www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

নেতৃত্ব

নেতৃত্ব হল জনগণকে প্রভাবিত করা। জনসাধারণকে তাদের লক্ষ্য অর্জনে প্রভাবিত করার প্রক্রিয়াকে আমরা নেতৃত্ব বলে থাকি। একজন গুনাবলী সম্পন্ন নেতা এ কাজ করে থকেন। নেতৃত্ব একটি বিশাল বিষয়। নের্তৃত্বের উপর অনেক কিছু নির্ভর করে। সৎ ও দক্ষ নেতৃত্বের জন্য কোন দেশ বা জাতি সাফল্যের চরম শিখরে আরোহন করতে পারে। আবার অসৎ ও অদক্ষ নের্তৃত্বের জন্য কোন জাতি বা দেশ ধ্বংস হয়ে যেতে পারে। তাই নের্তৃত্ব খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। দুরদর্শিতা, সৎ, সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা,সরলতা,নম্রতা, সহযোগিতা প্রভৃতি নেতৃত্বের অন্যতম গুণাবলী। নিম্নে ভালো নেতার কিছু গুণাগুণ সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।
আমরা গতানুগতিক ধ্যান ধারণায় মনে করি যে, একজন নেতাকে সব সময় সামনের সারিতে থাকতে হবে। কোন মিছিলের বা মঞ্চের সামনে না থাকলে বড় নেতা হওয়া যায় না এ ধরণের বদ্ধমূল ধারনা আমাদের রয়েছে। আমাদের কাছে দাবী আদায়ের মিছিলে যে যত আগে থাকবে সে তত বেশী বড় নেতা। আর যারা পিছনে থাকে তারা কর্মী। আসলে আমাদের এ বদ্ধমূল ধারণাটা সঠিক নয়। কোন বাড়ীতে কোন লোক মারা গেলে সেখানে যে লোক আগে যায় সে আসলে বড় নেতা। স্বার্থ ত্যাগ করে যে লোক শবদেহ কবরস্থ করার জন্য নিয়ে যাওয়ার সময় সবার সামনে থাকে তার চেয়ে বড় মাপের নেতা আর কি হতে পারে? আমার মনে হয়, তার চেয়ে বড় নেতা আর এ পৃথিবীতে নেই। তিনিই প্রকৃত নেতা। এখানে তার কোন কিছু চাওয়া বা পাওয়ার থাকে না।
যে লোক মিটিং মিছিলে বড় বড় বক্তৃতা দিয়ে জনসাধারণকে আশার বাণী শুনায় তাকে আমারা বড় নেতা মনে করি। আমাদের কাছে মানে হয়, মাইকের সামনে যে যত বেশী কথা বলতে পারে সে তত বড় নেতা। আর যদি কেই বক্তৃতা দিতে দিতে মাইকটা ফাটিয়ে ফেলতে পারে তবে তাকে আমরা শ্রেষ্ঠ নেতা বলে আখ্যা দেই। সেই নেতার পিছনে পিছনে ঘুরে আরাম পাই। সেই নেতার পিছনে ঘুরে জীবনকে ধন্য মনে করি। জীবনে মনে হয় এর চেয়ে বেশী আর কিছু পাওয়ার নেই। কিন্তু আসলে কি তা নের্তৃত্ব? আসলে তা নেতৃৃত্ব নয়। আসল নেতা হলো তিনি, যিনি কোন লোকের মাতৃ বা পিতৃ বিয়োগে ব্যথিত সন্তানদের সাবলীল ভাষায় শান্তনার বাণী শুনিয়ে তাদের চিত্তকে পশমিত করতে পারে। যে লোকের একটি কথায় শোকার্ত ভাই-বোনের হৃদয় জুরিয়ে যায় তার চেয়ে মিষ্ঠভাষী নেতা আর হতে পারে না।
মোটা সুঠাম দেহের অধিকারী লোককেই আমরা শক্তিশালী লোক বলি। কোন শক্তিশালী লোককে বন্ধু হিসেবে পাওয়াকে আমরা অনেক সাধনার ধন হিসেবে মনে করি। আসলে যে লোক শবাধার বহন করে অগ্রে গমন করে তার চেয়ে শক্তিশালী নেতা আর নেই। যে লোক সেচ্ছায় মৃত লোকের জন্য কবর খনন করতে পারে তার চেয়ে বড় উদার মনের নেতা আর হতে পারে না। এ ধরণের লোকের দৈহিক শক্তি তুলনাবিহীন।
যারা মানুষের সুখের দিনে এসে পাশে দাঁড়ায় তারা সুবিধাবাদি নেতা। প্রকৃত নেতা মানুষের দুঃখের দিনে তার পাশে এসে দাঁড়ায়। মানুষের দুঃখের দিনে যাদের পাওয়া যায় তারাই আসলে প্রকৃত বন্ধু এবং নেতা।
নেতা হতে হলে ছোট হতে হবে। সব সময় বড় আসনে বসতে চাইলে প্রকৃত নেতা হওয়া যায় না। যীশুখ্রীষ্ট এতো বড় নেতা হয়েও তাঁর শিষ্যদের পা পর্যন্ত ধুঁয়ে দিয়েছেন। যীশুর মত উদার হৃদয়ের নেতাই হতে পারবে প্রকৃত নেতা।
বিষয়শ্রেণী: প্রবন্ধ
ব্লগটি ৩৬৮ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ২৬/১২/২০২০

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast