একটি মরা খালের আত্মকাহিনী (৫)
আমি একটি খাল। লোকে আমাকে এখন বলে মরা খাল। শুনতে আমার খুব খারাপ লাগে। আমি অনেক মাইন্ড করি। মানুষ আমার চলার পথে বাঁধা দেয়, তাদের হীন স্বার্থের জন্য। মাঝে মাঝে আমার উপর দিয়ে বাঁধ তৈরী করা হয়। আমাকে বাঁধ দেওয়া হলে আমি শ্বাস প্রশ্বাস নিতে পারি না। ফলে দম আটকে মরে যাই। মানুষ তা বুঝেও বুঝে না। না বুঝার ভান করে। তখন আমার ভীষণ কষ্ট হয়। যে মানুষ আমাকে সৃষ্টি করেছে, সেই মানুষ যখন আমাকে মেরে ফেলে তখন এর চেয়ে দু:খের আর কি হতে পারে? এজন্য আমি মাঝে মাঝে পতিশোধ পরায়ন হয়ে উঠি। মনের কষ্টে মানুষের জান-মালের কিছু ক্ষতিও করে ফেলি। এটা আমার ইচ্ছায় না, একান্ত আমার অনিচ্ছায় হয়ে যায়।
ভরা বর্ষায় আমার খুব ভালো লাগে। তখন আমি পূর্ণ যৌবনা থাকি। আমার মধ্যে পানি টই টই করে। একটা ভাবই থাকে আলাদা! আমার মধ্যে মাছেরা খেলা করে অবিচল। মাছেরা দৌড় প্রতিযোগিতা করে আমারই জলে। তখন গর্বে মনটা ভরে যায়। পানির উপরে থাকে নৌকা ও কুন্দা। মাঝি নৌকা বায় এবং গান ধরে- ‘মন মাঝি তোর বৈঠা নে রে, আমি আর বাইতে পারলাম না।’ আমার স্বচ্ছ জলে মানুষ গোসল করে, সাঁতার কাটে। গরু বাছুরকে গোসল করায়। আমার জলের উপর কিছু ঘাসও জন্মে যা গরুর খাবার হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তখন আমার খারাপ লাগে না। কিন্তু গাছ থেকে বাচ্চারা যখন আমার জলে লাফ দেয় তখন বাচ্চাদের ভালো লাগলেও আমার মধ্যে একটা চাপ আসে। কিন্তু বাচ্চাদের সুখের কথা বিবেচনা করে সেই চাপ আমি সহ্য করি। সবচেয়ে খারাপ লাগে যখন মানুষ আমার জলে মল ত্যাগ করে। তখন আমার পানি নষ্ট হয়ে যায়। আমার মধ্যে মাছ থাকতে পারে না। আমি নি:স্ব হয়ে যাই। তখন আমার প্রচন্ড রাগ হয়। যারা এ মন্দ কাজ করে তাদের শুভ কামনা করি।
আমার জন্ম অনেকদিন আগে হয়েছে। বাংলাদেশ আমলেরও আগে। আমার মধ্য দিয়ে নদী থেকে পানি প্রবাহিত করাই ছিলো আমার জন্মের প্রধানতম লক্ষ্য। আমার পানি দিয়ে কৃষক সোনালী ফসল ফলায়। আমার পানি দিয়ে ফলানো ধানের চাল মানুষের বাঁচার প্রধান অবলম্বন। আমার জন্মের অরেকটা গুরুত্বপূর্ণ কারণ হল সীমানা নিরধারণ করা। আমার দুই দিকে দুইটি এলাকা থাকে। মাঝখান দিয়ে আমি বয়ে যাই। ‘এই কুলে আমি আর ঐ কুলে তুমি, মাঝখানে খাল ঐ বয়ে চলে যায়।’ মান্না দের গানের মত। কখনো কখনো আমি এজমালি হয়ে যাই। অরথাৎ আমার কোন মালিক থাকে না। আবার আমি যখন গুরুত্বপূর্ হয়ে যাই তখন আমার মালিকানা নিয়ে দ্বন্দ্ব বেঁধে যায়। তখন দুই এলাকার দুই রাজাই আমাকে নিতে চায়। এখানেই আমার তাৎপর্য।
৯।৪।২১
ভরা বর্ষায় আমার খুব ভালো লাগে। তখন আমি পূর্ণ যৌবনা থাকি। আমার মধ্যে পানি টই টই করে। একটা ভাবই থাকে আলাদা! আমার মধ্যে মাছেরা খেলা করে অবিচল। মাছেরা দৌড় প্রতিযোগিতা করে আমারই জলে। তখন গর্বে মনটা ভরে যায়। পানির উপরে থাকে নৌকা ও কুন্দা। মাঝি নৌকা বায় এবং গান ধরে- ‘মন মাঝি তোর বৈঠা নে রে, আমি আর বাইতে পারলাম না।’ আমার স্বচ্ছ জলে মানুষ গোসল করে, সাঁতার কাটে। গরু বাছুরকে গোসল করায়। আমার জলের উপর কিছু ঘাসও জন্মে যা গরুর খাবার হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তখন আমার খারাপ লাগে না। কিন্তু গাছ থেকে বাচ্চারা যখন আমার জলে লাফ দেয় তখন বাচ্চাদের ভালো লাগলেও আমার মধ্যে একটা চাপ আসে। কিন্তু বাচ্চাদের সুখের কথা বিবেচনা করে সেই চাপ আমি সহ্য করি। সবচেয়ে খারাপ লাগে যখন মানুষ আমার জলে মল ত্যাগ করে। তখন আমার পানি নষ্ট হয়ে যায়। আমার মধ্যে মাছ থাকতে পারে না। আমি নি:স্ব হয়ে যাই। তখন আমার প্রচন্ড রাগ হয়। যারা এ মন্দ কাজ করে তাদের শুভ কামনা করি।
আমার জন্ম অনেকদিন আগে হয়েছে। বাংলাদেশ আমলেরও আগে। আমার মধ্য দিয়ে নদী থেকে পানি প্রবাহিত করাই ছিলো আমার জন্মের প্রধানতম লক্ষ্য। আমার পানি দিয়ে কৃষক সোনালী ফসল ফলায়। আমার পানি দিয়ে ফলানো ধানের চাল মানুষের বাঁচার প্রধান অবলম্বন। আমার জন্মের অরেকটা গুরুত্বপূর্ণ কারণ হল সীমানা নিরধারণ করা। আমার দুই দিকে দুইটি এলাকা থাকে। মাঝখান দিয়ে আমি বয়ে যাই। ‘এই কুলে আমি আর ঐ কুলে তুমি, মাঝখানে খাল ঐ বয়ে চলে যায়।’ মান্না দের গানের মত। কখনো কখনো আমি এজমালি হয়ে যাই। অরথাৎ আমার কোন মালিক থাকে না। আবার আমি যখন গুরুত্বপূর্ হয়ে যাই তখন আমার মালিকানা নিয়ে দ্বন্দ্ব বেঁধে যায়। তখন দুই এলাকার দুই রাজাই আমাকে নিতে চায়। এখানেই আমার তাৎপর্য।
৯।৪।২১
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
ন্যান্সি দেওয়ান ১৩/০৪/২০২১Valo legeche.....
-
আব্দুর রহমান আনসারী ০৯/০৪/২০২১বেশ সঙখ পাঠ
-
শঙ্খজিৎ ভট্টাচার্য ০৯/০৪/২০২১excellent!
-
ফয়জুল মহী ০৯/০৪/২০২১ভালো লাগলো পড়ে। শুভেচ্ছা ও শুভ কামনা রইলো।।
-
এস এম আলমগীর হোসেন ০৯/০৪/২০২১বেশ ভালো লাগলো