www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

সমবায় ভাবনা (২-৬)

সমবায় ভাবনা (২)
সমবায়ের অনেক গৌরব গাঁথা আমাদের দেশে রয়েছে। দেশের অর্থনীতিতে সমবায়ের অবদান অস্বীকার করার মত নয়। কিন্তু পরিতাপের বিষয়, জাতীয় পর্যায়ে এর কোন প্রতিফলন বা ছাপ আমরা তেমন একটা দেখতে পাই না। সমবায়ের এই যে নীরব বিপ্লব, তা আমরা দেখতে পাচ্ছি না। এর একটা বড় কারণ হল, সমবায়ের তেমন একটা প্রচার প্রচারনা আমাদের মধ্যে নাই। সমবায় দিবস পালন ছাড়া অন্য কোন অনুষ্ঠান বাংলাদেশে সাধারণত: সমবায়ের মাধ্যমে পালন করা হয় না। মোট কথা হল- সমবায়ের কথা বাংলাদেশের মানুষ জানেন না। যার ফলে দেশের এত বড় একটা সেক্টর মানুষের অজানাই থেকে যাচ্ছে। সমবায়ের অনেক পরে প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংক বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে, নোবেল পুরস্কার পেয়েছে। আর গ্রামীণ ব্যাংকের অনেক আগে জন্ম নেয়া সমবায় এখনো মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছাতে পারে নি। এটা আমাদের চরম একটা ব্যর্থতা যা আমাদের স্বীকার করতেই হবে। এই সমবায়কে ব্যাপকভাবে প্রচারের মাধ্যমে এর সুফল বাংলার ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে পারলে আমাদের দেশ দ্রুততম সময়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাবে, এতে কোন সন্দেহ নেই। সমবায়ের সুফল নিলে আমাদের দেশের প্রতিটি গ্রামের প্রতিটি ঘরে যেতে হবে, নাগরিকদের সংগঠিত করতে হবে, তাদের সমবায়ের পতাকা তলে আনতে হবে। তবেই সমবায় আমাদের দেশে সমৃদ্ধি লাভ করবে।
সমবায় ভাবনা (৩)
সমবায়কে পাঠ্যপুস্তকভুক্ত করা হোক
সমবায় নি:সন্দেহে বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ সেক্টর। কিন্তু এই গুরুত্বপূর্ণ সেক্টরের কথা বাংলার মানুষ জানে না। সমবায়কে একটি বিষয় হিসেবে পাঠ্যপুস্তকের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। এটা এখন সময়ের দাবী। একজন শিক্ষার্থীকে প্রকৃতভাবে সমবায়ী মনোভাবাপন্ন মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হলে সমবায়কে পাঠ্যপুস্তকভুক্ত করা ছাড়া কোন বিকল্প নাই। পাঠ্যপুস্তকে সমবায় বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকলে একজন শিক্ষার্থী ছোট বেলা থেকে সমবায় সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করতে পারে, জীবনে এর গুরুত্ব সম্পর্কে ধারনা করতে পারে। ফলে একজন শিক্ষার্থী ছোট কাল থেকে নিজেকে একজন টেকসই সমবায়ী হিসেবে গড়ে তুলতে পারে এবং তার জ্ঞানের কথা মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে সমাজকে পরিবর্তন করে দিতে পারে। বিষয়টি অধিকতর বিবেচনা করে এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করলে বাংলাদেশে সমবায় আন্দোলন আরোও এক ধাপ এগিয়ে যাবে, যাতে কোন সন্দেহ নেই। মানুষকে দারিদ্রের কসাঘাত থেকে অবমুক্ত করার জন্য এই সমবায় হোক মূল হাতিয়ার।
সমবায় ভাবনা (৪)
সমবায় কমন লগো
কোন প্রতিষ্ঠানের ব্র্যান্ডিং-এর জন্য লগো একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। লগো দেখে কোন প্রতিষ্ঠানকে যেমন সনাক্ত করা যায়, অপরদিকে প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে সম্যক ধারণা লাভ করা যায়। পৃথিবীর অনেক দেশে সমবায়ের একটি কমন লগো আছে। এই লগো দেখে পড়াশোনা না জানা মানুষও সমবায়কে সনাক্ত করতে পারে। কিন্তু পরিতাপের বিষয় হলো- বাংলাদেশে সমবায়ের কোন কমন লগো নাই। সমবায়ের জন্য এখন একটি কমন লগো তৈরী করা সময়ের দাবী। এই ধরনের লগো থাকলে মানুষ সমবায়কে সহজেই সনাক্ত করতে পারবে, সমবায়ের সাথে সম্পৃক্ত থাকতে পারবে এবং সমবায়ের প্রচার-প্রচারনাও বৃদ্ধি পাবে। সমবায়ের একটি কমন লগো করা হলে, এই অবহেলিত সমবায়কে গ্রাম বাংলায় অচিরেই পৌঁছে দেয়া সম্ভব হবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করবেন মর্মে সমবায়ীদের জোর দাবী।
সমবায় ভাবনা (৫)
সমবায়ে উচ্চ শিক্ষা
সমবায়ের ইতিহাস এই ভারত ‍উপমহাদেশে শত বছরেরও পুরাতন। আমাদের দেশে সমবায় বিষয়ে উচ্চ শিক্ষার পথ আসলে ততটা প্রসারিত নয় বললেই চলে। উচ্চ শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে আমরা সমবায়কে তার যোগ্য সম্মান দিতে পারছি না। প্রথমে সমবায়কে পাঠ্যপুস্তকভূক্ত করতে হবে। মানুষকে সমবায় জ্ঞানে সমৃদ্ধ করার জন্য বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সমবায়কে পাঠ্যপুস্তকভূক্ত করার পর সমবায়কে বিশ্ববিদ্যালয় লেভেলে একটি বিষয় হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে যার মাধ্যমে ডিগ্রি, মাস্টার্স ও পিএইচডি ডিগ্রি প্রদান করাও সম্ভব। বাংলাদেশে সমবায়ের অনেক রিসোর্স এখানে সেখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। অনেক ইন্সটিটিউট রয়েছে সমবায় শিক্ষার জন্য। শুধু একটু সমন্বিত উদ্যোগ নিতে পারলে সমবায়ের উপর পিএইচডি ডিগ্রি প্রদান করা শুধু সময়ের ব্যাপার মাত্র। এই কাজটি করতে পারলে সমবায়ের উচ্চ শিক্ষার জন্য বাংলাদেশীদের পয়সা খরচ করে বিদেশে যেতে হবে না। সংশ্লিষ্টরা বিষয়টি গুরুত্বের সাথে অনুধাবন করলে শুধু সমবায় দিয়েই বাংলাদেশের চেহারা পরিবর্তন করে দেয়া সম্ভব।
সমবায় ভাবনা (৬)
সমবায়কে মানুষের দোরগোড়ায় নিয়ে যাওয়া এখন সময়ের দাবী। সমবায়ের সুফল মানুষকে বলতে হবে। প্রতি গ্রামে গ্রামে সমবায় সমিতি করতে হবে। মানুষকে সমবায়ের ছাতার নীচে আনতে হবে। নিজেদের স্বাবলম্বী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য সমবায়ের বিকল্প নাই। সমবায় পুরাপুরিভাবে দেশীর প্রতিষ্ঠান। সমবায় বিদেশী অর্থ গ্রহণ করে না। এই সমবায়ই বাংলার মানুষের মুক্তির একমাত্র অবলম্বন হতে পারে। দেশের প্রতিটি গ্রামে সমবায়কে ছড়িয়ে দিতে পারলে এই দেশ অবশ্য অবশ্যই আর্থিকভাবে সাবলম্বী হবে, মানুষ হবে দারিদ্রমুক্ত।
বিষয়শ্রেণী: প্রবন্ধ
ব্লগটি ২৭১ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ২৭/০৫/২০২১

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast