www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

তিনটি লেখা আমার

।। ১লা বৈশাখকে ঢাকা বা উপ-শহরের শোকেসে বন্দি করা যাবে না ।।
সম্প্রতি কালীগঞ্জের তুমিলিয়া গ্রামবাসীর ১লা বৈশাখ উদযাপন আমাদের মুগ্ধ করেছে। আমি এই ‍উদ্যোগের প্রশংসা ও সাধুবাদ করছি এবং এই উদ্যোগের সাথে রয়েছি । গ্রামীণ পর্যায়ে ১লা বৈশাখ উদযাপন তেমন একটা চোখে পড়ে না। তুমিলিয়া গ্রামবাসী এ অসাধ্য সাধন করে দেখিয়েছে। সাংস্কৃতি ঐতিহ্য ও ধারাবাহিকতা রক্ষার্থে আমাদের এই ধরনের কাজ করতে হবে। আমরা কেন যেন ১লা বৈশাখকে ঢাকা বা উপ-শহরে উদযাপন করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছি। বৈশাখ পালনকে যেন শোকেসে বন্দি করে রেখেছি। এই উদযাপন গ্রামীণ পর্যায়ে ছড়িয়ে দিতে হবে। এতে করে ভালোবাসার বন্ধন সুদৃঢ হবে। কমবে হানাহানি, হত্যা, সংখ্যালঘু অত্যাচার। আর যদি তা না হয় তবে আমাদের সংস্কৃতি ও জাতি সত্ত্বার বিকাশ হবে না। মানুষের হৃদয় মন্দিরে ভালোবাসার বিশাল আকাশ স্থান করে নিতে পারবে না। মুখ থুবড়ে পড়ে থাকবে আমাদের জাতি!!
(২)
।। একটি ভালো ‍উদ্যোগ ।।
গত ১৪ এপ্রিল, ঢাকার সাত রাস্তার পাশের একটি দেয়াল লিখনে আমার চোখ আটকে গেল। তা ছিলো ‘ভালো কাজের হোটেল।’ এখানে বিনা মূল্যে দুপুরের খাবার পরিবেশন করা হয়। তবে শর্ত একটি, তা হল - একটি ভালো কাজ করতে হবে। এর অবস্থান - হাতিরঝিল এফডিসি (সাতরাস্তা)। এটি একটি প্রশংসনীয় ‍উদ্যোগ। বাংলাদেশে ভালো কাজও অনেক হয়। এটা তার একটি প্রকৃষ্ট উদাহরণ। আমরা বাংলাদেশে বসবাস করে অনেকেই বলি, বাংলাদেশে এটা নাই, সেটা নাই, এদেশে থাকা যাবে না ইত্যাদি, ইত্যাদি। স্বদেশপ্রীতি একেবারে নেই বললেই চলে আমাদের মধ্যে। এই ধরনের মানুষদের জন্য ভালো লাগার একটি বিষয় হতে পারে এই ‘ভালো কাজের হোটেল।’
আমি আবারও এই ‍উদ্যোগের প্রশংসা করছি। আসুন আমরা সবাই এমনি ভাবে প্রতিদিন অন্তত একটি করে ভালো কাজ করি। তাহলে এই বাংলাদেশ স্বর্গে পরিণত হতে বেশী সময় লাগবে না।
(৩)
।। উল্লেখ করার মত একটি সত্য ঘটনা ।।
বাংলাদেশে জন্মে অনেকে বাংলাদেশকে গাল-মন্দ করে। তারা বাংলাদেশে জন্ম গ্রহণ করে মোটেও খুশী নয়। এ দেশে জন্ম যেন তাদের আজন্ম পাপ। তারা সব সময় পাখা মেলে আমেরিকা বা কানাডায় যেতে চায়, আস্তানা গড়তে চায়। কিন্তু অনেকের ভাগ্যেই তা জুটে না। আবার অনেকেই আছে যারা মাতৃভূমি বাংলাকে ছেড়ে যেতে চায় না, অথচ তাদের ভাগ্যেই জুটে আমেরিকা কানাডার টিকেট ! এটাই তো দুনিয়ার নিয়ম ! মানুষ যা চায় তা পায় না। আর যা পায় তা ভুল করে চায়।
যারা বাংলাদেশে থাকা না থাকার দোলাচলে আছেন তাদের জন্য আমি একটি সত্য ঘটনা বলছি যা তাদের বাংলাদেশে থাকাটাকে কিছুটা হলেও আনন্দদায়ক করতে পারে।
কিছুদিন আগে আমি মগবাজারের একটি ফার্মেসিতে যাই ঔষুধ ক্রয় করার জন্য। আমাকে দোকানদার চাহিবা মাত্র ঔষধ দিয়ে দেয়। ঔষুধের দাম ছিলো ৬০ টাকা। আমার কাছে ভাংতি না থাকার কারণে আমি ঔষুধের দাম বাবদ ৫০০ টাকার নোট দেই। সেই ফার্মেসিতেও ভাংতি ছিলো না। তাই আমি ঔষধটি ফেরৎ দিতে চাইলাম। কিন্তু দোকানদার আমার নিকট থেকে সেই ঔষধটি কোনভাবেই ফেরৎ নিলো না। তিনি বলেছেন, যা দিয়েছি তা মন থেকেই দিয়েছি, ফেরৎ নেয়ার জন্য না। আমি বললাম, আপনি আমাকে চেনেন না, তাছাড়া আমি এই রাস্তা দিয়ে বেশী যাওয়া-আসা করি না, তাহলে পরে কিভাবে আমি এই টাকা আপনাকে ফেরৎ দিবো। উনি বললেন, এই টাকার উপর আমার কোন দাবী নাই। আপনি মনে চাইলে দিয়েন। না দিলেও কোন দাবী নেই। আমি অবাক হয়ে তার দিকে তাকিয়ে রইলাম। এখনো বাংলাদেশে ভালো মানুষ আছে ! এটাই তার উদাহরণ। পরে লোকমুখে শুনেছি, তিনি প্রতিদিন অনেক মানুষকে বিনা মূল্যে ঔষধ দিয়ে সহযোগিতা করেন। জয় হোক এরুপ হৃদয়বান মানুষদের!
বিষয়শ্রেণী: অভিজ্ঞতা
ব্লগটি ৩৩১ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ১৬/০৪/২০২২

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast