।। নারায়ণগঞ্জের অগ্নিকাণ্ড এবং পদদলিত মানবতা।।
বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার কাছে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে একটি খাদ্য প্রস্তুতকারী কারাখানা হাসেম ফুডস লিমিটেড। জুস, ক্যান্ডি, বিস্কুট, লাচ্ছা সেমাইসহ বিভিন্ন খাদ্যপণ্য তৈরি হতো এই কারখানায়। গত বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই ’২১) এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড সংঘটিত হয় এই কারখানায়। এতে ৫২ জন শ্রমিক পুড়ে অঙ্গার হয়ে যায়। আর পদদলিত হয় মানবতা। অনেক শ্রমিকের চেহারা আগুনে পুড়ে বিকৃত হয়ে গলে যায়। ফলে ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে তাদের পরিচয় সনাক্ত করতে হবে। বহু শ্রমিক এখনও নিখোঁজ রয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। প্রায় ৫ হাজার শ্রমিক দিয়ে চালানো হত এই কারখানাটি।
অত্যন্ত দু:খের বিষয় হল কারখানা ভবনের চারতলায় ছাদে ওঠার সিঁড়ির মুখের দরজাটিসহ বিভিন্ন ফটক তালা বন্ধ থাকার কারণে অনেক মানুষ ছাদে উঠে বা রুম থেকে বের হয়ে প্রাণরক্ষা করতে পারেননি। কেন এই অবহেলা?
শ্রমিকদের মৃত্যুতে মালিকপক্ষ, জেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ক্ষতিপূরণ হিসেবে কিছু টাকা প্রদান করেন। এটা আগেও দেখেছি। কিন্তু মানুষ কি আর ফিরে পাওয়া যায়? মানুষের জীবনের মূল্য কি টাকা দিয়ে পরিমাপ করা যায়? মৃত্যুর পর ক্ষতিপূরণ না দিয়ে সেই টাকা দিয়ে ক্ষতি যাতে না হয় সেই ব্যবস্থা করলে কতই না ভালো হয়।
এই কারখানায় বিভিন্ন কেমিক্যাল, প্লাষ্টিক, কাগজসহ অনেক দাহ্য পদার্থ ছিলো বলে বিশেষজ্ঞগণ জানিয়েছেন। ফলে আগুণের তীব্রতা অনেক বেশী ছিলো এবং ফলশ্রুতিকে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান বেশী হয়েছে। তাছাড়া এই কারখানায় উৎপাদন থেকে শুরু করে লেবেলিংসহ বাজারজাতকরণের পূর্ব পর্যন্ত সব ধরনের কাজ করা হত। একই জায়গায় বহুবিধ কাজ করার ফলে আগুন ধরার ও ক্ষতির সম্ভাবনাটাও প্রকট হয়েছে।
ঐ কারখানায় অনেক শিশু শ্রমিক ছিলো বলে খবরে প্রকাশ করা হয়েছে। দেশে শিশু শ্রম নিষিদ্ধ থাকার পরেও কিভাবে সেখানে শিশু শ্রমিক কাজ করেছে তা দেখার বিষয় রয়েছে।
অন্যান্য বারের মত এই অগ্নিকাণ্ডের জন্যও তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। তদন্ত কমিটি বিভিন্ন সুপারিশসমূহসহ প্রতিবেদন দিবে। পূর্বের তদন্ত কমিটিগুলোও ঠিক একইভাবে সুপারিশমালা দিয়েছিলো। কিন্তু এর বাস্তবায়ন তেমন একটা হয়নি বলে আমাদের দেশে অগ্নিকাণ্ডের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং মানুষ মারা যাচ্ছে অবাঁধে। একটি তদন্ত প্রতিবেদনের সুপারিশমালাও যদি বাস্তবায়িত হত তবে বাংলাদেশে অগ্নিকাণ্ড উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যেত।
এখানে বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া কিছু ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের উল্লেখ করছি। ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ সালে পুরান ঢাকার চকবাজারের অগ্নিকাণ্ডে মৃতের সংখ্যা ৭০ জন। এফআর টাওয়ারে (ফারুক রূপায়ণ টাওয়ার) ২০১৯ সালের ২৮ মার্চ অগ্নিকাণ্ডের ২৬ জনের মৃত্যু হয় এবং ৭০ জন আহত হন। ২০১৭ সালের ৪ জুলাই গাজীপুরে একটি পোশাক কারখানার পেছনে বয়লার বিস্ফোরণে ১৩ জন মানুষ প্রাণ হারান ৷ টঙ্গীতে একটি সিগারেট তৈরির কারখানায় বয়লার বিস্ফোরণে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ২০১৬ সালের ১০ সেপ্টেম্বর প্রাণ হারান ৩১ জন ৷ ২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর আশুলিয়ার তাজরিন ফ্যাশন ফ্যাক্টরির ৯ তলা ভবনে আগুন লেগে প্রাণ হারান ১১২ জন। ২০১০ সালের ৩রা জুন ঢাকার নিমতলীতে অগ্নিকাণ্ডে প্রাণ হারান ১২৪ জন। অগ্নিকাণ্ড ছাড়াও ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সাভারে পোশাক কারখানা রানা প্লাজার ৯ তলা ভবনটি বিধ্বস্ত হয়ে প্রাণ হারান ১১শ’রও বেশি মানুষ, আহত হন অন্তত ২ হাজার৷
এভাবে আর কত মানুষ মারা যাবে? এ বিষয়গুলো দেখভাল করার দায়িত্ব যাদের তারা কোথায়? যাদের দায়িত্বে অবহেলার জন্য এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে তাদের অবশ্যই বিচারের আওতায় আনতে হবে। তা না হলে মানবতা এভাবে পদদলিত হবে অনাদিকাল, এই বাংলাদেশে ।।
অত্যন্ত দু:খের বিষয় হল কারখানা ভবনের চারতলায় ছাদে ওঠার সিঁড়ির মুখের দরজাটিসহ বিভিন্ন ফটক তালা বন্ধ থাকার কারণে অনেক মানুষ ছাদে উঠে বা রুম থেকে বের হয়ে প্রাণরক্ষা করতে পারেননি। কেন এই অবহেলা?
শ্রমিকদের মৃত্যুতে মালিকপক্ষ, জেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ক্ষতিপূরণ হিসেবে কিছু টাকা প্রদান করেন। এটা আগেও দেখেছি। কিন্তু মানুষ কি আর ফিরে পাওয়া যায়? মানুষের জীবনের মূল্য কি টাকা দিয়ে পরিমাপ করা যায়? মৃত্যুর পর ক্ষতিপূরণ না দিয়ে সেই টাকা দিয়ে ক্ষতি যাতে না হয় সেই ব্যবস্থা করলে কতই না ভালো হয়।
এই কারখানায় বিভিন্ন কেমিক্যাল, প্লাষ্টিক, কাগজসহ অনেক দাহ্য পদার্থ ছিলো বলে বিশেষজ্ঞগণ জানিয়েছেন। ফলে আগুণের তীব্রতা অনেক বেশী ছিলো এবং ফলশ্রুতিকে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান বেশী হয়েছে। তাছাড়া এই কারখানায় উৎপাদন থেকে শুরু করে লেবেলিংসহ বাজারজাতকরণের পূর্ব পর্যন্ত সব ধরনের কাজ করা হত। একই জায়গায় বহুবিধ কাজ করার ফলে আগুন ধরার ও ক্ষতির সম্ভাবনাটাও প্রকট হয়েছে।
ঐ কারখানায় অনেক শিশু শ্রমিক ছিলো বলে খবরে প্রকাশ করা হয়েছে। দেশে শিশু শ্রম নিষিদ্ধ থাকার পরেও কিভাবে সেখানে শিশু শ্রমিক কাজ করেছে তা দেখার বিষয় রয়েছে।
অন্যান্য বারের মত এই অগ্নিকাণ্ডের জন্যও তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। তদন্ত কমিটি বিভিন্ন সুপারিশসমূহসহ প্রতিবেদন দিবে। পূর্বের তদন্ত কমিটিগুলোও ঠিক একইভাবে সুপারিশমালা দিয়েছিলো। কিন্তু এর বাস্তবায়ন তেমন একটা হয়নি বলে আমাদের দেশে অগ্নিকাণ্ডের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং মানুষ মারা যাচ্ছে অবাঁধে। একটি তদন্ত প্রতিবেদনের সুপারিশমালাও যদি বাস্তবায়িত হত তবে বাংলাদেশে অগ্নিকাণ্ড উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যেত।
এখানে বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া কিছু ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের উল্লেখ করছি। ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ সালে পুরান ঢাকার চকবাজারের অগ্নিকাণ্ডে মৃতের সংখ্যা ৭০ জন। এফআর টাওয়ারে (ফারুক রূপায়ণ টাওয়ার) ২০১৯ সালের ২৮ মার্চ অগ্নিকাণ্ডের ২৬ জনের মৃত্যু হয় এবং ৭০ জন আহত হন। ২০১৭ সালের ৪ জুলাই গাজীপুরে একটি পোশাক কারখানার পেছনে বয়লার বিস্ফোরণে ১৩ জন মানুষ প্রাণ হারান ৷ টঙ্গীতে একটি সিগারেট তৈরির কারখানায় বয়লার বিস্ফোরণে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ২০১৬ সালের ১০ সেপ্টেম্বর প্রাণ হারান ৩১ জন ৷ ২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর আশুলিয়ার তাজরিন ফ্যাশন ফ্যাক্টরির ৯ তলা ভবনে আগুন লেগে প্রাণ হারান ১১২ জন। ২০১০ সালের ৩রা জুন ঢাকার নিমতলীতে অগ্নিকাণ্ডে প্রাণ হারান ১২৪ জন। অগ্নিকাণ্ড ছাড়াও ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সাভারে পোশাক কারখানা রানা প্লাজার ৯ তলা ভবনটি বিধ্বস্ত হয়ে প্রাণ হারান ১১শ’রও বেশি মানুষ, আহত হন অন্তত ২ হাজার৷
এভাবে আর কত মানুষ মারা যাবে? এ বিষয়গুলো দেখভাল করার দায়িত্ব যাদের তারা কোথায়? যাদের দায়িত্বে অবহেলার জন্য এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে তাদের অবশ্যই বিচারের আওতায় আনতে হবে। তা না হলে মানবতা এভাবে পদদলিত হবে অনাদিকাল, এই বাংলাদেশে ।।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
ভাস্কর অনির্বাণ ১৯/০৭/২০২১মানবিকতা ধুমড়ে মুচড়ে পড়েছে বহুকাল আগেই,নিরন্তর শুভকামনা কবি
-
শ.ম.ওয়াহিদুজ্জামান ১১/০৭/২০২১সবাইকে মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে সবকিছু দেখা উচিত।
-
সাইয়িদ রফিকুল হক ১১/০৭/২০২১এরা মানুষ হোক।