www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম (৫৪)

পাস্কা পর্বের সেকাল একাল
প্রভু যীশু খ্রীষ্ট মানুষকে পাপ থেকে মুক্ত করার জন্য পরিত্রাতা হয়ে এই পৃথিবীতে আগমন করেন। তিনি মানুষকে পাপের শৃংখল থেকে অবমুক্ত করার জন্য ক্রুশীয় লজ্জাজনক ‍মৃত্যুকে বরণ করে নিয়েছিলেন। তিনি যেহেতু রাজাধিরাজ ছিলেন, তাই তিনি ইচ্ছা করলে লজ্জাজনক মৃত্যু থেকে নিজেকে অনায়াসে বাঁচাতে পারতেন। কিন্তু তা তিনি করেন নি। তিনি এই মৃত্যুর মধ্যদিয়ে তাঁর জীবনের সরলতা প্রকাশ করেছেন। তাঁর মহাত্ম, মহানুভবতা প্রকাশ করেছেন। তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন এবং মৃত্যুর ৩য় দিনে আবার পুনরুত্থান করেছেন। মৃত্যুকে জয় করেছেন। এই মৃত্যুকে জয় করে পুনরুত্থান করার সম্মান আর কেউ পেয়েছে বলে আমার জানা নেই যা যীশু খ্রীষ্ট পেয়েছিলেন। এই দিক বিচার করলে দেখা যায় যে, পাস্কা পর্ব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আমাদের ধর্মীয় জীবনে।
প্রায়শ্চিত্তকাল আসলে গ্রাম বাংলায় শুরু হয়ে যেত কষ্টের গান। যীশুর যাতনা ভোগের কাহিনী নিয়ে এই গান রচনা করা হয়েছে। এই গান শেষ হত ইস্টার সানডেতে। যীশুর যাতনা ভোগের কাহিনী নিয়ে ‘যীশুর নীলা’ করতো চড়াখোলা দল। এই দল এত সুন্দরভাবে তা উপস্থাপন করতো যার কোন জবাব ছিলো না। চড়াখোলা দলের যীশুর নীলা এতো জনপ্রিয়তা পেয়েছিলো যে, এই দল দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে গিয়েও এই নীলা করে সুনাম অর্জন করেছে। পরে অবশ্য বিভিন্ন দল যীশুর নীলা করেছে যার মধ্যে পিএইচবি দল অন্যতম।
পুনরুত্থান পর্ব আসলে আমরা ম্যাগাজিন নিয়ে ভীষণ ব্যস্ত হয়ে পরতাম। পুনরুত্থান পর্বে সংগঠনের পক্ষ থেকে একটা ম্যাগাজিন করতেই হবে। তা না হলে যে মার্যাদা থাকে না! ছুটে যেতাম ঢাকা। বিজ্ঞাপন কলেকশন, লেখা কালেকশন, প্রেস খোঁজা ইত্যাদি কত যে কাজ! ভাত খাওয়ার সময় একেবারে পেতাম না। লেখা আনার জন্য জ্যাম ঠেলে পুরান টাউনের লক্ষ্মীবাজারে যেতাম সাইফুদ্দিন সবুজ দার কাছে। আলো দার বাসায় তো যেতামই। একটা বিষয় খেয়াল করে দেখেছি যে, যত চেষ্টাই করতাম ম্যাগাজিন আগে বের করার কিন্তু কোন সময়ই পারতাম না। শেষ মেষ রাত জেগে পুনরুত্থানের দিন সকালে সিএনজি দিয়ে ম্যাগাজিন আনতাম মিশনে। মিশনে এনে যথারীতি চলতো বিতরণ। যে যা দেয় তাই নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতাম। বেশীর ভাগ ছোট মানের টাকাই পেতাম। তবে কিছু লোক ছিলো যারা ১০০ টাকা এমন কি ৫০০ টাকাও দিতো। তারা আসলে ম্যাগাজিন করার কষ্টটা বুঝতো বলে মনে হত। ম্যাগাজিন বিক্রির পর চলতো এ বাড়ী , ও বাড়ী দই, চিড়া, মুড়ি, খই, কলা. মিষ্টি খাওয়ার পালা। যতক্ষণ পাকস্থলী খালি থাকতো ততক্ষণ শুধু খেতাম, আর খেতাম, কোন বাছ-বিচার থাকতো না।
হায়! অফসোস! আজও একটি পাস্কা পর্ব যাচ্ছে। মানুষের মনে কোন রং নেই, ম্যাগাজিন নেই, আশা নেই, ভালোবাসা নেই! আছে লকডাউনের চিন্তা ও করোনা!
-স্বপন রোজারিও, তারিখ: ৪/৪/২১ (পাস্কা পর্বের দিন)
বিষয়শ্রেণী: প্রবন্ধ
ব্লগটি ৩৩৯ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ০৪/০৪/২০২১

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast