২০১৩
                  কাজ কিছু এগুলো?
  • বিশ্বজিৎ বণিক ২৫/০৯/২০১৩
    শিলা বৃষ্টির কথা বলা তে , আমার শিলা বৃষ্টির কথা মনে পড়ে গেলো। এভাবে শিল কুড়িয়ে জমাট করে আইচক্রিম করে খেতাম। খুব ভালো লাগলো , শুভেচ্ছা থাকলো ।
    • স্বাতী বিশ্বাস ২৭/০৯/২০১৩
      শিলা বৃষ্টির রূপ আজ কাল খুব কম ছেলেমেয়েদের দেখা হয়। পরিবেশ দূষণ আমাদের অনেক কিছুই কেড়ে নিয়েছে। আপনিও শুভেচ্ছা নেবেন।
  • Înšigniã Āvî ২৫/০৯/২০১৩
    খুব সুন্দর মায়াবী লেখা ।
  • সুন্দর বর্ণনা। আত্মজীবনী হিসেবেও পরে কাজে লাগবে
    • স্বাতী বিশ্বাস ২৭/০৯/২০১৩
      অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। ভাল লাগলো। আত্মজীবনী হবে কিনা জানিনা। লিখে পোস্ট করছি আর আপনাদের উৎসাহে পরের টা ও লিখছি। :)
  • ইব্রাহীম রাসেল ২৫/০৯/২০১৩
    --শব্দের ব্যবহার ভালো লেগেছে স্বাতী---
 
Quantcast