দুটি লেখা
আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম (৭৮)!
শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা
আগে আমাদের এলাকায় শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা হত। মিশন সংগঠন জাগরণী সংঘের প্রধান দায়িত্ব ছিলো এই শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার আয়োজন কর। মিশন সংগঠন অন্য কোন কাজ করতে না পারলেও এই কাজটি করতে কখনো ভুল করতো না। মোট কথা মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ডুনেশন এনে হলেও এই পবিত্র কার্য সম্পাদন করতে হত। আসলেই এটা একটা পবিত্র কাজ ছিলো, এখন তা আমি বুঝতে পেরেছি। ইতিহাস ও ঐতিহ্য রক্ষার্থে এই প্রতিযোগিতা যে কত বড় অবদান রেখেছে তা এক্ষণে বুঝতে পেরেছি। এই প্রতিযোগিতার আলো তখন এলাকার গ্রামে গ্রামে ছড়িয়ে পড়তো। আমরা মূল প্রতিযোগিতায় যাওয়ার জন্য এলাকায় এলাকায় শুরু করে দিতাম প্রতিযোগিতা। শিক্ষার্থীরা যেমন ব্যস্ত থাকতো চর্চা নিয়ে, তেমনি অর্গানাইজাররাও ব্যস্ত থাকতো আয়োজন নিয়ে। এই প্রতিযোগিতাকে কেন্দ্র করে একটা সাজ সাজ রব পরে যেত। কত অর্গানাইজারকে যে গীর্জার বারান্দায় রাত কাটাতে হয়েছে তা এখন বলাই বাহুল্য। এর মধ্য দিয়ে যে মিলন ও ভ্রাতৃত্ব সৃষ্টি হয়েছে তা আসলেই উল্লেখ করার মত, একেবারে অসাধারণ। আবার সেই পুরানো দিনে ফিরে যেতে ইচ্ছা করে । রাত জেগে সেই প্রতিযোগিতার পুরস্কারের সার্টিফিকেট লেখা, কবরস্থান, কবরস্থানের কাছে ঘুমানো, প্রতিযোগিতার বিচারক, ফাদারের সাথে যোগাযোগ, ম্যাগাজিন প্রকাশ করার ইত্যাদি, ইত্যাদি।
(২)
একজন পথচারীর আত্মকাহিনী
আমি একজন পথচারী। আমি ঢাকা শহরের পথচারী। আমার বাসা মালিবাগে। কাজের জন্য আমাকে প্রতিদিন ফার্মগেট আসতে হয় এবং দিন শেষে ফার্মগেট থেকে মালিবাগের বাসার যেতে হয়। আমি পায়ে হেঁটেই সাধারণত: যাওয়া আসা করি। অনেক দিনের অভ্যাস। আমি গাড়ীতে উঠি না। ঢাকা শহরের যে ট্রাফিক জ্যাম এতে করে হেঁটে গেলেই আগে যাওয়া যায়। আমি আগে অবশ্য বাসে যাওয়া-আসা করতাম। কিন্তু এতে আমার সময় অনেক বেশী লাগতো। পরে এই যে হেঁটে যাওয়া শুরু করেছি, তো করেছিই। এখন আর বাসে উঠি না, হেঁটেই সারা পথ যাই। এখন অভ্যাস হয়ে গেছে। এখন বরং বাসে উঠা বিরক্ত লাগে।
আমি ঢাকার ফুটপাত দিয়ে হেঁটে চলি একনাগারে। মাঝে মাঝে ফুটপাত দিয়ে যাওয়া মোটরসাইকেলগুলো আমার যাত্রায় ছন্দপতন ঘটায়। তখন আমি বিরক্ত হই খুবই। কিন্তু কিছুই বলতে পারি না, কিছু করতে পারি না। কেন যে মোটরসাইকেলওয়ালারা ফুটপাত ব্যবহার করে বলতে পারি না। মূল রাস্তায় একটু জ্যাম দেখলেই মোটরসাইকেলচালকরা ফুটপাত দিয়ে মোটরসাইকেল চালায়। আমরা নিয়ম মানতে চাই না। তাই আমাদের দেশে ট্রাফিক জ্যাম অনেক বেশী অন্য দেশের তুলনায়।
রাস্তা পারাপারের সময় বেখেয়ালী হলে চলবে না। আমাদের ঢাকার রাস্তা পারাপার হওয়া খুবই কঠিন। বেশী জেব্রা ক্রসিং নেই। নেই তেমন একটা ওভারব্রীজ। আমি সব সময় রাস্তা পারাপারে ওভারব্রীজ ব্যবহার করি। ইহা কষ্টসাধ্য কিন্তু নিরাপদ। আন্ডারপাস মোটে ১/২ টা আছে, তাও আবার প্রয়োজনের সময় থাকে বন্ধ। আমাদের ঢাকার মানুষ ওভারব্রীজ ব্যবহার করতে চায় না। ওভারব্রীজ থাকতেও রাস্তার মধ্য দিয়ে দৌড় দিয়ে রাস্তা পার হয় এবং তখন দুর্ঘটনা ঘটে। আমাদের শহরের মানুষ সচেতন না বলে দুর্ঘটনার হার প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে। ঢাকার মানুষকে ওভারব্রীজ ব্যবহারে উৎসাহী করতে হবে। তবে দুর্ঘটনা জ্যামিতিকভাবে কমে যাবে।
মালিবাগ থেকে রেলপথ ধরে ফার্মগেটের কাছাকাছি যাওয়া যায়। কিন্তু আমি নিয়েও রেললাইন দিয়ে চলি না এবং অন্যকেও বলি রেললাইন দিয়ে না আসার জন্য। কারণ, রেললাইন দিয়ে আসলে দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা থাকে বেশী মাত্রায়। যে কোন সময় রেলগাড়ী আসতে পারে। তাই সবাইকে রেললাইন পরিহার করার কথা বলি।
আমাদের একই সড়ক দিয়ে বাস চলে আবার রিক্সাও চলে। এটা কোনভাবে সঠিক নয়। কারণ বাসের গতি বেশী; পক্ষান্তরে রিক্সার গতি খুবই কম। বেশী ও কম গতির যানবাহন একই রাস্তা দিয়ে চললে দুর্ঘটনা বেশী হয়। এই বিষয়টাকে আমাদের গুরুত্ব দিয়ে দুই ধরনের যানবাহনের জন্য আলাদা আলাদা লেন করে দিতে হবে। আমাদের সড়ককে টেকসই ব্যবস্থাপনায় নিয়ে আসতে হবে। আমাদের ব্যবস্থাপনা যদি সুদৃঢ় হয় তবে পরিবহন খাতের সমস্যাগুলো সমাধান করা সময়ের ব্যাপার মাত্র।
শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা
আগে আমাদের এলাকায় শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা হত। মিশন সংগঠন জাগরণী সংঘের প্রধান দায়িত্ব ছিলো এই শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার আয়োজন কর। মিশন সংগঠন অন্য কোন কাজ করতে না পারলেও এই কাজটি করতে কখনো ভুল করতো না। মোট কথা মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ডুনেশন এনে হলেও এই পবিত্র কার্য সম্পাদন করতে হত। আসলেই এটা একটা পবিত্র কাজ ছিলো, এখন তা আমি বুঝতে পেরেছি। ইতিহাস ও ঐতিহ্য রক্ষার্থে এই প্রতিযোগিতা যে কত বড় অবদান রেখেছে তা এক্ষণে বুঝতে পেরেছি। এই প্রতিযোগিতার আলো তখন এলাকার গ্রামে গ্রামে ছড়িয়ে পড়তো। আমরা মূল প্রতিযোগিতায় যাওয়ার জন্য এলাকায় এলাকায় শুরু করে দিতাম প্রতিযোগিতা। শিক্ষার্থীরা যেমন ব্যস্ত থাকতো চর্চা নিয়ে, তেমনি অর্গানাইজাররাও ব্যস্ত থাকতো আয়োজন নিয়ে। এই প্রতিযোগিতাকে কেন্দ্র করে একটা সাজ সাজ রব পরে যেত। কত অর্গানাইজারকে যে গীর্জার বারান্দায় রাত কাটাতে হয়েছে তা এখন বলাই বাহুল্য। এর মধ্য দিয়ে যে মিলন ও ভ্রাতৃত্ব সৃষ্টি হয়েছে তা আসলেই উল্লেখ করার মত, একেবারে অসাধারণ। আবার সেই পুরানো দিনে ফিরে যেতে ইচ্ছা করে । রাত জেগে সেই প্রতিযোগিতার পুরস্কারের সার্টিফিকেট লেখা, কবরস্থান, কবরস্থানের কাছে ঘুমানো, প্রতিযোগিতার বিচারক, ফাদারের সাথে যোগাযোগ, ম্যাগাজিন প্রকাশ করার ইত্যাদি, ইত্যাদি।
(২)
একজন পথচারীর আত্মকাহিনী
আমি একজন পথচারী। আমি ঢাকা শহরের পথচারী। আমার বাসা মালিবাগে। কাজের জন্য আমাকে প্রতিদিন ফার্মগেট আসতে হয় এবং দিন শেষে ফার্মগেট থেকে মালিবাগের বাসার যেতে হয়। আমি পায়ে হেঁটেই সাধারণত: যাওয়া আসা করি। অনেক দিনের অভ্যাস। আমি গাড়ীতে উঠি না। ঢাকা শহরের যে ট্রাফিক জ্যাম এতে করে হেঁটে গেলেই আগে যাওয়া যায়। আমি আগে অবশ্য বাসে যাওয়া-আসা করতাম। কিন্তু এতে আমার সময় অনেক বেশী লাগতো। পরে এই যে হেঁটে যাওয়া শুরু করেছি, তো করেছিই। এখন আর বাসে উঠি না, হেঁটেই সারা পথ যাই। এখন অভ্যাস হয়ে গেছে। এখন বরং বাসে উঠা বিরক্ত লাগে।
আমি ঢাকার ফুটপাত দিয়ে হেঁটে চলি একনাগারে। মাঝে মাঝে ফুটপাত দিয়ে যাওয়া মোটরসাইকেলগুলো আমার যাত্রায় ছন্দপতন ঘটায়। তখন আমি বিরক্ত হই খুবই। কিন্তু কিছুই বলতে পারি না, কিছু করতে পারি না। কেন যে মোটরসাইকেলওয়ালারা ফুটপাত ব্যবহার করে বলতে পারি না। মূল রাস্তায় একটু জ্যাম দেখলেই মোটরসাইকেলচালকরা ফুটপাত দিয়ে মোটরসাইকেল চালায়। আমরা নিয়ম মানতে চাই না। তাই আমাদের দেশে ট্রাফিক জ্যাম অনেক বেশী অন্য দেশের তুলনায়।
রাস্তা পারাপারের সময় বেখেয়ালী হলে চলবে না। আমাদের ঢাকার রাস্তা পারাপার হওয়া খুবই কঠিন। বেশী জেব্রা ক্রসিং নেই। নেই তেমন একটা ওভারব্রীজ। আমি সব সময় রাস্তা পারাপারে ওভারব্রীজ ব্যবহার করি। ইহা কষ্টসাধ্য কিন্তু নিরাপদ। আন্ডারপাস মোটে ১/২ টা আছে, তাও আবার প্রয়োজনের সময় থাকে বন্ধ। আমাদের ঢাকার মানুষ ওভারব্রীজ ব্যবহার করতে চায় না। ওভারব্রীজ থাকতেও রাস্তার মধ্য দিয়ে দৌড় দিয়ে রাস্তা পার হয় এবং তখন দুর্ঘটনা ঘটে। আমাদের শহরের মানুষ সচেতন না বলে দুর্ঘটনার হার প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে। ঢাকার মানুষকে ওভারব্রীজ ব্যবহারে উৎসাহী করতে হবে। তবে দুর্ঘটনা জ্যামিতিকভাবে কমে যাবে।
মালিবাগ থেকে রেলপথ ধরে ফার্মগেটের কাছাকাছি যাওয়া যায়। কিন্তু আমি নিয়েও রেললাইন দিয়ে চলি না এবং অন্যকেও বলি রেললাইন দিয়ে না আসার জন্য। কারণ, রেললাইন দিয়ে আসলে দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা থাকে বেশী মাত্রায়। যে কোন সময় রেলগাড়ী আসতে পারে। তাই সবাইকে রেললাইন পরিহার করার কথা বলি।
আমাদের একই সড়ক দিয়ে বাস চলে আবার রিক্সাও চলে। এটা কোনভাবে সঠিক নয়। কারণ বাসের গতি বেশী; পক্ষান্তরে রিক্সার গতি খুবই কম। বেশী ও কম গতির যানবাহন একই রাস্তা দিয়ে চললে দুর্ঘটনা বেশী হয়। এই বিষয়টাকে আমাদের গুরুত্ব দিয়ে দুই ধরনের যানবাহনের জন্য আলাদা আলাদা লেন করে দিতে হবে। আমাদের সড়ককে টেকসই ব্যবস্থাপনায় নিয়ে আসতে হবে। আমাদের ব্যবস্থাপনা যদি সুদৃঢ় হয় তবে পরিবহন খাতের সমস্যাগুলো সমাধান করা সময়ের ব্যাপার মাত্র।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
সাঞ্জু ০৪/০৬/২০২১সহজ ভাষায় প্রতিবাদ
-
মিঠুন দত্ত বাবু ০৩/০৬/২০২১দারুন
-
টি এম আমান উল্লাহ ১৪/০৫/২০২১ভালো হয়েছে।
-
মিঠুন দত্ত (বাবু) ১৩/০৫/২০২১সত্যি অসাধারন
-
জসিম বিন ইদ্রিস ০৮/০৫/২০২১সুন্দর
-
ফয়জুল মহী ০৭/০৫/২০২১অনন্য সুন্দর লেখা। শুভকামনা রইল।